একাদশ শ্রেণির বাংলা class11 bengali project বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক হল Project Class11 বা প্রজেক্ট নির্মাণ। এই প্রকল্প রচনাটিতে কুড়ি নম্বর থাকে। ছাত্র-ছাত্রীরা সঠিকভাবে পদ্ধতি অবলম্বন করলে এখানে ফুল মার্কস পেতে পারে। মূলত চারটি বিষয়ের উপর তাদের Project Class11 প্রজেক্ট ওয়ার্ক করতে দেয়া হয়ে থাকে ।এই চারটি Project Class11 বিষয়গুলো –
- কোন বিখ্যাত গ্রন্থের সঠিক অনুবাদ
- কোন বিখ্যাত ব্যক্তি সাক্ষাৎকার
- কোন বিষয়ের উপর নির্দিষ্ট প্রতিবেদন রচনা
- এবং শিক্ষার্থীদের নিজের লেখা গল্প
qbangla.com এই সাইটটিতে নিচে তোমাদের নিজের লেখা একটি স্বরচিত গল্প Project Class11 নমুনা দেওয়া হল আশা করছি গল্পটা তোমাদের ভালো লাগবে এবং তোমাদের প্রকল্প নির্মাণের যথেষ্ট সহায়তা করবে। Project Class11
Project Class11 Bengali
SUBJECT:- BENGALI
Class -11
Session :-
Students signature…………………………………………………
Teachers signatures………………………………………………
প্রকল্পের বিষয়:- স্বরচিত গল্প লিখন..Project Class11
গল্পের নাম:- বিজ্ঞানের উত্তর ?
প্রকল্পের উদ্দেশ্য
সূচিপত্র ……………………………………………
কৃতজ্ঞতা স্বীকার ………………………………………………………………….
মূল প্রকল্প লিখন ……………………………………………………………………..
তথ্যসূত্র…………………………………………………………………………………….
Project Class11

|| বিজ্ঞানের উত্তর ? ||
♦ ১ ♦
শুভ ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। পড়াশোনায় আগাগোড়া থেকেই একটু দুর্বল। পড়াশোনা জন্য তার মাথায় কিছুই ঢোকে না। প্রকারান্তরে খেলাধুলায় তার ঝোঁক বেশি। পড়াশোনা অপেক্ষা তার খেলাধুলা করতেই বেশি ভালো লাগে। মাঝেমধ্যে বাবার কাছে খেলাধুলা করার জন্য প্রহারও খায়। আর পড়াশোনা না করার জন্য মায়ের কাছে সর্বদা বকুনি খেতে হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলায় মা তাকে চেঁচিয়ে চেচিয়ে পড়তে বসাই । শুভ একপ্রকার জোর করেই বই নিয়ে পড়তে বসে। পড়তে বসে তো ঠিকই কিন্তু বই নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে সময় কাটিয়ে দেয়। মায়ের নজরে একটু পড়লেই কাছে গিয়ে কান ধরে বইয়ের দিকে মুখ ঘুরিয়ে দেয়।
এতে শুভ যেন আগুনে জ্বলে ওঠে কিন্তু বাবা কাছে থাকায় কিছু বলতে পারেনা যেদিন বাবা থাকে না সে মায়ের কোন কথাই শোনে না। মা তাকে যতই মারুক তার লাগেনা কিন্তু বাবা থাকলে তার যেন জমির দুয়ারে বাস হয়। মধুবাবুর একটি ছেলে একটি মেয়ে। বড়টির নাম শুভজিৎ এবং ছোট মেয়েটির নাম নয়নিকা। নয়নিকা সবেমাত্র দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ছে। নয়নিকা অবশ্য বাবা-মায়ের বাধ্য মেয়ে। মা বাবা যা বলে তাই করে। সে তার দাদা শুভকে খুব ভয় পায়। কেননা তার দাদা যা কিছু করে সব বাবার কানে তুলে দেয়। এজন্য শুভ তার বোন নয়নিকাকে সহ্য করতে পারে না। কথায় কথায় তাকে মারে।
♦ ২ ♦
একদিন শুভ স্কুলে যাবে এই বলে স্কুলের ব্যাগ নিয়ে বেরিয়েছিল। কিন্তু স্কুলে যায়নি। ষষ্টের মাঠে এক মনোরম বাগান আছে। সেখানে কেউই যায় না। খুব সুন্দর আবহাওয়া। প্রকৃতির শান্ত ষ্নিগ্ধ একটা পরিবেশ। শুভ সেই দিন সেখানেই সারাদিন কাটিয়েছে। স্কুল ছুটির সময় সেখান থেকে আবার বাড়ি ফিরেছে। কিন্তু মাঠে কে একজন তাকে দেখে ফেলেছিল। সেই কথাটি নয়নিকার কানে ওঠে। একটা সুযোগ পেয়ে গেল নয়নিকা। তার দাদার উপর প্রতিশোধ নেওয়ার। সঙ্গে সঙ্গে তার বাবাকে গিয়ে বলে “বাবা; দাদা আজকে স্কুলে যায়নি।
কেন ? স্কুলে যায়নি কেন ? আমি তো দেখলাম ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিল !
“হ্যাঁ তুমি দেখেছো স্কুলে গেছে। কিন্তু ও স্কুলে না গিয়ে ষষ্টের মাঠে খেলা করছিল ।
বাবা “কি ? এত বড় বেয়াদব ! স্কুলে না গিয়ে ………….. ডাক আমার কাছে।
ইতিমধ্যে মা ব্যাপারটি জানতে পেরে যায়। বুঝতে পারে তার প্রাণের ছেলের গায়ে একটা প্রহার পড়তে চলেছে। তাই তাকে বাঁচানোর জন্য ঘুরঘুর করছে তার স্বামীর কাছে।
“ রাগের মাথায় কিছু করে বসো না | মাথা ঠান্ডা করো “
“ তুমি চুপ করো । তোমার জন্যই আজকে এই অবস্থা”
নয়নিকা দৌড়ে ছুটে বেরিয়ে যায় দাদাকে ডাকার জন্য। নয়নিকা এক মুহূর্ত দেরি করেনি । বাবা যে তাকে ডেকেছে সে খবরটা তার দাদাকে পৌঁছে দিতে। শুভ বুঝতে পারে তার বাবার ওপর আজকে যম ভর করেছে। তাকে নিশ্চিত প্রহার থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। শুভ ভয়ে ভয়ে তার বাবার কাছে গেল। বাবা তাকে দেখামাত্রই দৌড়ে তাকে মারতে গেল। মা চেঁচিয়ে বলে “ ছেলেকে কিছু বলবে না”
“ তুমি ছাড়ো বলছি! তোমার জন্যই আজকে ছেলের পড়াশোনার এই গতিপ্রকৃতি। আজকে ওকে আমি মেরেই ছাড়বো “
সেদিন অনেক তর্ক বিতর্কের পর শুভ মারের হাত থেকে বেঁচে ছিল।
♦ ৩ ♦
শুভ একটা জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারে না যে পড়াশোনা করে কি হবে? এত জেনে কি হবে? আর পড়াশোনা করতে কেনই বা এত কষ্ট করতে হয়? তার চেয়ে ষষ্টের মাঠের এই যে গাছ। গাছের পাতায় হাওয়া লেগে নড়া। গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে কি সুন্দর নীল আকাশ দেখা যায়। দূরে সবুজে ঘেরা মাঠ দেখা যায়। মনে হয় তাকে খেলার জন্য বারবার ডাকছে। এক একবার দৌড়ে ছুটে মাঠের শেষ প্রান্তে চলে যায় । কিন্তু কিছুই খুঁজে পাই না। আবার ফিরে আসে সেই গাছের নিচে। কত মায়াময় এই পৃথিবী, কিন্তু এটা যেন তার স্বাধীনতা নয়। তার স্বাধীনতা যেন বাবা আটকে রেখেছে। সর্বদা স্কুলে যাওয়া। তারপর বাড়ি এসে সন্ধ্যা বেলায় পড়াশুনা করা।
এসব তার ভালো লাগেনা। তার মনে হয় মাঠের কোথাও কোন অংশে ছুটে সারাদিন বেড়াই। যেখানে কোন বাধা নেই। পড়াশোনা নেই। কেউ কিছু বলবেও না। কিন্তু এমনটা কি হয়! তাকে কি কেউ একা ছেড়ে দেবে? বাবা কি কিছু বলবে? মা কি তাতে সায় দেবে? এইসব কথাবার্তায় তার মন ভরে ওঠে না। সে শুধু একটা কথাই বোঝে, কবে বড় হব ? বড় হলে কেউ তাকে আর কিছু করতে বাধা দেবে না । সে অনায়াসে যেখানে সেখানে যেতে পারবে । তখন কেউ আর তাকে পড়াশোনা করতে বলবে না । তাই তার খুব আক্ষেপ হয়। কবে যে বড় হব ? কবে যে একা কোথাও যাব?
♦ ৪ ♦
এইসব ভাবতে ভাবতেই তার সময় কেটে যায়। আবার বাড়ি ফিরে চলে আসে কিন্তু বাড়ি ফিরেই তার মনে হয় যমের দুয়ারে চলে এলাম। এই বুঝি বাবা হাঁক দিয়ে বলবে পড়তে বস । বাবার হাঁক দেওয়া তার জন্য বুক কেঁপে ওঠে। কিন্তু বাবা– মারের ভয়ই হোক। তাকে তো পড়তে বসতেই হবে। তাই একপ্রকার তার মনকে দমিয়ে ব্যাগ থেকে বই একটা একটা বার করতে থাকে। বইয়ের পাতায় চোখ রাখলেও তার মন বইয়ের মধ্যে নেই। তার মন ঘুরে বেড়াচ্ছে। বন বাদারে। সেই শিশু গাছটি। যার দুটি পাতা বেরিয়েছে।
সে হয়তো আকাশের মুখ পানে তাকিয়ে আছে। নয়তো বা কদম গাছটির ডাল হাওয়াতে নুইয়ে পড়ছে। তাতে একটি বক এসে বসছে। নয়তো তালগাছে কোন একটা কাক অনেকক্ষণ ধরে ডাকছে। এইসব কথাই ভাবতে থাকে। তাই পড়াশোনা তার কিছুতেই আর ভালো লাগছে না।
♦ ৫ ♦
আজকে বিদ্যালয় কি একটা অনুষ্ঠান হয়েছে । তাই টিফিনে বিদ্যালয় ছুটি হয়ে গেছে। শুভ তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে এসেছে। বাবা জিজ্ঞাসা করে। “কিরে আজ তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে এলি স্কুলে গিয়েছিলিস তো? এত তাড়াতাড়ি তো ছুটি হয়ে যায় না? শুভ বাবার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ছিল কিন্তু কিছু বলল না । সোজা ঘরে ঢুকে পড়ল। ঘরে ঢুকে ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বিছানায় চুপচাপ বসে পড়ল। বাবা ছেলের এমন ব্যবহার আগে দেখেনি। তাই একটু অবাক হয়ে গেল। কিন্তু কিছু বলল না । আজকে নয়নিকা স্কুলে যায়নি। বাড়িতেই ছিল। দাদাকে দেখতে পেয়ে বলে “দাদা ভাত খাবি না? মা ভাত দিচ্ছে চলে আয়।
শুভ তার বোনের দিকে ভয়ংকর লাল চোখ করে তাকিয়েছিল। কিন্তু কিছু বলল না। নয়নিকা ভয় পেয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো। ভাবল দাদা হয়তো তাকে এখনই পিটতে পারে। অনেকক্ষণ বাইরে না বেরিয়ে আসার কারণে মা নিজেই তার ছেলেকে খাবার জন্য ডাকতে গেল। “কিরে ভাত দেবো ? ভাত খাবি না ? ঠিক আছে! এখানেই বস। আমি এনে দিচ্ছি।“ মা তার জন্য যথারীতি ভাত থালাই করে তার সামনে দিয়ে দিল। “নে ভাত খেয়ে নে”
শুভ কিছু না বলে তাড়াতাড়ি ভাতের থালায় বসে পড়ল। নয়নিকা ঘরে ঢুকে দাদার পাশে বসে পড়ল। শুভ অনেকক্ষণ ভাতের দিকে দৃষ্টি রেখে চলেছে। কিন্তু ভাত খাচ্ছে না। এক ভাবে ভাতের দিকে তাকিয়ে আছে বলে নয়নিকা বলল “দাদা ভাত খা ! ভাতে মাছি বসছে । শুভ কোনরকম কথা বলল না । শুভর ব্যবহার আজ যেন পাল্টে গেল । নয়নিকা ভয় পেতে লাগলো । কিন্তু নয়নিকা ভাবলো হয়তো দাদা একটু রেগে গেছে মনে হয়।। শুভ এক দৃষ্টি নিয়ে ভাতের থালার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু ভাতে হাত দিচ্ছে না।
নয়নিকা আবার বলল “ দাদা অনেকক্ষণ ধরে ভাতের দিকে কি দেখছিস? ভাত খা । কখন থেকে বসে আছিস? এতক্ষণে শুভ যেন কিছু একটা বুঝতে পারল। সে সারা শরীরটা একটু ঝাঁকুনি দিল। তারপর দুটো হাত ভাতের উপর দিয়ে ভাতগুলোকে চটকাতে শুরু করল। কিন্তু খাচ্ছে না। নয়নিকা দাদার এমন আচরণে এবার কিন্তু সত্যিই ভয় পেয়ে গেল। “দাদা তুই ভাতগুলো এমন করে মাখছিস কেন? খাবি তো ভালো করে খা !
শুভ তার বোনের দিকে চোখ দুটো বড় বড় করে লাল টকটকে করে ভয়ংকর দৃষ্টি নিয়ে তাকালো। বিকট একটা আওয়াজ করে বললো “কে আমাকে এখানে এনেছিস? আমাকে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দে? আমি বাড়ি যাব ? নয়নিকা দাদা এমন ভয়ংকর চোখের দৃষ্টি আর বাঁকা বাঁকা কথা শুনে ভয়ে দৌড়ে বাবার কাছে গেল। বাবাকে গিয়ে বলে “বাবা শীঘ্রি এস । দাদা কেমন করছে। ভাত খাচ্ছে না। কি সব উল্টোপাল্টা বলছে। চোখগুলো কেমন বড় বড় হয়ে গেছে, লাল টকটকে দেখাচ্ছে তুমি তাড়াতাড়ি এসো”
বাবা ভেবেছিল ছেলে পড়াশোনায় ফাঁকি দেবে বলে হয়তো এমন আচরণ করছে। ঘরের মধ্যে গিয়ে দেখে থালাটা একদিকে পড়ে আছে। ভাতগুলো চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। শুভ ঘরের মেঝেতে শুয়ে আছে এবং মুখ দিয়ে কেমন একটা আওয়াজ বার করছে। মুখ থেকে সর্বদা গোঙ্গানির মত কি রকম একটা বিকট আওয়াজ বার করছে। মনে হয় এক্ষুনি বমি করবে। কিন্তু বমি করছে না । পা ছেড়েছুড়ে গজড়াছে । মা তাড়াতাড়ি ছেলেকে ধরতে যায় কিন্তু মা যেই ছেলেকে ধরেছে অমনি শুভ একটা ঝটকা দেয়, মা ছিটকে গিয়ে খাটের উপর পড়ে যায়।
এইবার বাবা রীতিমতো ভয় পেয়ে গেল। বাবাও ছেলেকে ধরতে যায় । অনুরূপভাবে শুভ বাবাকেও একটা ঝটকা দেয়। সেই ঝটকা চোটে বাবা দরজায় গিয়ে ছিটকে পড়ে। শুভর উপর যেন একটা বিশাল শক্তি ভর করেছে। সে যেন সবকিছু ভেঙে ফেলতে চাইছে। আর মুখ দিয়ে কি সব বলি বলছে।
♦ ৭ ♦
বাবা মা নয়নিকা শুভ কে বাগাতে পারছে না। তাকে আটকে রাখতে পারছে না। যেন বিশাল ক্ষমতা তার গায়ে কোথা থেকে এসে গেল। আর মুখ দিয়ে লালা– ঝোল পরছে সবসময়। ছেলে মেয়ে বাপের চেঁচামেচিতে আশেপাশের লোকজন পাড়া পড়শিরা বাড়িতে ভিড় করে। তারা চলে আসে সবাই। সবাই মিলে শুভকে আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কেউই তাকে আটকাতে পারে না।
»» প্রায় ১০-১২ জন লোক তাকে ধরে মাটিতে শুয়ে রেখেছে। কিন্তু তাতেও তাকে বাঘে আনতে পারছে না। এরপর লোকজন ঠিক করল তাকে দড়িতে বেঁধে গাছে আটকে রাখবে। যথারীতি তাকে পায়ে হাতে দড়ি বেঁধে গাছে আটকে রাখা হলো। সেখান থেকেও যেন গাছকে নড়িয়ে ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করছে। তার চোখ বড় বড় হয়ে গেছে। মুখ দিয়ে অনবরত লালা ঝরছে। আর মুখ বড় করে কি সব বলে চলেছে। যার কোন অর্থ নেই।
»» পাড়ার কে একজন বলে ওঠে “ ওর মাথা খারাপ হয়ে গেছে তাড়াতাড়ি ডাক্তার ডাকতে দে” বাবা পাশের গ্রামে এক হাতুড়ে ডাক্তার আছে তাকে ডাকতে গেল সাইকেল নিয়ে। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এল । সবাই মিলে তাকে ধরে আটকে রেখেছে। তার রূপ চেহারা দেখে ডাক্তারও রীতিমতো ভয় পেয়ে গেছে। ডাক্তারের দিকে লক্ষ্য রেখে বড় বড় লাল চোখ করে শুভ বলছে “এ ডাক্তার আমাকে ছেড়ে দে। আমার কিছু হয়নি। আমাকে আটকে কোন লাভ নেই। আমাকে ছেড়ে দে বলছি। আমাকে ছেড়ে দে বলছি”
»» ডাক্তার অনেক সাহস নিয়ে কিছু চেকআপ করে করল কিছু টের পেল না। শারীরিক কোন অসঙ্গতি দেখতে পেল না। শেষে ডাক্তার বলল “একে তাড়াতাড়ি কাছের কোন হাসপাতালে ভর্তি করে দাও” এ কথা বলে ডাক্তার চুপ করে রইল। পাড়ার এক বুড়িমা শুভর মাকে কাছে ডেকে চুপিচুপি বলল “দেখ বৌমা মনে হয় তোর ছেলেকে ভূতে পেয়েছে । তুই এক কাজ কর। ভটে কে ডেকে নিয়ে আয় । সে ভালো ভুত ছাড়তে পারে। যদি তোর ছেলেকে ভালো করতে পারে তো সেই ভালো করতে পারবে”
»» ব্যাপারটা পাড়ার লোকজন বুঝতে পেরে যায়। শুভকে কোন একটা ভূতে ধরেছে। শুভর মা শুভর বাবাকে ব্যাপারটা বলে। শুভর বাবা তাড়াতাড়ি ভটেকে ডেকে নিয়ে আসে। ডাক্তার কিন্তু কিছু করতে পারল না। কোন রোগ নির্ণয় করতে পারল না। ডাক্তারকে দেখে ভটে বলল “ ডাক্তারবাবু এটা তোমার কাজ নয় এটা আমার কাজ। তুমি এখন যাও” ডাক্তার কিছু না বলে চলে গেল।
♦ ৮ ♦
ভটে এলাকার ভালো একজন রোজা । অনেক লোকের ভুত ছাড়িছে।ভোটে বলল “সবাই মিলে ওকে ঘরের ভেতরে ঢোকাও আর মেয়েরা সব বাইরে বেরিয়ে এসো পাশে দাঁড়াও” লোকজন শুভকে চ্যাংদোলা করে ধরে ঘরে নিয়ে গেল। বাইরে থেকে পাড়াপড়শিরা বিষয়টা লক্ষ্য করছে। প্রায় ১০ থেকে ১২ জন শুভকে ঘরের মধ্যে নিয়ে গেল। ভটে দরজার কাছে বসে আছে। শুভকে প্রথমে ধরে বসিয়ে দেওয়া হলো। তারপর ভটে কি সব একটা মন্ত্র বলল। শুভ বিশাল বড় একটা ঝাঁকুনি দিল।
ভটে বলল “কে তুই বল ? এখানে কেন এসেছিস ? এই ছেলেটার কেন ক্ষতি করেছিস ? শুভ কর্কশ ভাষায় বলল “আমি ব্রহ্মদৈত্য। রাস্তার ধারের বেল গাছে থাকে। শুভ ওই কাছে মুতেছে বলে আমি তাকে ধরেছি । তাই তাকে কষ্ট দিচ্ছ”।
ভটে “ তুই ছেড়ে দে।”
শুভ “না । আমি ছাড়বো না ।
ভটে “ ছোটো ছেলে।”
“না আমি ওকে ছাড়বো না । তুই কিছু করতে পারবি করে নে। আমি ওকে ছাড়বো না।
“আমি কি করতে না পারি? তুই দেখবি ? এই লঙ্কাটা নিয়ে হয়তো আর একটা আগুন নিয়ে আয়”
শুভ “ তুই আমার কিছু করতে পারিব না”
পাড়ার লোকজন রীতিমতো ভয়ে কাঁপছে, এ যেন সত্যি ভূতের সঙ্গে কথা বলছে রোজা। শুভ মা বাবা তো ভয়ে একেবারে কাঠ হয়ে গেছে। তার মা ঘুমড়ে ঘুমড়ে কাঁদছে তার ছেলের একি হলো। কে একজন লঙ্কা আর আগুন দিয়ে গেল। রোজা লঙ্কা এবং আগুন ধরিয়ে শুভর সামনে দিতে লাগলো। “তাড়াতাড়ি ওকে ছেড়ে দে বলছি। না হলে তোর অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যাবে। ছেড়ে দে বলছি”
শুভ “লঙ্কা দিবি না । ছেড়ে দিচ্ছি। ছেড়ে দে”
“বল তুই আর কোনদিনও এদিকে আসবি না। আর কোনদিনও একে ধরবি না”
“ আমি কোনদিন আসবো না”
ভটে “ঠিক আছে। যাওয়ার সময় এই জুতোটা মুখে নিয়ে ফেলে দিয়ে তারপর যাবি”
“ঠিক আছে তাই করব” বাইরে উঠোনের সামনে একটা জুতো রেখে দেওয়া হল। ভটে “যা ওই জুতোটাকে মুখে নিয়ে ফেলে দিয়ে তুই চলে যা”। এই তোরা সব সরে যা। রাস্তা ছাড়। ও বেরোবে এবার”
পাড়ার লোকজন ভয়ে দূরে সরে গেল। ভটে “সবাই ওকে ছেড়ে দে, আর কিছু করতে হবে না। ছেড়ে দে” যারা ওকে ধরেছিল তারা ছেড়ে দেওয়া মাত্রই শুভ ঘর থেকে প্রচন্ড জোরে দৌড়ে ছুটে বেরিয়ে মুখে করে জুতোটাকে তুলে নিয়ে বাড়ির পিছনের দিকে দৌড় লাগালো। কিছুদূর ছুটে গিয়ে শুভ আছাড় খেয়ে পড়ে যায়। এবং অজ্ঞান হয়ে যায়। সবাই মিলে তাকে ধরে ঘরে নিয়ে আসে। মাথায় জল দিয়ে তাকে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়।
কিছুক্ষণ পর শুভর জ্ঞান ফিরে আসে। সবাই তাকে জিজ্ঞাসা করে। “কি হয়েছিল তার ?” কিন্তু শুভ কিছু উত্তর দেয়নি। সে বলে “আমি জানিনা তো । আমার কি হয়েছিল?” মা বললো “ বাবা | তুই একদম ঠিক আছিস | তুই তো আমার ছোট বাবা রে ”
♦ ৯ ♦
এটা তো গেল সাধারণ ব্যাপার কিন্তু এখানে বিজ্ঞান তাহলে কোথায় গেল? সত্যিই কি তাহলে আত্মা আছে? আত্মা কি তার ওপর ভর করেছিল ? নাকি তার শারীরিক কোন কষ্টবোধ ছিল ? সেটা তো নয়। ডাক্তার তো এসে কিছু বুঝতে পারল না। একজন রোজা এসে তাকে ঠিক করে দিল এবং রোজা যা যা বলল শুভ তাই তাই করেছিল। তাই বিজ্ঞানের প্রশ্ন কিন্তু থেকে গেল।
Project Class11 Project Class11 Project Class11 Project Class11 Project Class11 Project Class11 Project Class11