> প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2025 » Qবাংলা

প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2025

মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ের পাঠ্য কবিতা “ প্রলয়োল্লাস ” | কবিতাটির রচয়িতা কবি কাজী নজরুল ইসলাম| প্রলয় উল্লাস কবিতা থেকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করা হয়েছে| এই সিরিজে এ বছর মাধ্যমিকের যে প্রশ্নগুলি আসার সম্ভাবনা প্রবল সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়ে উপস্থাপনা করা হয়েছে।প্রশ্নের উত্তরগুলি দেখার পাশাপাশি উত্তর লেখার কৌশল গুলি ভালোভাবে লক্ষ্য কর | মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর জানতে অবশ্যই  click here

প্রলয়োল্লাস কবিতার সারাংশ

কবি কাজী নজরুল ইসলাম পরাধীন ভারতবর্ষের জরাজীর্ণ মৃতপ্রায় জাতিকে উজ্জীবিত করতে সদা প্রস্তুত থাকতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন স্বাধীনতা শুধুমাত্র অনুনয়- বিনয় করে আসবেনা। এর জন্য প্রয়োজন সংগ্রাম- প্রবল বিপ্লবী আন্দোলন। দেশের তরুণ যৌবনকে তিনি তার কবিতার মাধ্যমে বিদ্রোহের বাণী ছড়িয়ে দিতেন। তিনি ভারতবর্ষের বুকে এমন এক প্রলয়ের বা ধ্বংসের আহ্বান করেছেন যা ভারতবর্ষের সমস্ত পুরাতন সমাজ রীতি-নীতি জরাজীর্ণ অবস্থাকে ধ্বংস করে নতুন স্বাধীনতার সূর্যের উদয় হবে। প্রলয় বা ভয়ংকর একদিকে যেমন ধ্বংসকে সূচিত করে অন্যদিকে তেমনি নতুন প্রাণকে, নতুন জীবনকে প্রতিষ্ঠা করে নতুন আগমনকে সূচিত করে।

অর্থাৎ ধ্বংস নবযুগের বার্তা বহন করে নিয়ে আসে। কবি এই ধ্বংসকে মহাদেবের তাণ্ডব লীলার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তার রচিত  “অগ্নিবীনা  ” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘ “প্রলয়োল্লাস ”  কবিতায় পরাধীন ভারতবর্ষের সকল নাগরিককে ভয়ংকর প্রলয়ের আগমনকে স্বাগত জানানোর জন্য জয়ধ্বনি করতে বলেছেন। কারণ প্রলয় বা ধ্বংস পরাধীন ভারতবর্ষের সমস্ত জরাজীর্ণ ভগ্নপ্রায়, সমস্ত কিছু, এবং উপনিবেশিক শাসনের অত্যাচার, বিনাশ করে স্বাধীনতার নতুন সূর্যের আগমন ঘটবে। প্রলয় বা ধ্বংস বিনাশ করলেও তার মধ্যে নতুনের আগমনের বার্তা লুকিয়ে থাকে। তাই কবি সকলকেই প্রলয়ের জন্য উল্লাসে মেতে উঠতে বলেছেন।

প্রলয়োল্লাস কবিতার মূল বক্তব্য আলোচনা কর

 ধ্বংসকারী প্রলয় কালবৈশাখীর ঝড়ের মতোই সমস্ত জড়াজীর্ণতাকে বিনাশ করে নূতনের কেতন অর্থাৎ স্বাধীনতার নতুন সূর্যের আগমনকে সূচিত করছে। কবি জয়ধ্বনি দিয়ে তাকে গ্রহণ করতে বলেছেন । তিনি প্রলয়কে মহাদেবের মত পাগল প্রলয় নেশার সঙ্গে তুলনা করেছেন। মহাপ্রলয়রূপী মহাবিপ্লবের মধ্যে দিয়েই সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ধমক হেনে আগল ভাঙবে। মহাদেবের মতো বজ্রশিখায় মশাল জ্বেলে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে ভারতবাসীকে মুক্ত করতে এগিয়ে আসছে । তার কেশের দোলায় আকাশ কেঁপে ওঠে। এমন রূপকে দেখে কবি বলেছেন- “ সর্বনাশী জ্বালামুখী ধূমকেতু তার চামর ঢুলায় ”

রক্তমাখা কৃপণ হাতে সংহারমূর্তি ধারণকারী শিবের আগমন চারিদিকে ধ্বংসের বার্তা শোনা যাচ্ছে। প্রলয়ের ঝড় সমাজের অত্যাচারের ভিত নারিয়ে দিয়ে নতুন যুগের স্বপ্ন দেখা যাচ্ছে। তার ভয়ংকর হট্রগোলে, অট্ররোলে বিশ্ব স্তব্ধ। তার চোখের দৃষ্টিতে যেন দ্বাদশ রবির ভয়ংকর অগ্নি জ্বালা। রুদ্ররূপী মহাদেব তথা নটরাজের বাহুর ওপরেই বিশ্বমায়ের আসন পাতা । মহাপ্রলয় জরাজীর্ণ ও মুমূর্ষুদের বিনাশ করে নতুন স্বাধীনতার সূর্য দেখায় । মহাকালের সারথি রক্তের মত তড়িৎ চাবুকের আওয়াজে ঘোড়ার কাঁদনে বজ্র গগনে ঝড় ছুটে চলেছে।

খুড়ের দাপটে তারাই লেগে উলটা ছুটছে নীল খিলানে- অন্ধ কারার বন্ধকূপ থেকে উদ্ধার করার জন্য। এই ধ্বংস দেখে ভয় পাবার কিছু নেই। কারণ এই ধ্বংসের মধ্যেই নবীনের আগমনের বার্তা আছে। প্রলয়রূপী মহাবিপ্লবের মাধ্যমে এই নতুন যুগের সূচনা হবে। তাই কবি বলেছেন-
“মাভৈ মাভৈ !”

প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর mcq

১। “সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে / কপোলতলে” — “ কপোলতলে ” শব্দের অর্থ হল –
ক। চোখের নিচে
খ। ঘাড়ের উপর
গ।‌ মাথার উপর
ঘ।‌ গালের নিচে
উ: ঘ। গালের নিচে

২। “ মাভৈঃ মাভৈঃ ”- কথার অর্থ হল –
ক। ভয় পাওয়া উচিত নয়
খ। ভয় যাতে না করে
গ। ভয় না পেয়ে এগিয়ে চল
ঘ। মা বলে সম্বোধন করা
উঃ গ। ভয় না পেয়ে এগিয়ে চল

৩। জগৎজুড়ে কি এবার ঘনিয়ে আসে ?
ক। প্রলয়
খ। ভূমিকম্প
গ। প্রবল ঝড়
ঘ। ভয়ংকর
উঃ ক। প্রলয়

৪ । “ প্রলয়োল্লাস ” কবিতায় “শিশু–চাঁদের কর” বলতে বোঝানো হয়েছে –
ক। চন্দ্রের আলো
খ। সদ্য চন্দ্রের আলো ছড়িয়ে পড়েছে
গ। চন্দ্রের আলো প্রকাশ
ঘ। সদ্য উদিত চাঁদের কিরণ
উঃ ঘ। সদ্য উদিত চন্দ্রের কিরণ

৫। “….. উল্কা ছুটায় নীল খিলানে ! ”—  ” নীল খিলান ”  বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে –
ক। মেঘকে
খ। প্রবল ঝড় বাতাসকে
গ। আকাশকে
ঘ। আকাশের তারাকে
উঃ গ। আকাশকে

৬। “ প্রলয় বয়েও আসছে  ” – কিভাবে ?
ক। হেসে
খ। খেলে
গ। নেচে
ঘ। কেঁদে
উঃ ‌ক। হেসে

৭। “ জীবনহারা অ-সুন্দরে করতে ছেদন ”- ছেদন করতে কে আসছে ?
ক। মহাদেব
খ। কালবৈশাখী
গ। নবীন
ঘ। প্রলয়
উঃ গ। নবীন

৮। “ ভেঙে আবার  /  গড়তে জানে সে চিরসুন্দর ”- এখানে সে বলতে বোঝানো হয়েছে –
ক। প্রলয়
খ।‌ জ্বালামুখী
গ। কালবৈশাখী
ঘ। চিরসুন্দর
উঃ ক। প্রলয়

৯। বধূদরা কি তুলে ধরবে ?
ক। হাতে আশীর্বাদ তুলে ধরবে
খ। হাত তুলে ধরবে
গ। বরণডালা
ঘ। প্রদীপ
উঃ ঘ। প্রদীপ

১০। “….. এবার ওই আসে সুন্দর “- সুন্দর যেভাবে আসছে –
ক। কাল-ভয়ংকরের বেশে
খ। কেশে বেশে
গ। প্রচন্ড দাপটের বেশি
ঘ।‌ কালবৈশাখীর ঝড়ের বেশে
উঃ ক। কাল-ভয়ংকরের বেশে

১১। “ মহাকালের চণ্ড-রূপে ” কে আসছেন ?
ক। অট্ররোল
খ। ধ্বংস
গ। প্রচন্ড ঝড়
ঘ। ভয়ংকর
উঃ ঘ। ভয়ংকর

১২। “ ওরে ওই / হাসছে” – কে হাসছে-
ক। শিশু-চাঁদের কর
খ। মহাকাল
গ। ভয়ংকর
ঘ। কালবৈশাখী ঝড়
উঃ গ। ভয়ংকর

১৩। “প্রলয়োল্লাস ” কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত , “ প্রলয়োল্লাস” কবিতাটি উৎস কি ?
ক। প্রলয় শিখা
খ। ফনিমনসা
গ। ভাঙার গান
ঘ। অগ্নিবীনা
উঃ ঘ। অগ্নিবীণা

১৪।  সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে –
ক। কপোলতলে
খ। গগন তলে
গ। মহাকালের কোলে
ঘ। কালবৈশাখীর ঝড়ে
উঃ ক। কপোলতলে

১৫। “ আসবে ঊষা করুন হেসে ”- উষা কোন বেশে আসবে ?
ক। কালবৈশাখীর বেশে
খ। করুন বেশে
গ। প্রলয় বেশে
ঘ। ভয়ংকর বেশে
উঃ খ। করুন বেশে

১৬।  ” প্রলয়োল্লাস ” কবিতায় কবি ‘ নূতনের কেতন ‘ বলেছেন –
ক। শিশু-চাঁদের করকে
খ। কালবৈশাখীর ঝড়কে
গ। মহাদেবের তাণ্ডবকে
ঘ। ভয়ংকরের বেশকে
উঃ খ। কালবোশেখির ঝড় – কে

১৭। “ প্রলয়োল্লাস ” – শব্দবন্ধের অর্থ হল –
ক। মহাদেবের চন্ডরূপ
খ। মহাদেবের তাণ্ডব
গ। নতুনের আগমন
ঘ। ধ্বংসের আনন্দ
উঃ ঘ। ধ্বংসের আনন্দ

১৮।  ” বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে “- কে আসছে ?
ক। প্রলয়
খ। কালবৈশাখীর ঝড়
গ। মহাদেব
ঘ। ভয়ংকর
উঃ ঘ। ভয়ংকর

১৯। কবি নজরুল ইসলাম  “প্রলয়োল্লাস “ কবিতায় আসন্ন প্রলয় সম্পর্কে নিম্নের কোন বিশেষণটি ব্যবহার করেননি ?
ক। চিরসুন্দর
খ। ভয়ংকর
গ। নবাগত
ঘ। অনাগত
উঃ। গ‌। নবাগত

২০। অনাগত প্রলয় কোথায় ধমক হেনে আগল ভাঙল ?
ক। শিশু-চাঁদের কর
খ। কপোলতলে
গ। গগনতলে
ঘ। সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে
উঃ ঘ। সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে

২১। “ …. ভয়ংকর আসছে”- “প্রলয়োল্লাস ” কবিতায় ভয়ঙ্কর যেভাবে আসছে-
ক। করুন বেশে
খ। হেসে বেশে
গ। বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে
ঘ। মধুর বেশে
উঃ গ। বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে

২২।  “ঝামর ”  শব্দের অর্থ হল –
ক। ঝাপটা
খ। অন্ধকার
গ। ঝাপসা
ঘ। মলিন
উঃ। মলিন

২৩। জগৎ জুড়ে কী ঘনিয়ে আসে ? –
ক। ঝঞা
খ। প্রলয়
গ। মেঘ
ঘ। বৃষ্টি
উ। প্রলয়

২৪। “ আসবে ঊষা অরুণ হেসে ” –  কিভাবে ?
ক। দারুণ বেশে
খ। মোহন বেশে
গ। করুণ বেশে
ঘ। নবীন বেশে
উঃ। করুণ বেশে

২৫।  দিগম্বরের জটায় কে হাসে ?
ক। শিশু চাঁদের কর
খ। পূর্ণ চাঁদের কর
গ। অর্ধ চাদের কর।
ঘ। ক্ষয়িত চাঁদের কর
উঃ। শিশু চাঁদের কর

২৬। কবি সবাইকে কী করতে আহ্বান জানিয়েছেন ?
ক। বিপ্লব করতে
খ। বিদ্রোহ করতে
গ। প্রতিবাদ করতে
ঘ। জয়ধ্বনি করতে
উঃ। জয়ধ্বনি করতে

২৭। কবিতায় ব্যবহৃত   “কেতন ”  শব্দের অর্থ কী?
ক। দড়ি
খ। ঝড়
গ। আকাশ
ঘ।পতাকা
উ।ঘ। পতাকা

প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর saq

১।  “তোরা সব জয়ধ্বনি কর।” — কবি কাদের জয়ধ্বনি করতে বলেছেন ?
উঃ কাজী নজরুল ইসলাম রচিত প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতায় কবি পরাধীন ভারতবর্ষের মুক্তিকামী দেশবাসীকে প্রলয়ের জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।

২। কবি নজরুল ইসলাম প্রলয়ের জন্য ” জয়ধ্বনি ” করতে বলেছেন কেন ?
উ:।  প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম পরাধীন দেশবাসীকে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন। কারণ প্রলয়ের মধ্যে দিয়েই পরাধীনতার অন্ধকার কেটে স্বাধীনতার সূর্য উদিত হবে।

৩। কালবোশেখির ঝড় – কে কাজী নজরুল ইসলাম  ” নূতনের কেতন ”  বলেছেন কেন ?
উঃ। নুতনের কেতন বলতে কবি ভারতের শৃঙ্খলমুক্ত নতুন যুগের সূচনাকে বুঝিয়েছেন । কালবৈশাখীর ঝড় শেষে অর্থাৎ মহাপ্রলয়ের শেষে ভারতবর্ষের পরাধীনতার নাগপাস থেকে মুক্ত হয়ে নতুন সূর্য উদিত হবে। তাই কবি কালবৈশাখী ঝড়কে নতুনের বেতন বলেছেন ।

৪। “…..অনাগত প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল ”- এখানে  ” অনাগত ”  বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? অথবা:- কবি  ” অনাগত ” বলতে কীসের ইঙ্গিত করেছেন ?
উঃ ‘ প্রলয়োল্লাস ’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম অনাগত ’ বলতে পরাধীন ভারতবর্ষের উপনিবেশিক নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়ে, আসন্ন স্বাধীনতার কথাকে বুঝিয়েছেন।

মাধ্যমিক দশম শ্রেণি বাংলা আরও প্রশ্ন ও উত্তর – click here

৫।  ” সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ”  কবি কি বুঝিয়েছেন ? অথবা:- উক্তিটির তাৎপর্য কি ?
উ: কাজী নজরুল প্রলয়োল্লাস কবিতায় সিন্ধুপারের সিংহদ্বার বলতে সমুদ্র তীরে অবস্থিত ইংরেজ উপনিবেশিক শক্তির দ্বারা শাসিত পরাধীন ভারতবর্ষকে বুঝিয়েছেন।

৬।  ” প্রলয় বয়েও আসছে ” — প্রলয়ের আগমনের কারণ কি?
উ: ‘ প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতায় নবীন প্রাণ, জীবনহারা অ-সুন্দরের বিনাশ করতে, কেশে বেশে প্রলয় বয়ে আসছে।

৭।  ” দিগম্বরের জটায় হাসে ” – দিগম্বরের জটায় কে হাসে ?
উ: ‘ প্রলয়োল্লাস ‘ নামাঙ্কিত কবিতায়, শিশু চাঁদের স্নিগ্ধ কিরণ যেন দিগম্বর তথা মহাদেবের জটায় হাসছে। যেন নতুন যুগের আগমনীর বার্তা সূচিত করছে।

৮। “ ওই নূতনের কেতন ওড়ে ” – কেমন ভাবে কেতন ওড়ে ?
উ: কাজী নজরুল ইসলাম বিরোচিত প্রলয়োল্লাস শীর্ষক কবিতায় নূতনের কেতন অর্থাৎ মুক্তিকামী ভারতবর্ষের পতাকা কালবৈশাখীর ঝড়ের মত উড়ছে।

৯। “ প্রলয়োল্লাস ”- কবিতায় কালবৈশাখীর ঝড় কিভাবে আসে ?
উঃ কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রলয়োল্লাস শীর্ষক কবিতায় কালবৈশাখী ঝড় যেন মহাকালের চন্ডরুপে এবং প্রচন্ড ধোয়াময় ধুপের রূপ ধারণ করে আসছে।

১০। “ সিন্ধুপাড়ের সিংহদ্বারে ধমক হেনে.. ” কে -ভাঙল আগল ?
উ: প্রলয়োল্লাস কবিতায় সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ধমক হেনে প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল মহাদেব তথা শিব সিন্ধুপারে ভাঙলো আগল।

১১। “ আসছে ভয়ংকর ” – ভয়ংকর কেমন ভাবে আসছে ? অথবা:- “ প্রলয়োল্লাস ” কবিতায় ভয়ংকর কিভাবে আসছে?
অথবা:- ভয়ংকরের আগমনের উদ্দেশ্য কি ?
উ: । বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত প্রলয়োল্লাস নামক কবিতায় ভয়ংকর বজ্রশিক্ষায় মশাল জ্বেলে এবং মহাকালের চন্ডরুপ ধারণ করে আসছে পরাধীন ভারতবর্ষের শৃঙ্খল মোচন করে নতুন যুগের সূচনা করার জন্য।

১২। “ আসছে এবার …”  কে আসছে ?
উঃ। প্রলয়োল্লাসে কবিতায় অনাগত অর্থাৎ মুক্তিকামী স্বাধীন ভারতবর্ষের নতুন যুগ প্রলয় নেশার নৃত্য মহাদেবের মত আসছে।

১৩। “ ঝাপট মেরে গগন দুলায় ” – কার ঝাপটে গগন দোলে ?
উঃ কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিরোচিত প্রলয়োল্লাস নামাঙ্কিত কবিতায় প্রলয়ংকর মহাদেবের কেশের দোলায় ঝাপট মেরে গগন দোলে।

১৪।‌ “ ওরে ওই / স্তব্ধ চরাচর !” – চরাচর স্তব্ধ কেন ?
উঃ প্রলয়োল্লাস কবিতায় প্রলয়কারী মহাদেবের প্রচন্ড অট্ররোলে হট্টগোলে চরাচর স্তব্ধ।

১৫। “ সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে / কপোল তলে ” – কার কপোলতলে সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে ?
উঃ প্রলয়োল্লাস নামক কবিতায় প্রলয়কারী মহাদেবের এক বিন্দু নয়ন জলে তারই কপোলতলে অর্থাৎ গালের নিচে মহাসিন্ধু দোলে।

১৬। “ ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর ” – কবি এ প্রশ্ন কাদের উদ্দেশে করেছেন ? অথবা:- ভয় না করার কারণ কি ? অথবা :- কবি কেন এমন মন্তব্য করেছেন ? অথবা কবি কেন ভয় পেতে বারণ করেছেন ?
উ। প্রলয় বা ধ্বংসের মধ্যেই নতুন যুগের সূচনা লুকিয়ে থাকে। ধ্বংস মানেই শেষ নয়। কবি ধ্বংসকে “নতুন সৃষ্টির বেদনা” বলেছেন। তাই কবি কাজী নজরুল ইসলাম পরাধীন ভারতবর্ষের মুক্তিকামী দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এমন মন্তব্য করেছেন।

১৭। “ বধূরা প্রদীপ তুলে ধর ”- বধূরা প্রদীপ তুলে ধরবে কেন ? অথবা-  কবি কেন এমন কথা বলেছেন ?
উঃ। প্রলয়োল্লাস কবিতায় পরাধীন ভারতবর্ষের নতুন যুগের সূচনার উদ্দেশ্যে কাল ভয়ঙ্কর বেশে এবার সুন্দর আসছে। নতুন সূর্য উদিত হবে। তাকে বরণ করার জন্য কবি বধূদের প্রদীপ তুলে ধরতে বলেছেন।

১৮। ” প্রলয়োল্লাস ” কবিতায় সুন্দর কিসের বেশে আসছে ?
উঃ। প্রলয়োল্লাস কবিতায় পরাধীন ভারতবর্ষের নতুন যুগ সূচিত করার জন্য সুন্দর আসছে কাল ভয়ংকর এর বেশে অর্থাৎ প্রলয়ের বেশ ধারণ করে আসছে।

১৯।  ” এবার মহানিশার শেষে আসবে “-  কে কিভাবে আসবে ?
উঃ কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিরোচিত প্রলয়োল্লাস নামক কবিতায় ঊষা অর্থাৎ স্বাধীন ভারতবর্ষের নতুন সূর্য হেসে, করুণ বেশে আসছে

২০। “..ভরবে এবার ঘর ”- কিভাবে ঘর ভরবে ?
উঃ প্রলয়োল্লাস কবিতায় শিশু চাঁদের কর অর্থাৎ কিরণে (আলোয়) পরাধীন ভারতবর্ষের মুক্তিকামী প্রতিটি নাগরিকের ঘর ভরে উঠবে।

২১। “ প্রলয় নূতন সৃজন বেদন ”- কবি প্রলয়কে নতুন সৃজন বেদন বলেছেন কেন ?
উঃ। প্রলয় অর্থাৎ ধ্বংসের মধ্যেই নতুন সৃষ্টির বার্তা লুকিয়ে থাকে। ধ্বংস সমস্ত জরাজীর্ণকে বিনাশ করে নতুন সৃষ্টিকে আহবান করে । তাই কবি প্রলয়োল্লাস কবিতায় প্রলয়কে নূতন সৃজন বেদন বলেছেন।

২২। “ আসছে নবীন “- নবীন কি জন্য আসছে ?  অথবাঃ নবীনের আগমনের কারণ কি ?
উঃ প্রলয়োল্লাস কবিতায় নবীন অর্থাৎ নতুন সূর্যের আলো জীবন হারা অ-সুন্দরকে ছেদন ( বিনাশ ) করতে আসছে।

২৩। “ মহাকালের চন্ডরূপে ”- কবি মহাকাল বলতে কি বুঝিয়েছেন ? অথবা:- মহাকাল কি ?
উ: মহাকাল ’ শব্দটির একটি অর্থ অনবচ্ছিন্ন কাল। কিন্তু কবি নজরুল ইসলাম মহাকাল বলতে প্রলয় সৃষ্টিকারী মহাদেবের ধ্বংসাত্মক রূপকে বুঝিয়েছেন। রুদ্ররূপী মহাদেবের আরেক নাম মহাকাল।

২৪। “ওরে ওই হাসছে ভয়ংকর ” — ভয়ংকর হাসছে কেন ?
উ: প্রলয় প্রচন্ড ভয়ংকর রূপে নতুন যুগের সৃষ্টির আগমন ঘটায় । প্রলয়োল্লাস কবিতায় এই ভয়ংকর পরাধীনতার গ্লানি মোচন করে , সমস্ত অন্যায় – অত্যাচারকে বিনাশ করে নতুন যুগের সূচনা করার আনন্দে হাসছে।

২৫।  “দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা ”  বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উঃ। প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতায় পরাধীন ভারতের নতুন যুগের বার্তা বহনকারী ভয়ংকর প্রলয় , যেন সূর্যের তেজের মত তীব্র। ‌ শুধু একটি সূর্যের তেজ নয়, বারোটি সূর্যের তেজের ন্যায় এই প্রলয় ভয়ংকর।

২৬। “ বিশ্বমায়ের আসন তারই বিপুল বাহুর পর ” — এই কথার অর্থ কী ?
উ:। প্রলয়োল্লাস কবিতায় কবি ভয়ংকর প্রলয়ের মধ্যে দিয়ে বিশ্বের অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তির আগমন ঘটাতে চান। তবেই দেশমাতার আসন সুরক্ষিত হবে। অর্থাৎ প্রলয়ের ওপরই বিশ্বমায়ের আসন পাতা আছে।

২৭। “ওই ভাঙা – গড়া খেলা যে তার ” — ভাঙা- গড়া খেলা বলতে কী বোঝ ?
উঃ। ‘ প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতায় ‘ ভাঙা- গড়ার খেলা ’ বলতে কবি নজরুল ইসলাম প্রলয়ের একদিকে ধ্বংস অন্যদিকে নতুন সৃষ্টির আনন্দকে বুঝিয়েছেন।

২৮। “ আসছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল ” – ” নৃত্য পাগল ” কে ? অথবা:- এখানে কার কথা বলা হয়েছে ?
উঃ। প্রলয়োল্লাস কবিতায় এখানে নৃত্য পাগল বলতে মহাদেবকে বোঝানো হয়েছে।কবি পরাধীন ভারতবর্ষের মুক্তিকামী নাগরিকদের প্রবল সংগ্রামকে প্রলয়রূপী নটরাজ তথা মহাদেবের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

২৯। “ ওই নূতনের কেতন ওড়ে ” — ” নূতনের কেতন ওড়া  ” বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
উঃ। কালবৈশাখী ঝড় যেমন জীর্ণ প্রকৃতির বুকে নতুন প্রাণের আগমন ঘটায় তেমনি পরাধীন দেশের জরাজীর্ণ মৃতপ্রায় জাতিকে জাগরিত করে তোলার জন্য কালবৈশাখীর মতো নুতনের কেতন অর্থাৎ প্রলয়ের প্রয়োজন।

৩০। প্রলয়নেশার নৃত্য পাগল কীসের জন্য আসছেন ?
উঃ প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল মহাদেবের মত প্রলয় সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে অর্থাৎ উপনিবেশিক শাসনের বন্দীদশা থেকে মুক্ত করতে আসছেন।

প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর

১। ” তোরা সব জয়ধ্বনি কর ” – ” তোরা ”  কারা ? তাদের জয়ধ্বনি করতে বলা হচ্ছে কেন  ?

উ: ।  ” প্রলয়োল্লাস “ নামক  কবিতায় কবি নজরুল ইসলাম “তোরা ” বলতে , পরাধীন ভারতবর্ষের মুক্তিকামী আপামর দেশবাসীকে বুঝিয়েছেন।

জয়ধ্বনি করতে বলা হচ্ছে কেন-প্রলয় বা ধ্বংস ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে সমস্ত জরাজীর্ণ তথা পরাধীনতার গ্লানি বিনাশ করে নতুন যুগের স্বাধীনতার আগমনকে সূচিত করবে। কালবৈশাখীর ঝড়ের মতো এই ভয়ংকর অর্থাৎ প্রলয় মহাদেবের মত প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল মত উন্মত্ত হয়ে কোন একজন ভারতবর্ষের পরাধীনতার গ্লানির অবসান ঘটিয়ে ভারতবর্ষে স্বাধীনতার স্বাদ বয়ে নিয়ে আসবেন। তাই কবি কাজী নজরুল ইসলাম আলোচিত কবিতায় বন্দিদশা থেকে মুক্তিকামী ভারতবাসীদের এই প্রলয়ের দেবতাকে আগমনের উদ্দেশ্যেই জয়ধ্বনি করতে বলেছেন। কেননা তার আগমন ঘটলেই পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচন ঘটবে।

২।  ” আসছে এবার অনাগত প্রলয় – নেশার নৃত্য পাগল ” -‘অনাগত ’ কে ? সে ‘প্রলয়–নেশার নৃত্য পাগল”কেন ? অথবা:-“অনাগত”প্রলয় নেশার নৃত্য পাগলের মতো আসছে কেন ? তিনি কি করবেন 

উঃ। অনাগত কথাটির অর্থ হল- যা এখনো আসেনি। প্রলয়োল্লাস ’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম অনাগত ’ বলতে পরাধীন ভারতবর্ষের উপনিবেশিক নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়ে, আসন্ন স্বাধীনতার কথাকে বুঝিয়েছেন। অর্থাৎ পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচন ঘটে স্বাধীনতার সূর্য যে উদিত হবে তা কবি অত্যন্ত আশাবাদী।

‘প্রলয়–নেশার নৃত্য পাগল-নৃত্য পাগল এবং প্রলয় নেশা বলতে কবি নজরুল ইসলাম মহাদেবের বিধ্বংসী নটরাজ রূপকেই বলেছেন। কবি আশা করেছেন- মহাদেবের মত কোন এক অনাগত শক্তি বিধ্বংসী নটরাজ রূপে ব্রিটিশ সরকারের সমস্ত অন্যায়- শোষণ – অত্যাচার ধ্বংস করে ভারতবর্ষের স্বাধীনতার নতুন সূর্যকে উপহার দেবেন। প্রলয় যেমন নতুন সৃষ্টির আগমনের নেশায় মেতে ওঠে। তেমনি মহাদেব তার নটরাজরুপে ধ্বংসরূপ ধারণ করে নতুন সৃষ্টির বার্তাকে প্রকাশ করেন। তাই ভারতবর্ষের নতুন সূর্যের আগমনের জন্য প্রলয় নৃত্য নেশার মতো পাগল।

৩। “ বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর!” – “ভয়ংকর “বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন ? তার আসার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো ? অথবা-  ভয়ংকর এর আশার উদ্দেশ্য কি তা কবিতা অনুসরণ লেখো।

উ:। ” প্রলয়োল্লাস “ কবিতায় কবি নজরুল ইসলাম  “ভয়ংকর  ”  বলতে পরাধীন ভারতবর্ষের নতুন যুগের বার্তা বহনকারী ধ্বংসরূপী অর্থাৎ প্রলয়রূপী বিদ্রোহ বা বিপ্লবকে বুঝিয়েছেন। তিনি তার প্রতীক রূপে মহাদেবকে কল্পনা করেছেন। মহাদেবের রূপ প্রলয়রূপী।

আসার তাৎপর্য – ভারতবর্ষের পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্তি করতে প্রলয়রূপী – ধ্বংস রূপ এই বিদ্রোহ বা বিপ্লবের প্রয়োজন। কবি আশা করেছেন- মহাদেবের মত প্রচন্ড ধূম্র ধূপে ভয়ংকর এসে সমস্ত জরাজীর্ণ তথা ভারতবর্ষের পরাধীনতার আত্মগ্লানিকে বিনাশ করে ভারতবর্ষের স্বাধীনতার নতুন যুগকে রচনা করবেন। তিনি জানেন, কালের নিয়মে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটবেই। ভয়ংকর রুপী কোন এক অনাগত শক্তি এই অত্যাচারের বিনাশ ঘটাবেন। তাই প্রলয় বা ধ্বংস আসন্ন মহাবিপ্লবের আনন্দে আছড়ে পড়বে ভারতবর্ষের বুকে, তাই কবি প্রলয়কে ভয়ংকর রূপে তুলনা করেছেন।

মাধ্যমিক দশম শ্রেণি বাংলা আরও প্রশ্ন ও উত্তর – Click Here

৪। ” মাভৈঃ মাভৈঃ ! জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে ” — কবি ” মাভৈঃ ” বলে কী জানাতে চেয়েছেন ? প্রলয় এসে কোন্ কাজ করবে বলে কবির মনে হয়েছে ?

উঃ । প্রলয়োল্লাস কবিতায় ‘ মাভৈঃ মাভৈঃ অর্থ ভয় কোরো না , অর্থাৎ নির্ভয়ে এগিয়ে চলো।‌ কবি মুক্তিকামী সকল ভারতবাসীকে প্রলয় দেখে ভয় না পেয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

ধ্বংসের মধ্যেই নবযুগের বার্তা লুকিয়ে থাকে। কবি নজরুল ইসলাম ভারতবর্ষের পরাধীনতার গ্লানি মোচন করতে প্রলয় বা ধ্বংসের প্রয়োজন বলে মনে করেন। তাই সকল ভারতবাসীকে প্রলয়কে বা ধ্বংসকে দেখে ভয় না পেয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান করেছেন। কেননা প্রলয় বা ধ্বংসরূপী মহাবিপ্লবের মধ্যে দিয়েই মহানিশার শেষে ভারতবর্ষের নতুন স্বাধীনতার সূর্যের আগমন ঘটবে। । মহাদেব যেমন তার নৃত্য নেশার পাগলের মত ধ্বংসকে বিনাশ করে নতুন সৃষ্টিকে আহবান করেন। ঠিক তেমনি প্রচন্ড মহাবিপ্লবের মধ্যে দিয়েই আসবে স্বাধীনতা আসল স্বাদ। তাই কবি সকল ভারতবাসীকে ধ্বংস বা ভয়ংকর এর প্রচন্ড রূপ দেখে ভয় না পেয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

৫।  ” কাল–ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে … !”  – কার সম্পর্কে বলা হয়েছে ? এমন উক্তির কারণ কী ?  অথবাঃ – কে আসছে ? তার বেশ কাল-ভয়ংকর কেন ?

উঃ।‌ কবি নজরুল ইসলাম বিরোচিত ‘ প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতায় চিরসুন্দর অর্থাৎ নতুনের আগমনের বার্তা সম্পর্কে এ কথা বলেছেন।

বেশ কাল-ভয়ংকর কেন ?- কবি পরাধীন ভারতের শৃঙ্খল মোচন করতে এবং জরাজীর্ণ জাতির প্রাণে, দেশবাসীকে নবযুগের বার্তায় উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন । প্রলয়ের এর মধ্যে দিয়েই মহাবিপ্লব ঘটবে। এর ফলে নতুন স্বাধীনতার সূর্য উদিত হবে। তাই কবি মহাদেবের সংহার মূর্তিকেই কামনা করেছেন। কেননা ধ্বংসের মধ্যেই নতুনের আগমনের বার্তা নিহিত থাকে। পুরাতন মৃতপ্রায় ভগ্নপ্রায় জাতিকে পুনর্জীবিত করতে প্রলয়ের আগমন তথা ধ্বংসের আগমন অনিবার্য। তাই ধ্বংসের ভয়াবহতার মধ্যেই লুকিয়ে আছে আগামী দিনের সুন্দরের বীজ। ধ্বংসের মধ্যেই কবি খুঁজেছেন সৃষ্টির বেদনাকে। তাই তিনি ভয়ংকর সুন্দরেরই বন্দনা করেছেন।

৬। “এই তোরে তার আসার সময় ”- কার কথা বলা হয়েছে ? তার আসার চিহ্নগুলি কী ছিল ? অথবা :- কে, কিভাবে আসছে ?

উঃ।  কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘ প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতায় কবি ‘ তার ’ বলতে ‘ মহাকাল ’ এর কথা বলেছেন । মৃতপ্রায় ভগ্নপ্রায় জাতিকে উজ্জীবিত করতে মহাকালের আগমন সূচিত হয়েছে।

আসার চিহ্নগুলি- কবি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন- মহাবিপ্লবের মধ্যে দিয়েই ভারতবর্ষের পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচন সম্ভব। প্রলয়ের মধ্যে দিয়েই নতুন যুগের বার্তা বহন করে আনবে। মহাকালই পারে তার মহাপ্রলয়ের দ্বারা ভারতবর্ষের পরাধীনতার গ্লানি মোচন করতে। কবি নিশ্চিত মহাকালের আগমন সন্নিকটে । মহাকালের হাতের চাবুক বিদ্যুতের মতো চমক দিচ্ছে। বজ্রের মত ঘোড়ার কাঁন্নার শব্দে বজ্রগগনে ঝড়ের তুফান ছুটছে । ঘোড়ার খুরের আঘাতে নীল খিলান থেকে উল্কা ছুটে চলেছে । মহাকালের আগমনের বার্তা তার রথের চাকার ঘর্ষণের আওয়াজে জানান দিচ্ছে।

৭।  ” ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর ?  ” – ধ্বংসকে ভয় না পাওয়ার কারণ কবিতা অনুসরণে লেখ ।

উঃ। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার প্রলয়োল্লাস হিরো নামাঙ্কিত কবিতায় প্রশ্ন উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন। তিনি পরাধীন  ভারতের মুক্তিকামী অগ্রদূতকে ধ্বংস দেখে ভয় না পাওয়ার কথা বলেছেন।

ধ্বংসকে ভয় না পাওয়ার কারণ- প্রলয় বা ধ্বংস সমস্ত কিছু জরাজীর্ণ পুরাতন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে, নতুন যুগের, নতুন সূর্যের আগমনের বার্তা বয়ে নিয়ে আসে। তাই ধ্বংসের মধ্যেই নবযুগের বার্তা নিহিত থাকে। ধ্বংস সাময়িকভাবে বেদনা সৃষ্টি করলেও তা আসলে প্রলয় সৃজন বেদন। তাই কবি ভয়ংকর এর আগমনকে দেখে অগ্রদূতকে ভয় না পেয়ে এগিয়ে যেতে বলেছেন। কারণ প্রলয় একমাত্র অগ্রদূতকে প্রাণহীন অসুন্দরের মধ্যে নতুন প্রাণের সঞ্চার করতে সক্ষম হবে। তাই প্রলয় ধ্বংস সৃষ্টি করলেও সে আবার নতুনভাবে গড়ে তুলতেও পারে তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

৮। “ ভেঙে আবার গড়তে জানে সে চিরসুন্দর ” – ‘ সে ‘ কে ? ভেঙে আবার গড়ার বলতে কি বোঝানো হয়েছে ।

উ:। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘ প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতায় ‘ সে ’ বলতে ‘প্রলয়রুপী এবং সংহাররুপ মহাদেবকে বুঝিয়েছেন।

ভেঙে আবার গড়ার বলতে –মহাদেবের ভয়ংকর চন্ড রূপের বা প্রলয়ের মধ্যেই নতুন সৃষ্টির বীজ লুকিয়ে থাকে। অর্থাৎ মহাদেব সৃষ্টির প্রয়োজনে ধ্বংস করে আবার গড়ে তুলবেন নতুন রূপে নতুন সাজে। ধ্বংস সাময়িকভাবে বেদনা জাগালেও আসলে এই বেদনা প্রলয় সৃজন বেদনা। পরাধীন ভারতের বন্দী দশা থেকে মুক্তির জন্য কবি এই প্রলয়রূপী মহাদেবকে আহ্বান জানিয়েছেন । তিনি অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে চির সুন্দর শুভ শক্তি সূচনা করবেন।

৯। “এবার মহানিশার শেষে/আসবে ঊষা অরুন হেসে ”— ‘ মহানিশা ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? মন্তব্যটির তাৎপর্য কি ?

উঃ।  কবি নজরুল ইসলাম বিড়োচিত প্রলয়োল্লাস কবিতায় মহানিশা বলতে পরাধীন ভারতবর্ষের অন্ধকারময়, মৃতপ্রায়, জরাজীর্ণ জাতির স্থিতবস্থাকে বুঝিয়েছেন।

মন্তব্যটির তাৎপর্য কি ?-কবি আশাবাদী ছিলেন যে, ভারতবর্ষ একদিন পরাধীনতার অন্ধকারময় গ্লানি, তথা বন্দীদশা থেকে মুক্তি লাভ করবে। মৃতপ্রায় জরাজীর্ণ পরাধীন জাতির শোষণ বঞ্চনার অবসান একদিন ঘটবে। মহাপ্রলয়ের শেষে মহানিশা অর্থাৎ অন্ধকার শেষে নতুন সূর্য হেসে উঠবে। প্রলয়রুপ সংহাররূপ মহাদেবের আগমন কামনা এজন্যই কবি করেছেন। কারণ তিনি জানেন, ধ্বংসের মধ্যে দিয়েই নতুনের আগমনের বার্তা সূচিত হয়। তাই ভারতবর্ষের অন্ধকার পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার হতে গেলে প্রয়োজন মহাপ্রলয় স্বরূপ মহাবিপ্লব তথা বিদ্রোহ।

প্রলয়োল্লাস কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

১। ‘ প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতায় প্রলয়ের যে – চিত্র অঙ্কিত হয়েছে তার বর্ণনা দাও।
অথবা:- নজরুল ইসলাম প্রলয়োল্লাস কবিতায় যে প্রলয়ের চিত্র তুলে ধরেছেন তা কবিতা অনুসরণে লেখ।

উঃ। কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘ প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতায় পরাধীন ভারতবর্ষের সকল নাগরিককে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন। কারণ প্রলয় বা ধ্বংস পরাধীন ভারতবর্ষের সমস্ত জরাজীর্ণ ভগ্নপ্রায় সমস্ত কিছু, এবং উপনিবেশিক শাসনের অত্যাচার বিনাশ করে স্বাধীনতার নতুন সূর্যের আগমন ঘটবে। প্রলয় বা ধ্বংস বিনাশ করলেও তার মধ্যে নতুনের আগমনের বার্তা লুকিয়ে থাকে।

প্রলয়ের চিত্র- ধ্বংসকারী প্রলয় কালবৈশাখীর ঝড়ের মতোই সমস্ত জড়াজীর্ণতাকে বিনাশ করে নূতনের কেতন অর্থাৎ স্বাধীনতার নতুন সূর্যের আগমনকে সূচিত করছে। কবি জয়ধ্বনি দিয়ে তাকে গ্রহণ করতে বলেছেন । তিনি প্রলয়কে মহাদেবের মত পাগল প্রলয় নেশার সঙ্গে তুলনা করেছেন। মহাপ্রলয়রূপী মহাবিপ্লবের মধ্যে দিয়েই সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ধমক হেনে আগল ভাঙবে। মহাদেবের মতো বজ্রশিখায় মশাল জ্বেলে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে ভারতবাসীকে মুক্ত করতে এগিয়ে আসছে ।

প্রলয়ের ঝড় সমাজের অত্যাচারের ভিত নারিয়ে দিয়ে নতুন যুগের স্বপ্ন দেখা যাচ্ছে। তার ভয়ংকর হট্রগোলে, অট্ররোলে বিশ্ব স্তব্ধ। তার চোখের দৃষ্টিতে যেন দ্বাদশ রবির ভয়ংকর অগ্নি জ্বালা। রুদ্ররূপী মহাদেব তথা নটরাজের বাহুর ওপরেই বিশ্বমায়ের আসন পাতা । মহাপ্রলয় জরাজীর্ণ ও মুমূর্ষুদের বিনাশ করে নতুন স্বাধীনতার সূর্য দেখায় । মহাকালের সারথি রক্তের মত তড়িৎ চাবুকের আওয়াজে ঘোড়ার কাঁদনে বজ্র গগনে ঝড় ছুটে চলেছে। খুড়ের দাপটে তারাই লেগে উলটা ছুটছে নীল খিলানে- অন্ধ কারার বন্ধকূপ থেকে উদ্ধার করার জন্য। এই ধ্বংস দেখে ভয় পাবার কিছু নেই।

২। “ কাল-ভয়ঙ্কর বেশে এবার ওই আসে সুন্দর ”— ‘ কাল-ভয়ংকর কে ? তার ভয়ংকর রূপের বর্ণনা দাও। কাকে সুন্দর বলা হয়েছে কেন ? অথবা:- কাল ভয়ঙ্কর এ বেশে সুন্দর কেন আসে তা কবিতা অনুসরণে আলোচনা কর।

উ:। কবি কাজী নজরুল ইসলাম মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন- মহাবিপ্লবের মধ্যে দিয়েই ভারতবর্ষের পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচন সম্ভব। তাই জীবনহারা অ-সুন্দর ভারতবর্ষের জাতিকে নতুন সূর্যের আলোয় উজ্জীবিত করতে চাই একটা মহাপ্রলয়রুপী ভয়ংকর মহাবিপ্লব।

ভয়ংকর রূপের বর্ণনা-  ধ্বংসকারী প্রলয় কালবৈশাখীর ঝড়ের মতোই সমস্ত জড়াজীর্ণতাকে বিনাশ করে নূতনের কেতন অর্থাৎ স্বাধীনতার নতুন সূর্যের আগমনকে সূচিত করছে। কবি জয়ধ্বনি দিয়ে তাকে গ্রহণ করতে বলেছেন । তিনি প্রলয়কে মহাদেবের মত পাগল প্রলয় নেশার সঙ্গে তুলনা করেছেন। মহাপ্রলয়রূপী মহাবিপ্লবের মধ্যে দিয়েই সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ধমক হেনে আগল ভাঙবে। মহাদেবের মতো বজ্রশিখায় মশাল জ্বেলে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে ভারতবাসীকে মুক্ত করতে এগিয়ে আসছে । তার কেশের দোলায় আকাশ কেঁপে ওঠে।

রক্তমাখা কৃপণ হাতে সংহারমূর্তি ধারণকারী শিবের আগমন চারিদিকে ধ্বংসের বার্তা শোনা যাচ্ছে। প্রলয়ের ঝড় সমাজের অত্যাচারের ভিত নারিয়ে দিয়ে নতুন যুগের স্বপ্ন দেখা যাচ্ছে। তার ভয়ংকর হট্রগোলে, অট্ররোলে বিশ্ব স্তব্ধ। তার চোখের দৃষ্টিতে যেন দ্বাদশ রবির ভয়ংকর অগ্নি জ্বালা। রুদ্ররূপী মহাদেব তথা নটরাজের বাহুর ওপরেই বিশ্বমায়ের আসন পাতা । মহাকালের সারথি রক্তের মত তড়িৎ চাবুকের আওয়াজে ঘোড়ার কাঁদনে বজ্র গগনে ঝড় ছুটে চলেছে। খুড়ের দাপটে তারাই লেগে উল্কা ছুটছে নীল খিলানে- অন্ধ কারার বন্ধকূপ থেকে উদ্ধার করার জন্য।

মাধ্যমিক দশম শ্রেণি বাংলা আরও প্রশ্ন ও উত্তর – Click Here

৩। “ ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর ?—প্রলয় নূতন সৃজন –বেদন!” — কোন্ ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে ? প্রলয়কে ” নূতন সৃজন-বেদন ” বলার তাৎপর্য কী ?  “প্রলয় নতুন সৃজন বেদন ” বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? কবি ধ্বংস দেখে ভয় না পেতে বলছেন কেন ?

উঃ। কবি কাজী নজরুল ইসলাম মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন- মহাবিপ্লবের মধ্যে দিয়েই ভারতবর্ষের পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচন সম্ভব। তাই জীবনহারা অ-সুন্দর ভারতবর্ষের জাতিকে নতুন সূর্যের আলোয় উজ্জীবিত করতে চাই একটা মহাপ্রলয়রুপী ভয়ংকর মহাবিপ্লব। সেই প্রলয় ঘটাতে পারে মহাদেবের মত রুদ্ররূপী প্রলয় বা ধ্বংস।

নূতন সৃজন-বেদন – কবি পরাধীন ভারতবর্ষের জরাজীর্ণ জাতিকে বৈপ্লবিক শক্তিতে উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন। পরাধীনতার গ্লানি ভারতবাসীর প্রাণের মুক্তিকে বন্দী করে রেখেছে। ইংরেজ শাসনে বঞ্চনা, শোষণ , অত্যাচার ভারতবর্ষের তরুণ যুব সমাজকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। এমন জরাজীর্ণ ভগ্নপ্রায় মৃতপ্রায় ভারতবর্ষের জাতিকে নতুন মন্ত্রে নতুন শক্তিতে উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যেই কবি প্রলয় তথা ধ্বংসের আগমন কামনা করেছেন। কারণ প্রলয় বা ধ্বংসের মধ্যেই নবযুগের বার্তা লুকিয়ে থাকে।

কবি ভারতবর্ষের মৃত প্রায় জরাজীর্ণ জাতির অবলুপ্তি ঘটিয়ে নব রূপে প্রাণের সঞ্চার করতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি প্রলয়কারী নটরাজের আগমনকে কামনা করেছেন। চন্ডরুপী মহাদেবই পারেন সমস্ত অ-সুন্দরকে বিনাশ করে নতুন যুগের বার্তা বহন করে আনতে। তাঁর আবির্ভাবেই প্রলয় তথা ধ্বংস অনিবার্য । প্রলয় যেমন বেদনা বহন করে আনে তেমনি সেই প্রলয়ের মধ্যে নতুন সৃজনের সুচনাও লক্ষিত হয়।

৪।  “প্রলয়োল্লাস ” কবিতায় একদিকে ধ্বংসের চিত্র আঁকা হয়েছে আবার অন্যদিকে নতুন আশার বাণী ধ্বনিত হয়েছে- মন্তব্যটি তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর ।
অথবা: –  ‘ ওই নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড় । ” — ‘ প্রলয়োল্লাস কবিতার বিষয়বস্তুর আলোচনা প্রসঙ্গে মন্তব্যটির তাৎপর্য আলোচনা করো ।

উঃ।নজরুল ইসলাম বিরচিত ‘ প্রলয়োল্লাস ’ নামক কবিতায় একদিকে ধ্বংস বা প্রলয়ের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে অন্যদিকে নবযুগের আশার বাণীও ধ্বনিত হয়েছে। একদিকে কালবৈশাখী ঝড়ের আগমনের চিত্র অন্যদিকে ধ্বংসের পরেই পরাধীন ভারতবর্ষের বন্দীদশা থেকে মুক্তির অবসান।

ধ্বংসের চিত্র-কবি বিশ্বাস করতেন- মহাবিপ্লবের মধ্যে দিয়েই ভারতবর্ষের পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচন সম্ভব। তাই জীবনহারা অ-সুন্দর ভারতবর্ষের জাতিকে নতুন সূর্যের আলোয় উজ্জীবিত করতে চাই একটা মহাপ্রলয়রুপী ভয়ংকর মহাবিপ্লব। সেই প্রলয় ঘটাতে পারে মহাদেবের মত রুদ্ররূপী প্রলয়। বা বিদ্রোহ ।পরাধীনতার গ্লানি ভারতবাসীর প্রাণের মুক্তিকে বন্দী করে রেখেছিল। ইংরেজ শাসনে বঞ্চনা, শোষণ , অত্যাচার ভারতবর্ষের তরুণ যুব সমাজকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। এমন জরাজীর্ণ ভগ্নপ্রায় মৃতপ্রায় ভারতবর্ষের জাতিকে নতুন মন্ত্রে নতুন শক্তিতে উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যেই কবি প্রলয় তথা ধ্বংসের আগমন কামনা করেছেন।

নতুন আশার বাণী – একদিকে তিনি প্রলয়ের কামনা করলেও অন্যদিকে তিনি বলেছেন- “ওরে ওই হাসছে ভয়ংকর” আবার একদিকে দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা ভয়ংকর তার নয়নের কোটায় ‘ , অন্যদিকে ‘ বিন্দু তার নয়ন জলে মহাসপ্তসিন্ধু দুলছে। অর্থাৎ মহান ঈশ্বর শেষে স্বাধীনতার সূর্যের আলো আসবে। আবার তিনি বলেছেন “ ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর? ”। কবি সৃষ্টির বেদনা জানেন তিনি জানেন ধ্বংসের বেদনার পরেই আসবে নবযুগের বার্তা। ধ্বংসের পরি যে স্বাধীনতার সূর্য উদিত হবে সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত।

৫। তোরা সব জয়ধ্বনি কর ! কাদের উদ্দেশ্যে কবির এই আহ্বান ? কবিতার ভাববস্তু বিশ্লেষণ করে এই আহ্বানধ্বনির কারন বিশ্লেষণ কর
অথবা – তোরা সব জয়ধ্বনি কর ! ‘ — এখানে ‘ তোরা বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ? তারা কেন , কাদের জয়ধ্বনি করবে ?

উঃ। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার প্রলয়োল্লাস শীর্ষক কবিতায় তোরা বলতে পরাধীন ভারতবর্ষের জরাজীর্ণ জাতির নাগরিককে বুঝিয়েছেন। যারা উপনিবেশিক শাসনের নাগপাশে শোষিত, অত্যাচারিত। মহানিশর অন্ধকারে ভারতবর্ষ নিমজ্জিত। তাদের চেতনা জাগ্রত করার উদ্দেশ্যেই কবির এই আহ্বান।

কেন , কাদের জয়ধ্বনি করবে- কবি জানেন, পরাধীন ভারতবর্ষের বন্দীদশা থেকে শৃঙ্খল মোচন করতে গেলে প্রয়োজন প্রবল প্রয়ল স্বরূপ বিপ্লবী আন্দোলন। মৃতপ্রায় জরাজীর্ণ তরুণ যৌবনকে উজ্জীবিত করতে গেলে প্রয়োজন প্রবল প্রলয় বা ভয়ংকরের আগমন । প্রলয় যেমন একদিকে ধ্বংসকে সূচিত করে, বিনাশকে সূচিত করে, অন্যদিকে নবযুগের বার্তাও বয়ে নিয়ে আসে। তাই কবি সকল ভারতবর্ষের নাগরিককে প্রলয়ের আগমনের জন্য জয়ধ্বনি করতে বলেছেন। কারণ এই প্রলয়ের মধ্যেই লুকিয়ে আছে স্বাধীনতার নতুন সূর্য। যা তরুণ যৌবনকে তথা যৌবন শক্তিকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্দীপিত করবে।

প্রলয়ই পারবে কালবৈশাখীর ঝড়ের মতো, মহাকালের চন্ডরূপে সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে আগল ভেঙে বিপ্লবীদের মুক্তি দিতে- মুমূর্ষ জাতির প্রাণে প্রাণের সঞ্চার করতে। কবি মহাপ্রলয়ের ধ্বংসলীলা দেখে অগ্রদূতকে ভয় না – পেতে বলেছেন। তাই কবি বলেছেন “ভাঙ্গা গড়া খেলা যে তার কিসের তবে ডর?” তাই প্রলয়ের আগমনকে দেখে সকলকে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।

বাক্য পরিবর্তন প্রশ্ন উত্তর জানতে অবশ্যই click here

Leave a Comment

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading