এই জীবন কবিতার বিষয়বস্তু-Slst বা msc পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায়, বাংলা সাবজেক্টের পাঠ্যগ্রন্থগুলির মধ্যে নবম শ্রেণীর পাঠ্য বই: হল সাহিত্য সঞ্চয়ন। নবম শ্রেণীর সাহিত্য সঞ্চয়নের একটি কবিতা এই জীবন । কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত। এই জীবন কবিতাটির খুঁটিনাটি বিষয়, বিষয়বস্তু তাৎপর্য গভীরে এবং নমুনা প্রশ্ন বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা বাংলা বিষয় আরও প্রশ্ন-উত্তর জানতে click here
পঠভুমিকা- পৃথিবীতে মানুষ রূপে জন্মগ্রহণ করে মানব জীবনকে সার্থক করে তুলতে হয়। মানুষকে তার অধিকার খুঁজে নিতে হয়।মানব জীবন হচ্ছে সব থেকে সুন্দরতম জীবন। এই পৃথিবীর সমস্ত সৌন্দর্য আহরণ করাই মানব জীবনের লক্ষ্য। মানব রূপে জন্মগ্রহণ করে পৃথিবীর সমস্ত সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, রূপ রস সৌন্দর্য গ্রহণ করে মানব জীবনকে সার্থক করে তুলতে হয়। তাই প্রতিটি মানুষকে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে তার জীবনকে গড়ে তুলতে হয় সার্থক। অর্থাৎ পৃথিবীতে মানব রূপের জন্ম গ্রহণ করে বেঁচে থাকা অবস্থাতেই কোন মহৎ কর্মে জীবনকে উৎসর্গ করতে হয়। তবেই মানব জীবন জন্ম সার্থক হবে।
অধিকার নিয়ে বাঁচার মতো বেঁচে থাকতে হয়। পৃথিবীর সমস্ত উপভোগ্য জিনিস তাকে ছিনিয়ে নিতে হয়। কারণ মানব জীবন একবারই জন্মগ্রহণ করে। সেই মানব জীবন জন্মগ্রহণ করে তার উদ্দেশ্য পূরণ করাই মানব জনম সার্থক হতে পারে।
এই জীবন কবিতার বিষয়বস্তু
মানুষ রূপে জন্মগ্রহণ করে এই জীবনেই মানুষকে বাঁচার মতো করে বাঁচতে হবে। তার সারা জীবনটা পৃথিবীর সমস্ত অধিকারকে ছিনিয়ে নিয়ে বাঁচার মতো হয়ে বেঁচে থাকতে হবে। কবি মানুষ রূপে জন্মগ্রহণ করে কোন কিছুই ছাড়বেন না। এই পৃথিবীর রোদ ও বৃষ্টি, এমন কি ক্ষুধার অন্ন। শুধু ক্ষুধার অন্ন নয় তার জীবনের সমস্ত কিছু লাবণ্য বুঝে নেওয়া চাই। তা না হলে তিনি পুরো পৃথিবী দেখে নেবেন। কবিকে কেউ গ্রামে-গঞ্জে ভিখিরি করে পালিয়ে যাবে অথবা সুতো কলে কামারশালায় কেউ নিলাম করে দেবে– তা কবি কোনমতেই চান না। কেননা কবি এই জীবনেই তার জীবনকে সার্থক করে তুলতে চান। পৃথিবীতে মানব রূপে জন্মগ্রহণ করে ভিখিরি হয়ে তিনি আবার ফিরে যাবেন– এটা তিনি কখনোই চান না।
মানব রূপে জন্মগ্রহণ করে তিনি তার এই জীবনকেই কোন মহৎ কর্মে উৎসর্গ করে সার্থক করে তুলতে চান। তাই তিনি পৃথিবীর কোন কিছুই ছাড়বেন না। পদ্ম পাতায় ফড়িং যেমন প্রকৃতির নিয়মে আনমনে খেলায় মেতে ওঠে। কবিও তেমনি মানুষ হয়ে যখন জন্মগ্রহণ করে এসেছেন তখন তিনি প্রকৃতির নিয়মে মানুষ হয়ে আবার ফিরে যাবেন অর্থাৎ তার মানব জন্মগ্রহনকে তিনি পরিপূর্ণতা দান করবেন মহৎ কর্মের মাধ্যমে। তাই কবিতার শেষে তিনি বলেছেন, মানব রূপে পৃথিবীতে এসে বাঁচার মতো করে বাঁচতে হবে অর্থাৎ বাঁচার অধিকার কে ছিনিয়ে নিতে হবে। তিনি গোটা জীবন একটা জীবন্ত হয়ে বেঁচে থাকতে চান। মানুষ রূপে মাথা উঁচু করে বাঁচার মতো করে বেঁচে থাকতে চান। তার এই জীবনটা জীবন্ত করে তুলবেন তিনি গোটা পৃথিবীর কাছে।
এই জীবন কবিতার উৎস
নবম শ্রেণীর সাহিত্য সঞ্চয়ন বইয়ের পাঠ্য “এই জীবন” কবিতাটি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত “দেখা হল ভালোবাসা বেদনায়” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। এই কাব্যগ্রন্থটি ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত হয়।
এই জীবন কবিতার সারাংশ
“এই জীবন” কবিতায় কবি আসলে মানুষের মানব রূপে জন্মগ্রহণ করার আসল উদ্দেশ্যকে ব্যক্ত করতে চেয়েছেন। মানুষ রূপে জন্মগ্রহণ করে তাকে পৃথিবীতে কোন না কোন মহৎ কর্ম করে তার জনমকে সার্থক করে তুলতে হয়। বাঁচার অধিকার কে ছিনিয়ে নিতে হয়, পৃথিবীর সমস্ত রূপ রস সৌন্দর্যকে আহরণ করতে হয়। পৃথিবীতে মানব রূপের জন্মগ্রহণ করে আর কোন কিছু না করেই পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়া মানব জীবন সার্থক হতে পারে না। তাই মানব জীবন জন্ম গ্রহণ করে সার্থক করতে গেলে তার এই জীবনেই সমস্ত কিছু মহৎ কর্ম করে যেতে হয়। কেননা মানব জীবন হলো এক অমূল্য সম্পদ যা একবার জন্মগ্রহণ করে দ্বিতীয়বার আর সুযোগ থাকে না।
তাই মানব রূপের জন্মগ্রহণ করে যা কিছু তার কর্ম করে নেওয়া, অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার কর্ম করা– তা এই জীবনেই সম্পন্ন করে যেতে হয়। বেঁচে থাকা অবস্থাতেই সমস্ত কর্মকে সাফল্য করে যেতে হয়। তবেই বাঁচার মতন করে বাঁচা হবে এই জীবন।
কবিতাটির নামকরণ:- কবিতাটির নাম এই জীবন অর্থাৎ মানব রূপে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে– তার এই জীবনেই বাঁচার মতো করে বেঁচে উঠতে হবে। জীবনকে মানব রূপে জন্মগ্রহণ করার সার্থক করে তুলতে হবে। অর্থাৎ পৃথিবীতে বেঁচে থাকা অবস্থাতেই কোন মহৎ কর্মে নিজেকে উৎসর্গ করতে হবে। মানব রূপের জন্মগ্রহণ করাকে সার্থক করতে হবে। পৃথিবীর সমস্ত অধিকারকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য এই জীবনেই তার জীবনকে উৎসর্গ করতে হবে। তবে মানব জনম স্বার্থক হবে। তাই কবিতাটির বিষয়বস্তু বিচার বিশ্লেষণ করে একথা বলাই যায় যে কবিতাটির নামকরণ এই জীবন সার্থক হয়েছে।
শব্দার্থ টিকা:- “বাঁচতে হবে বাঁচার মতন”- মানব জীবনকে কোন মহৎ কর্মে উৎসর্গ করতে হবে বাঁচার অধিকার কে ছিনিয়ে নিতে হবে। “আমি কিছুই ছাড়বো না”- কবি এই পৃথিবীর সমস্ত অধিকার বুঝে নিতে চান। পৃথিবীর সৌন্দর্য সমস্ত কিছুই তিনি নিজের অধিকারকে বুঝে নিয়ে তবেই তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেবেন। “আমাকে কেউ গ্রামেগঞ্জে ভিখারী করে পালিয়ে যাবে?”- পৃথিবীতে মানব রূপে জন্মগ্রহণ করে আর ভিখারি অবস্থায় পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে নেবেন– এ কাম্য নয়। পৃথিবীতে যখন জন্মগ্রহণ করেছেন তখন মানব রূপে পরিচয় অধিকার করে নিয়েই পৃথিবী থেকে তিনি বিদায় নেবেন।
“মানুষ সেজে আশা হল / মানুষ হয়েই ফিরে যাব”- মানব রূপে জন্মগ্রহণ করে পৃথিবীতে তিনি এসেছেন। আর মানুষ হয়েই তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেবেন। অর্থাৎ তার মানব জীবনকে সার্থক করে তুলবেন। পৃথিবীকে তিনি চিনিয়ে দিয়ে যাবেন।
কবি সম্পর্কিত তথ্য:– কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় হাজার ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন কৃত্তিবাস পত্রিকার সম্পাদক এবং প্রতিষ্ঠাতা। তার লেখা প্রথম উপন্যাস আত্মপ্রকাশ এবং তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ “একা এবং কয়েকজন”। তিনি মূলত কবি হিসেবেই বাংলা সাহিত্যে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তাছাড়া তিনি ছোটদের জন্য বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। “ভয়ংকর সুন্দর” নামে তার প্রথম কিসের উপন্যাস। তার ছদ্মনাম নীললোহিত। তার বিখ্যাত উপন্যাস “প্রথম আলো”, সেই সময়, পূর্ব-পশ্চিম, মনের মানুষ, অর্জুন, অরণ্যের দিনরাত্রি, ইত্যাদি। কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পর্কিত আরো তথ্য তোমরা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের যেকোনো বই থেকে পেয়ে যাবে।
এই জীবন কবিতার প্রশ্ন উত্তর mcq
স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনে বাংলা বিষয়ে বেশ কিছু নমুনা প্রশ্ন এই কবিতা থেকে তুলে ধরা হলো–
১. নিম্নলিখিত কোন কবিতাটি কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের রচিত?
- এই তার পরিচয়
- নূতন জীবন
- এই জীবন
- ঘর উঃ এই জীবন
২.কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত “এই জীবন” কবিতাটির মূল কাব্যগ্রন্থের নাম কি?
- একা এবং কয়েকজন
- আত্মপ্রকাশ
- অর্জুন
- দেখা হল ভালোবাসা বেদনায় উঃ দেখা হল ভালোবাসা বেদনায়
৩. “আমি কিছুই ছাড়বো না আর, এখন আমার অন্য খেলা” – উল্লেখিত পংক্তিটির কবি কে?
- নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
- শঙ্খ ঘোষ
- নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী উঃ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
৪. সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত “এই জীবন” কবিতায় “বাঁচতে হবে বাঁচার মতন বাঁচতে হবে/ এই জীবনটা গোটা একটা জীবন হয়ে”- এই পঙক্তিটি কবিতায় কতবার ব্যবহৃত হয়েছে?
- ১বার
- ২বার
- ৩বার
- ৪বার উঃ ২বার
৫. “আমি কিছুই ছাড়বো না”- কবি কি ছাড়বেন না বলে উল্লেখ করেছেন?
- এই রোদ ও বৃষ্টি
- এই আকাশ
- এই মাটি
- এই পৃথিবী উঃ এই রোদ ও বৃষ্টি
৬. সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত “এই জীবন” কবিতায় ফড়িং আনমনে খেলা করে কোথায়?
- ঘাসে
- আম পাতায়
- সবুজ পাতায়
- পদ্মপাতায় উঃ পদ্মপাতায়
৭. “আমায় কেউ নিলাম করবে সুতো কলে/ কামারশালায়? এই লাইনটি কোন কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে?
- এই জীবন
- নতুন জীবন
- এই তার পরিচয়
- খেলাঘর উঃ এই জীবন
বিশেষ টিপস:- মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনে বাংলা বিষয়ে প্রশ্ন mcq হয় তাই কবিতাটির লাইন বারবার রিডিং পড়বে। এই কবিতা থেকে লাইনগুলি পূর্বাপর রিডিং পড়ে মনে রাখতে হবে এবং বিষয়বস্তু ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। কবিতার লাইনগুলি ঠিকঠাক মনে থাকলে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব সহজ হবে। তাই কবিতাটি অন্তত প্রতিদিন একবার করে রিডিং করতে হবে। যাতে লাইনগুলি পরপর মনে থাকে। কেননা স্কুল সার্ভিস কমিশনের বাংলা বিষয়ে পরীক্ষায় বেশিরভাগ লাইন তুলে প্রশ্ন হয়। তাই লাইনগুলি বারবার ভালোভাবে মনে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
এসএলএসটি বা মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ে আরো প্রশ্নের উত্তর জানতে এবং বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা জানতে- click Here