দশম শ্রেণীর বাংলা সাহিত্য সঞ্চয়ন বইয়ের একটি কবিতা বধুয়ার পাখি । কবিতাটির রচয়িতা হলেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত।এই কবিতা থেকে বিভিন্ন তথ্য আলোচনা, বিষয়বস্তুর তাৎপর্য বিশ্লেষণ, কবি সম্পর্কিত কিছু তথ্য– কবিতার উৎসসহ, নমুনা প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে এবং পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বাংলা বিষয় যারা বুঝতে চলেছ, তাদের জন্য এই কবিতাটি গুরুত্বপূর্ণ।
বিষয়বস্তু তাৎপর্য:বধুয়ার পাখি
এই কবিতাটির মাধ্যমে কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত প্রকৃতির পরাবাস্তব জগতকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। অতীতের প্রাকৃতিক চিত্রকেও তিনি সামনে এনেছেন। এই কবিতায় বুধুয়া হলো একটি বালক। যার চোখ দিয়ে অতীতের প্রকৃতির স্নিগ্ধ ছায়া মনোরম পরিবেশকে আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। অতীতে যে বাড়িতে শহুরে বাবুরা ছিল, সেখানে এখন শ্যাওলায় ঢেকে গেছে। যেন মনে হয় তার ভয়ংকর ভাবে দেনা বেড়ে গেছে। এর চেয়ে বুধুয়া মনে করে যে, তাদের কুঁড়েঘর অনেক ভালো। কেননা সেখানে, তাদের নিকোনো নরম উঠোনে, নীল পাখিরা আসে। ধান খেয়ে যায়। আবার ধান খেয়ে যাবে ।
বধুয়া অবাক হয়ে ভাবে। বধুয়া বালকটি, এবার রিখিয়া ছেড়ে, বাবুডির মাঠে অবাক হয়ে হাটে দেহাতি অর্থাৎ গ্রামের পথ ভুলে বধুয়া হঠাৎ করেই পাহাড়ে উঠে পাহাড়ের মত মুখ তুলে দূরে নীল ঘনসবুজ সুন্দর প্রকৃতি দেখতে পায় এবং মনে মনে ভাবে যে, ওই দূরের যে প্রকৃতি দেখা যাচ্ছে। সেটা তাদের বাড়ির নিকোনো উঠোনের চেয়েও ভালো। পাখি বসে আছে, এমন বিরাট বড় পাঁচিল দেখা যাচ্ছে। বুধুয়া সেখানে যেতে চাই। কেউ যেন তাকে সেখানে নিয়ে যায়। এই ভাবেই প্রতিদিন বুধুয়ার ডাকে ঝাকে ঝাকে পাখি আসে। এই পাখিদের মধ্যেই কেউ তার দিদি, কেউ তার মাসি, যাদের রূপোলি ডানায় উড়ে বেড়ায় বধুয়ার মত মানুষের হারিয়ে যাওয়া হাসি।
শব্দার্থ টিকা:-বুধুয়া– একটি বালকের নাম। যার চোখ দিয়ে অতীতের প্রাণবন্তময় প্রাকৃতিক ছোয়াকে দেখানো হয়েছে। রিখিয়া ও বাবুডি– এই দুটি হল ঝাড়খণ্ডের দুটি গ্রামের নাম।দেহাতি– গ্রামের পথ। বুধুয়ার হাসি–এটি আসলে রূপক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। বুধুয়ার হাসি হল অতীতের হারিয়ে যাওয়া প্রাণবন্তময় প্রাকৃতিক নরম দৃশ্য।
কবিতার উৎস:- “বুধুয়ার পাখি” এই কবিতাটি অলোকরঞ্জন দাসগুপ্তের লেখা “যৌবন বাউল” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ:- অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ গুলি হল– যৌবন বাউল, নিষিদ্ধ কোজাগরি, রক্তাক্ত ঝরোখা, গিলটিনে আলপনা, জ্বরের ঘোরে তরাজু কেঁপে যায়, এক একটি উপভাষায় বৃষ্টি পড়ে, । কবি অলোক রঞ্জন দাসগুপ্ত “ধুলোমাখা ইথারের জামা” কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার এবং “মরমী করাত” কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার পান। কবি অলকরঞ্জন দাশগুপ্তের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তোমরা যেকোনো বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের বই থেকে পেয়ে যাবে।
নমুনা প্রশ্ন এবং তার উত্তর
১. “বধুয়া অবাক হয়ে ভাবে”- এই বধুয়া আসলে কে?
উঃ একটি বালক
২. “ওখানে আমিও যাব, কে আমায় নিয়ে যেতে পারো?”- এখানে কার কথা বলা হয়েছে?
উঃ বুধুয়া
৩. “দেহাতি পথের নাম ভুলে”- দেহাতি শব্দের অর্থ কি?
উঃ গ্রামের পথ
৪. “এবার রিখিয়া ছেড়ে বাবুডির মাঠে”- রিখিয়া এবং বাবুডি কি ?
উঃ ঝাড়খণ্ডের দুটি গ্রামের নাম
৫. “রূপোলি ডানায় যারা নিয়ে যায় বধুয়ার হাসি”- কারা নিয়ে যায়?
উঃ ঝাকে ঝাকে পাখি
৬. “ওখানে আমিও যাব, কে আমায় নিয়ে যেতে পারো?- বক্তা কোথায় যেতে চান?
উঃ পাহাড়ের মাঠে দূরে নীল আকাশে
৭. “ওটা কার বাড়ি, কার অত নীল”- এখানে বাড়ি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উঃ দূরের নীল আকাশকে
৮. “আরো নিকনো উঠোন তার, পাখি বাসা বিরাট পাঁচিল”- এই পঙক্তিটি কোন কবিতায় থেকে গৃহীত হয়েছে ?
উঃ বুধুয়ার পাখি।
৯. অলক রঞ্জন দাশগুপ্তের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থের নাম কি?
উঃ ধুলো মাখা ইথারের জামা
১০. “যেন ওর ভয়ানক বেড়ে গেছে দেনা,”- কার দেনা বেড়ে গেছে?
উঃ শহুরে বাবুদের বাড়িটি
১১. “এর চেয়ে আমাদের কুঁড়েঘর ঢের ভালো”- এখানে আমাদের বলতে কার কথা বলা হয়েছে?
উঃ বুধুয়ার
বিশেষ টিপস:-
দশম শ্রেণীর বাংলা পাঠ্য বই সাহিত্য সঞ্চয়ন। এই বইয়ের একটি কবিতা বুধুয়ার পাখি। যারা মাদ্রাসা সার্ভিস এবং স্কুল সার্ভিস পরীক্ষায় বসতে চলেছ তাদের জন্য এই কবিতাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কবিতাটি বিষয়বস্তু ভালোভাবে বুঝে নিয়ে কবিতার লাইনগুলি পর পর পড়ে মনে রাখার চেষ্টা করতে হবে। কেননা প্রশ্ন কবিতার লাইন তুলেই আসবে।
এসএলএসটি বা মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ে আরো প্রশ্নের উত্তর জানতে এবং বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা দশম শ্রেণীর রচনা এবং অন্যান্য বিষয় প্রশ্ন উত্তর জানতে (পরশমণি বিষয়বস্তু )– click Here