> সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার সুয়েজ খাল কে খনন করেন? » Qবাংলা

সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার সুয়েজ খাল কে খনন করেন?

সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার স্বামী বিবেকানন্দ-প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী; এই সিরিজে একাদশ শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের পাঠ্য প্রবন্ধ সুয়েজ খালে হাঙ্গর শিকার প্রবন্ধের বিস্তারিত আলোচনা ধর্মের প্রশ্নের উত্তর এবং অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর খুব সুন্দর এবং সহজ ভাষায় আলোচনা করা হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ এই বিষয়ের প্রশ্নের উত্তরগুলি দেখার পাশাপাশি এই অংশ থেকে উত্তর লেখার কৌশলটিও একবার পড়ে নেবে। একাদশ শ্রেণির অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন এবং উত্তর পেতে- click here

রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

১) “জাহাজের পেছনে বড় বড় জঙ্গর ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে”- লেখকের বর্ণনা অনুসরণে হাঙ্গর ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য নিজের ভাষায় লেখ।অথবা:- “জলে অসংখ্য মাছ আর হাঙর ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে”- লেখকের বর্ণনা অনুসরণে হাঙ্গর ভেসে বেড়ানোর দৃশ্যটি নিজের ভাষায় লেখ।
উঃ) স্বামী বিবেকানন্দ “সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার” নামক প্রবন্ধে হাঙ্গরদের ভেসে বেড়ানোর সুন্দর দৃশ্য বর্ণনা করেছেন। বিবেকানন্দ তার অসাধারণ লেখনীতে সুয়েজখালে এই হাঙ্গরদের ভেসে বেড়ানোর সরস বর্ণনা দিয়েছেন। সুয়েজখালে মাল নামানোর জন্য, জাহাজ দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ালে, বিবেকানন্দ সুয়েজখালে বিচরণকারী হাঙ্গরের গতিবিধি এবং তাদের ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য লক্ষ্য করেছিলেন।

লেখকের বর্ণনা অনুযায়ী, সুয়েজ বন্দরের মতো এত বেশি পরিমাণ হাঙ্গর একমাত্র অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বন্দরই আছে। সুয়েজখালে বিশাল আকৃতির এইসব হাঙ্গর পাঁচ-সাত ইঞ্চি জলের নিচে ভেসে বেড়াচ্ছিল। দূর থেকে লেখকের এগুলিকে কালো বস্তু বলে মনে হচ্ছিল। প্রকাণ্ড এক থ্যাবড়া মুখো হাঙ্গর গদাইলসকড়ি চালে চলছিল। সেই হাঙ্গর একবার ঘাড় ঘোড়ালেই মস্ত চক্কর হয়। বিশাল আকৃতির মাছ, গম্ভীর চালে চলে আসছে। তার আগে দু-একটা ছোট মাছ, আর কতগুলো ছোট মাছ তার পিঠে গায়ে পেটে খেলে বেড়াচ্ছে।

এরা হাঙ্গরকে শিকার ধরিয়ে দেয়। আবার হাঙ্গরের আশেপাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল বা পিঠে চড়ে বসেছিল আর একশ্রেণীর মাছ। তাদের বলা হয় হাঙ্গর চোষক। এরা হাঙ্গরের গায়ের পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। এই দুই প্রকার মাছের দ্বারা পরিবেশিত হয়ে হাঙর চলে। মনিবের সঙ্গে যেমন তার সাঙ্গোপাঙ্গরা থাকে, ঠিক তেমনি হাঙ্গরের সঙ্গেও অন্য মাছেরা ঘুরে বেড়ায়। হাঙ্গরদের এই সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে ঘুরে বেড়ানো, টোপ গলাধঃকরণ করা সহ সমস্ত দৃশ্যটি বিবেকানন্দকে মুগ্ধ করেছিল।

২) প্লেগ রোগের সংক্রমণের সম্ভাবনায় লেখকদের ও তার সহযাত্রীদের কি সমস্যায় পড়তে হয়েছিল?
উঃ “সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার” প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক স্বামী বিবেকানন্দকে ও তার সহযাত্রীদের সুয়েজখালে এক অদ্ভুত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। মূলত প্লেগ রোগের কারণেই, এই সমস্যা তৈরি হয়েছিল। জাহাজ সুয়েজখালে পৌঁছলে, সেখানে মাল নামানোর জন্য এই প্লেগ রোগের ছোঁয়া-ছুঁয়ির ব্যাপারে বা সমস্যা তৈরি করেছিল।

সুয়েজখালে  জাহাজ থেকে মাল নামানো হবে, কিন্তু সুয়েজের কোন কুলি জাহাজ ছুঁতে পারবে না বলে জানানো হয়। এর ফলে জাহাজের খালাসিরাই কুলি হয়ে, ট্রেনে করে মাল তুলে আলটপকা করে, নিচে সুয়েজি নৌকায় ফেলছে। আবার তারাই নিচে গিয়ে সেগুলি তুলে ডাঙ্গায় নিয়ে যাচ্ছিল। কোম্পানির এজেন্ট ছোট লঞ্চে করে জাহাজের কাছে এসেছেন। কিন্তু ওঠবার হুকুম নেই।

আসলে ইঁদুর বাহন প্লেগ রোগ পাছে স্বর্গে অর্থাৎ ইউরোপে ওঠে, তাই এত কিছুর আয়োজন করা হয়েছে। লেখকের বর্ণনা অনুযায়ী, প্লেগ বিষ প্রবেশ থেকে দশ দিনের মধ্যে ফুটে বেরোয়। তাই দশ দিনের জন্য আটক করে রাখা হয়। লেখকদের দশ দিন হয়ে গেছে।তাই তাদের ফাঁড়াও কেটে গেছে। কিন্তু আবার যদি মিশরের কোনো লোককে ছুঁয়ে দেয়, তাহলে আবার দশ দিন আটক। সেক্ষেত্রে নেপলসেও লোক নামানো হবে না। এমনকি মার্সাইতেও নামাতে দেবেনা। এজন্য যা কিছু কাজ হচ্ছে সব আলগোছে। তাই ধীরে ধীরে মাল নামাতে সারাদিন লাগবে। এইভাবে লেখক এবং সহযাত্রীদেরও সুয়েজ বন্ধরে প্লেগ রোগের কারণে একতরফা অদ্ভুত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

৩) “হে ভারতের শ্রমজীবী”-শ্রমজীবী সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের ধারণা “সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার” রচনা অবলম্বনে লেখ। অথবা- ভারতের শ্রমজীবী সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের ধারণা “সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার” প্রবন্ধ অবলম্বনে ব্যক্ত কর।
উঃ “সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার” শীর্ষক প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক স্বামী বিবেকানন্দ ভারতই যেইউরোপীয়দের ধন ও সভ্যতার প্রধান সহায়, সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কবি ভারতের শ্রমজীবী মানুষদের বিশাল অবদানের কথা বলেছেন। ভারতের এই শ্রমজীবী সম্প্রদায়ই ভারতীয় সভ্যতা সংস্কৃতির ধারক বাহক।

বিবেকানন্দ ভারতের শ্রমজীবী মানুষদের সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেছেন যে, তাদের পরিশ্রমের ফলস্বরূপ ব্যাবিলন, ইরান, আলেকজান্দ্রিয়া, গ্রিস, রোম, ভেনিস, জেনোয়া, বাগদাদ, সমরখন্দ, স্পেন, পর্তুগাল, ফরাসি, দিনেমার, ওলন্দাজ ও ইংরেজরা ক্রমান্বয়ে আধিপত্য ও ঐশ্বর্যশালী হয়ে উঠেছে। অথচ কোন জাতিই ভারতের এই শ্রমজীবী মানুষদেরকে নিয়ে ভাবে না। তাদের উন্নতির বিষয়ে কোনো জাতি এগিয়ে আসে না। তারা চিরকালই অত্যাচারিত, নিপীড়িত এবং নিষ্পেষিত হয়ে এসেছে। এবং আজও তা চলেছে। এই শ্রমজীবী মানুষদের জন্যই পৃথিবীর মনুষ্য জাতির এত কিছু উন্নতি। অথচ তাদের কেউ গুনগান করতে চায় না। 

এদের অপার সহিষ্ণুতা এবং প্রীতির শেষ নেই। কার্যকারিতাতেও এরা চরম নির্ভীকতা দেখায়। তারা অত্যন্ত গরিব। সবকিছু থেকে বঞ্চিত হয়েও এরা দিনরাত মুখ বুজে কর্তব্য করে যাচ্ছে। তাই স্বামী বিবেকানন্দ শ্রমজীবী সম্পর্কে প্রণাম জানিয়ে বলেছেন- “সে তোমরা .. শ্রমজীবী! তোমাদের প্রণাম করি”

 বিশেষ কিছু কথা:- “সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার” প্রবন্ধে মূল চুম্বক অংশ পাঁচটি। যথা:- প্রথমতঃ প্লেগ রোগের কারণে লেখক ও তাদের সহযাত্রীদের যে সমস্যা হয়েছিল তার বর্ণনা। দ্বিতীয়তঃ হাঙ্গর ভেসে বেড়ানোর সুন্দর মনোজ্ঞ এক বর্ণনা। তৃতীয়তঃ হাঙ্গর শিকারের এক মনোজ্ঞ ও সরস বর্ণনা। চতুর্থতঃ ভারত এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে  বাণিজ্য সম্পর্কে তথ্যপূর্ণ আলোচনা ।পঞ্চমতঃ ভারতের শ্রমজীবী মানুষদের সুন্দর বর্ণনা। 

তোমাদের পরীক্ষায় এই পাঁচটি আলোচনা থেকে যেকোনো একটি বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করে এবং যে বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করে সেখান থেকেই,  সেই লাইনটি তুলে প্রশ্ন হয় সুতরাং পাঠ্য বইটি তোমরা ভালো করে রিডিং পড়লে সহজে, এই পাঁচটি বিষয়ে আয়ত্ত করতে পারবে এবং প্রশ্নের উত্তর লেখা খুব সহজ হবে। মনে রাখবে, তোমার ক্ষেত্রে প্রশ্নের উত্তর লেখা তখনই সহজ হবে, যখন তুমি মূল পাঠ্য বইটি ভালোভাবে, ধরে ধরে রিডিং পড়বে।

২) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন উত্তর।সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার

২.১) “ আমরা আসা পর্যন্ত চৌকি দিচ্ছিল”- কারা, কেন চৌকি দিচ্ছিল?
উঃ) প্লেগ রোগের কারণে যাতে ছোঁয়া-ছুঁয়ি না হয়, তার জন্য জাহাজের নিচে আরব পুলিশদের নৌকো চৌকি দিচ্ছিল। যাতে কেউই জাহাজ থেকে নামতে না পারে।

২.২) “এই বাণিজ্যধারা দুটি প্রধান ধারায় চলত”- এই দুটি প্রধান ধারা কি কি?
উঃ) “সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার” প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক জানিয়েছেন যে, ভারতবর্ষের সঙ্গে বাণিজ্য চলত দুটি ধারায়- একটি, ডাঙা পথে আফগানি ইরানি দেশ হয়ে এবং অন্যটি জলপথে রেড সি হয়ে।

২.৩) সুয়েজ খাল খননের ফলে কি সুবিধা হয়েছে?
উঃ)  প্রাবন্ধিক স্বামী বিবেকানন্দ সুয়েজখাল খননের ফলে, বেশ কিছু সুবিধার কথা বলেছেন। তার মধ্যে ভূমধ্যসাগর আর লোহিত সাগরের সংযোগ হয়ে ইউরোপ আর ভারতবর্ষের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের অত্যন্ত সুবিধা হয়েছে বলে, প্রাবন্ধিক জানিয়েছেন।

২.৪)  “স্বর্গে ইঁদুর বাহন প্লেগ পাছে ওঠে”- এখানে কাকে স্বর্গ বলা হয়েছে?
উঃ) “সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার” নামক প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক স্বামী বিবেকানন্দ স্বর্গ বলতে ইউরোপের কথা বলেছেন। ইউরোপে যাতে প্লেগ রোগ ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সুয়েজখালে নানাবিধ ব্যবস্থা করা ছিল।

২.৫) “একথা ইউরোপীয়েরা …. চায় না”- কোন কথা ইউরোপীয়েরা স্বীকার করতে চায় না ?
উঃ) নেটিভপূর্ণ ভারতবর্ষই যে ইউরোপীয়দের ধন এবং সভ্যতার প্রধান সহায় ও সম্বল- এই বিষয়টি ইউরোপীয় সভ্যজাতির মানুষেরা স্বীকার করতে চায় না এবং বুঝতেও চায় না বলে, প্রাবন্ধিক স্বামী বিবেকানন্দ জানিয়েছেন।

২.৬)  “আহা ও লোভ কি ছাড়া যায়?”- এখানে কিসের লোভের কথা বলা হয়েছে?
উঃ) “সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার” প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক, তৈলাক্ত ও সুগন্ধ ছড়ানো আসল ইংরেজি শুয়োরের মাংসের লোভের কথা বলেছেন।

২.৭) জাহাজে খালাসি বেচারাদের আপদের কারণ কি?
উঃ) প্লেগ রোগের কারণে, ছোঁয়া-ছুঁয়ির ভয়ে, মিশরের কুলীদের মাল নামানোর হুকুম ছিল না। এইজন্য জাহাজের খালাসিদের কুলি হয়ে, মাল নামাতে হচ্ছিল। প্রবন্ধে এটিকেই খালাসিদের আপদ বলা হয়েছে।

২.৮) সুয়েজখাল কে খনন করেন?
উঃ) ফর্ডিনেন্ড লেসেপ্স নামে এক ফরাসি স্থপতি সুয়েজ খাল খনন করেন

২.৯) “সকলবেলা খাবার- খাবার আগেই শোনা গেল..”- কি শোনা গেল?
উঃ) “সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার” প্রবন্ধে লেখকের সকালবেলা খাবার খাওয়ার আগেই শোনা গেল যে, জাহাজের পেছনে বড় বড় হাঙ্গর ভেসে বেড়াচ্ছে।

২.১০) “মনটা বড় ক্ষুন্ন হল”- কি কারনে মন ক্ষুন্ন হল?
উঃ) “সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার” প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক স্বামী বিবেকানন্দ এবং সহযাত্রীরা হাঙ্গর দেখার জন্য যখন হাজির হলেন, তখন হাঙ্গর মিঞারা একটু জাহাজ থেকে দূরে সরে যাওয়াই তাদের মন ক্ষুন্ন হয়।

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading