> Class 12 Bengali Project-প্রকল্প পরিকল্পনা » Qবাংলা

Class 12 Bengali Project-প্রকল্প পরিকল্পনা

একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর একটি অন্যতম বিষয় হল প্রকল্প পরিকল্পনা class 12  Bengali  project বা প্রজেক্ট নির্মাণ। এই প্রকল্প রচনাটি যদি ফুল মার্কস পাওয়া যায় তাহলে বাংলা বিষয়ে নাম্বার অনেকটাই বেশি হয়ে যায়। তাই একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা বিষয়ে Class 12 Bengali Project প্রজেক্টের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া অতি আবশ্যক। প্রজেক্ট এর জন্য যেসব বিষয়গুলি নজর দিতে হবে সেগুলো হল

  • বিদ্যালয় শিক্ষক কর্তৃক যে পেপারে লেখার নির্দেশ দেবেন বা যে খাতার  উপর লেখার নির্দেশ দেবেন সেই খাতা যথাযথভাবে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে হবে
  • অবশ্যই একটি আলাদা পেপারে কৃতজ্ঞতা স্বীকার লিখতে হবে কৃতজ্ঞতা স্বীকারের পেজটি রং পেন্সিল দিয়ে একটু কারুকার্য করলে দেখতে সুন্দর হয়
  • প্রজেক্টের ফ্রন্ট পেজটি অতি সাধারণভাবে তৈরি করতে হবে। তাতে বিদ্যালয়ের লোগো বা বিদ্যালয়ের কোন ছবি দিলে দেখতে সুন্দর হয়। অনেকেই আজকাল কম্পিউটার থেকে প্রিন্ট করে নেয় এটা করলে একটু নম্বর কম পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে
  • প্রতিটা পেজ সাধারণ মার্জি ন দেওয়া উচিত নয়। মার্জিনটা একটু নকশা জাতীয় হলে দেখতে সুন্দর হয়
  • প্রত্যেকটা পেজের নিচের দিকে ডান দিকের কোনায় একটা ছোট্ট ফুল বা কোন নকশা এঁকে দিলে প্রজেক্ট এর লুকটাই আলাদা হয়ে যায়। 

Class 12 Bengali Project-তোমার প্রজেক্টের খাতাটি যত আকর্ষণীয় যত সুন্দর করে তুলতে পারবে ততই ফুল মার্কস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে মনে রাখবে ফুল মার্কস পেলে তবে তোমার বাংলা বিষয়ে নম্বর ৯০% থেকে ৯৭% হবেপ্রজেক্ট এর প্রত্যেকটি পেজ এইভাবে সাজিয়ে নেবে, 

  1. ফ্রন্ট পেজ
  2. সূচিপত্র
  3. কৃতজ্ঞতা স্বীকার
  4. প্রকল্পের বিষয়
  5. প্রকল্পের উদ্দেশ্য
  6. প্রকল্পের বিস্তারিত অংশ লিখবে 
  7. শেষে তথ্যসূত্র দিয়ে দেবে অর্থাৎ তুমি প্রকল্পটি কোথা থেকে সংগ্রহ করেছে সেগুলি তুলে দেবে

Class 12 Bengali Project

উচ্চ মাধ্যমিক বাংলায় বা দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলার প্রজেক্টে আটটি বিষয় থাকে। এর মধ্যে একটি বিষয়ে তোমাদের প্রকল্প রচনা করতে হয়। এই দশটি বিষয় হল

  1. সমীক্ষা পত্র 
  2. গল্পের নাট্যরূপ 
  3. চিত্রনাট্য নির্মাণ 
  4. গ্রন্থ সমালোচনা 
  5. নির্বাচিত রচনাকারের সাহিত্য শৈলী বিচার 
  6. নির্দিষ্ট ঐতিহাসিক কাল পর্বে সাহিত্য সংস্কৃতি বিকাশ ও বিবর্তনের সন্ধান 
  7. নির্বাচিত সাহিত্য সৃষ্ট চরিত্রের জীবনী নির্মাণ
  8. নির্বাচিত সাহিত্যিকের সাহিত্য অবদান সম্পর্কিত প্রকল্প নির্মাণ

একাদশ শ্রেণীর ক্ষেত্রে বাংলা বিষয়ে প্রকল্প চারটি বিষয় থাকে এই চারটি বিষয় থেকে যে কোন একটি বিষয়ে প্রকল্প রচনা করতে হয়। এই চারটি বিষয় হলো

  • সঠিক অনুবাদ 
  • সাক্ষাৎকার গ্রহণ 
  • প্রতিবেদন রচনা 
  • স্বরচিত গল্প লিখন 

যারা একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বিষয়ে প্রকল্প রচনা চাইছো তারা qbangla.com অনুসরণ কর। দ্বাদশ শ্রেণীর প্রকল্প রচনা Class 12 Bengali Project একটি করে নমুনা নিচে দেওয়া হল। দ্বাদশ শ্রেণীর প্রকল্প রচনা class 12 Bengali project

Bengali Project

মহাশ্বেতা দেবী রচিত   ” ভাত “  গল্পের নাট্যরূপ নির্মাণ

নাটকের নাম-     উৎসব   

| উৎসব| মহাশ্বেতা দেবী

চরিত্র পরিচিতি

  • . উৎসব  সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের গরিব ভাগ চাষী।
  • . চুন্নির মা  উৎসবের স্ত্রী 
  • .সাধন দাস –  উৎসবের প্রতিবেশী 
  • . সতীশ মিস্ত্রি –  উৎসবের মনিব 
  • . বাসিনী –  উৎসবের দূর সম্পর্কের দিদি
  • . বড়ো পিসিমা,–  কলকাতার বড়বাবুর বাড়ির সদস্যা 
  • .বড়ো বউ–  বুড়োকর্তার  বাড়ির বড় বৌ 
  • . পাড়ার ছেলেরা এবং অন্যান্যরা

||    অংক-১   ||   প্রথম দৃশ্য  ||

স্থান: সুন্দরবনের বাদা অঞ্চল     |   সময়: কোন এক সকাল

[ উচ্ছব সতীশ মিস্ত্রির জমিতে কাজ করে ধানে গোছ আসার আগেই কার্তিক মাসে ধান খড় হয়ে যায় পোকাতে নষ্ট হয়ে যায় তা দেখে উৎসব কাঁদতে থাকে।]

সাধন দাস:   অ  উচ্ছব  , মনিবের ধান যায়  তো তুই কাদিস কেন

উচ্ছব:   কাঁদবো না, সাধনবাবু কাঁদব না ?  

|| দ্বিতীয় দৃশ্য || 

স্থান: সুন্দরবনের বাদা অঞ্চল 

সময়: ঝড়ের রাত্রি

[ মঞ্চ চারিদিকটা অন্ধকার থাকে হালকা হালকা বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যাচ্ছে  ঝড়ে রাত্রে উৎসব এবং তার স্ত্রী খাবার খাচ্ছিল এমন সময় হঠাৎ ঝড় ওঠে ]

চুন্নুনীর মা:  দেবতার গতিক ভালো নয়কো। নৌকো নে ঝারা বেইরেছে বুঝি বা বোট মারা পরে

উৎসব: হ্যঁ গা চুন্নুনীর মা তাই তো দেখছি

[ মঞ্চে বিদ্যুতের আলোর ঝলকানি দেখা যায়। ঝড়ের রাতে মাতলা নদীর জলে উৎসবের পরিবার ভেসে চলে যায় । তার স্ত্রী পুত্র সবই মাতলা নদীর জলে তলিয়ে যায়।  প্রবল ঝড়ঝাপটাই উৎসব দিশেহারা হয়ে যায়। কয়েক দিন ধরে তার স্ত্রীকে খুঁজে বেরিয়েছে। তাই ত্রাণের খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি। সেজন্য বেশ কয়েকদিন ধরে সে অভক্ত থেকে গেছে মঞ্চ অন্ধকার হয়ে যায় ]

|| তৃতীয় দৃশ্য || 

স্থান: সুন্দরবনের বাদা অঞ্চল

সময়: ঝড়ের রাতের পরের দিন সকাল

সতীশ বাবু: উচ্ছবের মতিচ্ছন্ন হয়েছে বই তো নয় বউ ছেলে মেয়ে অপঘাতে মরল, মানুষ পাগল হয়ে যায় উচ্ছব ভাত ভাত করছে দেখ

উৎসব: তুমি কি বুঝবে সতীশবাবু ! নদীর পাড়েও থাকো না,  মেটে ঘরেও থাকো না পাকা ঘর কি ঝড় জলে পড়ে? তোমার ধান চাল পাকা ঘরে রেখেছো চোর ডাকাতে নেবে নাতোমার ঘরে রান্না হয়, ভাত খেতে দিলে না উচ্ছবকে

সতীশবাবু : তোকে এগলা দিলে চলবে?  তাহলেই পালে পালে পঙ্গপাল জুটবে নে? এই হল ভগবানের মার এর চোর থেকে তোকে বাঁচাতে পারি

উৎসব: তা তুমি ভাত দিলে না। দেশে ভাত নেই

[ এরপর থেকেই উৎসব আধ-পেটা খেয়ে উপোস শুরু করে বেশ কয়েকদিন ভাত না পেয়ে সে অভুক্ত হয়ে প্রীত হয়ে যায়

[ সতীশ প্রস্থান সাধন দাসের প্রবেশ ]

উৎসব:  চুন্নুনীর মা চুন্নুনীরে! তোমরা রা কাড় না কেন কোতা অইলে গো ? হায় ভগবান! হায় ভগবান!

সাধন দাস: কে, কোথায়, পাগল নাকি উৎসব? তোরেও তো টেনে নেচ্ছেল  গাছে বেঁধে রয়ে গেলি

[ সাধন দশের কথা উৎসবের কানে ঢোকে না ]

উৎসব:  রা  কাড়  | চুন্নুনীর মা !

[ উৎসব ঘরের পাশ ছেড়ে নড়তে চাই না। ঘরের মধ্যে যেসব জিনিস ছিল সেগুলোই স্মরণ করতে থাকে এবং স্ত্রী পুত্রের দুঃখে হুতাশ করতে থাকে। উৎসব ত্রানের দেওয়া খিচুড়ি খেতে পাইনি। শুধু চালগুলি চিবিয়ে জল খেয়েছিল। মহানামশতপতিকে খবর দেয়া হয়েছিল উৎসবের পরিবারকে শ্রাদ্ধশান্তি করার জন্য ইতিমধ্যে উৎসব বাসিনির সঙ্গে কলকাতায় যাবে বলে ঠিক করেছে। ]

সাধন দাস:  তুমি একা কলকেতা যাব বলে নেচেই বা উঠলে কেন ? সরকার ঘর কত্তে খরচা দেবে শুনছ না?

উৎসব:  সে এট্রা কতা বটে

|| অংক-২ ||

প্রথম দৃশ্য

স্থান: কলকাতার বড়ো বাবুদের বাড়ি

[ উৎসব ভাত খাবার আশায় বাসনির সঙ্গে কলকাতায় যায় কলকাতার এক বড়বাবুর বাড়িতে উৎসব বাবার আশায় কাজে লেগে পড়ে বড় বাড়িতে বুড়োকর্তা মরতে বসেছে তাকে বাঁচানোর জন্য এক তান্ত্রিক আনা হয়েছে বাড়িতে হোম যজ্ঞে অনুষ্ঠান চলছে সেই হোম যজ্ঞের কাঠ কাটতেই উৎসবকে দেওয়া হয় এবং বলা হয় কাঠ কাটা হলে উৎসবের ভাত খাওয়া হবে উৎসব ভাতের আশায় সেই কাঠ কাটতে শুরু করে। ]

বামুন ঠাকুর:  ভাত খাবে, কাজ করবে

বড়ো বউ :   কোথা থেকে আনলে?

বড়ো পিসিমা: কোথা থেকে আনলে মানে? ঝড় জলে দেশ ভেসে গেছে‌ আমাদের বাসিনির কে হয় সেই ডেকে আনলে

বড়ো বউ:  কিরকম দেখতে !

বড়ো পিসিমা: ময়ূর ছাড়া কার্তিক আসবে নাকি? তোমরা তো দশটা পয়সা দিতে পারবে না প্রাণে ধরে। এই চোদ্দো দফায় কাজ করবে। পেটে দুটো খাবে বই তো নয়, বাদা থেকে চাল আসছেতা দিতেও আঙ্গুল বেঁকে যাচ্ছে?

[ বড় বউ চুপ করে যায়এই সংসারে সবকিছুই চলে বড় পিসিমার নিয়মে বড় পিসিমা বড় বউয়ের পিসি শাশুড়ি হন। খুবই অদ্ভুত কথা তার এখনো বিয়ে হয়নি। বড়কর্তার বউ মরে গেলে এই সংসার নিয়ে বড়ো পিসিমা নেটা ঝামটা হয়ে যাচ্ছিল ]

বড়ো বউ:  তোমাদের মানে কি ? বড়ো পিসিমা কি অন্য বাড়ির লোক নাকি?

বড়ো পিসিমা: তোমার শ্বশুরই মরতে বসেচে বাছা সেজন্যই হোমযজ্ঞি হচ্ছে তার জন্য একটা লোক খাবে

[ বড়ো বউ কোন কথা বলে না। সব কথাই সত্যি। তার শ্বশুরই মরতে বসেছেনবিরাশি বছরটা  অনেক বয়স কিন্তু শ্বশুর বেশ টনকো ছিলেন তবে ক্যান্সার বলে কথা ক্যান্সার যে লিভারে হয় তাই বড়ো বউ জানতো না বড়ো বউ প্রায় দৌড়ে চলে যায়এদিকে হোম যজ্ঞের জন্য উৎসবকে কাঠ কাটতে বলা হয় তান্ত্রিক ফোন করে বুড়োকর্তার প্রাণ টুকু ধরে রাখবেন তিনি নিজের হল ঘরে বসে আছেন ]

বড় পিসিমা :  নামতে পারলে বাচা |  চালগুলো তো বের করে দেবে |

উৎসব :   এই জেদি এই যে দি | 

[ উৎসব দেখে যে নানা ধরনের চাল তার বাদা অঞ্চলে এইসব চাল চাষ হয় নাঝিঙেসাল, রামসাল, কনকপানি, পদ্মজ্বালি মোটাসাপটা আরো কত কি]

উৎসব:   হ্যাঁ বাসিনি, এত নানাবিধি চাল ?

বাসিনি:   বাবুরা খায়

উৎসব:   ওই পাঁচ ভাগে ভাত হয়? 

বাসিনি:   হবে নে?  বাদায় এদের এত জমি চাল এনে পাহাড় করেচে বড়ো পিসিমা বেচেও দিচ্ছে নুক্কে নুক্কেআমিই বেচতেছি সে চাল

উৎসব:   বাদায় এদের চাল হয় !  তা দে দেখি বাসিনি এক মুষ্ঠি চাউল দে গালে দে জল খায় বড্ড ঝ্যামন আঁচর কাটতিছে পেটের মদ্যিখানে সেই কদ্দিন ঘরে আঁদা ভাত খাই না দে বাসিনি বাগ্যতা করি তোর

বাসিনী:  আরে আরে! কর কি উৎসব দাদা গাঁ সম্পর্কে দাদা তো হও কেন বা এমন করতেছ পিসিমার দেখতে পেলে সর্বনাশ হবে আমি ঠিক তাগেবাগে দে ঝাবতুমি হাত চালিয়ে নাও দেখি বাবা এদেরকে বলিহারি ঝাইএট্রা লোক কদিন খাইনি শুনচ আগে চাট্রি খেতে দে। (বাসিনি প্রস্থান করে)

[ এই সময় উৎসব তার স্ত্রী পুত্রের কথা ভাবতে থাকে সতীশ বাবুর নাতির কথা ভাবে তার বাড়ির ঘরে যে কৌট রাখা ছিল সেই কৌটো নিয়ে ভাবতে শুরু করে এমন সময় বড় পিসিমার প্রবেশ ]

বড় পিসিমা:  কি হলো , হাত চালাও বাছা ওদিকে শুষছে কর্ত্তা হোম হবে, তা কাটগুনো দাঁড়িয়ে দেখচ?

উৎসব:  বড় খিদে নেগেছে মা গো! 

বড় পিসিমা:   এই শোন কতা ! ভাত নামলেও খাওয়া নেই একন তান্ত্রিকের নতুন বিধেন হল, সর্বস্ব রেধে রাখো, হোম হলে খেও তুমি হাত চালাও

[ উৎসব আবার কাঠ কাটতে শুরু করে ফুটন্ত ভাতের গন্ধ তাকে মাতোয়ারা করে তোলে এদিকে বাসিনি উঠোনে শাখ ধুতে আসে তাকে একটা ঠোঙা দিয়ে ছাতু খেয়ে নিতে বলে

উৎসব :  কে মরতেচে হ্যাঁ বাসিনি?

বাসিনি:  তেকেলে বুড়ো বাড়ির কর্ত্তা মরবেনে? ওই ঝে হোমের যোগান দিচ্ছে, ওই মুটকি ওনার খাস ঝি কত্তা মোলে পরে ওকে সাত নাতি না মেরেচি তো আমি বাসিনি নই তেকেলে  বুড়ো মরছে তার ঝন্যি হোম

[ বাসিনী প্রস্থান করেউৎসব ছাতু খেয়ে নেয়বড়ো পিসিমা প্রবেশ করে ]

বড় পিসিমা :   কোথায় গিয়েছিলে ? 

উৎসব :  একটু বাইরে গেলাম মা  | 

[ কাট কাটলে হোম হোম হলে ভাত তাই উৎসব তাড়াতাড়ি হাত চালাইউৎসব কাঠ কাটা শেষ করে ফেলে প্রায় ভাতের গন্ধ পেয়ে আড়াই মন কাঠ কেটে ফেলেছিল এর মধ্যে বড়ো পিসি মাকে দেখতে পাই ]

উৎসব:  মা! বাইরে ঝেয়ে বসব ?

[ বড়ো পিসিমা কোন উত্তর দেয় নাবাসিনী প্রবেশ করে ওদিকে তান্ত্রিক হঠাৎ মন্ত্র পড়তে শুরু করে রোগকে কালো বিড়ালের লোমে বেঁধে ফেলে এবং অদ্ভুত এক মন্ত্র বলে ]

বাসিনী:  তুমি ঝেয়ে বাইরে বোসো দাদা না, মন্তর বললে বটে ঝেমন হাকুড় পারলে অমনি কত্তা টাল দিলে? কর্ত্তার দেহ থেকে বাদ্দিটা আঁচড় পাঁছর করে বেইরে এল চ্যান করবে তো করে নাও কেন ?

উৎসব:  একন চান করবো না মাতায় জল পরলে পেট মানতে চায়নে মোটে[ উৎসব বাইরের শিব মন্দিরের চাতালে চলে যায়সেখানে সে চিন্তা করে বড়ো বাবুদের আসল বাদা খুঁজে বার করবে, ভাত খেয়ে শক্তি পেলে সেই বাদাটা খুঁজে বের করবে সেখানে পাড়ার ছেলে তাস খেলছে। ]

প্রথম পাড়ার ছেলে:  বুড়োকে বাঁচিয়ে তুলতে হোম হচ্ছে 

দ্বিতীয় পাড়ার ছেলে:   ফালতু

তৃতীয় পাড়ার ছেলে:  কি ফালতু?

প্রথম পাড়ার ছেলে:  বেঁচে থেকে ও কতদিন জীবন পাবে? একশো? যতসব ফালতু

[ উৎসব এদের কথায় কান দেয় না। ভাতের খিদের চালায় তার কোন কিছু ভাল চিন্তা আসে না অনেকদিন পর ভাত খাবে ভাতের আশাতেই সে যেন প্রেত থেকে মানুষ হয়ে গেল। নিজের স্ত্রী পুত্রদের কথা ভেবে চোখে জল চলে আসে ]

প্রথম পাড়ার ছেলে:  কি হে কাঁনছো কেন?

উৎসব:  আমারে সুধোচ্ছেন বাবু ?

প্রথম পাড়ার ছেলে:  হ্যাঁ হ্যাঁ

উৎসব: আবাদ থেকে আসতেছি বাবু গো, ঝড় জলে সব নাশ হয়ে ঘরের মানুষ ডুবে গেছে। 

দ্বিতীয় পাড়ার ছেলে:[ উৎসব এরপর ওই চাতালে ঘুমিয়ে পড়ে কোন একটা লোক তাকে ঠেলা দিয়ে জাগিয়ে দেয় ]

উৎসব: ইস! যে সাঁঝ বেলা গো

লোক:  ওঠো, ওঠো কে তুমি? 

উৎসব:  বাবু…. আমি……  

লোক:  চুরির মতলবে পড়ে আছ ?

উৎসব:  না বাবু, এই বাড়িতে কাজ করতেছিলাম। 

লোক:   ওঠো ওঠো[ বড় বাড়িতে ইতিমধ্যে বুড়োকর্তা মারা যায় বুড়োকর্তা মারা যাওয়াতে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় পিসিমা চেঁচাতে শুরু করে ]

বড়ো পিসিমা:  তোমার ছোট বেয়াই কি ডাকাতে সন্নেসী আনলো গো দাদা। যজ্ঞি হল আর তুমিও মল্লে। অ দাদা ! তুমি যে বিরেশিতে যাবে তা কে জানতো বলো গো ! তোমার যে আটানব্বই বছর বেঁচে থাকার কথা গো দাদা

[ বুড়োকর্তা মারা যাওয়াতে বাড়ির রান্না করার সমস্ত ভাত অসৌচ হয়ে যায় সেই ভাত বাসেনি ফেলে দিতে যায়। ক্ষুধার্ত উৎসব বাসের সামনে দাঁড়ায় ]

বাসিনী:  ধর দেখি দাদা। 

উৎসব:  এই যে ধরি। 

[ উৎসব ডেকচি ভর্তি ভাত দেখে খিদের জ্বালায় জর্জরিত হয়ে সেই ভাত খাবার জন্য বাসিনিকে জানাই কিন্তু বাসিনি তা না দিলে উৎসব বাসিনির কাছ থেকে ডেকচি কেড়ে নিয়ে দৌড়ে স্টেশনে চলে যায় সেখানে ডেকচি ভর্তি পেট ভরে ভাত খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে থানার পুলিশ এসে ডেকচি চুরি করার অপরাধে তাকে ধরে নিয়ে যায় ]

Leave a Comment

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading