লেখক পরিচিতি- সতীনাথ ভাদুড়ী ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে ২৭ সেপ্টেম্বর বিহারে পূর্ণিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেওয়ার পর, আইন পাস করে আইনজীবী বাবার সঙ্গে কিছুকাল ওকালতি করেন। পরে তা ছেড়ে কংগ্রেসের যোগ দিয়ে পূর্ণিমা গ্রাম অঞ্চলে গঠনমূলক কাজ করতে থাকেন। জাতীয় আন্দোলনে যোগ দিয়ে ১৯৪০ থেকে ১৯৪৪ এর মধ্যে দীর্ঘ সময় কারাবাস করেন। ১৯৪৮ সালে কংগ্রেস ত্যাগ করে সমাজতন্ত্রী দলে যোগ দেন। আন্দোলনে অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে ১৯৪৫ এ রচিত উপন্যাস “জাগরী” তাকে খ্যাতি এনে দেয়। তার জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার পান ১৯৫০ সালে। এছাড়াও “ঢোড়াই চরিতমানষ”, “চিত্রগুপ্তের ফাইল” প্রভৃতি তার বিশিষ্ট গ্রন্থ।
বিষয় সংক্ষেপে
সৌখি পাঁচ বছর আগে জেলে গেছে। এদিকে দলের সদস্যরা তথা অনুচরেরা সৌখির বাড়িতে দু’বছর পর টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেয়। ফলে অসহনীয় দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ে এই বৃদ্ধা। অভাবের জন্য, শিশু নাতি এবং বউমাকে বেয়াই বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে, সে নিজে খই-মুড়ি বিক্রি করে দিন কাটাতে থাকে। একবার নাকে মুখে কম্বল ডেকে ঘুমিয়ে থাকার কারণে টোকার শব্দ শুনতে পাইনি।
জেল থেকে আগেভাগে ছাড়া পেয়ে হঠাৎই এক রাতে বাড়ি ফেরে সৌখী। ঘরে কিছু না থাকায় মা বিক্রির জন্য রাখা খই-মুড়িই খেতে দেয় ছেলেকে। রাতে শুয়ে শুয়ে পরদিন সকালে ছেলেকে কী খাওয়াবে— সেই চিন্তায় তার ঘুম হয় না। ছেলেকে তার প্রিয় আলুচচ্চড়ি দিয়ে ভাত খাওয়াতে হলে যে তেল-চাল-আলুর দরকার, তা কেনার মতো, পয়সাও তার নেই।
সকালে বাসনওয়ালার দোকানে সেটা চোদ্দো আনায় বিক্রি করে সেই পয়সায় জিনিস কেনে এবং উনুনে আলুচ্চড়ি চাপায়।। বৃদ্ধা মাকে শাস্তির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সে চুরির দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নেয়। বুড়ির কাতর অনুরোধ দারোগা বাবু কর্ণপাত পর্যন্ত করেন না। শোকে, দুঃখে, অপমানের জ্বালায়, বৃদ্ধা তখন মেঝেতে লুটিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে থাকে, আর তার উনুনের তরকারির পোড়া গন্ধ সারা পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
ডাকাতের মা mcq প্রশ্ন উত্তর
১.১) দোকানদার নগদ কত দামে সৌখীর মায়ের কাছ থেকে পেশকারের ঘটিটি কিনেছে ?
- ষোলো আনায়
- বারো আনায়
- আট আনায়
- চোদ্দো আনায় উঃ) ঘ) চোদ্দো আনায়
১.২) “টকটক……থেমে তিনবার হলে” – বুঝতে হবে কে এসেছে?
- পুলিশের লোক এসেছে
- সৌখীর নিজে এসেছে এসেছে
- দলের লোক টাকা দিতে এসেছে
- ডাকাত দলের লোক এসেছে উঃ দলের লোক টাকা দিতে এসেছে
১.৩) দারোগার সঙ্গে যাবার সময় সৌখি খাটিয়ার উপর রেখে গেল——
- তার ছেলের জন্য আনা খেলনা
- তার গায়ের পুরনো কম্বল
- তার বউয়ের জন্য আনা শাড়ি
- কোমর থেকে বার করা বাটুয়া উঃ) ঘ) কোমর থেকে বার করা বাটুয়া
for more questio aswers click here- বাঙ্গালির ভাষা ও সংস্কৃতি- প্রশ্নোত্তর
১.৪) “ডাকাতের……না হলে চলে না !” – কি কারনে ডাকাতের মায়ের ঘুম পাতলা না হলে চলে না?
- ছেলে ডাকাতি করে রাতে ফিরে
- দলের লোক আসবে এইজন্য
- পুলিশ এলে যাতে সতর্ক হওয়া যায়
- রাতবিরাতে কখন দরজায় টোকা পড়বে তার আওয়াজ শোনার জন্য উঃ ঘ) রাতবিরাতে কখন দরজায় টোকা পড়বে তার আওয়াজ শোনার জন্য
১.৫) সৌখীর ছেলের বয়স কত ? 2018
- চার–পাঁচ বছর
- আট–নয় বছর
- দু’বছর
- সাত–আট বছর উঃ)ক) চার–পাঁচ বছর
১.৬) “এখনও সে টাকা, …….টুয়ায় রয়েছে” – বাটুয়ায় কত টাকা ছিল ?
- পঞ্চাশ টাকা
- সত্তর টাকা
- আসি টাকা
- নব্বই টাকা উঃ)ঘ) নব্বই টাকা
১.৭) “এতদিন তার ডিউটি ছিল—-” সৌখীর ডিউটি কোথায় ছিল?
- গুদামে
- রান্নাঘরে
- বাগানে
- খামারে উঃ) ক) গুদাম 2016
১.৮) “পুলিশ…..লোক সে নয়”- কার কথা বলা হয়েছে ?
- সৌখীর মা
- সৌখীর বউ
- সৌখী
- সৌখীর বাবা উঃ)ক)সৌখীর মা
১.৯) সৌখী…..গিয়েছে আজ–সৌখীর ক’বছর হল জেলে গিয়েছে?
- সাত বছর
- দুই বছর
- তিন বছর
- পাঁচ বছর উঃ) ঘ) পাঁচ বছর
১.১০) “এর আগেরবার…..থেকে এনেছিল- সৌখী জেল থেকে কি এনেছিল ?
- নব্বই টাকা
- একটি কাপড়
- একটি কম্বল
- একটি চাদর উঃগ)একটি কম্বল
১.১১) দলের লোকেরা ক’বছর সৌখীর মাকে টাকা পাঠিয়েছিল?
- এক বছর
- দুই বছর
- তিন বছর
- চার বছর উঃ) খ)দুই বছর
১.১২) জেলেঠিকাদারদের থেকে সৌখির রোজগার করা টাকার পরিমান ছিল—
- আসি টাকা
- নব্বই টাকা
- বিরানব্বই টাকা
- একশ টাকা উঃ খ) নব্বই টাকা
১.১৩) “গন্ধগোকুল……….হবে বোধহয়”- গন্ধগোকুল হলো-
- নেকড়ে বাঘ
- চিতাবাঘ
- খট্ট্রাশ জাতীয় প্রাণী
- রাম ছাগল উঃ)গ) খট্ট্রাশ জাতীয় প্রাণী
১.১৪) “….এ আনন্দ……বার জায়গা নেই”- এত আনন্দ কার হয়েছে ?
- সৌখির বউয়ের
- সৌখির মায়ের
- সৌখির ছেলের
- সৌখির দলের লোকের উঃ) সৌখিন মায়ের
১.১৫) “পুলিশ…….লোক সে নয়”- এখানে কার কথা বলা হয়েছে ?
- সৌখির
- সৌখির মায়ের
- সৌখির বাবার
- সৌখির বউ উঃ) সৌখির মায়ের
১.১৬) “সখি এর আগে জেল খেটেছে”-
- একবার
- দুবার
- তিনবার
- চারবার উঃ)খ) দুবার
ডাকাতের মা saq প্রশ্ন উত্তর
২.১) “এ কি……কথা..” – দুঃখের কথাটা কি?
উঃ) “ডাকাতের মা”- গল্পে সৌখী পাঁচ বছর হলো জেলে গিয়েছে। সেজন্য সৌখির মা, আপাদমস্তক কম্বল মুড়ি দিয়ে নাক ডেকে ঘুমোলেও তাকে বকুনি দেবার মত বাড়িতে লোক নেই।- এটি তার কাছে দুঃখের কথা। ২০২০
২.২) “তাই বেশি রেমিশন …গেলাম”- বেশি রেমিশন পাবার কারণ কী ?
উঃ “ রেমিশন” কথার অর্থ শাস্তি থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া। জেলে থাকার সময় সৌখী হেড জমাদার সাহেবকে টাকা দিয়ে ঘুষ খাইয়েছিল।তাই জমাদার সাহেব , জেলার বাবুর কাছে তার শাস্তি নিষ্কৃতি পাওয়ার সুপারিশ করে দিয়েছিল। এইজন্য সৌখী বেশি রেমিশন পেয়ে গিয়েছিল।
২.৩) “ডাকাতের……না হলে চলে!”- ডাকাতের মায়ের ঘুম পাতলা না হলে চলে না কেন ?
উঃ) রাতবিরাতে কখন দরজায় টোকা পড়বে তার কোন ঠিক নেই। তাছাড়া তার ছেলেও রাতে বাড়ি ফিরতে পারে। এমনকি পুলিশেও আসতে পারে- এজন্য ডাকাতের মায়ের গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হলে চলবে না।তার ঘুম পাতলা হওয়া দরকার।
২.৪) “আইনের……খা আছে যে…”- আইনের ধারায় কী স্পষ্ট লেখা আছে ?
উঃ) সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ ডাকাতের মা ’ গল্পের উক্তিটির বক্তা হলেন আইনচঞ্চু পেশকার সাহেব। তার বাড়ি থেকে লোটা চুরি যাওয়ায় তিনি বলেন যে, আইনের ধারা স্পষ্ট লেখা আছে যে, চুরির খবর পুলিশকে না জানালে তার পরিণামে জেলও হতে পারে।
২.৫) “সেই…..মস্ত ভাবনা”- বুড়ির মস্ত ভাবনা কী ?
উঃ) সৌখী দীর্ঘদিন জেল খেটে রাত্রে বাড়ি ফিরেছে। পরের দিন সকালে সৌখীকে তার মা কী খেতে দিবে — এটাই ছিল বুড়ির অর্থাৎ ডাকাতের মায়ের মস্ত ভাবনা।
২.৬) “ঘটি……টকা লাগল”- ঘটি দেখে খটকা লাগার কারণ কি?
উঃ) “ডাকাতের মা” নামক ছোট গল্পে মাতাদিন পেশকার সাহেব দোকানে ঘটি কিনতে গিয়ে, একটি পুরনো ঘটি দেখে খটকা লাগে। কারণ, এই ঘটিটি ছিল তার বাড়ি থেকে চুরি হয়ে যাওয়া ঘটি, যার নিচে তারা চিহ্ন দেওয়া ছিল। এইজন্য ঘটি দেখে তিনি চিনতে পারেন।
২.৭) “আমি……ছি কাল রাত্রে”- কে ,কাকে উদ্দেশ্য করে একথা বলেছে ?
উঃ) সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ ডাকাতের মা ’ গল্পের অংশটির বক্তা সৌখী। সে দারোগাকে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য কথাগুলি বলেছে।
২.৮) “সে পাঁচিল ভাঙ……..হল না!…”- সে পাঁচিল ভাঙতে বুড়ির বিশেষ অসুবিধা হলো না কেন?
উঃ) পেশকারসাহেবের বাড়ির পাঁচিলটা মাত্র দু-আড়াই হাত গাঁথা হয়েছিল এবং তার দুপাশে মাটি আর ভাঙা ইটের পাহাড় পড়েছিল। সেইজন্য চুরি করতে, পাঁচিল ভাঙতে সৌখীর মায়ের বিশেষ অসুবিধা হয়নি।
for more questions answers click here
২.৯) “তখন………য়নি তার”- কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে?
উঃ) ‘ডাকাতের মা’ – গল্পে পাঁচ-সাত বছর আগে সৌখির মায়ের বাড়িতে বন্দুকের খোঁজে, পুলিশ এসেছিল। তখন তাদের মাথা হেঁট হয়নি । আলোচিত এই অংশে – সেই সময়কার কথাই বলা হয়েছে। 2022
২.১০) “নতুন…….ড়ির ঘুম আসতে চায় না”- কেন?
উঃ) দীর্ঘদিন পর তার ছেলে সৌখি জেল থেকে রাত্রে বাড়ি ফিরেছে। নানা দুশ্চিন্তায় তার মাথা গরম হয়ে উঠছে। কারণ কাল সকালে তার ছেলেকে কি খেতে দেবে- এটাই এখন তার সবচেয়ে বড় চিন্তা। তাই তার নতুন কম্বল মুড়ি দিয়েও ঘুম আসতে চাইছে না।2018
২.১১) “এতদিন……..ছেলে”- কতদিন পর, কোথা থেকে ছেলে বাড়ি ফিরেছে ?
উঃ) “ডাকাতের মা” নামক ছোটগল্পে ডাকাতের মায়ের ছেলে অর্থাৎ সৌখি প্রায় পাঁচ বছর পর জেল খেটে রাত্রে বাড়ি ফিরেছে। এখানে সৌখির বাড়ি ফেরার কথা বলা হয়েছে । 2016
২.১২) “সৌখি এ…….চাই না”- কোন প্রশ্ন কানে তুলতে চায় না ?
উঃ) দীর্ঘদিন পর সৌখি জেল খেটে রাত্রে বাড়ি ফিরেছে। জেলে থাকা কালীন সৌখির কোনো অসুখ বিসুখ হয়েছিল কিনা, সৌখির মা এই প্রশ্ন করে। কিন্তু সৌখি এই প্রশ্ন কানে তুলতে চাইনি। 2016
২.১৩) “নিজের…….ব কেটে ফেলেছিল”- কে , কেন জিব কেটে ফেলেছিল ?
উঃ) সৌখীর বাবা যে দলের ডাকাতি করতো তাদের মধ্যে একজন আহত হয় এবং পুলিশের হাতে ধরা পড়ে , কিন্তু পুলিশ যাতে তার কাছ থেকে কোন তথ্য না পেতে পারে বা দল যাতে ধরা না পড়ে, সেজন্য সে নিজের হাতে নিজের জিভ কেটে ফেলেছিল
ডাকাতের মা বড় প্রশ্ন উত্তর
৩.১ “ছেলের নামে……ছে সে”- কে ছেলের নামে কলঙ্ক এনেছে ? ‘ কলঙ্ক ‘ শব্দটি ব্যবহারের কারণ কী ?
উঃ) সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ ডাকাতের মা ’ শীর্ষক ছোটো গল্পে সৌখীর মা, তার ছেলে সৌখির নামে কলঙ্ক এনেছে। ডাকাতের মা হয়ে ছিঁচকে চুরির কাজ করায়, সৌখির মায়ের এমন মনে হয়েছে।
কলঙ্ক ‘ শব্দটি ব্যবহারের কারণ- পাঠ্য অংশে সৌখির মা তার ছেলের নামে এমনই কলঙ্ক এনেছিল। এক রাতে হঠাৎ সৌখি জেল থেকে দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসে । দীর্ঘদিন পর ছেলে বাড়ি ফিরে আসায় সৌখীর মায়ের মনে আনন্দ হয়েছিল । ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে সৌখির মা। সৌখি শুয়ে পড়ার পর দুশ্চিন্তায় তার রাতের ঘুম হয় না ।জেল ফেরত ছেলেকে সকালে কী খেতে দেবে- “সেই হয়েছে …..ভাবনা”। তার ছেলের খাবার জোগাড় করতেই, ভোর রাতে চুরি করতে বের হয়। মতাদিন পেশকারীর বাড়ি থেকে লোটা চুরি করে এবং তা বিক্রি করে পয়সা জোগাড় করে সৌখীর মা । সকালে ছিঁচকে চুরির জন্য বাড়িতে পুলিশ হানা দেয় ।সৌখীর মা একসময় বিশ্বাস করত ,“ ডাকাতি করা …….তো মরদের কাজ , গর্বের জিনিস । ”
সৌখীও তার কাজের জন্যই এতটাই অহংকারী ছিল যে , জেলে ছিঁচকে চোরের সঙ্গে বাক্যালাপ পর্যন্ত করত না । সৌখি নিজে তার মায়ের চুরির দায় নিজের ঘাড়ে নিয়ে নেয়। আর সেই সৌখির মা এমন কলঙ্ক যুক্ত কাজ করে বসলো। স্বামী – ছেলের সেই উঁচু মাথা তার দোষে কালিমালিপ্ত হলো বলেই ‘ কলঙ্ক ’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ।
৩.২) “এতক্ষণে …..খী ব্যাপারটা” —কোন্ ব্যাপারটার কথা বলা হয়েছে? সে কীভাবে এই ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল, তা আলোচোনা করো। ১+৪ 2018
উঃ) সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ গল্পের সৌখীর মা মতাদিন পেশকার সাহেবের বাড়ি থেকে লোটা চুরি করে চোদ্দ আনায় বিক্রি করেছে- সেই ব্যাপারটাই সৌখি বুঝতে পেরেছিল।
সে কীভাবে এই ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল- সৌখি জেল থেকে প্রায় পাঁচ বছর পর হঠাৎ একদিন রাতে বাড়ি ফেরে। তার স্ত্রী এবং শিশুপুত্র তার শ্বশুরবাড়িতে ছিল ।অনেক কাল জেলে ঘড়ি ধরে সকাল সকাল উঠতে হয়েছে। নতুন পাওয়া স্বাধীনতা উপভোগ করার জন্য সৌখি মনে মনে ঠিক করেছে বেলা বারোটার আগে সে কিছুতেই বিছানা ছেড়ে উঠবে না। কিন্তু সকালবেলায় হই-হট্টগোল শুনে সে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখে যে, পাড়ার মাতাদিন পেশকার সাহেব এবং থানার দারোগা তাদের বাড়িতে এসেছে। পেশকার সাহেব তার মায়ের উপর লোটা চুরির অভিযোগ এনেছে।
দারোগা সাহেব একটা লোটা দেখিয়ে যখন সৌখীর মাকে সেটি বাসনওয়ানাকে চোদ্দো আনায় বিক্রি করার কথা জিজ্ঞাসা করে, তখন সৌখীর মায়ের মুখ থেকে কোনো কথা বেরোয় না। শুধু একবার ছেলে সৌখীর দিকে তাকিয়ে মাথা হেঁট করে নেয় সে। এসবকিছু দেখেশুনেই সৌখী সমস্ত ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল৷
ডাকাতের মায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ
৩.৩) ডাকাতের মা’ ছোটোগল্প অবলম্বনে সৌর্থীর মায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ করো। 2017
উঃ) সতীনাথ ভাদুড়ীর “ডাকাতের মা” নামক ছাটো গল্পের নাম ভূমিকায় আছে ডাকাতের মা তথা সৌখির মা চরিত্রটি। নামহীন এই নারী চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য গল্পে খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন গল্পকার।
সৌখির মা, গল্পে একজন স্নেহময়ী মা রুপেই আমাদের সামনে হাজির হয়। পুত্রের জন্য তার চিন্তাভাবনা, ব্যাকুলতা প্রকাশ পেয়েছে। পুত্রের প্রতি তার সম্ভম ও স্নেহ—দুই-ই প্রবল ছিল বলেই পুত্রকে সে নিজের দুর্বিষহ দারিদ্র্যের কথা যেমন জানাতে পারেনি, তেমনই তাকে আলুচচ্চড়ি-ভাত খাওয়াতে হিঁচকে চুরির মতো মর্যাদাহানিকর কাজে হাত দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেনি।
সৌখির মা, তার বৌমা এবং নাতির প্রতিও ছিল গভীর ভালোবাসা। তাই দুর্বল চেহারার পুত্রবধূর ও নাতির দু-মুটো অন্নের জন্য বাধ্য হয়েই নাতি-সহ বউমাকে তার বেয়াই বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল। এটা তার বিচক্ষনতারই পরিচয় |
সৌখি জেলে চলে গেলেও সৌখির মা কিন্তু হাল ছেড়ে দেয়নি । নিজের পেটের ভাত একাই যোগাড় করেছে। ডাকাত দলের সদস্যরা – দু’বছর পর টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে, সৌখির মা বাড়ি বাড়ি খই- মুড়ি বিক্রি করেছে । সে অত্যন্ত পরিশ্রমী ছিল | পরিশেষে বলা যায় যে, – সৌখির মায়ের একটা আবেগতাড়িত ভুল সিদ্ধান্তের জন্যই দারোগা বাবুর কাছে ছিঁচকে চোরের কলঙ্ক, ছেলের নামে এনে- গল্পটি পরিসমাপ্তি, করুন পরিনতি লাভ করেছে ।
৩.৪) মাতাদিন পেশকার কিভাবে তার লোটা ফিরে পেয়েছিল তা গল্প অনুসরণে সংক্ষেপে লেখ|অথবা- “সেই জন্য…….ল তার বাড়িতে”- সকালবেলায় বাড়িতে হুলুস্থুলু পড়ে গিয়েছিল কেন ? শেষ পর্যন্ত কি ঘটল/অথবা- মাতার সাহেব কিভাবে ডাউনলোড ফিরে পেয়েছেন তা সংক্ষেপে নিজের ভাষায় লেখ
উত্তর)সতীনাথ ভাদুড়ীর “ডাকাতের মা” ছোটগল্পে মাতাদিন পেশকার সাহেবের লোটা চুরির ঘটনা এবং তা ফিরে পাওয়ার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে |
কিভাবে তার লোটা ফিরে পেয়েছিল- মাতাদিন পেশকার সাহেব তিনি পেশায় পেশকার অর্থাৎ আদালতের কর্মচারী ছিলেন আর তার বাড়ি থেকেই লোটা চুরি হওয়ায় তার বাড়িতে একটা হুলুস্থুল কাণ্ড পড়ে যায় | তার স্ত্রী তাকে জানান যে, লোটা বাড়ির লক্ষ্মী তাই আরেকটা কিনে এনে বাড়ির লক্ষ্মীশ্রী ফিরিয়ে আনতে হবে |
তাই মাতাদিন পেশকার চুরির খবর থানায় দিয়ে এলেন এবং ফেরার মুখে বাসনের দোকানে গেলেন , একটি নতুন লোটা কেনার জন্য | তিনি এমন লোটা খুঁজছিলেন যার সাইজ মুখটা বেশ ফদালো হবে , যাতে একটি হৃষ্টপুষ্ট মেয়ে মানুষের একটা মোটা রুপোর কাকন শুদ্ধ হাত ভিতরে ঢুকিয়ে মাজা যায় কিন্তু দোকানদার শেষমেশ হাল ছেড়ে দিয়ে একটি পুরনো লোটা তাকে দেখান | পুরনো লোটা দেখেই পেশকার সাহেব পেশকার সাহেবের খটকা লাগে এবং তিনি চশমা বার করে নাকের ডগায় বসিয়ে দেখলেন যে , খুড়োর নিচে সেই তারকা চিহ্ন অর্থাৎ এটা যে তারই বাড়ির লোটা তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি |
তিনি তখন আইনের কথা ভুলে গিয়ে দোকানদারের টুঁটি চেপে ধরলেন এবং এই লোটা দোকানদার কোত্থেকে পেয়েছেন – সেটা তিনি জানতে চান |দোকানদার ভয়ে ভীত হয়ে সত্যি কথাটা বলে যে , এটি সৌখির মায়ের কাছ থেকে তিনি 14 আনায় কিনেছিলেন| পরে দারোগাবাবু সখীর বাড়িতে উপস্থিত হয় | তার ছেলে তখনও বিছানা ছেড়ে ওঠোনি | দারোগাবাবু কে দেখেই সখির মা পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারেন এবং সঙ্গে ছিলেন পেশকার সাহেব | মায়ের এই চুড়ির দায় নিজে নিয়ে নেয় এবং পুনরায় জেলে চলে যায় -এইভাবে পেশকার সাহেব তার হারানো ফিরে পেয়েছিলেন এবং চোরের শাস্তি দিয়েছিলেন|
class 11 bengali project click here
thanks