> বই কেনা প্রবন্ধের বড় প্রশ্ন উত্তর। Class 11 Bengali » Qবাংলা

বই কেনা প্রবন্ধের বড় প্রশ্ন উত্তর। Class 11 Bengali

 Introduction:-একাদশ শ্রেণির wbchse দ্বিতীয় সেমিস্টারের পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থের অন্তর্গত বই কেনা প্রবন্ধটি পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছে। পঞ্চতন্ত্র পূর্ণাঙ্গ সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে পাঠ্য হবে সেখানে চারটি প্রবন্ধ আছে। তার মধ্যে একটি প্রবন্ধ হল বই কেনা। এই বই কেনা প্রবন্ধ থেকে একাদশ শ্রেণীতে দ্বিতীয় সেমিস্টারে বড় প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে বই কেনার প্রবন্ধের যে সমস্ত বড় প্রশ্নগুলি গুরুত্বপূর্ণ সেগুলি নিয়ে আলোচিত হলো

বই কেনা প্রবন্ধের বড় প্রশ্ন উত্তর Class 11 Bengali

বই কেনা প্রবন্ধটি সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত পঞ্চতন্ত্র নামক গ্রন্থের প্রথম পর্ব থেকে গৃহীত হয়েছে বই কেনা প্রবন্ধটি পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থের প্রথম পর্বের প্রথম প্রবন্ধ এই প্রবন্ধের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রবন্ধটি একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিস্টারের class 11 Bengali 2nd  semester পাঠ্য হিসাবে আছে ।

) “মনের চোখ ফোটানোর আরও একটা প্রয়োজন আছে”- মনের চোখ বলতে কি বোঝানো হয়েছে? মনের চোখ ফোটানোর প্রয়োজনীয়তা কি?

উঃ) সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত বিখ্যাত প্রবন্ধ গ্রন্থ পঞ্চতন্ত্রের প্রথম পর্বের অন্তর্গত বই কেনা প্রবন্ধ থেকে আলোচিত উক্তিটি গৃহীত হয়েছে।

মনের চোখ:- প্রবন্ধকার মনের চোখ বলতে জ্ঞানের পরিসরকে বুঝিয়েছেন মানুষ যত বেশি বই পড়বে, যত বেশি জ্ঞান সঞ্চয় করবে, তত বেশি তার মনের চোখ বাড়বে অর্থাৎ তার জ্ঞান বাড়বে

মনের চোখ ফোটানোর প্রয়োজনীয়তা:- আনাতোল ফ্রান্স একবার আক্ষেপ করে বলেছেন যে, তার মনের চোখ একটি নয় অনেক চোখ বাড়ানো বা কমানোর তার নিজের হাতেই আছেযত তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞান সঞ্চয় করতে থাকেন, ততই তিনি একটি করে চোখ বাড়াতে থাকেন অর্থাৎ বলা যায় যে, জ্ঞান-বিজ্ঞান বাড়াতে অবশ্যই নিজের মনের চোখ বাড়াতে হবে। রাসেল বলেছেন, সংসারের জ্বালা যন্ত্রণা কমানোর উপায় হচ্ছে, নিজের মনের মধ্যে অসংখ্য ভুবন সৃষ্টি করা এবং বিপদকালে নিজের ভুবনের মধ্যে ডুব দিয়ে দেওয়া যত বেশি ভুবন সৃষ্টি করতে পারবে, ততই জ্বালা যন্ত্রণা এড়ানো যাবে অর্থাৎ সাহিত্যে সান্তনা না পেলে দর্শনে দর্শনের সান্তনা পেলে ইতিহাসে ইতিহাসে সান্তনা না পেলে ভূগোলে এভাবেই মনের চোখ বাড়াতে হবে।

) “এই চক্র ছিন্ন তো করতেই হবে”- এখানে কোন চক্রের কথা বলা হয়েছে? কিভাবে এই চক্র ছিন্ন হবে বলে লেখক মনে করেন?

উঃ) “বই কেনা প্রবন্ধে উক্তিটির বক্তা হলেন প্রবন্ধকার সৈয়দ মুজতবা আলী। বাঙালি প্রকাশকেরা বই বেশি বিক্রি নেই বলে, বইয়ের দাম কমাতে চায় না। তাছাড়া বেশি পরিমাণে বই ছাপিয়ে দেউলিয়া হতে চায় না লেখক এটিকে অচ্ছেদ্য চক্র বলেছেন।

কিভাবে ছিন্ন করা যাবে:- এই চক্র ছিন্ন করতে কেউই চায়না প্রকাশকও চায় না এমনকি ক্রেতা যারা তারাও চায় না প্রকাশক ঝুঁকি নিতে নারাজ কেননা এই যে তার পেটের ভাত জোগাড় হয়। কিন্তু লেখক এর মতে বই কিনে আজ পর্যন্ত কেউ দেউলিয়া হয়নি যদি বই কেনার বাজেট তিনগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলেও তার দেউলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা নেই। মাঝখান থেকে তার ফ্রান্সের মাছির মত গাদা গাদা চোখ হবে রাসেলের মতো অসংখ্য ভুবন সৃষ্টি করতে পারবে

৩) “এক আরোব্য পন্ডিতের লেখাতে সমস্যাটার সমাধান পেলুম”- এখানে কোন সমস্যার কথা বলা হয়েছে? লেখক সমস্যাটার কি সমাধান পেয়েছিলেন?

উঃ) বই কেনা প্রবন্ধে আলো চুক্তির বক্তা হলেন প্রবন্ধকার সৈয়দ মুজতবা আলী সমস্যাটি হলো, যে মানুষ গলা কেটে ফেললেও পরের জিনিস ছোঁবে না বলে। সেই মানুষ বইয়ের বেলায় আলাদা দেখা যায় পরের বই নিয়ে ফেরত দিতে চায় না

সমস্যার সমাধান:- আরব্য পন্ডিত লিখেছেন যে, ধনীরা মনে করেন, পয়সা কামানোর দুনিয়াতে সবচেয়ে কঠিন অন্যদিকে জ্ঞানীরা মনে করেন, জ্ঞান অর্জন করাই হলো সবচেয়ে কঠিন কাজ কিন্তু বিষয়টি হল কার দাবিটি সঠিক লেখক নিজেই জ্ঞানের সন্ধানে ফিরেছেন তাই লেখক এর পক্ষে নিরপেক্ষ হওয়া কঠিন তবে তিনি একটি বিষয় লক্ষ্য করেছেন তা হলো, ধনীর মেহনতের ফল হল টাকা সেই ফল যদি জ্ঞানীর হাতে তুলে দেয়, তাহলে জ্ঞানী পরমানন্দে সেটি কাজে লাগান বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, টাকা খরচের ব্যাপারে জ্ঞানী ব্যক্তিরা ধোনির চেয়ে অনেক ভালো পথে করেন।

) গল্পটা সকলেই জানেন কিন্তু তার গূঢ়ার্থ মাত্র কাল বুঝতে পেরেছি”- এখানে কোন গল্পের কথা বলা হয়েছে? গল্পটির উল্লেখ করো। গল্পটির গূঢ়ার্থ কি?

উঃ) প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী তার বইকে না নামক প্রবন্ধে এক আরব্য উপন্যাসের গল্পের কথা বলেছেন

গল্পে এক রাজা হাকিম এর কাছ থেকে একখানা বই বাজাতে না পেরে তাকে খুন করতে উদ্যত হন রাজা বাহ্যিক জ্ঞান হারিয়ে বই পড়তে শুরু করেন কিন্তু বইয়ের পাতাগুলো একে অপরের সঙ্গে জুড়ে যাওয়ায়, রাজা মুখে থুতু লাগিয়ে বইয়ের পাতা উল্টাতে থাকেন। এদিকে হাকিম মৃত্যু নিশ্চিত জেনে বইয়ের পাতার কোনাতে মারাত্মক বিষ লাগিয়ে দিয়েছিলেন সেই বিষ রাজার মুখে প্রবেশ করে যায় রাজার প্রতিহিংসার খবরটি হাকিম লিখে রেখেছিলেন বইয়ের শেষ পাতায় রাজা সেই পাতাটি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মারা যান

গল্পটির গূঢ়ার্থ কি?এই গল্পটি বিশেষ অর্থ আছে লেখক বাঙালির বই কেনার প্রতি বৈরাগ্য দেখে এমন মন্তব্য করেছেন। মনে হয় বাঙালিরা এই গল্পটি জানেন তাই মরার ভয়ে বই কিনতে চাই না। বা বই পড়তে চাই না।

৫) “সেখানে গিয়ে অবস্থা দেখে সকলেরই চক্ষু স্থির”- সকলে কোথায় গিয়েছিলেন ? সকলের চক্ষু স্থির হয়ে গেল কেন ?

সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত বই কেনা প্রবন্ধ থেকে আলোচিত অংশটি গৃহীত হয়েছে | এখানে সকলে বলতে আদ্রে জিদের বন্ধুবান্ধবদের কথা বলা হয়েছে। তারা সকলেই আদ্রে জিদের লাইব্রেরী নিলামে গিয়েছিলেন। 

সকলের চক্ষু স্থির হয়ে গেল কেন ? আদ্রে জিদ রুসিয়া থেকে ফিরে এসে সোভিয়েত রাজ্যের বিরুদ্ধে একখানা প্রাণঘাতী কেতাব লিখেছিলেন | এর ফলে প্যারিসের স্ট্যালিনীয়রা তার পিছনে লেগে ছিল | তাকে অসংখ্য গালিগালাজ সহ্য করতে হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্য ছিল জিদের অসংখ্য বন্ধু-বান্ধব এই বিষয়ে চুপ ছিলেন। তাই   জিদ তার লাইব্রেরী খানা নিলামে বেচে দেবেন বলে স্থির করেছিলেন।নিলামের খবর শুনে,  সেই নিলামে তার বন্ধু-বান্ধবেরা ছুটেছিল।আসলে জিদ এই নিলামে তার বন্ধু-বান্ধবদের দেওয়া বইগুলি বেছে দেবেন বলে ঠিক করেছিলেন। সেখানে গিয়ে তাদের চক্ষু স্থির হয়। যেসব লেখক জিদের হয়ে লড়েননি তাদের যেসব বই,  তারা জিদ কে স্বাক্ষর সহ উপহার দিয়েছিলেন জিৎ মাত্র সেই বইগুলো নিলামে ছড়িয়েছেন। জিদ এই জঞ্জালগুলো বেঁচে ফেলবেন। 

বই কেনা প্রবন্ধের মূল বক্তব্য

বাঙালি জাতি বই কিনতে বিতরাগ বই পড়তে আগ্রহ দেখায় না বই পড়তে ও কিনতে তারা নানারকম অজুহাত দেখায় এমন পরিস্থিতিতে প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী অত্যন্ত মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন। তাই প্রাবন্ধিক বই কেনা প্রবন্ধে বাঙালিকে বই কিনতে ও পড়তে উদ্বুদ্ধ করতে নানা রকম উদাহরণ টেনে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। প্রবন্ধে বাঙালি জাতিকে বই কিনতে ও পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এছাড়া বই পড়লে কি কি উপকার হবে? বই পড়ার ফল কি? তাও এই প্রবন্ধে বলেছেন এছাড়াও বাঙালি প্রকাশকদের বইয়ের দাম কমানোর অনিচ্ছা ও বাঙালি প্রকাশকদের সমস্যার কথাও এই প্রবন্ধে তুলেছেন। সেই সঙ্গে বাঙালি জাতির যে জ্ঞান তৃষ্ণা বাড়াতে চায়না, তারা যে নিজেদের ভুবন সৃষ্টি করতে চায় না। সেই প্রসঙ্গে লেখক অনেক মন্তব্য করেছেন।

Leave a Comment

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading