> এই তার পরিচয় কবিতার বিষয়বস্তু » Qবাংলা

এই তার পরিচয় কবিতার বিষয়বস্তু

Slst বা msc পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে wbcssc শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায়, বাংলা সাবজেক্টের পাঠ্যগ্রন্থগুলির মধ্যে নবম শ্রেণীর পাঠ্য বই: হল সাহিত্য সঞ্চয়ন। নবম শ্রেণীর সাহিত্য সঞ্চয়নের একটি কবিতা এই তার পরিচয় কবি  কবিতা সিংহ  রচিত। এই তার পরিচয় কবিতাটির খুঁটিনাটি বিষয়, বিষয়বস্তু তাৎপর্য গভীরে এবং নমুনা প্রশ্ন বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা বাংলা বিষয় আরও প্রশ্ন-উত্তর জানতে click here 

এই তার পরিচয় প্রশ্ন উত্তর

পটভূমিকা কবিতাটির পটভূমিকা ভালোভাবে বুঝতে গেলে, লেখিকা কবিতা সিংহের ব্যক্তিগত জীবন এখানে আলোচ্য বিষয় হিসেবে আসবে। তবে তোমরা বিভিন্ন সাহিত্যের বইয়ের এই কবিতার সিংহের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানতে পারবে তবু সংক্ষিপ্ত আকারে এখানে বলে রাখি, লেখিকা কবিতা সিংহ তার ব্যক্তিগত জীবনে নারী হিসেবে বহু অপমান লাঞ্ছনা সহ্য করেছেন এবং তার ফলস্বরূপ আমরা এই কবিতায় তার পরিচয় দেখতে পাই। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা চিরকালীন অবহেলিত, শোষিত এবং অত্যাচারিত প্রতি পদে পদে নারীদের লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়, অপমান সহ্য করতে হয় এমনকি বিকৃত পুরুষ মানুষের শিকারও হতে হয়। এবং সারা জীবন তাকে দুর্নাম বা বদনাম বয়ে বেড়াতে হয়

পৃথিবীর সৃষ্টির আদি লগ্ন থেকেই এই নারীরা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে অত্যাচারিত হয়ে আসছে। এবং আজও বর্তমান তা হয়ে চলেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের কোন সুযোগ বা অধিকার থাকে না এমনকি নারীদের কোন স্বাধীনতা থাকে না পুরুষের পদলেহন করেই নারীদের চলতে হয় পুরুষদের অধীনে থেকেই তাদের জীবন অতিবাহিত করতে হয়। শুধু তাই নয়, প্রতি নিয়ত এই নারীরা বিকৃত স্বভাবের পুরুষদের কাছে ভোগ্য বস্তু হয়ে জীবন কাটায় তাদের শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে নির্যাতন করে তাই বর্তমান যুগে এই তার পরিচয় কবিতায় লেখিকা কবিতা সিংহ একজন নির্যাতিতা নারীর আসল পরিচয় তুলে ধরেছেন নারীরা যে সমস্ত অপমান লাঞ্ছনা সহ্য করেও বেঁচে থাকে এবং তার অধিকার আদায় করতে চায় তাই কবিতায় কবি বারবার ফুটিয়ে তুলেছেন

এই তার পরিচয় কবিতার বিষয়বস্তু

 “এই তার পরিচয় কবিতাটিতে লেখিকা কবিতা সিংহ একজন নির্যাতিতা নারীর কথা তুলে ধরেছেন যে নারী বিকৃত পুরুষ মানুষের কাছে নির্যাতিতা হয়েছে। শোষিত হয়েছে লাঞ্ছিত হয়েছে অপমানিত হয়েছে কিন্তু সেই নির্যাতিত নারী সমস্ত অপমান লাঞ্ছনা, নির্যাতন সহ্য করে উঠে দাঁড়িয়ে তার পরিচয় দিয়েছে যে সে একজন নারী

পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ভেবেছিল যে নির্যাতিতা নারী আর উঠে দাঁড়াতে পারবেনা কারণ তার হাঁটু ভেঙ্গে গেছে ভেঙে গেছে তার বুকের পাঁজর এমনকি তাকে নির্যাতন করে তার মৃতদেহ জলেও ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে তার মৃতদেহটি দুর্নামের ঝাঁক তাকে পদে পদে অপমান করেছে অর্থাৎ খুবলে খুবলে খেয়েছেশুধু তাই নয়, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ভেবেছিল তার সিট দ্বারা ভেঙে গেছে তাকে অসংখ্য দুঃখ যন্ত্রণা দিয়েছে। তাকে শোকে জর্জরিত করেছে। তবুও নির্যাতিতা নারী সবার ঊর্ধ্বে উঠে দাঁড়িয়ে পরিচয় দিয়েছে সে একজন নারী সেই নির্যাতিতার নারীর শোক খেয়ে গেছে তার রক্তের সমস্ত কণিকা, তার সমস্ত অহংকার তার সমস্ত সম্মান বিষের মতো কীটদস্ট পুঁথির মতন ছিদ্র করে তার জৌলুস হারিয়ে ফেলেছে।

তাকে তার ভাস্কর্য এখন চিনতে পারে না। তাকে একেবারে সম্পূর্ণ অচেনা করে দিয়েছে তার মলিন শরীরটাকে অমলিন করে দিয়েছে। তবুও সে খাড়া দাঁড়িয়ে আছে কখনো ঝোঁকেনিকিন্তু সেই নির্যাতিত নারী এখন আর মূর্তি নয় বা প্রতিমা নয় যে কথা বলতে পারবেনা সে এখন গোটা পৃথিবীর নারীর প্রতিনিধি সে একজন দৃষ্টান্তের মতো হয়ে পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়ে আছে সকল অপমানের উর্ধ্বে উঠে

এই তার পরিচয় কবিতার উৎস

নবম শ্রেণীর সাহিত্য সঞ্চয়ন বইয়ের পাঠ্য এই তার পরিচয় কবিতাটি কবিতা সিংহ রচিত সহজ সুন্দরী কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে সহজ সুন্দরী কাব্যগ্রন্থটি ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত হয়

এই তার পরিচয় কবিতার সারাংশ

এই তার পরিচয় কবিতায় লেখিকা সমাজে বিশেষ করে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে যেখানে নারীর কোন সম্মান বা ভূমিকা নেই বা নারীর কোন আলাদা পরিচয় নেই পুরুষের আশ্রয়ে তাকে বেঁচে থাকতে হয় এমনকি সেই পুরুষের হাতেই তাকে নিত্যদিন লাঞ্ছিত হতে হয় অপমানিত হতে হয় এমনকি কিছু কামুক পুরুষের কাছেও তাকে ভোগ্য বস্তু হয়ে উঠতে হয় অপমানিত হতে হয়। সেই সমস্ত নির্যাতিত নারীর প্রতিনিধি হয়ে লেখিকা একটা প্রতিবাদের লেখনি ধরেছেন নারী পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বশ্যতা স্বীকার করে না তারা যে স্বাধীন তাদের যে পরিচয় আছে তা এই কবিতায় লেখিকা বলতে চেয়েছেন

 কবিতাটির নামকরণ:-  এই তার পরিচয় কবিতাটির নামকরণ যতোপযুক্ত হয়েছে কিনা তা বিষয়বস্তু আলোচনা করলে পরিষ্কার হয়ে যায়। পূর্বেই আলোচিত হয়েছে যে একজন নির্যাতিতা নারীর কথা এই কবিতায় তুলে ধরা হয়েছে। এবং লেখিকা বলতে চেয়েছেন যে নারীরা শুধুমাত্র পুরুষের ভোগ্য বস্তু নয় তাদের আশ্রয়ে বা তাদের অধীনে বেঁচে থাকার তাদের কাম্য নয় তারা স্বতন্ত্র তারা নারী তাদের নিজস্ব পরিচয় আছে। তারা মূর্তি বা প্রতিমা নয় তারা রক্ত মাংসের মানুষ তাদেরও চাওয়া পাওয়া তাদেরও অধিকার আছে এই দিক দিয়ে বিচার করলে বোঝা যায় যে কবিতাটির নামকরণ যত প্রযুক্ত হয়েছে।

শব্দার্থ টিকা:-   “ভেবেছিল আর উঠবে না”পুরুষতান্ত্রিক সমাজে যে নারী নির্যাতিতা হয় সেই নারীকে সমাজের লোক মনে করে যে, সেই নারী হয়তো আর উঠতে পারবেনা বা সম্মান নিয়ে সমাজে বেঁচে থাকতে পারবে না।ভেবেছিলে দুর্নামের ঝাঁকঝাঁক পুটি”সমাজের মানুষেরা মনে করে যে, নারীদের দুর্নামের ঝাঁক অর্থাৎ বদনাম বা অপমান বা নারীর শরীরে যে কলঙ্কের দাগ থাকে সেই কলঙ্কের দাগ নারীকে শেষ করে দেয় বা নারী হয়তো আর ঘুরে দাঁড়াতে পারে না “দুঃখ দিয়েছ তাকে, যাতনা দিয়েছো আর শোকআদিম কাল থেকেই নারীকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে দুঃখ যাতনা শোক দিয়ে আসছে।

কবি সম্পর্কিত তথ্য:–  লেখিকা কবিতা সিংহ ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন তিনি মূলত কবি ছোট গল্প রচয়িতা এবং উপন্যাসিক। তার ছদ্মনাম সুলতানা চৌধুরী তার বিখ্যাত কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ সহজ সুন্দরী”। এছাড়াও তিনি বহু উপন্যাস লিখেছেন যেমন চারজন রাগী যুবতী, সোনা রুপার কাঠি”, পাপ পূণ্য পেরিয়ে, পুরুষ ইত্যাদি তিনি 1998 সালে মারা যান কবিতা সিংহ সম্পর্কিত আরো তথ্য বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের যেকোনো বইয়ে তোমরা পেয়ে যাবে।

এই তার পরিচয় প্রশ্ন উত্তর mcq 

স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনে বাংলা বিষয়ে বেশ কিছু নমুনা প্রশ্ন এই কবিতা থেকে তুলে ধরা হলো

১। কবিতা সিংহ রচিত এই তার পরিচয় কবিতাটি কোন মূল কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত হয়েছে?

  1. পথে-বিপথে
  2. চারজন রাগী যুবতী
  3. পুরুষ
  4. সহজ সুন্দরী   উঃ সহজ সুন্দরী

২। নিম্নলিখিত কোন কবিতাটি কবিতা সিংহের রচিত?

  1. এই তার পরিচয়
  2. ঘর
  3. নুতন জীবন
  4. এই জীবন     উঃ এই তার পরিচয়।

৩। “কোথায় সে আনকোরা? কোথায় পালিশ?”- উল্লিখিত পঙক্তিটি কোন কবির রচিত?

  1. কবিতা সিংহ
  2. নীরেন্দ্র চক্রবর্তী
  3. শঙ্খ ঘোষ
  4. সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়   উঃ কবিতা সিংহ

৪। “ভেবেছিলে বজ্রপাতে ভেঙে গেছে তার শিরদাঁড়া”- কার শিরদাঁড়া ভেঙে গেছে ?

  1. পথ চলতি
  2. মানুষের
  3. নির্যাতিতা নারীর
  4. পুরুষের    উঃ নির্যাতিতা নারীর

৫। “ভেবেছিলে দুর্নামের ঝাঁক ঝাঁক পুঁটি/ খুবলে  খেয়ে যাবে তার চোখ”- উল্লেখিত পন্থিটির কবি কে?

  1. কবিতা সিংহ
  2. নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
  3. অমিয় চক্রবর্তী
  4. প্রেমেন্দ্র মিত্র      উঃ কবিতা সিংহ

৬। “ভেবেছিলে বজ্রপাতে ভেঙ্গে গেছে তার..” উদ্দিষ্ট ব্যক্তির বজ্রপাতে কি ভেঙ্গে গেছে বলে কবিতায় উল্লেখিত আছে?

  1. জলুশ
  2. শিরদাঁড়া
  3. মাথা
  4. পা   উঃ শিরদাঁড়া

৭। “চিনতে পারেনা তাকে তাহার..” কে চিনতে পারে না ?

  1. মানুষ
  2. নারী
  3. সমাজ
  4. ভাস্কর  উঃ ভাস্কর

৮। “দুঃখ দিয়েছ তাকে, যাতনা দিয়েছ আর……” শূন্যস্থানে যে শব্দটি বসবে সেটি হল-

  1. শিরদাঁড়া
  2. কণিকা
  3. পাঁজর
  4. শোক   উঃ শোক

৯। “কীটদস্ট পুঁথির মতন তার ছিদ্র করে নিয়েছে..” কি ছিদ্র করে নিয়েছে?

  1. কণিকা
  2. পাঁজর
  3. জলুস
  4. পালিশ     উঃ জলুশ

১০। “শোক খেয়ে গেছে তার রক্তের কমজোর..”-রক্তের কি খেয়ে গেছে ?

  1. কনিকা
  2. রক্তের লাল
  3. জলুস
  4. সম্মান।      উঃ কণিকা

বিশেষ টিপস:-  মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনে বাংলা বিষয়ে প্রশ্ন mcq হয় তাই কবিতাটির লাইন বারবার রিডিং পড়বেএই কবিতা থেকে লাইনগুলি পূর্বাপর রিডিং পড়ে মনে রাখতে হবে এবং বিষয়বস্তু ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে কবিতার লাইনগুলি ঠিকঠাক মনে থাকলে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব সহজ হবে তাই কবিতাটি অন্তত প্রতিদিন একবার করে রিডিং করতে হবে যাতে লাইনগুলি পরপর মনে থাকে কেননা স্কুল সার্ভিস কমিশনের বাংলা বিষয়ে পরীক্ষায় বেশিরভাগ লাইন তুলে প্রশ্ন হয়। তাই লাইনগুলি বারবার ভালোভাবে মনে রাখার চেষ্টা করতে হবে।

এসএলএসটি বা মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ে আরো প্রশ্নের উত্তর জানতে এবং বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা জানতে- click Here 

Leave a Comment

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading