মাধ্যমিকের WBBSE বাংলা বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বাক্য | বাক্য পরিবর্তন -এই অধ্যায়ের তোমাদের যেমন MCQ প্রশ্ন আছে তেমন SAQ প্রশ্ন আছে। তাই বাক্য পরিবর্তন -এই অধ্যায় থেকে তোমরা খুব ভালো করে প্রস্তুতি তৈরি করবে। বাক্য পরিবর্তন অধ্যায়ে যে যে বিষয়গুলি আছে সেগুলি হল-
- বাক্য নির্মাণের শর্ত
- উদ্দেশ্য উদ্দেশ্য বিধেয়
- বিশেষ্য খন্ড ক্রিয়া খন্ড
- বাক্য পরিবর্তন
- বাক্যের গঠনগত শ্রেণীবিভাগ
- বাক্যের অর্থগত শ্রেণীর বিভাগ
এই কতগুলি বিষয় তোমাদের এই বাক্য নামক অধ্যায়ে রয়েছে। সাধারণত যে ধরনের প্রশ্ন– বাক্য পরিবর্তন অংশ থেকে এসে থাকে তা এই qbangla.com সাইটে তোমাদের দেওয়া আছে। খুব ভালো করে মনোযোগ সহকারে দেখলে তাহলে এই বাক্য পরিবর্তন অংশ থেকে যে ডাউট ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
বাক্য ও বাক্য পরিবর্তন >বাক্য নির্মাণের শর্ত
বাক্য পরিবর্তন >বাক্য নির্মাণের শর্ত- এই অংশে যে যে টপিক আছে সেগুলো হল যোগ্যতা, আকাঙ্ক্ষা, আসক্তি।
যোগ্যতা:- বাক্যের অর্থ এবং ভাবের লক্ষ্য রেখে বাক্যের পথ গুলোকে সংযত ভাবে গঠন করাকেই যোগ্যতা বলা হয় । অর্থাৎ বাক্যের পদ গুলি পরস্পরের সঙ্গে একটা অর্থ গত সংগতি থাকে। একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি বোঝা যাক। “ছেলেটি পায়ে করে জল তুলছে”-, এই বাক্যটির যোগ্যতার অভাব আছে। কারণ বাক্যটির মধ্যে যে পদগুলি সংযত করা আছে সেগুলির অর্থগত বা ভাবগত সঠিকভাবে প্রকাশ পাচ্ছে না অর্থাৎ বাক্যটির বাস্তবের সঙ্গে কোন মিল পাওয়া যাচ্ছে না মানে বাক্যটির বাস্তবসম্মত নয়। পদের নিয়ম বা যোগ্যতা পূরণ করে সঠিকভাবে লিখতে গেলে বাক্যটি হবে– “ছেলেটি বালতি করে জল তুলছে” |
যোগ্যতার অভাব | যোগ্যতার অভাব পূরন |
হরিণ ভাত খেয়ে চলে গেল | হরিণ ঘাস খেয়ে চলে গেল |
সূর্য পশ্চিম দিকে উদিত হয় | সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হয় |
রবীন্দ্রনাথ মহাভারত লিখেছেন | রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলি লিখেছেন |
আকাঙ্ক্ষা:- আকাঙ্ক্ষা হল বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণতা অর্থাৎ শ্রোতা যখন বক্তার কাছ থেকে বক্তব্য শুনে তখন শ্রোতার মনের আকাঙ্ক্ষার পরিতৃপ্তি ঘটা প্রয়োজন অর্থাৎ বাক্যটির সম্পূর্ণ করতে হবে। অর্থাৎ বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ রূপে প্রকাশ করার জন্য বলা হয় আকাঙ্ক্ষা। যেমন:- ছেলেটি হাতে করে— এই বাক্যটিতে অর্থ সম্পূর্ণভাবে পাচ্ছে না অর্থাৎ শ্রোতার আকাঙ্ক্ষা নিবৃত্তি হচ্ছে না। তাই শ্রোতার আকাঙ্ক্ষা নিবৃত্তি করতে গেলে বাক্যটি অর্থ সম্পূর্ণ করতে হবে। বাক্যটি আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করে লিখতে গেলে এইভাবে দাঁড়াবে– ছেলেটি বালতি করে জল তুলছে।
নৈকট্য বা আসত্তি: বাক্যের অর্থ সঠিকভাবে প্রকাশ করতে গেলে আসক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আসত্তি হল বাক্যের যে পথগুলি ব্যবহার করা হয় সেগুলি সঠিক স্থানে ব্যবহার করতে হবে অর্থাৎ বাক্যগুলি পরস্পরের সঙ্গে যাতে সঠিকভাবে যুক্ত থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হয়। যেমন: বালতি জল করে তুলছে ছেলেটি। এই বাক্যটি আসক্তির অভাব আছে কারণ বাক্যগুলি পরস্পর সঠিকভাবে নৈকট্য বা অর্থ প্রকাশ পাচ্ছে না তাই বাক্যটিকে সঠিকভাবে সংযত করলে পদগুলিকে যথাস্থানে বসাতে হবে। তাই সঠিক বাক্যটি হবে– ছেলেটি বালতি করে জল তুলছে।
এই অংশ থেকে মাধ্যমিকে যে ধরনের প্রশ্ন আসে সেই ধরনের নমুনা প্রশ্ন দেওয়া হলো। এই প্রশ্নগুলি ১০০% কমন যোগ্য প্রশ্ন ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে করে ফেলে।
মাধ্যমিকে যে ধরনের প্রশ্ন আসে
১) বাক্য নির্মাণের শর্তগুলো কি কি ?
উঃ বাক্য নির্মাণের শর্ত তিনটি যথা যোগ্যতা, আসত্তি, আকাঙ্ক্ষা ।
২) ভারতের গঙ্গা নদী আরব সাগরে পতিত হয়েছে- বাক্যটি কোন শর্ত পূরণ করা হয়নি।?
উঃ প্রশ্ন উল্লেখিত বাক্যটি যোগ্যতার শর্তটি পূরণ করা হয়নি। বাক্যটি আসক্তির শর্ত পূরণ করে লিখলে হবে, ভারতের গঙ্গা নদী বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।
৩) ঘাস খেয়ে হরিণ বনে চলে গেল – এটি বাক্য নয় কেন?
উঃ ঘাস খেয়ে হরিণ বনে চলে গেল- এটি বাক্য নয়। কারণ বাক্যটির আসত্তির শর্তটি পূরণ করেনি। বাক্যটির আসক্তি শর্ত পূরণ করে লিখলে হবে- হরিণ ঘাস খেয়ে বনে চলে গেল।
৪) কৃত্তিবাস মহাভারত লিখেছেন – বাক্যটি কোন শর্ত পূরণ করেনি?
উঃ কৃত্তিবাস মহাভারত লিখেছেন- এই বাক্যটির যোগ্যতার শর্তটি পূরণ করেনি। বাক্যটির যোগ্যতার শর্ত পূরণ করে লিখলে হবে – কৃত্তিবাস রামায়ণ লিখেছেন।
৫) আসত্তির শর্ত পূরণ করেনি এমন একটি বাক্যের উদাহরণ দাও।
উঃ লম্বা চুল আছে মেয়েটির। এই বাক্যটি আসক্তির শর্ত পূরণ করেনি। বাক্যটির আসক্তির শর্ত পূরণ করে লিখলে হবে- মেয়েটির লম্বা চুল আছে।
৬) বাক্যকে সঠিকভাবে গঠন করতে গেলে কি কি শর্ত পূরণ করতে হবে?
উঃ বাক্যকে সঠিকভাবে অর্থ প্রকাশ করতে গেলে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে যথা- যোগ্যতা, আসক্তি এবং আকাঙ্ক্ষা।
৭) আমরা সবাই যাচ্ছি শিলিগুড়ি বেড়াতে একসঙ্গে- বাক্যটি কোন শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে?
উঃ প্রশ্নের উল্লেখিত বাক্যটি আসক্তির শর্তটি লঙ্ঘিত হয়েছে। শর্তটি পূরণ করে বাক্যটি লিখলে হবে- আমরা সবাই একসঙ্গে শিলিগুড়ি বেড়াতে যাচ্ছি।
উদ্দেশ্য ও বিধেয় সম্পর্কিত আলোচনা
উদ্দেশ্য:সাধারণত বাক্যের কর্তা বা যাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয় তাকেই বাক্যের উদ্দেশ্য বলে।
বিধেয়: সাধারণত উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা কিছু বলা হয়। সেটি হল বিধেয়। বাক্যে সাধারণত উদ্দেশ্য আগে থাকে এবং বিধেয় পরে থাকে।যেমন:ছবি আগামীকাল বিদ্যালয় যাবে না। এই বাক্যে ছবি হলো উদ্দেশ্য এবং আগামীকাল যাবে না হল বিধেয়।
বাক্য | উদ্দেশ্য | বিধেয় |
ভালো ছেলেকে সবাই ভালোবাসে | ভালো ছেলেকে | সবাই ভালোবাসে |
বিমল পায়ে হেঁটে বাজারে গেল | বিমল | পায়ে হেঁটে বাজারে গেল |
তোরা বুঝি কাল চলে যাবি? | তোরা | বুঝি কাল চলে যাবি? |
আমরা কাল কলকাতায় যাচ্ছি | আমরা | কাল কলকাতায় যাচ্ছি |
উদ্দেশ্য এবং বিধেয় সম্প্রসারণ
উদ্দেশ্যের সম্প্রসারণ: বাক্যের উদ্দেশ্য পদের আগে যদি কোন বিশেষণ বা বিশেষণ স্থানীয় পদ দ্বারা যুক্ত করে উদ্দেশ্য পদটিকে সম্প্রসারণ করা হয় তাহলে তাকে উদ্দেশ্যের সম্প্রসারণ বলা হবে। যেমন: ছেলেটি কাল বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। বাক্যটির একটি সরল উদ্দেশ্য আছে। এই উদ্দেশ্যের আগে কিছু বিশেষণ যোগ করে দিলে বাক্যটির উদ্দেশ্য সম্প্রসারিত হয়ে যাবে। যেমন: লম্বা ফর্সা সাদা জামা পরা ছেলেটি বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। এইভাবে বাক্যের উদ্দেশ্যে সম্প্রসারণ করা হয়
বিধেয় সম্প্রসারণ: বাক্যের বিধেয়ের আগে বা পরে যদি বিশেষণ বা বিশেষণ স্থানীয় পদ যুক্ত করে বিধেয় পদটিকে বাড়ানো হয় বা সম্প্রসারণ করানো হয়। তাহলে তাকে বিধেয় সম্প্রসারণ বলা হবে । যেমন: আকাশে পাখি উড়ছে। বাক্যটির বিধেয় সম্প্রসারণ করে লিখলে দাঁড়াবে– আকাশে সবুজ রঙের টিয়া পাখি উড়ছে। এইভাবে বাক্যের বিধেয় অংশকে সম্প্রসারণ করা হয়।
মাধ্যমিকে উদ্দেশ্য এবং বিধেয় অংশ থেকে যে ধরনের প্রশ্ন আছে তার নমুনা নিচে দেওয়া হল প্রশ্নগুলি ১০০% কমন ভালোভাবে লক্ষ্য করলে তোমরা প্রশ্ন উত্তর করতে পারবে।
১) বামুন ঠাকুর পুজো করছে- বাক্যটির বিধেয় সম্প্রসারণ করে লেখ।
উঃ প্রশ্নের উল্লেখিত বাক্যটির বিধেয় সম্প্রসারণ করে লিখলে হবে- বামুন ঠাকুর বিদ্যালয়ে সরস্বতী মায়ের পূজো করছে।
২) সুমন কলকাতায় যাচ্ছে- বাক্যটির উদ্দেশ্য সম্প্রসারণ করে লেখ।
উঃ সুমন কলকাতায় যাচ্ছে- বাক্যটির উদ্দেশ্য সম্প্রসারণ করে লিখলে হবে- ফরমাল ড্রেস পড়ে, হাতে অফিস ব্যাগ নিয়ে মিলনের ছোট ছেলে সুমন কলকাতায় যাচ্ছে।
৩) পাখি আকাশে উড়ছে বাক্যটির উদ্দেশ্য এবং বিধেয় সম্প্রসারণ করে লেখ।
উঃ পাখি আকাশে উড়ছে- বাক্যটির উদ্দেশ্য এবং বিধেয় সম্প্রসারণ করে লিখলে হবে- সবুজ রঙের টিয়া পাখিটি নীল আকাশে ডানা মেলে উড়ছে।
৪) লোকটি বাজারে সবজি কিনতে গেছে- বাক্যটির উদ্দেশ্য এবং বিধেয় চিহ্নিত করে লেখ।
উঃ লোকটি বাজারে সবজি কিনতে গেছে- বাক্যটির উদ্দেশ্য হল- লোকটি । বিধেয় হলো- বাজারে সবজি কিনতে গেছে
বাক্যের শ্রেণীবিভাগ – সাধারণত বাক্যকে দুইটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা বাক্যের গঠনগত শ্রেণীবিভাগ এবং বাক্যের অর্থগত শ্রেণীবিভাগ
১) বাক্যের গঠনগত শ্রেণীবিভাগ – বাক্যের গঠনগত শ্রেণীবিভাগ প্রধানত তিন শ্রেণীর যথা সরল বাক্য, যৌগিক বাক্য এবং জটিল বাক্য ।এছাড়াও আধুনিক ব্যাকরণে আরও একটি ভাগ রয়েছে সেটি হলো মিশ্র বাক্য। এই চার শ্রেণীর বাক্য নিচে উদাহরণ সহযোগে ব্যাখ্যা করা হলো।
সরল বাক্য: সরল বাক্য হল একটি সাধারণ বাক্য। যেখানে একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থাকে অর্থাৎ যে বাক্যে একটি মাত্র সমাপি ক্রিয়া থাকে এবং বাক্যটি অন্য কোন বাক্যের উপর নির্ভরশীল নয় তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন:- সুমন বাবু কলকাতায় যাচ্ছে। ছেলেটি বিদ্যালয়ে যাচ্ছে । আমরা সবাই বেড়াতে যাব ইত্যাদি বাক্যগুলি সরল বাক্যের উদাহরণ।
জটিল বাক্য: জটিল বাক্য হল এক বা একাধিক খন্ড বাক্যের সমন্বয়ে তৈরি এবং খন্ড বাক্যগুলি প্রধান খন্ড বাক্যের উপর নির্ভরশীল। অথবা একবার একাধিক সরল বাক্য একটি খন্ড বাকের উপর নির্ভরশীল থাকে তাকে জটিল বাক্য বলে। উদাহরণ সহযোগী বিষয়টি বোঝা যাক।
- তুমি যদি বিদ্যালয় না আসো আমি তাহলে যাব না।
- রাম বাবু কলকাতায় গেলে তারপর তিনি আসবেন।
- যদি বৃষ্টি হয় তাহলে আমি যাব না। ইত্যাদি বাক্যগুলি জটিল বাক্য । কারণ বাক্যগুলি একে অপরের উপর নির্ভরশীল।
যৌগিক বাক্য: এক বা একাধিক সরল বাক্য যখন সংযৌগিক অব্যয় দ্বারা যুক্ত থাকে তখন তাকে যৌগিক বাক্য বলে। যেমন: রাম বাবু এলেন কিন্তু তিনি এলেন না | ছেলেটি লাল ফুলটি ছিঁড়লো এবং তার পকেটে রেখে দিল | মেয়েটি ব্যাগ নিয়ে বাজারে গেল এবং বাজারে গিয়ে সবজি কিনে বাড়ি ফিরল। ইত্যাদি বাক্যগুলি বাকের উদাহরণ।
বাক্যের গঠনগত শ্রেণীবিভাগ:- আধুনিক ব্যাকরণে বাক্যের গঠনগত শ্রেণীবিভাগ বহুবিধ। মূলত বাক্যের গঠনগত শ্রেণীবিভাগ গুলি হল:-
- নির্দেশক বাক্য
- প্রশ্নবাচক বাক্য
- অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
- প্রার্থনা সুচক বাক্য
- সন্দেহবাচক বাক্য
- আবেগ সূচক বাক্য
- শর্তসাপেক্ষ বাক্য
নির্দেশক বাক্য: নির্দেশক বাক্য হল বাক্যে কোন কিছু নির্দেশ করা। এই নির্দেশ করা কখনো স্বীকার বা অস্বীকার বোঝাতে পারে। অর্থাৎ যে বাক্যে স্বীকার বা অস্বীকার জনিত কিছু নির্দেশ করা থাকে তাকে নির্দেশক বাক্য বলে। নির্দেশক বাক্য সাধারণত দুই শ্রেণীর যথা:-
ইতিবাচক বাক্য বা অস্তর্থক বাক্য:- যে বাক্যে সাধারণত কোন ঘটনার স্বীকৃতি মূলক নির্দেশ থাকে বা হ্যাঁ সূচক নির্দেশ থাকে তাকে ইতিবাচক বাক্য বা সদর্থক বাক্য বলা হয়। যেমন:- বাবু বাজারে সবজি কিনতে গেছে। ছেলেটি বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। বালকটি মাঠে খেলা করছে। ইত্যাদি বাক্যগুলি ইতিবাচক বাক্য।
নেতিবাচক বা নাস্ত্যর্থক বা না সূচক বাক্য:- নেতিবাচক বাক্য হল কোন বাক্যে অস্বীকার বা অস্বীকৃতি মূলক নির্দেশ অর্থাৎ যে বাক্যে নেতিবাচক বা না বাচক শব্দ থাকে তাকে নেতিবাচক বাক্য বলে। যেমন :- বালকটি পড়তে বসেনি। মেয়েটি ভালো ইংরেজি বলতে পারেনা ছেলেটি বাইরে যাবে না। প্রভৃতি নেতিবাচক বাক্য।
প্রশ্নবাচক বাক্য:-যে বাক্যে সাধারণত কোন কিছুর প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা বা জানার ইচ্ছা প্রকাশ করা হয় সেই বাক্যকে প্রশ্ন বাচক বা প্রশ্ন সূচক বাক্য বলে। যেমন:- তুমি কোথায় গিয়েছিলে? তোমার নাম কি? তুমি কেন আজকে আসতে পারোনি? ইত্যাদি বাক্যগুলি প্রশ্ন সূচক বাক্য।
অনুজ্ঞাসূচক বাক্য:–যে বাক্যে কোন কিছুর উপদেশ দেওয়া, অনুরোধ করা বা আদেশ করা বোঝানো হয় তাকে অনুজ্ঞাসূচক বাক্য বলা হয়। একে আজ্ঞা সূচক বাক্য বলা হয়। যেমন:- তুমি সামনের দিকে দেখে চলো। তুমি সন্ধ্যা বেলা পড়তে বসবে। আজকে অংক করে নিয়ে আসবে। সব গাছ কেটে দিও না। ইত্যাদি বাক্যগুলি আকাশচক বাক্য। অনুষ্কা সূচক বাক্য দুই প্রকার যথা বর্তমান অনুজ্ঞাসূচক বাক্য এবং ভবিষ্যৎ বাক্য
প্রার্থনা সূচক বাক্য:-যে বাক্যে সাধারণত মনের ইচ্ছা, বাসনা, চাহিদা ইত্যাদি প্রকাশ পায় তাকে প্রার্থনা সুচক বাক্য বলা হয়। যেমন:- ভগবান তোমার কল্যাণ করুক। আজ তোমার দিন সুন্দর হোক। তোমাকে আশীর্বাদ করি তুমি ভালো রেজাল্ট করো। ইত্যাদি বাক্যগুলি প্রার্থনা সুচক বাক্য।
সন্দেহ বাচক বাক্য:-যে বাক্যে কোন কিছুর বিষয়ে সন্দেহ বা অনিশ্চয়তা প্রকাশ পায় তাকে সন্দেহবাচক বা সংশয় সূচক বাক্য বলে। যেমন:- আজ বোধহয় বৃষ্টি হবে না। মনে হয় কাল রাম বাবু আসবেনা। বুঝি তিনি আজ যাবেন না । ইত্যাদি বাক্যগুলো সন্দেহ বাচক বাক্য।
আবেগ সূচক বাক্য:-যে বাক্যে উদ্বেগ, বিস্ময়, শোক, ঘৃণা ইত্যাদি ভাব প্রকাশ পায় তাকে আবেগ সূচক বাক্য বলে। যেমন:- আহা কি সুন্দর দৃশ্য! লোকটি বিনয়ী বটে ! বাহ: খুব সুন্দর জায়গাটি! ইত্যাদি বাক্যগুলি হল আবেগ সূচক বাক্য।
শর্তসাপেক্ষ বাক্য:-যে বাক্যে কোন কিছু ঘটনার কারণ উল্লেখ থাকে বা শর্ত উল্লেখ থাকে তাকে শর্তসাপেক্ষ বাক্য বলে। যেমন:- মন দিয়ে পড়লে ভালো রেজাল্ট হবে। যতদিন তুমি পড়বে না ততদিন তোমার ভালো কিছু হবে না। ইত্যাদি বাক্যগুলি শর্তসাপেক্ষ বাক্য।
বাক্য পরিবর্তন এবং তার নিয়ম: সাধারণত একশ্রেণীর বাক্য থেকে আর এক শ্রেণীর বাক্যে পরিবর্তনকেই বাক্য পরিবর্তন বলা হয় । বাক্য পরিবর্তনের অনেক নিয়ম আছে। সেই নিয়মগুলো ভালো করে অনুসরণ করে বাক্য পরিবর্তন করতে হবে। মনে রাখতে হবে– বাক্য পরিবর্তন করার সময় বাক্যের অর্থের কোনরকম পরিবর্তন যেন না হয়। বাক্যের অর্থ অক্ষুন্ন রেখে বাক্য পরিবর্তন করতে হবে। যেসব বাক্য পরিবর্তন হয় সেগুলি নিম্নরূপ সারিতে দেওয়া হল:-
বাক্যের গঠনগত রূপান্তর:-বাক্য পরিবর্তন
- সরল বাক্য থেকে জটিল বাক্যে পরিবর্তন
- সরল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্যে পরিবর্তন।
- জটিল বাক্য থেকে সরল বাক্যে পরিবর্তন
- জটিল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্যে পরিবর্তন
- যৌগিক বাক্য থেকে সরল বাক্যে পরিবর্তন।
- যৌগিক বাক্য থেকে জটিল বাক্যে পরিবর্তন
বাক্যের অর্থগত অনুসারে:-
- সদর্থক বাক্য থেকে না বাচক বাক্যে পরিবর্তন
- না বাচক বাক্য থেকে হ্যাঁ বাচক বাক্যে পরিবর্তন
- নির্দেশক বাক্য থেকে প্রশ্নসূচক বাক্যে পরিবর্তন
- প্রশ্নসূচক বাক্য থেকে নির্দেশকবাক্যে পরিবর্তন
- নির্দেশক বাক্য থেকে আবেগ সূচক বাক্যে পরিবর্তন
- আবেগ সূচক বাক্য থেকে নির্দেশক বাক্যে পরিবর্তন।
- নির্দেশক বাক্য থেকে অনুজ্ঞা সূচক বাক্যে পরিবর্তন।
- অনুজ্ঞাসূচক বাক্য থেকে নির্দেশক বাক্যে পরিবর্তন।
বাক্য পরিবর্তনের নিয়ম
বাক্য পরিবর্তন করতে গেলে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। বাক্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অবশ্যই বাক্যের অর্থকে গুরুত্ব দিতে হবে। বাক্যের অর্থ যেন পরিবর্তন না হয়ে যায়। বাক্যের অর্থকে অক্ষুন্ন রেখে বাক্য পরিবর্তন করতে হবে।
১) সরল বাক্য থেকে জটিল বাক্যে পরিবর্তন: নিয়ম– প্রথমে একটি উদাহরণ সহযোগে ব্যাপারটি পরিষ্কার করা যাক:-সরল- জীবন থাকতে এ কাজ করব না ।জটিল- যতদিন জীবন থাকবে ততদিন এ কাজ করব না।
নিয়ম:- সুতরাং দেখা যাচ্ছে– সরল বাক্য থেকে জটিল বাক্য পরিবর্তন করতে গেলে- যদি– তবে; তেমন; যত– তত; যার– তার, যেহেতু- সেহেতু; যিনি- তিনি; যে– সে ইত্যাদি– এই শব্দবন্ধ প্রয়োগ করতে হবে। আরো কিছু দৃষ্টান্ত দেওয়া হল যাতে তোমরা সহজে বিষয়টি বোধগম্য করতে পারো–
সরল বাক্য | জটিল বাক্য |
পেন থাকলে লেখা সহজ হয়। | যদি পেন থাকে তাহলে লেখা সহজ হয়ে যায়। |
তুমি আসলে আমি যাব | যদি তুমি আসো তাহলে আমি যাব |
রাম আশ্বাস দিলে আমি রাজি হব | যদি রাম আশ্বাস দেয় তবেই রাজি হব |
আমি খারাপ কাজ করতে পারবো না। | যেটা খারাপ কাজ, আমি সেটা করতে পারবো না। |
লোকে ভালো বললে কাজ করব | যদি লোকে ভালো বলে তবেই কাজ করব। |
২) সরল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্যে পরিবর্তন: নিয়ম:-প্রথমে দৃষ্টান্ত সহযোগে বিষয়টি পরিষ্কার করে নেওয়া দরকার– সরল- শুভজিৎ আশ্বাস দিলেও সে রাজি হল না। যৌগিক- শুভজিৎ আশ্বাস দিল কিন্তু সে রাজি হলো না। নিয়ম:- সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে সরল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্যে পরিবর্তন করতে গেলে বাক্যের অর্থকে অক্ষুন্ন রেখে কিন্তু; এবং; নতুবা; অথবা; নয়তো; অথচ; তাই ইত্যাদি অব্যয় পদগুলি যুক্ত করে যৌগিক বাক্য পরিবর্তন করতে হবে।নিচে আরও বেশ কিছু দৃষ্টান্ত তোমাদের সুবিধার্থে দেওয়া হলো–
সরল বাক্য | যৌগিক বাক্যে |
সুনীল স্পষ্ট বাদী বলে সবাই পছন্দ করে | সুনীল স্পষ্টবাদী তাই সবাই পছন্দ করে |
সময়ে না পড়লে ভালো রেজাল্ট হবে না | সময়মতো ভালো করে পড়ো নতুবা রেজাল্ট ভালো হবে না। |
ছেলেটি দৌড়ে গিয়ে মাঠে খেলতে শুরু করল | ছেলেটি দৌড়ে মাঠে গেল এবং খেলতে শুরু করল। |
আমি সুতনু বলে ছেলেটিকে চিনি | আমি ছেলেটিকে চিনি যার নাম সুতনু |
৩) জটিল বাক্য থেকে সরল বাক্যে পরিবর্তন:-নিয়ম:- প্রথমেই একটি উদাহরণ সহযোগে বিষয়টিকে পরিষ্কার করে নেওয়া যাক। জটিল – অন্ধকার যত এগিয়ে এলো ততই ভয় বাড়তে লাগলো। সরল – অন্ধকার আসতেই ভয় বাড়তে লাগলো।
নিয়ম:- সুতরাং দেখা গেল যে- সরল বাক্য থেকে জটিল বাক্য পরিবর্তনের যে নিয়ম ছিল– এক্ষেত্রে সেই নিয়মের একেবারে বিপরীত নিয়ম এখানে খাটবে অর্থাৎ এক্ষেত্রে জটিল বাক্য চিহ্ন সূচক যেসব অব্যয় যেমন:- যদি– তবে; যেহেতু– সেহেতু; যিনি– তিনি; যেই– সেই; যে– সে ইত্যাদি এই জটিল বাক্যসূচক অব্যয়গুলি পরিহার করে অর্থাৎ তুলে নিয়ে একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া করে বাক্যটি তৈরি করতে হবে। তোমাদের সুবিধার্থে আরো বেশ কিছু উদাহরণ নিচে পরপর দেওয়া হলো:-
জটিল বাক্য | সরল বাক্যে |
যদি বৃষ্টি হয় তাহলে বিদ্যালয় যাব না। | বৃষ্টি হলে বিদ্যালয় যাব না। |
যে পেনটা হারিয়েছিল সেটা আমি পেয়েছি | হারিয়ে যাওয়া পেনটি আমি পেয়েছি |
যে ছেলেটিকে আমি চিনি তার নাম শ্যামল। | শ্যামল বলে ছেলেটিকে আমি চিনি। |
যতদিন সম্মান থাকবে ততদিন তোমার কদর থাকবে। | সম্মান থাকলে কদর থাকবে। |
৪) জটিল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্যে পরিবর্তন:- নিয়ম- উদাহরণ সহযোগে এই নিয়মটি প্রথমে পরিষ্কার করে নেওয়া যাক:-জটিল- যেহেতু তিনি ধনী ব্যক্তি তাই তার অহংকার বেশি।যৌগিক- তিনি ধনী ব্যক্তি কিন্তু তিনি অহংকারী ব্যক্তি।
নিয়ম:- সুতরাং এই দৃষ্টান্ত থেকে পরিষ্কার হওয়া গেল যে- জটিল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্যে পরিবর্তন করতে গেলে জটিল বাক্য সূচক যেসব চিহ্ন যেমন যদি –তবে; যেহেতু– সেহেতু; যিনি– তিনি; যে– সে; যা– তা ইত্যাদি । এই শব্দ বন্ধগুলি পরিহার করে বা তুলে নিয়ে যৌগিক বাক্যে তার পরিবর্তে যৌগিক বাক্য সূচক চিহ্ন যেমন– এবং; নতুবা; কিন্তু; অথবা; নইলে; অথচ ইত্যাদি শব্দগুলি প্রয়োগ করতে হবে তোমাদের সুবিধার্থে আরো বেশ কিছু দৃষ্টান্ত নিচে দেওয়া হল–
জটিল বাক্য | যৌগিক বাক্যে |
যেখানে নদী আছে সেখানেই তার বাড়ি। | সেখানে একটি নদী আছে এবং সেখানেই তার বাড়ি। |
যদি ভালো করে পড়াশোনা করো তবেই পাস করতে পারবে। | ভালো করে পড়াশোনা কর নতুবা পাস করতে পারবে না। |
যেহেতু রাম আসেছে তাই সুতনু আসেনি | রাম আসেছে কিন্তু সুতনও আসেনি |
যখন সে আনন্দ সংবাদ পেল তখন সে নিজে উঠলো | সে আনন্দ সংবাদ পেল এবং নেচে উঠলো |
৫) যৌগিক বাক্য থেকে সরল বাক্যে পরিবর্তন:-নিয়ম–যৌগিক বাক্য থেকে সরল বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম জানার আগে একটি উদাহরণ সহযোগে বিষয়টি পরিষ্কার করে নেওয়া যাক।যৌগিক- লোকটি ধনী কিন্তু সৎ ব্যক্তি সরল- লোকটি ধনী হলেও সৎ ব্যক্তি।
নিয়ম: সুতরাং যৌগিক বাক্য থেকে সরল বাক্যে পরিবর্তনের সহজ এবং সরল নিয়ম হল– যৌগিক বাক্যের যে সমস্ত অব্যয়গুলি থাকে যেমন– নতুবা; অথবা; কিন্তু অথচ; তাই ইত্যাদি এই অব্যয়গুলিকে তুলে নিয়ে বা পরিহার করে একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়ায় সরল বাক্যটি তৈরি করতে হবে। তোমাদের সুবিধার্থে আরো বেশ কিছু দৃষ্টান্ত নিচে দেওয়া হল:-
যৌগিক বাক্য | সরল বাক্যে |
লোকটি বড়লোক কিন্তু বড় অহংকারী | লোকটি বড়লোক হলেও অহংকারী |
তিনি সংসারী মানুষ। কিন্তু অসুখী | তিনি সংসারী মানুষ হলেও অসুখী |
আমি এই বিষয়ে জানিনা, তাই কথার মানে বুঝলাম না। | আমি এই বিষয়ে জানিনা বলেই কথার মানে বুঝলাম না |
বিদ্যালয়ে পৌঁছালাম এবং বৃষ্টিও আরম্ভ হল | বিদ্যালয়ে পৌঁছানো মাত্রই বৃষ্টি আরম্ভ হলো। |
আকাশে মেঘ নেই অথচ বৃষ্টি পড়ছে | আকাশে মেঘ না থাকলেও বৃষ্টি পড়ছে। |
৬) যৌগিক বাক্য থেকে জটিল বাক্যে পরিবর্তন:-নিয়ম:- যৌগিক পক্ষ থেকে জটিল বাক্যে পরিবর্তন করার আগে একটি উদাহরণ সহযোগে এ বিষয়টি পরিষ্কার করে নেয়া যাক| যৌগিক- পকেটে টাকা নেই অথচ দামি দামি খাবারের শখ | জটিল- যদিও পকেটে টাকা নেই তবুও তার দামী দামী খাবারের শখ
নিয়ম:- সুতরাং যৌগিক বাক্য থেকে জটিল বাক্যে পরিবর্তন করতে গেলে বাক্যের অর্থকে অক্ষুন্ন রেখে যৌগিক বাক্যসূচক যেসব অব্যয়গুলি আছে সেগুলি পরিহার করে তার পরিবর্তে জটিল বাক্যসূচক অব্যগুলি যেমন যদি তবে; যেহেতু সেহেতু; যিনি তিনি; যা তাই ইত্যাদি শব্দ বন্ধুগুলি প্রয়োগ করে বাক্য পরিবর্তন করতে হবে। তোমাদের সুবিধার্থে আরো বেশ কিছু দৃষ্টান্ত নিচে দিয়ে দেওয়া হলো।–
যৌগিক বাক্য | জটিল বাক্যে |
বিদ্যালয়ে পৌঁছলাম আর বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল | যেই বিদ্যালয়ে পৌঁছলাম অমনি বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল |
ছেলেটি অল্প বিদ্যা, কিন্তু বুদ্ধি প্রবল | যদিও ছেলেটির অল্প বিদ্যা তথাপি বুদ্ধি প্রবল |
সে কোন দোষ করেনি কিন্তু তার শাস্তি হলো | যদিও সে কোন দোষ করেনি তবুও তার শাস্তি হল |
বাক্য পরিবর্তন > বাক্যের অর্থগত অনুসারে:-নিয়ম–বাক্যের অর্থগত পরিবর্তন করতে গেলে বাক্যের অর্থকে অক্ষুন্ন রাখতে হবে বাক্যের অর্থকে সম্পূর্ণ অপূর্ণ রেখেই এক শ্রেণী থেকে আরেক শ্রেণীতে বাক্য পরিবর্তন করতে হবে।
১) সদর্থক বাক্য থেকে না বাচক বাক্যে পরিবর্তন:- সদর্থক বাক্য থেকে না বাচক বাক্যে পরিবর্তন করতে গেলে প্রথমে একটা উদাহরণ সহযোগে বোঝা যাক:– সদর্থক- ছেলেটি পড়াশোনায় অন্যমনস্ক ছিল | নঞর্থক– ছেলেটি পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল না
নিয়ম:- সুতরাং এখানে পরিষ্কার হলো যে সদর্থক বাক্য থেকে নাবাচক বাক্যে পরিবর্তন করতে গেলে দুটি নিয়ম সর্বদা অনুসরণ করতে হবে।তা হল এক –বিপরীত শব্দ প্রয়োগ করতে হবে। দুই– বাক্যটির শেষে না আনতে হবে। তোমাদের বোঝার সুবিধার জন্য আরো বেশ কিছু দৃষ্টান্ত নিচে তুলে দেওয়া হল যা থেকে তোমরা পরিষ্কার করে উপলব্ধি করতে পারবে –
সদর্থক বাক্য | না- বাচক বাক্যে |
ছাত্রটি নির্দোষ ছিল | ছাত্রটি দোষী ছিল না। |
লোকটি তাকে অসম্মান করেছেন | লোকটি তাকে সম্মান করেননি |
রাম বাবু অতি সজ্জন লোক | রামবাবু অসজ্জন লোক ছিলেন না |
ছেলেটি পড়া করেছে | ছেলেটি পড়া না করে পারেনি |
২) না বাচক বাক্য থেকে হ্যাঁ বাচক বাক্যে পরিবর্তন:- এক্ষেত্রেও প্রথমে একটি উদাহরণ দেওয়া যাক তারপরে বিষয়টির নিয়ম বলা যাবে | না-বাচক বাক্য– সে আমাকে বিশ্বাস করে না হ্যাঁ বাচক- সে আমাকে অবিশ্বাস করে |
নিয়ম:-সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি যে– ওপরের যে নিয়ম ছিল এখানে সেই নিয়মের ঠিক বিপরীত। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও দুটি নিয়ম মেনে চলতে হবে। এক বিপরীত শব্দ আনতে হবে দুই বাক্যে যে না শব্দটি থাকবে সেটিকে তুলে দিতে হবে। তোমাদের বোঝার সুবিধার জন্য আরো বেশ কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া দেয়া হলো-
না বাচক বাক্য | হ্যাঁ বাচক বাক্যে |
এটা অসম্ভব কিছু না | এটা সম্ভব ছিল |
ছেলেটি উত্তর দিল না | ছেলেটি নিরুত্তর থাকলো |
মিথ্যা কথা বলা উচিত নয় | মিথ্যা কথা বলা অনুচিত |
তাকে চিনি না | সে অপরিচিত ব্যক্তি |
৩) নির্দেশক বাক্য থেকে প্রশ্নসূচক বাক্যে পরিবর্তন :নির্দেশক থেকে প্রশ্নসূচক বাক্যে পরিবর্তন করতে গেলে এখানে বেশ কিছু বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। তোমাদের মাধ্যমিক পরীক্ষায় এই অংশ থেকেই সাধারণত প্রশ্নটি এসে থাকে। তাই এর নিয়মটা খুব ভালো করে শিখে নাও । যাতে পরবর্তীতে বাক্য পরিবর্তন করতে ভুল না কর। আমরা জানি যে নির্দেশক বাক্য দুই প্রকার একটি হ্যাঁবাচক বাক্য আরেকটি না বাচক বাক্য। তাই এই দুই শ্রেণীর বাক্য থেকে প্রশ্ন পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকবে।
নিয়ম:- এক্ষেত্রে যেহেতু দুই শ্রেণীর বাক্য আছে। তাই নিয়মটি আগে ভালো করে বুঝে নেওয়া যাক। এক বাক্যটি যদি হ্যাঁ বাচক বাক্য হয় তাহলে প্রশ্নে পরিবর্তন করতে গেলে বাক্যটিকে না–বাচকে পরিবর্তন করে তবে প্রশ্ন করতে হবে দুই বাক্যটি যদি না–বাচক শ্রেণীর বাক্য হয় তাহলে বাক্যটিকে আগে হ্যাঁ–বাচক শ্রেণীতে পরিণত করে তবে প্রশ্ন করতে হবে। অর্থাৎ সোজা কথা বাক্যটি যদি না– বাচক হয় তাহলে হ্যাঁ – বাচকে করতে হবে । আর বাক্যটি যদি হ্যাঁ– বাচক হয় তাহলে না–বাচকে করতে হবে এই নিয়মটির সর্বদা মনে রাখবে।
ছেলেটি মাঠে খেলা করছে, –লক্ষ্য করে দেখো। এই বাক্যটি হ্যাঁ বাচক বাক্য। তাই একে প্রশ্নে পরিবর্তন করতে গেলে না বাচকে পরিবর্তন করে প্রশ্ন করতে হবে। তাহলে বাক্যটি হবে– ছেলেটি কি মাঠে খেলা করছে না ? এইভাবে তোমাদের পরিবর্তন করতে হবে।
নির্দেশক বাক্য | প্রশ্নসূচক বাক্যে |
আমি এ কথা বলিনি | আমি কি এ কথা বলেছি? |
লোকটি খুশি হল | লোকটি কি খুশি হল না? |
আমি কাজ করবো না | আমি কি কাজ করব ? |
লোকটি চলে গেল | লোকটি কি চলে গেল না ? |
৪) প্রশ্নসূচক বাক্য থেকে নির্দেশকবাক্যে পরিবর্তন :-উপরের নির্দেশক বাক্য থেকে প্রশ্নসূচক বাক্যের যে নিয়ম এক্ষেত্রে ঠিক বিপরীত নিয়ম। নিয়ম:- প্রশ্নসূচক বাক্যটি যদি হ্যাঁ–বাচক হয় তাহলে বাক্যটি নির্দেশক করতে গেলে না–বাচকে হয়ে যাবে। আর যদি প্রশ্নসূচক বাক্যটি না–বাচক হয় তাহলে নির্দেশক বাক্যে বাক্যটি হ্যাঁ–বাচকে হয়ে যাবে। অর্থাৎ ওপরের নিয়মের ঠিক বিপরীত নিয়ম এক্ষেত্রে খাটবে যেমন:-
প্রশ্নসূচক বাক্য | নির্দেশকবাক্যে |
আমি কি এ কথা বলেছি? | আমি এ কথা বলিনি |
লোকটি কি খুশি হল না? | লোকটি খুশি হল |
আমি কি কাজ করব ? | আমি কাজ করবো না |
লোকটি কি চলে গেল না ? | লোকটি চলে গেল |