> পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন 2024 » Qবাংলা

পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন 2024

দ্বাদশ শ্রেণীর আন্তর্জাতিক একটি কবিতা পাঠ্য আছে। কবিতাটির নাম পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন | কবিতাটির লেখক বেটোল্ড ব্রেখট |এই সিরিজে এই কবিতা থেকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুব সুন্দর ভাবে  তথ্য দিয়ে সাজানো আছে | প্রিয় ছাত্র ছাত্রী তোমরা উত্তর দেখার পাশাপাশি উত্তর লেখার ধরন এবং কিছু টিপস দেওয়া আছে -সেগুলি ভালোভাবে অনুসরণ কর। এই কবিতা থেকে প্রশ্ন প্রতি বছর কমন পড়ে থাকে এবং কবিতাটির উত্তর খুব সহজে লেখা যায় | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বিষয়ের আরো অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর জানতে click here

মূলভাব-“পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন” কবিতায় কবি বেটোল্ড ব্রেখট পৃথিবীর সমস্ত শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের দাবির কথা বলতে চেয়েছেন। কবিতায় মূল বক্তব্য হল- জনৈক কোন এক শিক্ষিত মজুরের হয়ে সারা বিশ্বের ধনতান্ত্রিক তথা পুঁজিবাদী শ্রেণীর কাছে তাদের অধিকারের দাবি তুলে ধরেছেন। পৃথিবীর সভ্যতা সচল রাখার পিছনে  এই বিপুল পরিমাণ শ্রমজীবী মানুষের কর্মকাণ্ড প্রধান ভূমিকা পালন করছে। সে কথাই শ্রমজীবী শিক্ষিত মানুষটি বারবার প্রশ্নের মাধ্যমে জানাতে চেয়েছেন। প্রাচীন কাল থেকেই তারা ইতিহাসের পাতায় বঞ্চিত হয়ে এসেছে। তারা তাদের যোগ্য সম্মান ফিরে পেতে চায়। তারা অধিকারের দাবি আদায় করতে চায়। এই কথাই কবিতায় বারবার বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

রচনাধর্মী, প্রশ্ন উত্তর

১) “ভারত জয় ……. আলেকজান্ডার/একলাই নাকি?”- আলেকজান্ডার কে ছিলেন?“একলাই নাকি” বলতে কবি কি বুঝিয়েছেন?  / অথবা- আলেকজান্ডারের পরিচয় দাও। বক্তা এই প্রশ্নের মাধ্যমে কি বলতে চেয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখ।

উঃ) জার্মান নাট্যকার বের্টোল্ড ব্রেখট রচিত “পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন” শীর্ষক কবিতায় কোন এক শিক্ষিত শ্রমজীবী মানুষ, ইতিহাসের নানান ঘটনা তুলে তাদের অধিকারের দাবি আদায় করতে চেয়েছেন।

আলেকজান্ডার কে ছিলেন- জনৈক শিক্ষিত শ্রমিক, নানান প্রশ্নের মাধ্যমে তাদের অধিকার আদায়ের কথা বলতেগিয়ে, বিভিন্ন ঐতিহাসিক চরিত্রের তথা শাসকের নাম উল্লেখ করেছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন, দিগ্বিজয়ী গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডার। তিনি ছিলেন প্রাচীন গ্রিসের ম্যাসিডনের সম্রাট। এই আলেকজান্ডার তরুণ বয়সে ভারত জয় করেছিলেন।

শেষাংশ:- জনৈক শিক্ষিত শ্রমজীবী মানুষটি গোটা বিশ্বের ধনতান্ত্রিক, পুঁজিবাদী শ্রেণীর কাছে প্রশ্ন রেখেছেন- আলেকজান্ডার যখন ভারত জয় করেছিলেন, তিনি কি একলাই সেই কর্মকাণ্ড করেছিলেন? অর্থাৎ বক্তা এই প্রশ্নের মাধ্যমে বলতে চেয়েছেন যে, এই বিপুল জয়আলেকজান্ডারের একার দ্বারা সম্ভব হয়নি। তার এই জয়ের পিছনে বিপুল পরিমাণ শ্রমিকের অবদান আছে। অর্থাৎ সেখানে সৈন্য থেকে শুরু করে অনেক শ্রমিকের কর্মকাণ্ড, সেই জয়ের পিছনে অবদানআছে। অথচ ইতিহাস তাদের কথা ভুলে গেছে।

আলেকজান্ডার যে সৈনিকদের সহযোগিতায় ভারত জয় করেছিলেন, সেই সৈনিকরাই ইতিহাসের স্থান পায়নি। তারা উপেক্ষিত রয়ে গেছে। এই ভাবেই পৃথিবীর মানব সভ্যতার ইতিহাসে শ্রমিকরা অঘোষিত থেকে গেছে অর্থাৎ পৃথিবীর সভ্যতা যে এগিয়ে চলেছে তারপিছনে পৃথিবীর বিপুল পরিমাণ শ্রমিকের অবদানই মুখ্য কথা। তাদের কর্মকাণ্ডের ফলেই পৃথিবী সচল আছে।তাই শিক্ষিত শ্রমিকটি গোটা পৃথিবীর শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধি হয়ে প্রশ্ন তুলেছে-ভারত জয় ………একলাই নাকি?”

২) “স্পেনের ……..আর কেউ কাঁদেনি?”-উদ্ধৃতাংশটি যে কবিতার অন্তর্গত, সেই কবিতায় আর কোন কোন শাসকের নাম আছে?ফিলিপ কেঁদেছিল কেন? আর কেউ কাঁদেনি বলতে বক্তা কি বোঝাতে চেয়েছেন? / অথবা- স্পেনের ফিলিপ কোন দিন কেঁদেছিল? এর মাধ্যমে বক্তা কি বলতে চেয়েছেন?/ অথবা-আর্মাডার পরিচয় দাও। স্পেনের ফিলিপ কেন কেঁদেছিলেন? বক্তা কেন এমন প্রশ্ন করেছেন? 

উঃ) জার্মান নাট্যকার বের্টোল্ড ব্রেখট রচিত “পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন” শীর্ষক কবিতায় কোন এক শিক্ষিত শ্রমজীবী মানুষ, ইতিহাসের নানান ঘটনা তুলে তাদের অধিকারের দাবি আদায় করতে চেয়েছেন।

স্পেনের ফিলিপ –জনৈক শিক্ষিত শ্রমিক, নানান প্রশ্নের মাধ্যমে, তাদের অধিকার আদায়ের কথা বলতে গিয়ে, বিভিন্ন ঐতিহাসিক চরিত্রের তথা শাসকের নাম উল্লেখ করেছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন, স্পেনের রাজা ফিলিপ। রাজা ফিলিপের রনতরীর নাম ছিল আর্মাডা। রাজা ফিলিপ, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই আর্মাডাকে প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু ইংল্যান্ডের কাছে আর্মডার শোচনীয়ভাবে পরাজয় ঘটে, ফলে রাজা ফিলিপ হত্যোদম হয়ে পড়েছিলেন এবং কেঁদে উঠেছিলেন।

শেষাংশ:- জনৈক শিক্ষিত শ্রমজীবী মানুষটি গোটা বিশ্বের ধনতান্ত্রিক, পুঁজিবাদী শ্রেণীর কাছে প্রশ্ন রেখেছেন-স্পেনের বিখ্যাত রনতরী আর্মাডা যখন নেদারল্যান্ডের উপকূলে গ্রেভলাইন রণক্ষেত্রে ডুবে যায়, তখন কি স্পেনের রাজা ফিলিপ একলাই কেঁদেছিলেন? আর কারো কি কান্না শোনা যায়নি? অর্থাৎ শ্রমজীবী মানুষটি এই প্রশ্নের মাধ্যমে বলতে চেয়েছেন যে,আর্মাডা যখন ডুবে যায়, তখন শুধুমাত্র স্পেনের রাজা ফিলিপ চরমভাবে আঘাত পাননি। এই আঘাত পেয়েছিল সেই সমস্ত সৈনিকদের আত্মীয়-স্বজনরাও।

অথচ ইতিহাসে এই সমস্ত সাধারণ সৈনিকদের অশ্রু বিসর্জনের কথা তথা স্বজন হারানোর ব্যথার কথা উল্লেখ নেই। শুধুমাত্র রাজা ফিলিপের অশ্রু বিসর্জনের ইতিহাসেই পাওয়া যায়।এই ভাবেই পৃথিবীর মানব সভ্যতার ইতিহাসে শ্রমিকরা অঘোষিত থেকে গেছে অর্থাৎ পৃথিবীর সভ্যতা যে এগিয়ে চলেছে তার পিছনে পৃথিবীর বিপুল পরিমাণ শ্রমিকের অবদানই মুখ্য কথা। তাদের কর্মকাণ্ডের ফলেই পৃথিবী সচল আছে। তাই শিক্ষিত শ্রমিকটি গোটা পৃথিবীর শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধি হয়ে প্রশ্ন তুলেছে-“স্পেনের…… কেউ কাঁদেনি?”

৩) “পাতায় ……বানাতোকরা?”- পাতায় পাতায় কাদের জয় লেখা ? জয়োৎসবের ভোজ যারা বানাতো, তাদের প্রতি কবির কি মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে ?

উঃ) জার্মান নাট্যকার বের্টোল্ড ব্রেখট রচিত “পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন” শীর্ষক কবিতায় কোন এক শিক্ষিত শ্রমজীবী মানুষ, ইতিহাসের নানান ঘটনা তুলে তাদের অধিকারের দাবি আদায় করতে চেয়েছেন।প্রাচীনকাল থেকেই সম্রাট বা শাসকেরা প্রভূত পরিমানে সৈনিকদের সহযোগিতায় যুদ্ধ জয় করতেন। সৈনিকদের সহযোগিতায় জয়োৎসবের ভোজ বানানো হতো। অথচ ইতিহাসের পাতায় পাতায়, আমরা কেবল সেই সমস্ত শাসক বা সম্রাটের জয় লেখার পড়ার কথাই পড়ি। সৈনিকদের কথা লেখা থাকে না।

শেষাংশ:- দ্বিগবিজয়ী বীর সম্রাটেরা সৈনিকের সাহায্যে যুদ্ধ জয় করে জয়োৎসব পালন করতেন। সেই বিজয়োৎসবের আনন্দের আয়োজন করা হতো বিপুল পরিমাণ ভোজ। এই ভোজ বানাত, সেই সমস্ত শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষেরা। তারাই এই জয়োৎসবের ভোজের কর্মকাণ্ডে পরিশ্রম করতো। অথচ ইতিহাসে এই শ্রমিকদের কর্মকাণ্ডের কথা লেখা থাকে না। শুধু শাসক বা সম্রাটের কীর্তিকলাপের কথায় লেখা থাকে।

এই বিপুল পরিমাণ শ্রমিকদের কর্মকাণ্ড না থাকলে সম্রাট অর্থাৎ শাসক শ্রেণীরা এই জয়োৎসবের ভোজ পালন করতে পারতেন না। অর্থাৎ কবি বলতে চেয়েছেন, পৃথিবীর সভ্যতার অগ্রগতির পিছনে, এই শ্রমিক শ্রেণীর কর্মকাণ্ডই মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় তারা, যোগ্য সম্মান পায়নি। তারা তাদের অধিকার পায়নি।তাই শিক্ষিত শ্রমজীবী মানুষটি, পৃথিবীর সমস্ত শ্রমজীবী মানুষের হয়ে প্রশ্ন করেছেন-“পাতায়….ভোজ বানাতোকারা?”

বিশেষ কথা:-  এই কবিতা থেকে প্রশ্ন খুব সহজ পড়ে। যে লাইনটি তুলে প্রশ্ন করবে, সেই লাইনটির প্রথমে অর্থ বা তার তথ্য জানতে চাইবে। তারপরেই প্রশ্ন হবে- কেন এমন প্রশ্ন করা হয়েছে বা এই প্রশ্নের মাধ্যমে কি বলতে চাওয়া হয়েছে? এই দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর সমস্ত প্রশ্নের ক্ষেত্রেই একই উত্তর হবে। শুধুমাত্র প্রথমে যে প্রশ্নটি হবে, সেটি সেই লাইনটার উপর নির্ভর করছে। আর এই কবিতা থেকে প্রশ্ন কমন থাকে। এই কবিতা থেকে প্রশ্ন লিখলে নাম্বারও বেশি পাওয়া যায়। অর্থাৎ ফুল মার্কস পাওয়ার চান্স বেশি 

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর-পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন

১) “স্পেনের …..কেঁদেছিল খুব”- কেন ফিলিপ কেঁদেছিল? 
উঃ) স্পেনের সম্রাট ছিলেন ফিলিপ। তার বিখ্যাত রনতরীর নাম ছিল আর্মাডা। সেই আর্মাডা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজয় ঘটে অর্থাৎ ডুবে যায়। এই যন্ত্রণায় হত্যোদম হয়ে, ফিলিপ কেঁদেছিলেন।

২) “সেই সন্ধ্যায় …গেল রাজমিস্ত্রিরা”- কোন সন্ধ্যার কথা বলা হয়েছে?
উঃ) চীন সাম্রাজ্যকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে চীন সম্রাট কিং সিং হুয়াং এর সময়ে, চীনের পৃথিবী বিখ্যাত প্রাচীর নির্মাণ করা হয়, বহু শ্রমিকের কঠিন পরিশ্রমের বিনিময়ে কিন্তু যেদিন সেই চীনের প্রাচীর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়, তখন সেই সন্ধ্যায় রাজমিস্ত্রিদের কেউ মনে রাখেনি। আলোচিত এই অংশে,সেইসময়ের কথাই বলা হচ্ছে।

৩) “নিদেন …. রাধুনী তো ছিল”- কার সঙ্গে, কখন রাধুনী থাকার কথা বলা হয়েছে?
উঃ) রোম সম্রাট জুলিয়াস সিজার যখন, গলদের নিপাত করেছিলেন, তখন তার এই বিজয়ের পিছনে একাকী কৃতিত্ব ছিল না। তার এই কাজের পিছনে,ক্ষুধা, তৃষ্ণা মেটানোর জন্য, একজন রাধুনী নিশ্চয়ই ছিল।

৪) “কে জিতেছিল? একলা সে?”- এখানে কার কথা বলা হয়েছে? তিনি কাদের বিরুদ্ধে জিতে ছিলেন?
উঃ)  “পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন” শীর্ষক কবিতায় এই অংশে, রোম সম্রাট দ্বিতীয় ফেডারিকের কথা বলা হয়েছে। তিনি দীর্ঘ ৭ বছরব্যাপী যুদ্ধ জয়কে এখানে বলা হয়েছে।

৫) “পাতায় পাতায় ……. বানাতে কারা?”-“জয়োৎসবের ভোজ” বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উঃ) প্রাচীনকালে সম্রাট বা শাসকেরা প্রভূত পরিমাণে সৈনিকের সহযোগিতায় যুদ্ধ জয় করতেন। সেই যুদ্ধ জয়ের আনন্দ স্বরূপ শ্রমজীবী মানুষদের সহযোগিতায় জয়োৎসবের ভোজ পালন করা হতো। আলোচিত এই অংশে জয়োৎসবের ভোজ বলতে, যুদ্ধ জয়োৎসবের পালন করা আনন্দের ভোজ কেই বলা হয়েছে।

for more question answers click here

Leave a Comment

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading