> ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতা প্রশ্ন উত্তর pdf 2025 » Qবাংলা

ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতা প্রশ্ন উত্তর pdf 2025

উচ্চ মাধ্যমিক wbchse বাংলা বিষয়ে একটি অন্যতম পাঠ্য ক্রন্দনরতা জননীর পাশে |রচয়িতা কবি মৃদুল দাশগুপ্ত | প্রিয় ছাত্র ছাত্রী এই সিরিজে এই গল্প থেকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর যথাযথভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর এই সিরিজে তুলে ধরা হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ। প্রশ্নের উত্তরগুলি দেখার পাশাপাশি প্রশ্নের উত্তর লেখার কৌশলটি ভালোভাবে লক্ষ্য করো। উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর জানতে অবশ্যই click here

ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতার প্রেক্ষাপট

“ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” কবিতাটি ২০০৬ সালের সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ আন্দোলনের পটভূমিকায় রচিত। তৎকালীন সময়ে একদিকে সামাজিক অবক্ষয় অন্যদিকে শাসকের স্বৈরাচারী তথা সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার কবি মৃদুল দাশগুপ্তকে অত্যন্ত ব্যথিত করে তুলেছিল। তিনি দেখেছেন- শাসকের স্বৈরাচারী শাসনে, বুদ্ধিজীবী মানুষেরা প্রতিবাদ থেকে বিরত থেকেছে। সুফলা চাষযোগ্য জমিকে অধিগ্রহণ থেকে রক্ষা করতে গিয়ে মায়ের সন্তানেরা অত্যাচারিত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে। হত্যা হয়েছে‌। কিন্তু সেই জননীর পাশে কোন মানুষকে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। কোন মানুষকে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি।

তাই জননী ক্রন্দনরতা। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত বঙ্গভূমি তথা বঙ্গ জন্মভূমিকে জননী বলেছেন। আজ শাসকের স্বৈরাচারী শাসন এবং অত্যাচারে এই জননী তার বিচার থেকে বঞ্চিত। মানুষ সবাই বিধাতার উপর নির্ভরশীল কিন্তু এক্ষেত্র কবি ভিন্ন রাস্তা অবলম্বন করেছেন। তিনি তার শিল্পীসত্তা প্রতিবাদী মন নিয়ে ক্রন্দনরতা জননী পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন এবং সেই সঙ্গে সমস্ত শিল্পী তথা বুদ্ধিজীবী মানুষদেরকে ক্রন্দনরতা জননীর পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন।

ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতার বিষয়বস্তু

“ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ”  কবিতায় তৎকালীন সময়ের শাসকের স্বৈরাচারী এবং অনাচারের অন্ধকার দিকটিকে তুলে ধরেছেন। সামাজিক অবক্ষয়ে রাজনীতি যেন মানুষের কাছে রননীতিতে পরিণত হয়েছিল। ‌কবির মনে হয়েছে “ক্রন্দনরতা জননী পাশে” যদি তিনি না থাকেন তাহলে লেখালেখি, গান গাওয়া, ছবি আঁকা- এই সব কিছু বৃথা অর্থাৎ একজন সৃষ্টিশীল বুদ্ধিজীবী মানুষ হিসেবে ক্রন্দনরতা জননীর পাশে না থাকতে পারা কবির কাছে একটা অন্যায় এবং অমানবিক। তাই শিল্পী মানুষদের প্রতিবাদের ভাষায় অন্যায়-অত্যাচারের কথা যদি না থাকে, তাহলে তাদের শিল্পী সত্তা ব্যর্থ অর্থাৎ মানুষ হিসেবে অন্যায়ের অত্যাচারের প্রতিবাদ না করা মনুষ্যত্বের অপমান করা তাই কবি বলেছেন – “কেন তবে লেখা, কেন গান গাওয়া/ কেন তবে আঁকা আঁকি?”

যে ভাই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত হয়েছে। সেই ভাইয়ের মৃতদেহ দেখে যদি ক্রোধ না জাগে। অন্যায়ের প্রতিবাদের ভাষা যদি জাগরিত না হয় -তাহলে সমাজের সমস্ত কিছু মূল্যহীন‌ ভালোবাসা পারস্পরিক সহযোগিতা সবকিছুই বৃথা হয়ে যাবে। শাসকের স্বৈরাচারিতায়, ভালোবাসা -মূল্যবোধ শব্দগুলো অর্থহীন হয়ে পড়েছে বলে কবি বিস্মিত হন। যে মেয়ে নিখোঁজ যাকে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় জঙ্গলে পাওয়া গেছে। যার ওপর সমাজবিরোধী মানুষের অত্যাচার হয়েছে। তার বিচার চেয়ে মানুষ যখন বিধাতার উপর নির্ভরশীল হয় ;তখন মানাবিক মূল্যবোধসম্পম্ন কবির বিবেক প্রতিবাদে গর্জে উঠতে চায়।

কিন্তু কবি জানেন একা একা প্রতিবাদ করা যায় না। অথচ জন্মভূমির প্রতি দায়বদ্ধতা তিনি অস্বীকার করতে পারেন না। তাই কবি আকাশের দিকে চেয়ে না থেকে তার প্রতিবাদকে তার বিবেককে কবিতার মাধ্যমে জাগরিত করতে চান। তার বারুদ বিষ্ফোরণের আগে ফেটে পড়তে চায় । তাই কবিতা রচনার মধ্যদিয়ে তিনি প্রতিবাদ করতে চান ,শব্দের শক্তি দিয়েই তিনি বিস্ফোরণ ঘটাতে চান মানুষের মনে।

ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতার প্রশ্ন উত্তর mcq

১। “ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” – কবিতায় জননী ক্রন্দনরতা কারণ-
ক। শাসকের স্বৈরাচারীতায় মাতৃভূমির সন্তান অত্যাচারিত
খ। শাসকের দ্বিচারিতায় জননী বঞ্চিত
গ। সামাজিক অধিকারের জননী বঞ্চিত
ঘ। হিংসা হানাহানিতে জননী নিহত
উ। ক| শাসকের স্বৈরাচারিতায় জন্মভূমির সন্তান অত্যাচারিত

২। ক্রন্দনরতা জননীর পাশে না থাকলে , যা বৃথা বলে কবির মনে হয়েছে-
ক। আঁকাআঁকি, পড়াশোনা, গান গাওয়া
খ। আঁকাঁকি, গান গাওয়া, নাচ করা
গ। লেখালেখি, গান গাওয়া, নাচ করা
ঘ। লেখা, গান গাওয়া, আঁকাআঁকি   উঃ। ঘ। লেখা, গান গাওয়া, আঁকাআঁকি

৩। “কেন তবে লেখা , কেন গান গাওয়া”- এমন বলার অর্থ হল —
ক। লেখা – গান গাওয়া যাবে না
খ। লেখা – গাওয়ার অধিকার নেই
গ। লেখা- গাওয়ার মূল্যহীনতা
ঘ। লেখা- গাওয়ার অধিকার আছে   উ।‌ গ। লেখা – গাওয়ার মূল্যহীনতা

৪। “ কেন তবে আঁকাআঁকি ” – ‘ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন—
ক। আঁকাঁ-আঁকি মূল্যহীন
খ। আঁকার কোন দরকার নেই
গ। আঁকা-আঁকি করা যাবে না
ঘ। আঁকাঁ-আঁকি প্রয়োজন নেই।   উঃ। ক। আঁকা-আঁকি মূল্যহীন

৫। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত পেশায় একজন –
ক। গল্প লেখক
খ। সাংবাদিক
গ।‌ চিত্রশিল্পী
ঘ। বিদ্যালয়ের শিক্ষক   উঃ। খ। সাংবাদিক

৬।‌ কবি মৃদুল দাশগুপ্তের একটি কাব্যগ্রন্থের নাম-
ক। মহুয়া
খ। অবনী বাড়ি আছো?
গ।‌ সাতটির তারার তিমির
ঘ। গোপনে হিংসার কথা বলি  উঃ। গোপনে হিংসার কথা বলি

৭।‌ “ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ” কবিতাটি যে কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ?
ক। সোনার বুদ্বুদ
খ। গোপনে হিংসার কথা বলি
গ। এভাবে কাঁদে না
ঘ। ধানক্ষেত    উঃ। ঘ। ধানক্ষেত

৮। “ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ” কবিতায়- জননী কী অবস্থায় আছেন ?
ক। অপমানিতা
খ। হতাশাগ্রস্থ
গ। ক্রন্দনরতা
ঘ। দিন দরিদ্র   উঃ। গ। ক্রন্দনরতা

উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা আরো প্রশ্নের উত্তর দেখতে  click here

৯।‌ ‘ক্রন্দনরতা’ শব্দটির অর্থ কী?
ক। যে কাঁদছে
খ। যে মেয়ে কাঁদছে
গ। যে মা কাঁদছে
ঘ। নিয়ত ক্রন্দন করছে    উঃ। গ। যে মা কাঁদছে

১০। “ সে – ই কবিতার জাগে ” – কবিতার জাগে –
ক। কবির বিস্ফোরণ
খ। কবির বিবেক
গ। কবির হতাশা
ঘ। কবির বারুদ   উঃ। খ। কবির বিবেক

১১।‌ “ কেন তবে লেখা, কেন গান গাওয়া / কেন তবে আঁকাআঁকি ?”-এইসব ব্যর্থ হবে কারণ-
ক। ক্রন্দনরতা জননীর পাশে থাকলে
খ। ক্রন্দনরতা জননীর যদি দুঃখ না হয়
গ। ক্রন্দনরতা জননীর যদি হতাশা না জাগে
ঘ। ক্রন্দনরত জননীর পাশে এখন যদি না থাকি   উঃ। ঘ। ক্রন্দনরতা জননীর পাশে এখন যদি না থাকি

১২। “ ছিন্নভিন্ন জঙ্গলে ”- যে মেয়েটির দেহ পাওয়া গেছে, সে-
ক। মেয়েটি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
খ। তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি
গ। তাকে পাওয়া যায়নি
ঘ। নিখোঁজ     উঃ। ঘ। নিখোঁজ

১৩। “ জঙ্গলে তাকে পেয়ে ”- এখানে যার কথা বলা হয়েছে-
ক। নিখোঁজ মেয়ে
খ। নিখোঁজ ভাই
গ। জননীর মেয়ে
ঘ। ক্রন্দনরতা জননীর    উঃ। ক। নিখোঁজ মেয়ে

১৪। “ নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে / -না -ই যদি হয় ” – কী?
ক। বিবেক
খ। ক্রোধ
গ। রাগ
ঘ। ভালোবাসা    উঃ। খ। ক্রোধ

১৫। “ক্রন্দনরতা জননীর পাশে”- কবিতায় নিখোঁজ মেয়েটির দেহ যে অবস্থায় পাওয়া গেছে –
ক। ছিন্নভিন্ন
খ। এলোমেলো অবস্থায়
গ। হতাশাগ্রস্থ
ঘ। মৃত অবস্থায়   উঃ। ক।‌ ছিন্নভিন্ন

১৬। “আমি কি তাকাব আকাশের দিকে——” কিসের আশায়-
ক। জননীর বিচার চেয়ে
খ। নিখোঁজ মেয়েটির আশায়
গ। নিহত ভাইয়ের আশায়
ঘ। বিধির বিচার চেয়ে    উঃ। ঘ। বিধির বিচার চেয়ে

১৭। “ আমি তা পারিনা ” — কবি কি পারেন না ?
ক। বিধির বিচারের আশায় আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে
খ। নিখোঁজ মেয়েটির আশায়
গ। স্বৈরাচারী শাসনের বিচারের জন্য
ঘ। আকাশের দিকে তাকাতে পারেন না   উঃ। বিধির বিচারের আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে

১৮। “…যা পারি কেবল সে-ই কবিতায় জাগে ” —কবিতায় কী জাগে ?
ক। কবির ক্ষোভ
খ। কবির বিস্ফোরণ
গ। কবির বিবেক
ঘ। কবির বারুদ   উঃ। গ। কবির বিবেক

১৯। “ আমি তা পারি না”- আমি কে‌ ?
ক। কবি
খ। ক্রন্দনরতা জননী
গ। নিখোঁজ মেয়ে
ঘ। নিহত ভাই     উঃ। ক। কবি

২০। “ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ”- কবিতায় কবি কোথায় তাকাবেন না?
ক। নিহত ভাইয়ের দিকে
খ। আকাশের দিকে
গ। মাটির দিকে
ঘ। জননীর দিকে   উঃ। খ। আকাশের দিকে

২১। “ নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে ”- কবির মনে জাগিয়েছিল-
ক। অসন্তোষ
খ। আবেগ
গ। হতাশা
ঘ। ক্রোধ     উঃ। ঘ। ক্রোধ

২২। “ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ”- কবিতায় নিখোঁজ ছিন্ন ভিন্ন মেয়েটিকে পাওয়া গিয়েছিল-
ক। বাড়িতে
খ। জঙ্গলে
গ। মাঠে
ঘ। গ্রামে  উঃ। খ। জঙ্গলে

২২। “ কেন তবে আঁকাঁকি ”- এ কথার অর্থ হল-
ক। সৃষ্টিশীলতা মূল্যহীন
খ। আঁকাঁ-আঁকি করার প্রয়োজন নেই
গ। সৃজনী ক্ষমতার প্রকাশ
ঘ। দক্ষতা প্রকাশ      উঃ। ক। সৃষ্টিশীলতা মূল্যহীন

২৩। “ নিখোঁজ মেয়ে ”- কে জঙ্গলে পাওয়া গিয়েছিল-
ক। মৃত অবস্থায়
খ। ছিন্নভিন্ন অবস্থায়
গ। প্রাণহীন অবস্থায়
ঘ। এলোমেলো অবস্থায়   উঃ। খ। ছিন্নভিন্ন অবস্থায়

২৪। “ নিহত ভাইয়ের_________ দেখে ”- শূন্যস্থানে সঠিক শব্দটি কি?
ক। শবদেহ
খ। রক্তমাখা দেহ
গ। ছিন্নভিন্ন দেহ
ঘ। ভাইয়ের আকুতি    উঃ। ক। শবদেহ

২৫। নিজের বিবেক কে কবি যার সঙ্গে তুলনা করেছেন-
ক। বারুদ
খ। তীব্র প্রতিবাদ
গ। তীব্র অসন্তোষ
ঘ। প্রকৃত আলো    উঃ। ক। বারুদ

২৬। “ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ” কবিতায়- ক্রন্দনরতা জননী হলেন-
ক। কবির জননী
খ। নিহত ভাইয়ের জননী
গ। কবির গ্রাম
ঘ। মাতৃভূমি      উঃ। ঘ। মাতৃভূমি

২৭। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত কার পাশে থাকতে চেয়েছেন?
ক‌। দরিদ্র জননীর পাশে
খ। অসহায় জননীর পাশে
গ। রক্তাক্ত জননীর পাশে
ঘ। ক্রন্দনরতা জননীর পাশে   উঃ। ঘ। ক্রন্দনরতা জননীর পাশে

২৮‌। “ আমি তা পারিনা ”- যা না পারার কথা বলা হয়েছে-
ক। বিধির কাছে প্রার্থনা না করতে পারা
খ। নিখোঁজ মেয়েটির সন্ধান না করতে পারা
গ। বিধির বিচারের আশায় আকাশে তাকিয়ে থাকা
ঘ। জননীর জন্য প্রতিবাদ না করতে পারা   উঃ। গ। বিধির বিচারের আশায় আকাশে তাকিয়ে থাকা

২৯। “ ছিন্নভিন্ন মেয়ে টিকে”- দেখে কবি তাকাতে চান না
ক। আকাশের দিকে
খ। দরিদ্র মানুষের দিকে
গ। শহরের দিকে
ঘ। নিখোঁজ মেয়েটির দিকে   উঃ। ক। আকাশের দিকে

৩০। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত “ বিবেক ” বলতে বুঝিয়েছেন
ক। প্রতিবাদকে
খ। প্রতিবাদী বিবেক
গ। প্রতিবাদী বোধ
ঘ। প্রতিবাদী মানসিকতা   উঃ। গ। প্রতিবাদী বোধ

বিশেষজ্ঞ পরামর্শ:- এই কবিতা থেকে MCQ প্রশ্নের উত্তর করার সময় তোমরা অপশন গুলো অর্থ বুঝে উত্তর করবে। কেননা কবিতাটিতে প্রত্যেকটি লাইনের অর্থ ভিন্ন ভিন্ন আছে। তাই প্রত্যেকটি লাইনের অর্থ ভালো করে বুঝে নিয়ে অপশন গুলো চুস করতে হবে।

ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতার প্রশ্ন উত্তর saq

১। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত ক্রন্দনরতা জননীর পাশে থাকবেন কেন?
উঃ। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত ক্রন্দনরতা জননীর পাশে দাঁড়াতে চান। কারণ এমন না হলে সমাজের সমস্ত মূল্যবোধ অর্থহীন হয়ে যাবে। শিল্পীর সৃজনীশক্তির কোন মূল্য থাকবে না।

২। নিখোঁজ মেয়েটির উপর অমানবিক অত্যাচারের মতো জঘন্য অপরাধের জন্য তিনি বিধির বিচারের আশায় থাকবেন না কেন?
উঃ। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত মনে করেন, অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বিধির উপর নির্ভরশীলতা অক্ষমতার পরিচয়। নিখোঁজ মেয়েটির উপর হওয়া জঘন্য অপরাধের বিচারের জন্য বিধির ওপর নির্ভরশীলতা নিরর্থক।

৩। “ না-ই যদি হয় ক্রোধ”- কি কারনে ক্রোধ হবে?
উঃ। কবি মৃদুল দাশগুপ্তের মনে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত ভাইয়ের শপদেহ দেখে তীব্র ক্রোধের সঞ্চার হয়।

৪। জননী ক্রন্দনৱতা কেন ?
উ। মাতৃভূমির স্বরূপ জননী ক্রন্দনরতা। কারণ শাসকের স্বৈরাচারী এবং নির্মম অত্যাচারে তার সন্তান নিহত, রক্তাক্ত। তাই জননী কাঁদছেন।

৫। জননীর পাশে না থাকলে কী কী ব্যর্থ হয়?
উঃ। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত “ক্রন্দনরতা জননী পাশে “ জানিয়েছেন যে- যে জননী ক্রন্দনরতা তার পাশে যদি না দাঁড়ানো হয়, তাহলে লেখা, গান গাওয়া, আঁকা-আঁকি এইসব মূল্যহীন ।

৬। “ আমি তা পারি না” -কবি কী পারেন না ?
উঃ। “ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে ” কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত, যে মেয়েটি নিখোঁজ, ছিন্ন ভিন্ন অবস্থায় জঙ্গলে পাওয়া গেছে- তার বিচার চেয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বিধির ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারেন না।

৭। “ যা পারি কেবল ” -কে কী পারেন ?
উ।‌ কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তার কবিতার মাধ্যমে, লেখনিশক্তির মাধ্যমে, প্রতিবাদের ভাষা ছড়াতে পারেন। বারুদের মতো তার প্রতিবাদকে বিস্ফোরণের আগে জাগরিত করে তুলতে পারেন।

৮।‌ “ক্রন্দনতার জননীর পাশে”- কবিতায় কবি মূল্যবোধ বলতে কি বুঝিয়েছেন?
উ। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত মূল্যবোধ বলতে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা, সমাজের প্রতি ভালোবাসাকে বুঝিয়েছেন অর্থাৎ সমাজের অন্যায় অত্যাচার দেখে যদি প্রতিবাদ না জাগরিত হয়, তাহলে সমাজের মূল্যবোধ অর্থাৎ দায়বদ্ধতা অর্থহীন হয়ে যায়।

৯। “ কেন -বা সমাজ”- সমাজ কিসের জন্য?
উঃ। সামাজিক জীব হিসেবে মানুষের সুস্থ সমাজের জন্য সমাজের কিছু দায়বদ্ধতা এবং কর্তব্য থাকে। যখন মানুষ এই দায়বদ্ধতা এড়িয়ে অন্যায় অত্যাচারকে মেনে নেয়। তখন সমাজের ভালোবাসা, দায়বদ্ধতা সবকিছুই অর্থহীন হয়।

১০। “ যে মেয়ে নিখোঁজ ”- মেয়েটি কি কারনে নিখোঁজ ?
উ। শাসকের রাজনৈতিক দলাদলিতে এবং সমাজবিরোধী মানুষের পাশবিক, অমানবিক, ঘৃণ্য অত্যাচারের শিকার এক নিরপরাধ মেয়ে। অর্থাৎ রাজনৈতিক স্বার্থে -চরম অবক্ষয়িত সমাজে মেয়েটি নিখোঁজ।

১১। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত ক্রন্দনরতা জননীর পাশে দাঁড়াতে বলেছেন কেন ?
উঃ। ক্রন্দনরতা জননীর পাশে না থাকলে লেখালেখি, গান গাওয়া, আঁকা-আকি- এই সমস্ত সামাজিক সৃষ্টিশীলতা ব্যর্থ হয়ে যাবে অর্থাৎ সমাজের দায়বদ্ধতার দিক থেকে যে মা ক্রন্দনরতা অর্থাৎ অত্যাচারিতা তার পাশে কবি দাঁড়াতে বলেছেন অন্যায়ের প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে।

১২। “নাই যদি হয় ক্রোধ ” -কি দেখে ক্রোধ হবে ?
উঃ শাসকের অমানবিক এবং অকথ্য অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভাই নিহত হয়েছে। তার শবদেহ দেখে সামাজিক মানুষ হিসেবে কবির ক্রোধ জন্মায়।

১৩।  “জননী”  বলতে কবি মৃদুল দাশগুপ্ত কি বুঝিয়েছেন ?
উঃ। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত জননী বলতে মাতৃভূমি স্বদেশ অর্থাৎ বঙ্গ জননীর কথা বলতে চেয়েছেন। প্রকারান্তে তিনি স্বদেশ ভূমিকেই জননী বলেছেন। এই জননী ক্রন্দনরতা অর্থাৎ লাঞ্চিতা অপমানিতা। তার সন্তান রক্তাক্ত

১৪। ” ক্রন্দনরতা জননীর পাশে”-  কবিতায়  বারুদ  কীসের প্রতীক?
উ। ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতায় “বারুদ” প্রতিবাদের প্রতীক । সমাজে হওয়া অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে কবি মৃদুল দাশগুপ্ত বারুদের মতো প্রতিবাদ ছড়িয়ে দিতে চান তার কবিতার মাধ্যমে।

১৫। “ক্রন্দনরতা জননীর পাশে”- কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
উ। কবি মৃদুল দাশগুপ্তের ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতাটি ধানক্ষেত নামক কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

১৬। ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটি কোন্ পটভূমিতে লেখা?
উঃ। ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ এক সংকটময় পরিস্থিতির সময়ে রচিত। কবিতাটি ২০০৬ সালে হুগলির সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ আন্দোলনের পটভূমিকায় রচিত।

১৭। “এন যদি না-থাকি”—কোথায় না থাকার কথা বলা হয়েছে?
উ: মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় ক্রন্দনরতা জন্মভূমি তথা জননীর পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন।

১৮। “এখন যদি না-থাকি”—– এখন বলতে কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে?
উ:। সমাজের অবক্ষয়িত সমাজে শাসকের স্বৈরাচারিতায় নির্মম অত্যাচারে মাতৃভূমির সন্তান লাঞ্ছিত রক্তাক্ত। এমন অবস্থায় কবি লাঞ্ছিত জননীর পাশে দাঁড়াতে বলেছেন। এখন বলতে কবি এই অত্যাচারিত লাঞ্চিত সময়ের কথাই বলেছেন।

উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা আরো প্রশ্নের উত্তর দেখতে   click here

১৯। “কেন তবে গান গাওয়া”—এই দ্বিধার কারণ কী?
উঃ। মাতৃভূমির সন্তানের প্রতি অন্যায় অত্যাচারে যদি প্রতিবাদ ধ্বনিত না হয় যদি লাঞ্ছিত জননীর পাশে না দাঁড়ানো হয় তাহলে একজন শিল্পী হিসেবে তার শিল্পী সত্তা নিয়ে দ্বিধা সৃষ্টি হবেই। কারণ একজন শিল্পী সর্বদা সত্যকে উদঘাটন করে প্রতিবাদে মুখরিত হন।

২০। “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে”— কি কারনে ভাই নিহত হয়েছে ?
উ। তৎকালীন সময়ে কৃষি জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে এবং সরকারের স্বৈরাচারী তার নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে মাতৃভূমির সন্তান তথা ভাই নিহত হয়েছে।

২১। “না-ই যদি হয় ক্রোধ”—ক্রোধের কথা কেন বলা হয়েছে?
উ। কৃষি জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে কবি মৃদুল দাশগুপ্তের মনে তীব্র ক্রোধের সঞ্চার হওয়ার কথা এখানে বলা হয়েছে।

২২।‌ “ কেন তবে লেখা”- কেন এমন মন্তব্য করা হয়েছে?
উঃ কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তার “ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” কবিতায় এমন মন্তব্য করেছেন। যে মাতৃভূমি জননী ক্রন্দনরতা, তার পাশে যদি না দাঁড়ায় তাহলে সমাজের সমস্ত কিছুই মূল্যহীন।

২৩।  “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে ” -কে এই ‘ নিহত ভাই ’ ?
উ। “ক্রন্দনরতা জননীর পাশে”- কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত নিহত ভাই বলতে কৃষি-জমি অধিগ্রহণ আন্দোলনে সরকারের স্বৈরাচারিতা এবং নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত মানুষজনদেরকেই ভাই বলে সম্বোধন করেছেন।

২৪।  “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে “-  কবির কী মনে হয় ?
উ:। শাসকের স্বৈরাচারিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে কবি মৃদুল দাশগুপ্তের মনে তীব্র ক্রোধ জাগরিত হয়।

২৫। “ নাই যদি হয় ক্রোধ ” — এখানে কোন্ ক্রোধের কথা বলা হয়েছে ?
উঃ। নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে কবি মৃদুল দাশগুপ্তের মনে ক্রোধের সঞ্চার হওয়ার কথা আলোচিত অংশে বলা হয়েছে।

২৬। “ নাই যদি হয় ক্রোধ ” — যদি ক্রোধ না হয় তাহলে কী হবে ? অথবা কবি এমন মন্তব্য করেছেন কেন?
উ।‌ কবি মৃদুল দাশগুপ্ত নিহত ভাইয়ের শপদেহ দেখে ক্রোধে ফেটে পড়েছেন। তাই নিহত ভাইয়ের মৃতদেহ দেখে যদি কারও ক্রোধ না জন্মায় তাহলে সমাজে ভালোবাসা মূল্যহীন।

২৭। “ কেন ভালোবাসা , কেন – বা সমাজ / কীসের মূল্যবোধ ! ” — কবি কেন এমন মন্তব্য করেছেন? অথবা:-কোন্ মানসিক যন্ত্রণা থেকে কবি এ কথা বলেছেন ?
উ।‌ ‘ ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত রাজনৈতিক অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত ভাইয়ের মৃতদেহ দেখে তীব্র মানসিক যন্ত্রণা থেকে এমন মন্তব্য করেছেন।

২৮। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত কোথায় থাকতে চেয়েছেন?
উঃ। ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত ক্রন্দনরতা মাতৃভূমির পাশে অর্থাৎ যে মাতৃভূমি ক্রন্দনরতা, তার পাশে থাকতে চেয়েছেন।

২৯। “ জঙ্গলে তাকে পেয়ে ” —এই অবস্থায় কী করা উচিত নয় বলে কবি মনে করেছেন ?
উঃ। নিখোঁজ মেয়েটিকে জঙ্গলে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পেয়ে-তার উপর হওয়া এই পাশবিক নির্যাতনের প্রতিবাদ না করে বিধির বিচারের অপেক্ষায় আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা উচিত নয়- বলে কবি মনে করেছেন।

৩০। “কেন ভালোবাসা, কেন-বা সমাজ / কীসের মূল্যবোধ!”—কোন মানসিক যন্ত্রণা থেকে কবি এ কথা বলেছেন? অথবা:- কবি এমন মন্তব্য করেছেন কেন?
উঃ। ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত নিহত ভাইয়ের মৃতদেহ দেখে তীব্র মানসিক যন্ত্রণা থেকে এমন মন্তব্য করেছেন।

৩১। “আমি তা পারি না।”—কবি কী পারেন না?
উঃ। মৃদুল দাশগুপ্ত তার ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় যে মেয়েটি নিখোঁজ, ছিন্নভিন্ন অবস্থায় জঙ্গলে পাওয়া গেছে- তার বিচার চেয়ে কবি বিধির বিচার অর্থাৎ আকাশের দিকে তাকাতে পারেন না।

৩২। “যা পারি কেবল”— কে, কী পারেন ?
উঃ। যে মেয়েটি নিখোঁজ ছিন্নভিন্ন অবস্থায় জঙ্গলে পাওয়া গেছে তার বিচারের জন্য কবি আকাশের দিকে তাকিয়ে না থেকে তিনি তার প্রতিবাদের ভাষাকে, তার বিবেককে কবিতার মাধ্যমে জাগিয়ে তুলতে চান। জঙ্গলে ছিন্নভিন্ন মেয়েটিকে দেখে কবি প্রতিবাদকে কবিতার মাধ্যমে, তাঁর বিবেককে জাগিয়ে রাখতে পারেন।

৩৩। “সে-ই কবিতায় জাগে”— কবিতায় কি জাগে? অথবা:- কী, কেন কবিতায় জাগে?
উঃ। কবি মৃদুল দাশগুপ্তের প্রতিবাদের ভাষা বারুদের বিস্ফোরণের আগে কবিতায় জাগে অর্থাৎ যে মেয়েটি ছিন্নভিন্ন অবস্থায় জঙ্গলে পাওয়া গেছে। তার বিচারের জন্যই কবি তার প্রতিবাদকে কবিতার মাধ্যমে জাগরিত করে তুলতে চান।

৩৪। “সে-ই কবিতায় জাগে / আমার বিবেক,” – কবি বিবেককে কার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
উঃ। ক্রন্দনরতা জননীর পাশে নামাঙ্কিত কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তার বিবেককে বারুদের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

৩৫। “আমার বিবেক, আমার বারুদ”—। কবির বিবেক কী করে? অথবা:- “আমার বিবেক” বলতে কি বোঝানো হয়েছে?
উঃ। ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত এমন মন্তব্য করেছেন। কবি তার বিবেক বলতে তার প্রতিবাদের ভাষাকে বলেছেন। অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার ভাষাকেই আমার বিবেক বলেছেন। যা বারুদের আকারে বিস্ফোরণের আগে ফেটে পড়বে।

৩৬। “ কেন ভালোবাসা, কেন-বা সমাজ” – কবি কেন এমন মন্তব্য করেছেন? অথবা:- কবির এ কথা বলার কারণ কী ?
উঃ। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তার “ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” শীর্ষক কবিতায় এমন মন্তব্য করেছেন। যে মা ক্রন্দনরতা অর্থাৎ যে মাতৃভূমির ওপর অত্যাচার হয়েছে- সরকারের নৈরাচারিতায় রক্তাক্ত হয়েছে, তার পাশে যদি না দাঁড়ায় তাহলে সমাজে ভালোবাসা, সমস্ত কিছুই মূল্যহীন।

৩৭। ‘কীসের মূল্যবোধ!’- কবি মূল্যবোধ বলতে কি বুঝিয়েছেন ? অথবা:- কবি এমন মন্তব্য করেছেন কেন? অথবা:-এ কথা বলার কারণ কী?
উ। সমাজে বসবাসকারী মানুষের বিরুদ্ধে ঘটে চলা অন্যায়ের প্রতিবাদ যদি জাগরিত না হয়, তাহলে সমাজ মূল্যহীন। অত্যাচারিত মাতৃভূমির তথা ক্রন্দনরতা জননীর পাশে যদি না দাঁড়ায়, তাহলে সমাজে ভালোবাসা, আত্মীয়তা অর্থহীন তথা মূল্যহীন। অর্থাৎ সামাজিক অবক্ষয়ে মানুষের মুখ ফিরিয়ে থাকাটা , মূল্যবোধহীনতার পরিচয়।

৩৮। “জঙ্গলে তাকে পেয়ে” – জঙ্গলে কাকে পাওয়া গেছে? অথবা:- কাকে, কি অবস্থায় জঙ্গলে পাওয়া গেছে?, অথবা:- কী অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল?
উ‌। শাসকের রাজনৈতিক দলাদলিতে এবং সমাজবিরোধী মানুষের পাশবিক অত্যাচারে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় জঙ্গলে এক মেয়েকে পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক সন্ত্রাসের শিকারের অত্যাচারিতা মেয়েটিকে জঙ্গলে পাওয়া গেছে।

৩৯। “আমি কি তাকাব আকাশের দিকে” —এ কথা বলার কারণ কী? অথবা কবি এমন মন্তব্য কেন করেছেন? অথবা কবি আকাশের দিকে তাকাবেন না কেন?
উঃ। “ক্রন্দনরতার জন্যই পাশে”- শীর্ষক কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত এমন মন্তব্য করেছেন। যে মেয়েটি নিখোঁজ ছিন্ন ভিন্ন অবস্থায় যাকে জঙ্গলে পাওয়া গেছে তার বিচার চেয়ে কবি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন না অর্থাৎ তিনি বিধাতার ওপর সবকিছু ছেড়ে দিতে পারেন না। তিনি কবিতার মাধ্যমে তার প্রতিবাদ ছড়াতে চান।

৪০। “এখন যদি না-থাকি” —কোথায় না-থাকার কথা বলা হয়েছে?
উঃ। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত অত্যাচারিত, লাঞ্ছিত, নিপীড়িত মাতৃভূমির পাশে দাঁড়ানো কথা এখানে বলেছেন। অর্থাৎ যে মাতৃভূমির সন্তানের ওপর অত্যাচার হয়েছে রক্তাক্ত হয়েছে সেই মাতৃভূমি স্বরূপ জননীর পাশে কবি দাঁড়াতে চান তার বিবেকবান শিল্পী সত্তা নিয়ে।

৪১। ‘কেন গান গাওয়া’— কবি এমন মন্তব্য কেন করেছেন ? অথবা:-এ কথা বলার কারণ কী?
উঃ। ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ নামক কবিতায় অবক্ষয়িত সমাজে শাসকের স্বৈরাচারিতায় জন্মভূমির সন্তান অত্যাচারিত, লাঞ্ছিত, শোষিত এবং নিপীড়িত- তাদের পাশে যদি না দাঁড়ায় তাহলে শিল্পীর গান গাওয়া ব্যর্থ অর্থাৎ একজন প্রকৃত শিল্পী হিসেবে যদি অত্যাচারের বিরুদ্ধে গর্জে না ওঠেন তাহলে তার শিল্পী সত্তা ব্যর্থ।

৪২। “যে-মেয়ে নিখোঁজ”- ‘কোন্ মেয়েটির এখানে কথা বলা হয়েছে?
উঃ। ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত, রাজনৈতিক দলাদলিতে, সমাজবিরোধী মানুষের পাশবিক অত্যাচারের শিকার, যে মেয়েটি নিখোঁজ, ছিন্ন ভিন্ন অবস্থায় জঙ্গলে পাওয়া গেছে- এখানে সেই মেয়েটির কথাই বলা হয়েছে।

৪৩। ‘যে-মেয়ে নিখোঁজ’—মেয়েটিকে কীভাবে পাওয়া যায়?
উঃ। ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় সমাজবিরোধী মানুষের অত্যাচারে অত্যাচারিত মেয়েটিকে জঙ্গলে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পাওয়া যায়।

ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

১। “আমার বিবেক, আমার বারুদ/ বিস্ফোরণের আগে”- কবির বারুদ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? বিস্ফোরণের আগে বলা হয়েছে কেন ? অথবা:-—কবির বারুদ কী? ‘বিস্ফোরণের আগে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উঃ।‌ কবি মৃদুল দাশগুপ্তের রচিত “ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” নামক কবিতা তৎকালীন সময়ে অবক্ষয়িত সমাজে- শাসকের স্বৈরাচারিতা, অমানবিক অত্যাচার এবং মানুষের অধিকারকে খর্ব করা- এইসব বিষয়গুলি কবিকে তীব্রভাবে ব্যথিত করে তোলে। এমন পরিস্থিতিতেই কবি তার প্রতিবাদের ভাষা স্বরূপ- উক্ত কথাগুলি বলেছেন।

বারুদ কী : বারুদ শব্দের সাধারণ অর্থ হল গুলি-গোলা ছোড়বার জন্য ব্যবহৃত বিস্ফোরক। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তার বারুদ বলতে বুঝিয়েছেন- তার মাতৃভূমির সন্তানের ওপর হওয়া নির্মম অত্যাচারের প্রতিবাদের ভাষাকে। মাতৃভূমির সন্তানের রক্ত দেখে- কবি তার প্রতিবাদের ভাষা- বারুদের মতো বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে চায়।

“বিস্ফোরণের আগে” তাৎপর্য:- কবি তৎকালীন সময়ে ঘটে চলা অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন। তিনি মানুষকে সচেতন করতে চেয়েছেন তার কবিতার ভাষার মাধ্যমে। বিস্ফোরণের আগে যেমন একটা প্রস্তুতি থাকে, ঠিক তেমনি কবিও তার বারুদ স্বরূপ প্রতিবাদের ভাষাকে বিস্ফোরণের আগেই তার কবিতার মাধ্যমে জাগরণিত করে তুলতে চান অর্থাৎ মাতৃভূমির সন্তানের বিরুদ্ধে যে অন্যায় অত্যাচার হয়েছে তার বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ এবং প্রতিবাদ উগরে দিয়েছেন। নিহত ভাইয়ের মৃতদেহ- তার মনে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। যে মেয়ে নিখোঁজ ছিন্ন ভিন্ন জঙ্গলে যাকে পাওয়া গেছে- তার বিচার চেয়ে তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন না।

উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা আরো প্রশ্নের উত্তর দেখতে   click here

২। ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবি জননীকে কেন ক্রন্দনরতা বলেছেন, তা নিজের ভাষায় লেখ । কবি এখানে নিজেকে কোন ভূমিকায় দেখতে চেয়েছেন? । অথবা, ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় জননীকে ‘ক্রন্দনরতা’ বলে উল্লেখ করেছেন কেন? কবি তাঁর কী কর্তব্য করবেন বলে কবিতায় জানিয়েছেন?

উঃ। ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তৎকালীন সময়ের সামাজিক অবক্ষয় এবং শাসকের স্বৈরাচারী শাসনের এক বর্বর চিত্র তুলে ধরেছেন। শিল্পের জন্য সুফলা কৃষিজমি অধিগ্রহণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে চরমভাবে লাঞ্ছিত এবং রক্তাক্ত হতে হয়।

জননীকে ‘ক্রন্দনরতা’ বলেছেন কেন?- রাজনৈতিক অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বহু মাকে তার সন্তানকে হারাতে হয়। শাসকের স্বৈরাচারী শাসনে মানুষের অধিকার ভুল্ঠিত হয়েছে। মানুষকে তার অধিকার চাইতে গিয়ে রক্তাক্ত হতে হয়েছে। প্রাণ হারাতে হয়েছে। এসব ঘটনা কবিকে ব্যথিত করে তুলেছে। যে মেয়ে নিখোঁজ তার ছিন্নভিন্ন দেহ জঙ্গলে দেখে কবি বিধাতার ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে পারেন না।শাসকের নির্মম স্বৈরাচারী শাসনে মানুষের অধিকার খর্ব হয়েছে। সন্তানের মৃত্যু আর রক্ত-লাঞ্ছনায় এবং নিপীড়নের কান্নায় মাতৃভূমি আজ ক্রন্দনরতা। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত জননী বলতে মাতৃভূমিকেই বলেছেন। সেই মাতৃভূমির সন্তানেরাই অত্যাচারিত। তাই মাতৃভূমি আজ ক্রন্দনরতা ।

কী কর্তব্য করবেন-কবি মৃদুল দাশগুপ্ত নিপীড়িত, শোষিত, অত্যাচারিত মাতৃভূমির তথা ক্রন্দনরতা জননীর পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন।। যে ভাই প্রতিবাদ করতে গিয়ে রক্তাক্ত হয়েছে, তার শবদেহ দেখে কবির ক্রোধ জাগরিত হয় । যে মেয়ের উপর অত্যাচার হয়েছে, যে মেয়ে নিখোঁজ, ছিন্ন ভিন্ন জঙ্গলে তাকে পাওয়া গেছে- তার বিচার চেয়ে কবি কখনোই আকাশের দিকে চেয়ে থাকতে পারেন না। তিনি একজন বিবেকবান শিল্পী। তার শিল্পী সত্তা দিয়ে- তার লেখনির শক্তিতে তিনি প্রতিবাদে মুখরিত হবেন।  তাই কবি তার বিবেককে বারুদের বিস্ফোরণের আগে কবিতার মাধ্যমে জাগিয়ে তুলতে চান।

৩ । “আমি তা পারি না।”—কবি কী না পারার কথা বলেছেন? কেন তিনি এ কথা বলেছেন?
অথবা, “আমি তা পারি না।” ―বক্তা কী পারেন না? বক্তা কীভাবে তার কর্তব্য পালন করতে চান?

উঃ।কবি কী না পারার কথা বলেছেন?- ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত এমন মন্তব্য করেছেন। যে মায়ের সন্তানের ওপর অত্যাচার হয়েছে, যে মেয়ে নিখোঁজ, ছিন্ন ভিন্ন জঙ্গলে, যাকে পাওয়া গেছে- তার বিচার চেয়ে কবি কখনই আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন না। অর্থাৎ তিনি তার বিচারের জন্য ঈশ্বরের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে পারেন না। অর্থাৎ শাসকের স্বৈরাচারী শাসন এবং তার বর্বরতার বিরুদ্ধে, তিনি হাতগুটিয়ে বসে থাকতে পারেন না।

কেন তিনি এ কথা বলেছেন?-  শাসক যখন মানুষের অধিকারকে খর্ব করে, তার নৈরাজ্যের জাল বিস্তার করে- তখন সাধারণ মানুষের বিধির কাছে বিচার চেয়ে বসে থাকা নিরর্থক। তাই কবি একজন বিবেকবান শিল্পী হিসাবে বিধির বিচারের আশায় বসে থাকতে পারেন না। তিনি তার প্রতিবাদ বারুদের বিস্ফোরণের আগে কবিতার মাধ্যমে জাগরিত করে তুলতে চান।

সমাজকে সচেতন করে তুলতে চান তার কবিতার মাধ্যমে। তিনি তার কবিতায় প্রতিবাদকে মুখরিত করতে পারেন‌। যে মেয়ে নিখোঁজ ছিন্ন ভিন্ন তাকে জঙ্গলে পাওয়া গেছে, তার বিচার চেয়ে তিনি কখনই চুপ করে থাকতে পারেন না। কারণ তিনি একজন শিল্পী, শিল্পী সত্তা সর্বদা সত্যকে প্রকাশ করে প্রতিবাদে এগিয়ে আসেন।
তার কবিতায় কবি জাগিয়ে তুলতে চান নিজের বিবেককে। কবি কবি সামাজিক মানুষ । সমাজের প্রতি তার দায়বদ্ধতা আছে।

৪ । “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে/না-ই যদি হয় ক্রোধ… কবি কাকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করেছেন? কবি কেন এমন কথা বলেছেন ? অথবা:- কবি র এই প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ কর।অথবা:- নিহত ভাইয়ের শপদেহ দেখে কবি মৃদুল দাশগুপ্তের যে প্রতিক্রিয়া তা কবিতা অনুসরণে লেখ। অথবা:- “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে কবি মৃদুল দাশগুপ্তের প্রতিক্রিয়া কী?, তিনি কাকে নিহত ভাই বলেছেন এবং কেন বলেছেন?

উঃ। “ক্রন্দনরতা জননী পাশে” শীর্ষক কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত “নিহত ভাই “ বলতে তৎকালীন সময়ে কৃষিজমি অধিগ্রহণ আন্দোলনে শহীদ সাধারণ মানুষদের বুঝিয়েছেন। কিন্তু তিনি শুধু কৃষিজমি আন্দোলনের নিহত মানুষদের কথাই নয় , তৎকালীন সময়ে অত্যাচারিত বঙ্গজননীর তথা মাতৃভূমির সন্তানদেরকেই নিহত ভাই বলেছেন।

অবক্ষয়িত সমাজে- শাসকের স্বৈরাচারী শাসনে, এবং নিষ্ঠুর অত্যাচারে মাতৃভূমির সন্তান, যখন শোষিত, নিপীড়িত, লাঞ্ছিত এবং রক্তাক্ত হয়- তখন কবি মনে তীব্র ক্রোধের জন্ম দেয় । এমন রক্তাক্ত মাতৃভূমি জননী ক্রন্দনরতা। তাই নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে যদি ক্রোধ না জন্মায়, তাহলে সমাজের ভালবাসা আত্মীয়তা সব মূল্যহীন। তাই কবি তার বিবেকবান শিল্পী সত্তা নিয়ে এই রক্তাক্ত ক্রন্দনরতা জননীর পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন, তার প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে।

তিনি শাসকের স্বৈরাচারিতার বিচারের জন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন না। তিনি তার প্রতিবাদের ভাষা- তার বিবেককে- তার কবিতার মাধ্যমে জাগিয়ে তুলতে চান বারুদের বিস্ফোরণের আগে। তিনি বাস্তব থেকে মুখ ফিরিয়ে নেননি বরং এমন সংকটের মাঝে দাঁড়িয়ে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞা করতে প্রস্তুত।

বিশেষজ্ঞ পরামর্শ:-
“ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” কবিতাটি সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ আন্দোলনের পটভূমিকায় রচিত। কবিতাটি মূলত সরকারের তথা শাসকের স্বৈরাচারীতার বিরুদ্ধে একটা প্রতিবাদস্বরূপ। এই কবিতা থেকে প্রত্যেকটি রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তর প্রায় একই রকম। তাই নানা ধরনের প্রশ্ন না করে- ভালোভাবে বিষয়বস্তুটিকে পড়ো। বিষয়বস্তুটিকে ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারলে- যে কোন রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তর খুব সহজে করতে পারবে। আর অবশ্যই প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য তোমরা একটি কবিতার লাইন কোট করে ব্যবহার করবে। তোমার উত্তরের স্বপক্ষে। তাহলে উত্তরটি অথেন্টিক এবং জেনুইন হবে। সুন্দর হবে এবং ফুল মার্কস পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যাবে। আর অবশ্যই হাতের লেখা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার চেষ্টা করবেন।

for more question answers click here

Leave a Comment

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading