মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ের পাঠ্য গল্প জ্ঞানচক্ষু | গল্পটির কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবী । মাধ্যমিকে প্রতিবছর তিনটি প্রশ্ন আছে। সেখান থেকে দুটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয়। এই সিরিজে এ বছর মাধ্যমিকের যে প্রশ্নগুলি আসার সম্ভাবনা প্রবল সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়ে উপস্থাপনা করা হয়েছে।প্রশ্নের উত্তরগুলি দেখার পাশাপাশি উত্তর লেখার কৌশল গুলি ভালোভাবে লক্ষ্য কর | মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর জানতে অবশ্যই click here
জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ) “আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।”—’আজ‘ বলতে কোন্ দিনের কথা বলা হয়েছে? দিনটি সবচেয়ে দুঃখের দিন মনে করা হয়েছে কেন? অথবা “ জ্ঞানচক্ষু‘ গল্পে তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটি কিভাবে দুঃখের দিনে পরিণত হল তা নিজের ভাষায় লেখ।
উওর ) কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবীর “জ্ঞানচক্ষু” শীর্ষক ছোটগল্পে “আজ” বলতে সেই দিনটির কথা বলা হয়েছে, যেদিন তপনের ছাটোমাসি ও মেসা‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার একখানি সংখ্যা নিয়ে তাদের বাড়িতে আসেন।
দিনটি সবচেয়ে দুঃখের দিন মনে করা হয়েছে কেন? মায়ের নির্দেশে গল্পটা পড়তে হয় | কিন্তু গল্প পড়তে গিয়ে ক্রমশই বিষন্ন হয়ে পড়ে তপন। সে দেখে তার ছোটমেসো তার লেখা গল্পটিকে আগাগোড়াই কারেকশন করে দিয়েছেন অর্থাৎ নতুন করে লিখেছেন এবং তা নিজের পাকা হাতে অর্থাৎ তপনের সৃষ্টি তার মধ্যে আর থাকেনা | সেই গল্পটি আগাগোড়াই পাল্টে যায় | তপন আর পড়তে পারে না | কারণ – “এর প্রত্যেকটি ….. আনকোরা….পনের অপরিচিত|”
তখন নিজের হাতে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে যে সৃষ্টি করেছিল সেই সৃষ্টি ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয়নি অর্থাৎ তার প্রতিভা তাতে বিন্দুমাত্র ছিল না | সেই গল্প নিজের গল্প বলে তার কাছে মনে হয় নি । তার লেখক সত্তাকে এভাবে অপমান করাকে তার কাছে সবচেয়ে দুঃখের এবং লজ্জার মনে হয়েছে। পত্রিকায় “প্রথম দিন” গল্পের লেখক হিসেবে নিজের নাম দেখে যে গর্ববোধ জেগেছিল , তা গল্প পড়ে মুহুর্তের মধ্যে তার আনন্, দুঃখে পর্যবসিত হয় | গল্পটি পড়তে গিয়ে তার কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসে। সে আর পড়তে পারে না। এই গল্পের প্রশংসাসূচক শব্দগুলি তার কাছে অসহনীয় হয়ে ওঠে । সে গড়গড়িয়ে পড়ে যায়। মাথায় কিছু ঢোকে না। এক সময় ব্যথিত হৃদয়ে ,বইটা ফেলে রেখে সে ছাদে উঠে যায়। দিনটাকে জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন বলে – মনে হয় তার।
2. “জ্ঞানচক্ষু” গল্প অবলম্বনে তপনের মেসোমশাই–এর চরিত্র আলোচনা করো।
উত্তর ) আশাপূর্ণা দেবী তার “জ্ঞানচক্ষু” শীর্ষক গল্পে, চিনা জীবনে অতি পরিচিত মানুষগুলিকে আমাদের পাঠ্য গল্পে তুলে ধরেছেন | নতুন মেসোমশাই নামি চরিত্রটি, আমাদের চেনা সমাজ – সংসার জীবনের অতি পরিচিত একটি চরিত্র | লেখিকা গল্পে খুব সুন্দর ভাবে তার চরিত্র বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন|
পেশায় একজন প্রফেসর – তপনের নতুন মেসোমশাই পেশায় একজন প্রফেসর | সেই সঙ্গে তিনি একজন নামজাদা লেখক | তার গল্প পত্রিকায় প্রকাশিত হয় | তপনের সদ্যবিবাহিতা ছোটোমাসির হাত ধরে তপন যে গল্পটা লিখেছে সেই গল্পটি চলে যায় লেখক ছোটোমেসোর কাছে। ছোটোমেসো সেই গল্প পড়ে তিনি প্রশংসা করেন এবং জানান,- “একটু ‘কারেকশান’…..ছাপতে দেওয়া চলে।”
দায়িত্বশীল- শ্বশুরবাড়িতে নতুন অতিথি হিসেবে এসে তপনকে তিনি অখুশি করতে চাননি | তাই তিনি তপনের লেখা পড়ে হয়তো প্রশংসা করেছেন এবং এর মাধ্যমে সবার মন জয় করতে চেয়েছেন | তার গল্প পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন | এতে বোঝা যায় যে , তিনি তার শ্বশুর বাড়ির লোকের প্রতি সামান্য হলেও দায়িত্বশীল আছেন | নতুন মেসোমশাই তার নতুন বিবাহিত স্ত্রীর প্রতি মর্যাদা দিতে জানেন |
বিজ্ঞতার পরিচয়- কিন্তু শেষ পর্যন্ত নতুন মেসোমশাই একটু বিজ্ঞতার পরিচয় দিয়ে দেন | তপনের লেখা গল্পটির ছাপিয়ে দেওয়ার নাম করে , তিনি গল্পটিকে আগাগোড়া কারেকশন করে পাল্টে দেন | তার এই আচরণে একজন প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী প্রকৃত জ্ঞানচক্ষু ব্যক্তিত্ব হলেও , তপনের মনের প্রকৃত চাওয়া-পাওয়া তিনি বুঝতে পারেন নি | তিনি তপনের ভেতরে প্রতিভার কোন মূল্য দেননি | এখানে প্রমাণিত হয় যে, তিনি প্রকৃত মূল্য দেওয়ার ব্যক্তি নন | তাই তপনের লেখা গল্পের ব্যক্তিত্বকে তিনি প্রকাশ করতে দিলেন না |
3. “জ্ঞানচক্ষু” গল্পে তপনের ছোটোমাসির স্বভাব ও ভাবনার যে পরিচয় ফুটে উঠেছে, আলোচনা করো।
উত্তর ) “ জ্ঞানচক্ষু” গল্পে লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী সমাজ জীবনের অতি সাধারণ চরিত্র গুলিকে আমাদের গল্পে তুলে ধরেছেন | তপনের ছোটমাসি নামে একটি সাধারণ নারী চরিত্রের কতগুলো অতি সাধারণ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন | যা আমাদের সংসারের খুঁটিনাটি নারী চরিত্রকে মনে করিয়ে দেয় |
সদ্যবিবাহিতা- তপনের ছোট মাসি সদ্যবিবাহিতা | তার স্বামী একজন পেশায় প্রফেসর | তার স্বামীর গৌরবে ছোটমাসি গর্বিত | ছোটমাসি একটু চঞ্চল স্বভাবের মানুষ | তপন যে গল্পটি লিখেছিল , সেই গল্পটি নিয়ে হইচই করে দেয় এবং বাড়ির সকলকে ঘুম ভাঙিয়ে তপনের লেখা গল্পের কথা সবাইকে জানাতে যায় | এ যেন আমাদের অতি পরিচিত সংসার জীবনের এক সাধারণ নারী , যার স্বভাব পতি চঞ্চলা |
বন্ধুত্বসুলভ – ছোটোমাসির চরিত্রে মমতা, ভালোবাসা ও বন্ধুত্বসুলভ ভাবনার কোনো ঘাটতি ছিল না। তাই তো বয়সে বছর আষ্টেকের বড়ো হওয়া সত্ত্বেও মামার বাড়িতে ছোটোমাসিই ছিল তপনের একমাত্র বন্ধু এবং সুখ দুঃখের সাথি। আর এই কারণেই তপন তার প্রথম লেখা গল্পের খবরটা ছোটোমাসিকেই প্রথম দেয়। ছোটোমাসি সহানুভূতিপরায়ণা।
মুরুব্বিয়ানার ভাব- তবে বিয়ের পরে ছোটোমাসির স্বভাবে একটু মুরুব্বিয়ানার ভাব পরিলক্ষিত হয়। তাই তপনের লেখা গল্পটা একটু চোখ বুলিয়েই মাসি সন্দেহবশত বলে ওঠে—‘ কোনোখান …. করিসনি তো?’ আবার ছোটোমেসো গল্পটি ‘কারেকশান’-এর কথা বললে মাসি বলে, ‘তা হোক, নতুন নতুন এমন হয়।’ এইভাবে সাধারণ এই নারীচরিত্রটি স্নেহশীলা ও মাতৃত্বময়ী নারীর যথার্থ প্রতিরূপ হয়ে আলোচ্য গল্পে পরিলক্ষিত হয়।
4. “কিন্তু নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের।”—কীভাবে তপনের প্রথম জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল? তার সত্যিকারের জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল কীভাবে?
উত্তর ) “জ্ঞানচক্ষু” কথার অর্থ প্রকৃত সত্যের উদঘাটন করা | স্বপ্নময় কল্পনার জগত থেকে বেরিয়ে কিভাবে প্রকৃত সত্যের উদঘাটন করতে পেরেছিল বা অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেছিল – তার প্রকৃত দৃষ্টান্তের চমকপ্রদ’ প্রকাশ লক্ষ্য করা যায় লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর রচিত “জ্ঞানচক্ষু” নামক পাঠ্য গল্পে
কীভাবে তপনের প্রথম জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল?-গ্রীষ্মের ছুটিতে ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে মামার বাড়িতে গিয়ে নতুন মেসোর সঙ্গে তার দেখা হয়, যিনি একজন লেখক |সেখানে তপন একজন জ্বলজ্যান্ত সত্তিকারের লেখককে দেখে | তার নতুন লেখক মেসোমশাই একেবারে নিছক সাধারণ মানুষ | তিনি বাবা কাকা বা মামাদের মতোই দাড়ি কামান , সিগারেট খান , খেতে বসে আবার উঠে যান এবং চানের সময় চান করেন, ঘুমোনোর সময় ঘুমান | কাগজের বিষয় নিয়ে তর্ক করতে দ্যাখে। একজন লেখক এসব সাধারণ কাজ যে করতে পারে, তা মামাবাড়িতে নতুন মেসোকে না দেখলে জানতে পারত না তপন।এভাবে তার প্রথম জ্ঞানচক্ষুর উন্মেষ হয়
তার সত্যিকারের জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল কীভাবে- কিন্তু পরবর্তী সময়ে তপনের প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধি করতে পারে |তার লেখা গল্পটি তার নতুন মেসো মশাই সন্ধ্যাতারা পত্রিকা ছাপিয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু যখন “প্রথম দিন (গল্প) শ্রী তপন কুমার রায়” নামে ছাপার অক্ষরে বেরিয়ে আসে-তখন তপনের প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করতে পারে | মায়ের অনুরোধে গল্প পড়তে গিয়ে দেখে প্রতিটা লাইন আনকোরা তার অপরিচিত অর্থাৎ নতুন মেসোমশাই ছাপানোর নাম করে আগাগোড়া কারেকশন করে নতুন করে গল্পটি লিখে প্রকাশ করেছেন | ফলে তপনের সৃষ্টি অপমানিত হয় তপন অত্যন্ত লজ্জিত এবং দুঃখিত হয় | তাই সে অত্যন্ত দুঃখ , যন্ত্রণায় গভীরভাবে সংকল্প করে , – “যদি কখনো….দেয় তো, নিজে গিয়ে দেবে | এই ভাবেই গল্পে তপন তার প্রকৃত অন্তর্দৃষ্টি তথা জ্ঞানচক্ষু লাভ করেছিল
5.‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প অবলম্বনে তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করো। ৫
উত্তর ) তপন কিভাবে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেছিল তথা প্রকৃত সত্য উদঘাটন করতে পেরেছিল তা লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী “জ্ঞানচক্ষু” নামক ছোট গল্প আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন | গল্পের মূল কেন্দ্রীয় চরিত্র এই তপন | তপনের স্বপ্ন এবং আশাহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে গল্পের মূল আকর্ষণ |
প্রতিভাবান কিশোর- তপন লেখক হওয়ার স্বপ্ন দেখে তার মধ্যে লেখক হওয়ার যাবতীয় গুণ ছিল | সে একজন সত্যিই প্রতিভাবান কিশোর | তার নতুন মেসোকে দেখে সে জানতে পারে যে, লেখকরা আসলে সত্যিই সাধারণ মানুষ এবং সে তার নতুন লেখক মেসোমশাইকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেই একটি গল্প সৃষ্টি করে ফেলে অর্থাৎ তপন একজন প্রকৃত প্রতিভাবান তথা সৃজনশীল বালক ।
ভাবুক প্রকৃতির ছেলে- তপন স্বভাবত একজন ভাবুক প্রকৃতির ছেলে। এই ভাবুক স্বভাবের জন্য নিজের বিদ্যালয় জীবনের প্ৰথম দিনের স্মৃতিকে অবলম্বন করে গল্প লিখতে পেরেছিল। আবার, ছোটো মেসোকে দেখার আগে পর্যন্ত লেখক সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না। তবে, লেখকরা যে কেমন হতে পারে সেই নিয়ে অনেক কিছু ভেবে রেখেছিল |
বাস্তব জ্ঞান- তপন বালক হলেও তার মধ্যে বাস্তব জ্ঞান বুদ্ধি যথেষ্ট ছিল | এইজন্য যখন তার লেখা গল্পটি তার ছোটমাসি , তার লেখক মেশোমশায়ের কাছে নিয়ে গেল, তপন প্রথমে মুখে “না, অ আ” বলে আপত্তি করলেও তপন মনে মনে ভেবেছিল যে, তার লেখার প্রকৃত মূল্য কেবল তিনি বুঝবেন অর্থাৎ রত্নের মূল্য জহুরির কাছে -এই বাস্তব বুদ্ধি তার ছেলে ছিল
আত্মমর্যাদাসম্পন্ন- তপন একজন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন বালক গল্প প্রকাশের আগে সে যতটা আনন্দ পেয়েছিল গল্প প্রকাশের পর ততটাই সে দুঃখ পেয়েছিল কারণ সে জানত যে গল্পটি প্রকাশিত হয়েছে সেই গল্পটি তার লেখা সৃষ্টি করা গল্প নয় এটি তাঁর নতুন মেসো মশাইয়ের পাকা হাতের কারেকশন করে দেওয়া গল্প তাই সে আত্মমর্যাদায় দগ্ধ হয়ে প্রচন্ড দুঃখ পায়
তপন মানসিকভাবে প্রচন্ড দৃঢ় ছিল | এইজন্য তার নিজের লেখা গল্প পড়তে গিয়ে দেকে যে, গল্পটি তার নিজের লেখা গল্পটি নয় | তখন সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েনি বরং সে নিজেকে আরো শক্ত করেছে এবং সেই দুঃখের মুহূর্তে তপন আরও কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে –
6. “তপন আর পড়তে পারে না। বোবার মতো বসে থাকে।”- তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা কর
উত্তর) আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু নামক ছোট গল্পে তপন যে গল্পটি লিখেছিল সেই গল্পটি সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ছাপার অক্ষরে নিজের লেখা সেই গল্পটি পড়তে গিয়ে তপন বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেছিল গল্পটি পড়তে গিয়ে পড়তে পারছিল না।
এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা- তপন লেখক মেসোমশাইয়ের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়েই তপন আস্ত একটি গল্প লিখে ফেলে | সেই গল্পটি ছোট মাসির হাত ধরে মেসোমশায়ের কাছে পৌঁছায় | মেসোমশাই গল্পটি “সন্ধ্যাতারা” পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন | নিজের হাতের লেখা গল্প হাজার হাজার ছেলের হাতে ঘুরবে- এই স্বপ্ন নিয়ে অধীর আগ্রহে দিন গুনতে থাকে | তপন গল্প সম্পর্কে প্রায় আশা ছেড়েই দিয়েছিল | কিন্তু দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর , একদিন নতুন মেসো এবং ছোটমাসি “সন্ধ্যাতারা” পত্রিকার একখানি সংখ্যা নিয়ে তাদের বাড়িতে আসেন |
তপন বুঝতে পারে , সেই অলৌকিক ঘটনাটি ঘটেছিল কিন্তু মায়ের অনুরোধে যখন নিজের গল্প পড়তে যায়, তখন সে হোঁচট খায় ।তার আর বুঝতে বাকি থাকেনা যে, তার নিজের হাতের লেখা গল্পটি মেসোমশাই আগাগোড়াই কারেকশন করে নতুন করে লিখে প্রকাশ করেছেন । এই গল্পে তপনের বিন্দুমাত্র ছোঁয়া ছিল না | তার কাছে এই গল্পের প্রতিটা লাইন অপরিচিত এবং আনকোরা মনে হতে থাকে | তপন অত্যন্ত লজ্জিত এবং দুঃখিত হয় । তপন আর গল্পটি পড়তে পারে না , বোবা হয়ে যায় । তার নিজের সৃষ্টি করা গল্পটি পত্রিকায় না দেখতে পেয়ে তপনের এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল অর্থাৎ গল্প পড়তে গিয়ে বিস্ময় হতবাক হয়ে গেছিল ।