একাদশ শ্রেণির বাংলাClass11 স্বরচিত গল্প class11 bengali project বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক হল Project Class11 বা প্রজেক্ট নির্মাণ। এই প্রকল্প রচনাটিতে কুড়ি নম্বর থাকে। ছাত্র-ছাত্রীরা সঠিকভাবে পদ্ধতি অবলম্বন করলে এখানে ফুল মার্কস পেতে পারে। মূলত চারটি বিষয়ের উপর তাদের Project Class11 প্রজেক্ট ওয়ার্ক করতে দেয়া হয়ে থাকে ।এই চারটি Project Class11 বিষয়গুলো –
- কোন বিখ্যাত গ্রন্থের সঠিক অনুবাদ
- কোন বিখ্যাত ব্যক্তি সাক্ষাৎকার
- কোন বিষয়ের উপর নির্দিষ্ট প্রতিবেদন রচনা
- এবং শিক্ষার্থীদের নিজের লেখা গল্প
qbangla.com এই সাইটটিতে নিচে তোমাদের নিজের লেখা একটি স্বরচিত গল্প Project Class11 নমুনা দেওয়া হল আশা করছি গল্পটা তোমাদের ভালো লাগবে এবং তোমাদের প্রকল্প নির্মাণের যথেষ্ট সহায়তা করবে। Project Class11
Project Class11 স্বরচিত গল্প Bengali
SUBJECT:- BENGALI
Class -11
Session :-
Students signature…………………………………………………
Teachers signatures………………………………………………
প্রকল্পের বিষয়:- স্বরচিত গল্প লিখন..Project Class11
গল্পের নাম:- কুসংস্কার
প্রকল্পের উদ্দেশ্য
সূচিপত্র ……………………………………………
কৃতজ্ঞতা স্বীকার ………………………………………………………………….
মূল প্রকল্প লিখন ……………………………………………………………………..
তথ্যসূত্র…………………………………………………………………………………….
Project Class11

কুসংস্কার
বাড়ির একমাত্র মেয়ে খেদি । ভালো নাম সুরবালা । বেটে খাটো চেহারার বলে পাড়ার লোকে তাকে খেদি বলেই বেশি ডাকে। ভোঁদড়ের একমাত্র আদরের মেয়ে। বড় ছেলের নাম দিকরে। চারজনের পরিবারে অভাব বলতে কিছু নেই। তবে দিন আনা দিন খাটা পরিবার। অন্যের জমিতে বা বাড়িতে কাজ করে খেদির মা সংসার চালিয়ে নেয়। বড় ছেলে দিগরে মাঝেমধ্যে রাজমিস্ত্রি । কখনো ফ্যাক্টরিতে কাজে যায়। অনেক কষ্ট করে একটা ভ্যান গাড়ি কিনেছে। সেটাও মাঝে মধ্যে ভাড়া খাটায় বলে তাদের সংসারে অভাব কিছু হয় না বলেই চলে।
দিনের দিন খাবার ঠিক জুটে যায়। টালির ছাওনি দেওয়া মাটির দু কামরা বাড়ি, বর্ষার জলে দেওয়ালগুলো খয়ে মাটি খুলে পড়ে গেছে। পিছন দিকে খেদির বাবা বাঁশ ঢেক দিয়ে দেওয়ালগুলোকে আটকে রেখেছে। বর্ষাকালে বাড়িতে বৃষ্টির জলও পড়ে কিন্তু তাতে তাদের কোন কিছু অসুবিধা হয় না। মাটির দেওয়াল বলে চারিদিকে ইঁদুরের গর্ত আছে ইঁদুরে আবার ঘরের মধ্যে মাটি বের করে ফোঁপড়া করে দিয়েছে।
একদিন রাত্রি একটার সময় খেদিকে সাপে কামড়ায়। খেদি বেঘোরে ঘুমিয়ে ছিল। ইঁদুরের গর্ত থেকে সাপটা বেরিয়ে খেদির গায়ে উঠে জামার ভেতর দিয়ে পিঠের শিরদাঁড়ায় কামড়ে দেয়। খেদি চিৎকার করে উঠে পড়ে। বাড়ির মধ্যে হই হই একটা কান্ড পড়ে যায়। ভোঁদড় মেয়ের চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি উঠে পড়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে সবটা গর্তের মধ্যে ঢোকার চেষ্টা করছে ভোঁদুর সঙ্গে সঙ্গে সাপটাকে ধরে কাজ করে চার টুকরো করে দেয় এবং তাকে একটা ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে নেয়।
এদিকে বাড়ির মধ্যে চেঁচামেচির কান্ডের আওয়াজ শুনে বাড়ির সামনেই একজন শিক্ষক মহাশয় থাকেন। নাম বিমল ঘোষ এবং তার একটি ছেলে একটি মেয়েও আছে। পাশের বাড়ি কয়েকজন লোক আছে। তারা সবাই চেঁচামেচি শুনে ভোদরের বাড়ির সামনে জড়ো হয়। শিক্ষক মশাই বিমল বাবু খেদিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। কিন্তু ভোঁদুর কিছুতেই রাজি হয় না।
ভোঁদড় চিৎকার করে বলে ওঠে, “আমার মেয়ে মরে যায় যাক তবুও হাসপাতালে নিয়ে যাব না। আমি আমার মেয়েকে রোজা বাড়ি নিয়ে যাব। রোজা বাড়ি নিয়ে গেলে ঠিক হয়ে যাবে”
বিমল বাবু, “দেখো কাকা রোজা বাড়ি নিয়ে গেলে ঠিক হয় না। হাসপাতালে নিয়ে চলো। দু’ঘণ্টার মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে”
পাড়ার আশেপাশের বাড়ির লোক অবশ্য রোজা বাড়ির কথায় সায় দেয়।
তারা সবাই এক বাক্যে বলে “না খেদিকে রোজার কাছে নিয়ে যাও। রোজা মন্ত্র পড়ে বিষ ঝেড়ে দেবে। তাহলে কিছু হবে না”
বিমল বাবুর সঙ্গে ভোঁদুরের সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয়। একই পাড়ায় থাকলে যা হয়। নানা কারণে মাঝেমধ্যেই বিমল বাবুর সঙ্গে ভোঁদড়ের ঝগড়া হয়। তর্কবিতর্ক বাধে । কখনো ছাগল নিয়ে। কখনো মুরগি নিয়ে । কখনো হাঁস নিয়ে প্রায় দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া অশান্তি লেগেই থাকে। তাই ভোঁদড় বিমল বাবুকে খুব একটা সহ্য করতে পারে না।
তাই বিমল বাবু ভোঁদুরের সঙ্গে বেশি কথা কাটাকাটি করেন না বা বেশি কথার উত্তর দেন না। তিনি ভালো করেই জানেন যে ভোঁদড় তার সঙ্গে ভালো কথা বলবে না বা তার কথায় কান দেবে না।
পাড়ার লোকের কথায় সায় পেয়ে ভোঁদড় আরো জোর গলায় চেঁচামেচি করতে থাকে। তাকে সাইকেলে করে ৪ কিলোমিটার দূরে এক বড় রোজা থাকে। তার কাছে নিয়ে যায় জন্য তোর জোর শুরু করে। বিমল বাবু প্রবল আপত্তি করা সত্ত্বেও কেউ কোন কথা শোনেনি। অবশেষে বাধ্য হয়ে বিমল বাবু ভোঁদরের সঙ্গে খেদিকে সাইকেলে চাপিয়ে রাত তিনটের সময় রোজা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
প্রায় দু’ঘণ্টা পর রোজার বাড়ির কাছে খেদিকে নিয়ে ভোঁদড় বিমল এবং খেদির মা, দাদা পৌঁছায়। অনেক ডাকাডাকি পর চারটের সময় রোজা উঠে খেদির সামনে বসে তার বিষ ঝারার উপক্রম শুরু করে। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে রোজা অনেক কিছু মন্ত্র বলে । এমনকি যেখানে সাপে কামড়েছে সেখানে কাস্তের গরম করে ছেকা পর্যন্ত দেয়। ততক্ষণ ে সাপের বিষাক্ত বিষ খেদির সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে খেদি প্রায় নেতিয়ে পড়েছে। মুখ দিয়ে অনবরত লালা পড়ছে। তবুও ভোঁদড় রোজার কাছে বসে আছে হাত জোড় করে ।
রোজা মশাই নানা ধরনের উপাচার নিয়ে খেদির সামনে বসে আছে এবং মনে মনে কি সব মন্ত্র কাউরে চলেছে অনবরত। বিমলবাবু সবকিছু দেখলেও কিছু বলতে পারছেন না। অবশেষে সকাল আটটার সময় খেদি একেবারে নেতিয়ে পড়লে বিমলবাবু জোর করে সাহস নিয়ে বললেন “রোজা মশাই আপনার কিছু আর করার আছে?”
রোজা বিমল বাবুর দিকে তাকিয়ে অনেকক্ষণ পর বললেন “না আমার কিছু করার নেই। আমি যা কিছু করার করে দিয়েছি”
বিমল বাবু, “কাকাবাবু আর এখানে একবিন্দুও দেরি করা যাবে না। নয়তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। এখন আমি যা বলছি শোনো। খেদিকে এখনই এখান থেকে যত তাড়াতাড়ি পারি হাসপাতালে নিয়ে যায় চলো”
ভোঁদড়, “তুই চুপ কর। কোন কথা বলিস না। রোজা এখনি বিষ ঝেড়ে দেবে। আমার মেয়ে ঠিক হয়ে যাবে। হাসপাতালে যাওয়ার দরকার নেই। তুই চুপ করে বসে থাক”
বিমল বাবু ভালো করেই জানেন যে ভোঁদড় তার কথা শুনবে না। তাই বিমল বাবু নিজের স্থির সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন।
বিমল বাবু সঙ্গে সঙ্গে খেদিকে সাইকেলে তুলে বাড়ির দিকে রওনা দিলেন। এদিকে ভোঁদড় চিৎকার করে বলতে থাকলো “আমার মেয়ের যদি কিছু হয় তোর নামে থানায় কেস করে দেবো। আমি তোকে কিন্তু ছাড়বো না”
বিমল বাবু সে সব কথায় কান না দিয়ে বাড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া করে সোজা হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন।
ভোঁদড় এবং খেদির দাদা দুজনেই বিমল বাবুর পিছন পিছন দৌড়াতে লাগলো। ভোঁদড় চেঁচাতে রাস্তায় ছুটতে আরম্ভ করল।
ভোঁদড় ব্যাগের মধ্যে যে সাপটিকে কেটে রেখেছিল সেই সাপটিকে ব্যাগে করে নিয়ে হাসপাতালে সেও হাজির হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাপটাকে দেখে ভয়ে শিউরে ওঠে এবং ডাক্তারবাবু খেদির বাবাকে প্রচন্ড বকাবকি করা শুরু করে দিলেন।
“এত দেরি করে কেন আনা হয়েছে? সাপ কামড়েছে রাত দুটোর সময় আর আপনারা এনেছেন দশটার পর। কেন এত দেরি হয়েছে? আরো আগে আনা উচিত ছিল”
ভোঁদড় কিছু না বলে চুপচাপ ছিল । খেদিকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়া হয় এবং চিকিৎসা শুরু হয়ে যায়। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। খেদির সারা শরীরে অসার হয়ে গেছে।
বিমল বাবু অবশ্য ভয় পেতে লাগলেন। কেননা তিনি এক প্রকার জোর করে খেদিকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। এখন যদি চিকিৎসা করাতে খেদির কিছু হয়ে যায়। তাহলে সত্যি সত্যি বিমল বাবুর ওপর দোষ আসবে। তাকেই সবাই দোষারোপ করবে। তাই বিমল বাবু ঈশ্বরের উপর প্রার্থনা করতে লাগলেন।
খেদি বাবা অনবরত বাড়িতে এসে বিমল বাবুকে গালিগালাজ শুরু করে দিয়েছেন।
“আমার মেয়ের যদি কিছু হয়ে থাকে তাহলে তোকে আমি ছাড়বো না তোকে জেল খাটিয়ে ছাড়বো।“
বিমল বাবু ভোঁদড়ের কথায় গান না দিয়ে তাকে শান্ত থাকার কথা বলে। এদিকে দীর্ঘ একমাস চিকিৎসার পর খেদি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসে।
বিমল বাবু কুসংস্কারের বাধা ঠেলে খেদিকে বাঁচিয়ে নিয়ে এলেন কিন্তু এই কুসংস্কার কি চিরতরে নির্মূল হবে? এখনো বহু গ্রামে গঞ্জে পাড়ায় সাপে কাটলে রোজা বাড়ির চত্বরে ঘুরে বেড়ায়। গ্রামের মানুষের এখনো বিশ্বাস সাপে কাটলে রোজা ঠিক করে দেয়। কবে মানুষের ঘুম ভাঙবে? কবে মানুষ জেগে উঠবে? সব থেকে বড় প্রশ্ন এখন এটাই।
Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প Class11 স্বরচিত গল্প