> ছুটি গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর Class 11 New Syllabus Bengali » Qবাংলা

ছুটি গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর Class 11 New Syllabus Bengali

ছুটি গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর Class 11 New Syllabus Bengaliইতিমধ্যেই একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর সেমিস্টার সিস্টেম চালু হয়ে গেছে নম্বর বিভাজন পর্ষদ প্রকাশ করে দিয়েছে। এমনকি বাংলা বিষয়ের কোন কোন পাঠ্য গল্প কবিতা আছে সেগুলো প্রকাশ করে দেয়া হয়েছে। একাদশ শ্রেণীতে দুটি সেমিস্টার পরীক্ষা দিতে হবে প্রথম সেমিস্টার first sem হবে সম্পূর্ণ mcq এবং omr sheet দ্বিতীয় সেমিস্টারে দিতে হবে 40 নম্বরের বড় প্রশ্নের উত্তর সেখানে একটি মাত্র গল্প পাঠ্য আছে। গল্পের নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ছুটি গল্প এই গল্প থেকে দ্বিতীয় সেমিস্টারে second semester একটি মাত্র 5 নম্বরের বড় প্রশ্নের উত্তর করতে হবে দুটো আসবে বেছে নিয়ে একটি লিখতে হবে।

ছুটি গল্পের বিষয়বস্তু

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত “ছুটি” গল্পে ফটিক নামক একটি ১৩-১৪ বছর বয়সের স্বাধীন গ্রাম্য বালকের করুণ পরিণতির কথা বর্ণিত হয়েছে।ফটিকের ভাইয়ের নাম মাখন। ফটিক তার ভাই মাখনের সঙ্গে নদীর পাড়ে মারামারি করেছে মায়ের কাছে অনেক মার খেয়েছেফটিক তার গ্রামের পরিবেশে স্বাধীনভাবেই খেলে বেরিয়েছে ছুটে বেরিয়েছে‌ ঘুরে বেরিয়েছেপল্লী প্রকৃতির গ্রামে তার পৃথিবী ছিল অবাধ কিন্তু ব্যাঘাত ঘটলো কলকাতায় যাবার পর ফটিকের মামা বিশ্বম্ভর বাবু তাকে তার গ্রামের পরিবেশ থেকে কলকাতার শহরে পরিবেশে নিয়ে যায় যেখানে ফটিক কিছুতেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না।

নিজেকে ঠিক খাপ খাওয়াতে পারে না মামিমার চোখে অবহেলা এবং শহর কলকাতার ইট পাথরের জীবনে আটকা পড়ে যায় একদা দুরন্ত অবাধ্য দামাল ছেলে ফটিক হঠাৎ কলকাতায় গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলে খুঁজে পাই না সেই গ্রাম্য প্রকৃতির জীবন শহরে থেকে শুধুই মনে পড়ে তার গ্রামের পরিবেশ অভাগিনী মায়ের কথা মামার বাড়িতে সে পরের ছেলেতে পরিণত হয় চরম অবহেলায় এবং অনাদরে ফটিক ধীরে ধীরে নিজেকে কলকাতায় বন্দি বলে মনে হয়।

কলকাতার শহর জীবন থেকে ছুটি পেতে চায় মামার বাড়ি থেকে পালিয়ে মায়ের কাছে আসতে চায়। কিন্তু আসতে পারে না এভাবে কলকাতায় ফটিক ধীরে ধীরে অনাদর অবহেলায় পেতে পেতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয় একসময় প্রবল জ্বরে সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় চিরকালের জন্য পৃথিবী থেকে ছুটি নিয়ে চলে যায়

ছুটি গল্পের উৎস

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছুটি গল্পটি ১২৯৯ বঙ্গাব্দের পৌষ সংখ্যায় সাধনা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ছুটি গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত বিখ্যাত গল্প সংকলন গল্পগুচ্ছ থেকে গৃহীত হয়েছে

গল্পের চরিত্র

ছুটি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ১৩-১৪ বছরের গ্রাম্য দামাল ছেলে ফটিক এছাড়াও ফটিকের ভাই মাখন তার বিধবা মা মামা বিষম্ভর বাবু এবং কলকাতার মামিমা

ছুটি গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর Class 11 New Syllabus Bengali

একাদশ শ্রেণীতে দ্বিতীয় সেমিস্টারে ছুটি গল্পটি পাঠ্য হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে এই গল্প থেকে পাঁচ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর করতে হবে। কোন ছোট প্রশ্ন বা এমসিকিউ প্রশ্ন উত্তর করতে হবে না

) “মা এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি”- কথা বলে কে কাকে বলেছিল? বক্তা ছুটি হয়েছে বলতে কি বুঝিয়েছিল?

উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ছুটি নামক ছোট গল্পে উল্লেখিত উক্তিটির বক্তা গ্রাম্য বালক ফটিকফটিক কথাগুলি তার মাকে বলেছে।

ছুটি বলতে কী বোঝানো হয়েছেফটিক গ্রামের দুরন্ত অবাধ্য দামাল বালক গ্রামের পরিবেশে অবাধ বিচরণ, স্বাধীনভাবে ছেলে বেড়ানো ঘুরে বেড়ানো, ফটিককে যখন হঠাৎ তার মামা কলকাতায় নিয়ে যায় তখন, ফটিক নিজেকে আর খুঁজে পায় না। শহর কলকাতায় ইটের পাথরে দেওয়ালে আটকা পড়ে যায় সেখান থেকে বারবার তার গ্রামের কথা মনে পড়ে বারবার সেই গ্রামের পরিবেশের ছুটে পালিয়ে আসতে চায় ছুটি পেতে চায় মামার বাড়ি তার কাছে কারাগার মনে হতে থাকে এমনকি মামিমার কাছে অবহেলা পেতে পেতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয় একসময় প্রবল জ্বরে পড়ে এবং জ্বরের ঘোরে সে প্রলাপ বকতে থাকে তার বিধবা মাকে খবর দেয়া হয়। মা ফটিকের কাছে পৌঁছানো মাত্রই তাকে আদর করে ডাকতে থাকেন ফটিক জ্বরের ঘোরে তার মাকে বলে, মা এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, আমি বাড়ি যাচ্ছি অর্থাৎ ফটিক চিরকালের জন্য পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে, ছুটি নিয়ে চলে গেল ফটিকের মৃত্যু হল

২) “সেও সর্বদা মনে মনে বুঝিতে পারে, পৃথিবীর কোথাও সে খাপ খাইতেছে না”- এখানে সে বলতে কার কথা বলা হয়েছে? সে কোথাও কেন ঠিক খাপ খাইতেছিল না?

উঃ) ছুটি গল্পে এখানে সে বলতে ১৩-১৪ বছরের গ্রাম্য বালক ফটিকের কথা বলা হয়েছে যাকে গ্রাম থেকে তার মামা বিশ্বম্ভর বাবু কলকাতার শহরে নিয়ে গিয়েছিল

খাপ খাচ্ছিল না কেন–  ফটিক গ্রাম্য বালক গ্রামের পরিবেশে থেকেছে অবাধ স্বাধীনভাবে তার গ্রামের পরিবেশে ঘুরে বেড়িয়েছে হঠাৎ তার মামা তাকে কলকাতায় নিয়ে যায় ফটিক সেখানে গিয়ে আটকা পড়ে যায় নিজেকে বন্দী মনে হতে থাকে মামিমার চোখে সে অবহেলার পাত্র হয়ে যায়। কিছুতেই নিজেকে সেই দুরন্ত স্বভাব মনোভাবাপন্ন খুজে পায়না মামার বাড়ি তার কাছে কারাগার মনে হতে থাকে কলকাতার পরিবেশের চারিদিকের স্নেহশূন্য বিরাগ ফটিককে পদে পদে কাঁটার মতো বিঁধতে থাকে মামির স্নেহহীন চোখ তার কাছে সর্বদাই বাজতো এমন অবস্থায় তার কাছে তার অভাগিনী মায়ের মাতৃক্রঝড় স্বর্গলোক মনে হতে থাকে। এইভাবে ফটিক গ্রামের পরিবেশ থেকে হঠাৎ কলকাতার শহরের পরিবেশে গিয়ে নিজেকে খারাপ খাওয়াতে পারছিল না

) “দেওয়ালের মধ্যে আটকা পরিয়া কেবলই তাহার সেই গ্রামের কথা মনে পড়িত”- কার গ্রামের কোন কথা মনে পড়তো?  কেন মনে পড়িত?

উঃ) ছুটি গল্পে ফটিকের গ্রামের কথা মনে পড়তো। গ্রাম থেকে মামার সঙ্গে হঠাৎ কলকাতায় গিয়ে তার নিজের গ্রামের কথা মনে পড়তো

তেরো চৌদ্দ বছরের দামাল অবাধ্য গ্রাম্য বালক ফটিক কলকাতায় গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলে কলকাতার ইট পাথরের দেওয়ালের বাড়িতে নিজেকে বন্দী বলে মনে হতে থাকে তার মধ্যে মামিমার অনাদর অবহেলা তাকে প্রচন্ড পিড়া দিত আবার সেখানে হাঁফ ছাড়ার জায়গাও নেই এমত অবস্থায় তার ফেলে আসা গ্রামের কথা বারবার মনে পড়তো

গ্রামের বালক ফটিক যেখানে সারাদিন ছুটে বেড়াতো সেই মাঠ যেখানে সে প্রকাণ্ড একটা ঘুড়ি নিয়ে বোঁ বোঁ শব্দে ছুটে বেড়াতো। তাইরে নাইরে না বলে সেখানে ছুটে বারবার সেই নদীটি দিনের মধ্যে যখন তখন ঝাঁপ দিয়ে পড়ে, সাঁতার কাটার সেই সংকীর্ণ নদী তারপর সেই সব দলবল, উপদ্রব এবং অবাদ স্বাধীনতা সর্বোপরি তার সেই অত্যাচারিনী অভাগিনী মা মুখ বার বার মনে পড়তো

) “দাও ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দাওকে, কাকে, কেন বাড়িয়ে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেছে?

উঃ) ছুটি গল্পে কলকাতার শহরে ফটিকের মামিমা এমন মন্তব্য করেছিল ফটিকের মামিমা ফটিককে তার মায়ের কাছে নিজের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেছে

কেন বলেছেফটিক কলকাতায় গিয়ে কিছুতেই খাপ খাওয়াতে পারছিল না নিজেকে সর্বদাই বন্দী বলে মনে হচ্ছিল মামার বাড়ি তার কাছে কারাগার পরিণত হয় এদিকে মামিমার অনাদর স্নেহশূন্য দৃষ্টি ফটিককে বারবার পীড়া দিত তাই ফটিক মামার বাড়ি থেকে ছুটি পাওয়ার জন্য কাউকে না বলে মায়ের কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলফটিককে হঠাৎ একদিন সকালবেলায় দেখা যাচ্ছিল না তার মামা পুলিশে খবর দেয় অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর দুজন পুলিশ তাকে গাড়ি করে বিশ্বম্ভর বাবুর কাছে পৌঁছে দেয় মামিমা এমন কাণ্ড দেখে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল

৫) ছুটি গল্পে ফটিকের চরিত্র বিশ্লেষণ কর।

উঃ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ছুটি নামক ছোটগল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র ফটিক সহজ সরল এক গ্রামের অবাধ্য দামাল ছেলে কিভাবে শহরে নিজেকে হারিয়ে ফেলে এবং ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে তার এই কাহিনী বর্ণিত হয়েছে আলোচিত গল্পে গল্পে ফটিকের বেশ কিছু চরিত্র বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে:-

অবাধ্য বালক: ফটিক তার মায়ের অবাধ্য দুরন্ত বালক তার ভাই মাখন এর সঙ্গে মারপিট করে মায়ের সঙ্গে তর্কাতর্কি করে মা তাকে ডেকে পাঠালেও অনেক সময় কথা শুনতো না

পল্লীগ্রামের দামাল ছেলে: ফটিক পল্লী গ্রামের দামাল ছেলে পল্লী প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে সে একাকার হয়ে আছে। তাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কলকাতায় তার বন্দী জীবন তার সমস্ত স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয় কেবলই মনে পড়ে থাকে তার গ্রামের কথা।

কলকাতার শহরে যাওয়ার ইচ্ছা: ফটিক গ্রামের সহজ সরল দুরন্ত বালক কলকাতা শহর সম্পর্কে তার জানা ছিল না তাই মামার সঙ্গে কলকাতা যাওয়ার জন্য উৎসাহে উদগ্রী হয়ে উঠেছিল

মায়ের ভালোবাসা উপলব্ধি: ফটিক কলকাতায় গিয়ে বুঝতে পারে মায়ের স্বর্গ সুখ ভালবাসা মামিমার স্নেহশূন্য দৃষ্টি অনাদর অবহেলা বারবার তার অভাগিনী মায়ের মুখের কথা মনে পড়েছিল

ছুটি পেতে চাওয়া: ফটিক একজন নিতান্তই ছেলেমানুষি বালক ছুটি যে কি মধুর, কী আনন্দ তা ফটিকের চেয়ে কেউ বুঝতে পারে না তাই জ্বরে আক্রান্ত হলে ফটিক নিজে বুঝতে পারে যে, এবার তার ছুটি হয়েছে অর্থাৎ সে যে মৃত্যুর মুখে পড়েছে তা উপলব্ধি করতে পেরেছে

 অবশেষে তার করুণ মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে গল্পের পরিসমাপ্তি ঘটে গ্রামের দুরন্ত স্বভাবসম্পন্ন এক দামাল ছেলের চিরকালীন ছুটি হয়ে যায়

Leave a Comment

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading