উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা অলৌকিক wbchse বিষয়ে একটি অন্যতম ভারতীয় গল্প হল কর্তার সিং দুগ্গল বিরচিত অলৌকিক গল্পটি | এই সিরিজে অলৌকিক গল্পের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা করা আছে। উত্তরগুলি ছোট ছোট প্যারায় উল্লেখ করা আছে।
বিষয়বস্তু সংক্ষেপে-
“অলৌকিক” নামাঙ্কিত গল্পটিতে দুটি আশ্চর্য ঘটনার বিবরণ আছে। একদিকে আছে শিখ ধর্মগুরু গুরু নানকের অলৌকিক ঘটনার প্রদর্শন এবং অন্যদিকে আছে ট্রেন থামানোর আশ্চর্য লৌকিক এক ঘটনা। দুটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গল্পটি আবর্তিত হয়েছে। গুরু নানকের পাথর থামিয়ে দেওয়া গল্পটি লেখক প্রথমে বিশ্বাস করতে চাইছিলেন না। পরে যখন পাঞ্জা সাহেবে তিনি ট্রেন থামানোর গল্প শোনেন, তখন লেখকের কাছে গুরু নানকের কাহিনী আর অলৌকিক বলে মনে হয়নি। সমস্তটাই মনের অগাধ বিশ্বাস এবং মানসিক ক্ষমতা।
আপাতত দৃষ্টিতে মনে হয়, এখানে ধর্মীয় কোন বিষয় অলৌকিক বাতাবরণ সৃষ্টি করেছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন অলৌকিক বিষয় স্থান পায় না। গুরু নানক অলৌকিক ক্ষমতার বলে যেভাবে শিষ্য মর্দানের তৃষ্ণা নিবারণ করেছিলেন এবং পাথর থামিয়েছিলেন। তার মধ্যে অদ্ভুত এক অতি লৌকিক শক্তির পরিচয় রয়েছে কিন্তু এটা অলৌকিক গাঁথা না হয়ে হয়ে উঠেছে প্রেমের এক উজ্জ্বল গাঁথা। ঠিক সেইভাবে দেশের আবাল বৃদ্ধবনিতা অলৌকিকভাবে ঝড়ের গতিতে ছুটে আসা চলন্ত ট্রেন থামিয়ে বিপ্লবীদের খাবার পৌঁছে দিয়েছিলেন। উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো প্রশ্ন উত্তর জানতে click here
উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা অলৌকিক বহু বিকল্পধর্মী প্রশ্নোত্তর
১) “ব্যাপারটা মেজাজ বিগড়ে দিল”- কোন ব্যাপারটা মেজাজ বিগড়ে দিল?
- বলি কান্ধারীর মর্দানাকে জল না দেওয়া
- মর্দানার পিপাসায় ছটফট করা
- হাত দিয়ে পাথরের চাঙ্গর থামানোর বিষয়
- গুরু নানকের দরবেশ পরিচয় দেওয়ার জন্য উঃ গ) হাত দিয়ে পাথরের চাঙর থামানোর বিষয়
২) “মনে হয় পরে কেউ খোদাই করেছে”- কি খোদাই করেছে ?
- পাথরের চাঙ্গরের উপর আঙ্গুলের ছাপ
- পাথরের চাঙরের উপর পায়ের ছাপ
- পাথরের চাঙরের উপর রক্তের ছাপ
- পাথরের চাঙরের উপর হাতের ছাপ উঃ ঘ) পাথরের চাঙ্গরের উপর হাতের ছাপ
৩) “সেকালে ঘনঘন সাকা হতো”- সাকা হলে কি হতো ?
- উৎসব পালন করা হতো
- বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া হত।
- অরন্ধন
- বাড়িতে রন্ধন করা হতো। উঃ গ)অরন্ধন।
৪) “খালপারের সেতুটির দিকে রক্তের স্রোত”- কি কারনে রক্তের স্রোত?
- ট্রেন পিছুতে লাশগুলো কেটে দুমড়ে মুচড়ে গেল
- ট্রেন ঝড়ের গতিতে ছুটে গেল
- রেল লাইনে অ্যাক্সিডেন্ট ঘটেছে
- ফিরিঙ্গিরা গুলি চালিয়েছে উঃ ক)ট্রেন পিছাতে লাশগুলো কেটে দুমড়ে মুচরে গেল
৫) “পাঞ্জাসাহেবের পূর্ব নাম কি ছিল ?
- হাসান আব্দাল
- হাসান আব্দাল
- আব্দাল জঙ্গল
- হাসান জঙ্গল উঃ ক) হাসান আব্দাল
৬) “উনি রীতিমতো হতভম্ব”- কেন হতভম্ব হলেন ?
- মর্দানার জল পিপাসা শুনে
- গুরু নানকের নাম শুনে,
- জয় নিরঙ্কার ধ্বনি শুনে
- কুয়োতে একটুও জল না দেখতে পেয়ে উঃ ঘ) কুয়োতে একটুও জল না দেখতে পেয়ে
৭) “গল্পটা মনে পড়লেই হাসি পেত”- কোন গল্পের কথা বলা হয়েছে ?
- ট্রেন থামানোর গল্প
- মর্দানার জল পিপাসার গল্প
- বলি কান্ধারীর জল না দেওয়ার গল্প
- গুরু নানকের পাথর থামিয়ে দেওয়ার গল্প উঃ ঘ)গুরু নানকের পাথর থামিয়ে দেওয়ার গল্প
৮) “সারাদিন এক ফোঁটা জলও মুখে দিতে পারিনি”- মুখে জল দিতে না পারার কারণ-
- শিষ্য মর্দানার জল পিপাসার জন্য
- বলি কান্ধারী জল না দেওয়ার জন্য
- পাঞ্জা সাহেবের ট্রেন থামানোর গল্প শুনে
- ফিরিঙ্গিদের গুলি চালানোর জন্য উঃ ঘ) পাঞ্জা সাহেবের ট্রেন থামানোর গল্প শুনে
৯) “ স্টেশন মাস্টারের কাছে আবেদন জানানো হলো”- স্টেশন মাস্টারের কাছে কিসের আবেদন জানানো হলো?
- ট্রেনটাকে থামানোর জন্য
- ট্রেনটাকে চালানোর জন্য
- ট্রেনটাকে বাতিল করার জন্য
- নতুন ট্রেনের ব্যবস্থা করার জন্য। উঃ ক) ট্রেনটাকে থামানোর জন্য
১০) “একি আদৌ সম্ভব?”- কোন বিষয়টি এখানে বলা হয়েছে?
- জলের ফোয়ারা
- কুয়ো থেকে জল সরিয়ে দেওয়া
- মর্দানার পিপাসা মেটানো
- পাথরের চাঙ্গর থামিয়ে দেওয়া উঃ ঘ) পাথরের চাঙ্গর থামিয়ে দেওয়া
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর
১) “আমি কৌতুহলী হয়ে উঠি”- বক্তা কোন বিষয়ে কৌতুহলী হন ?
উঃ “অলৌকিক” গল্পে লেখক তার মায়ের কাছ থেকে গুরু নানকের গল্পের, প্রথম অংশ শুনছিলেন। লেখক তার পরের অবশিষ্ট অংশ শোনার জন্য কৌতুহলী হয়ে ওঠেন।
২) “ঠিক হলো,…. থামানো হবে” – কেন ট্রেনটাকে থামানো হবে ?
উঃ যে ট্রেনে করে কয়েদিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেই ট্রেনটিকে থামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কারণ, যে পাঞ্জা সাহেবে গুরু নানক তার শিষ্য মর্দানার তেষ্টা মিটিয়ে ছিলেন, সেই শহর দিয়েই খিদে-তেষ্টায় কাতর হয়ে কয়েদিদের ট্রেন যাবে, সেটা কখনোই হতে পারে না। তাই তারা ট্রেন থামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
৩) “আমার …. জল”- বক্তার চোখে কেন জল ?
উঃ ক্ষুধার- তৃষ্ণায় কাতর, কয়েদিদের খাবার পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে, আবাল বৃদ্ধবণিতা যে আত্ম বলিদান দিয়ে, ট্রেন থামিয়ে ছিলেন- সেই ঘটনায় লেখকের চোখে জল আসে।
৪) “চোখের….তাদের জন্য” – চোখের জলটা কাদের জন্য লেখক উৎসর্গ করেছেন ?
উঃ “অলৌকিক” গল্পে ক্ষুধার তৃষ্ণায়- কাতর কয়েদিদের উদ্দেশ্যে, যারা জীবন উৎসর্গ করে, রুটি ও জল পৌঁছে দিয়েছিলেন, লেখক এখানে সেই দেশবাসীর উদ্দেশ্যেই, নিজের চোখের জল উৎসর্গ করেন।
৫) “সেকালে ঘনঘন ….হতো”- সাকা হলে কি করতে হতো ?
উঃ “অলৌকিক” শীর্ষক গল্পে সেকালে সাকা হলেই বাড়িতে অরন্ধন হতো এবং রাতে মেঝেতে শুতে হতো।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
1.“গল্পটা আমাদের স্কুলে শোনানো হল”- গল্পটি উল্লেখ করো, লেখকের শেষ পর্যন্ত কি প্রতিক্রিয়া ঘটলো তা আলোচনা কর। অথবা- “গল্পটা মনে পড়লেই হাসি পেত”- কোন গল্পের কথা এখানে বলা হয়েছে? কেন লেখকের হাসি পেত?
উঃ ভারতীয় কথন শিল্পের জনপ্রিয়লেখক কর্তার সিং দুগাল এর রচিত “অলৌকিক” শীর্ষক গল্পে দুটি আশ্চর্য ঘটনার বর্ণনা আছে। একদিকে শিখ ধর্মগুরু গুরু নানকের অলৌকিক ক্ষমতার কাহিনী দিয়ে গল্পের শুরু, অন্যদিকে তৎকালীন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামকে স্মরণ করে গল্পের শেষ। লেখক তার মায়ের কাছে গুরু নানকের এক অলৌকিক ক্ষমতার গল্প শুনছিলেন। আলোচিত এই অংশে, লেখক এই গল্পের কথায় বলতে চেয়েছেন।
লেখক তার মায়ের কাছে গুরু নানকের অলৌকিক ক্ষমতার গল্প শুনছিলেন। গুরু নানক একবার প্রচন্ড গরমে তার শীর্ষ মর্দানাকে নিয়ে পথ চলতে চলতে হাসান আব্দালের জঙ্গলে একটি জায়গায় এসে পৌঁছান। সেখানে তার শীর্ষ মর্দানার প্রচন্ড তৃষ্ণা পায়।গুরু নানক তাকে বুঝিয়েও একপাও নড়াতে পারেন না। কোনো উপায় না পেয়ে, গুরু নানক তার শিষ্যকে বলী কান্ধারীর কাছে পাঠান। কিন্তু বলী কানধারী “আমি পীর….সঙ্গী” কথাটি শুনেই, মর্দানাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেন। পরপর তিনবার বলী কান্ধারী জল না দিয়ে মর্দানাকে ফিরিয়ে দেন।
মর্দানার প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা দেখা দিলে, সেই সময় গুরু নানক তার শিষ্যকে বাঁচানোর জন্য তার অলৌকিক ক্ষমতার প্রকাশ করেন। তিনি তার শিষ্যকে সামনের একটি পাথরকে সরানোর নির্দেশ দিলে, সেখান থেকে অফুরন্ত জল বেরিয়ে আসে। ঠিক এই সময় বলী কান্ধারীর জলের প্রয়োজন হলে, তিনি জল দেখতে না পেয়ে, বিরক্ত হয়ে একখানা পাথরের চাঙ্গর, গুরু নানকের দিকে গড়িয়ে দেন। গুরু নানক জয় “নিরঙ্কার ধ্বনি” উচ্চারণ করে, সেই পাথর থামিয়ে দেন।
লেখক এই গল্পটি বিশ্বাস করতে চাইছিলেন না। এমনকি গল্পটি তার মনে পড়লেই হাসি পেত। কেননা এক হাতে পাথর থামানো অসম্ভব ব্যাপার। তাই স্কুলে মাস্টারমশাইদের সঙ্গেও তিনি তর্ক করেন। জল বেরিয়ে আসার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। কিন্তু পাথর থামানোর ব্যাপারটি তিনি মানতে পারছেন না। পরে অবশ্য পাঞ্জা সাহেবের ঘটনা শোনার পর, তার এই ধারণা পাল্টে যায়।