বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023
বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি একাদশ শ্রেণী
একাদশ শ্রেণির বাংলা সাজেশন-2023
একাদশ শ্রেণির বাংলা সাজেশন-2023। বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি।
Class 11 Bengali suggestion-2023 বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023
১) বাংলা গদ্যের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান সম্পর্কে আলোচনা কর।
অথবা- “বাংলা গদ্যের প্রথম যথার্থ শিল্পী” কাকে বলা হয়? বাংলা গদ্যের বিকাশে তার অবদান সংক্ষেপে আলোচনা কর। বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023
উঃ) রাজা রামমোহন রায় বাংলা গদ্যের যে পথ দেখিয়েছেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সেই বাংলা গদ্যকেই দিয়েছেন শিল্প সার্থক রূপ। স্বাভাবিকভাবেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম যথার্থ শিল্পী বলে উল্লেখ করেছেন। বাংলা গদ্যের যে একটা ছন্দ আছে, বিদ্যাসাগর তা প্রথম দেখালেন। শব্দ, পদ, বাক্য, ধ্বনিঝঙ্কার, যতিচিহ্ন স্থাপন- এই সমস্ত কিছুর ঠিক ঠিক প্রয়োগ করার দক্ষতার মধ্যেই বাংলা গদ্যের প্রাণ লুকিয়ে আছে। আর যথার্থভাবেই সর্বপ্রথম সেই প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছেন বিদ্যাসাগর।
বাংলা গদ্যে অবদান:- বিদ্যাসাগরই প্রথম বাংলা গদ্যকে সাবলীল ও শৃঙ্খলাবদ্ধ গদ্য সাহিত্যে পরিণত করেন। বিদ্যাসাগরের রচিত অনুবাদ মূলক রচনার মধ্যে আছে- “বেতাল পঞ্চবিংশতি”, “বাংলার ইতিহাস”, “শকুন্তলা”, “সীতার বনবাস”, “ভ্রান্তিবিলাস”, “মহাভারতের উপক্রমিকা” ইত্যাদি। সমাজ সংস্কার মূলক রচনার মধ্যে আছে- “বিধবা বিবাহ চলিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব”, “বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক বিচার”। শিক্ষামূলক রচনা মধ্যে আছে- “বর্ণপরিচয়”, “কথামালা”, “চরিতাবলী”, “আখ্যান মঞ্জুরী” ইত্যাদি। ছদ্মনামে লেখা হাস্যরসাত্মক রচনার মধ্যে আছে- “অতি অল্প হইল”, “আবার অতি অল্প হইল” ইত্যাদি। এছাড়াও তিনি “প্রভাবতী সম্ভাষণ” নামে একটি ব্যক্তিগত শোক আখ্যান রচনা করেন।
সাধু বাংলা গদ্যের সৌন্দর্য বিদ্যাসাগরের হাতেই বিকশিত হয়। ভাষার ওজস্বিতার তার সঙ্গে রচনার লালিত্য বিদ্যাসাগরের অবদান। সমাস-বহুল দীর্ঘ বাক্যের পরিবর্তে ছোট ছোট বাক্য ব্যবহার করে বাক্যের বোধগম্যতাকে অনেক পরিমাণে বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হন। ছেদচিহ্নকে যথাযথভাবে ব্যবহার করেছেন। বাংলা গদ্য সৃষ্টিতে ভারসাম্য ও শৃঙ্খলা দুই দিকেই নজর যথাযথ দিয়েছেন। বিরতি চিহ্নকে তিনি বাক্যে যথাযথভাবে প্রয়োগ করেছেন। বাংলা বাক্যকে তিনি ভাব ও ধ্বনি স্পন্দনের সহযোগী করেছেন। তাই বলা যায় যথার্থ সাহিত্য গদ্যের জন্ম বিদ্যাসাগরের হাতেই হয়েছে। (বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023)
২) নাট্যকার হিসেবে মাইকেল মধুসূদন দত্তের অবদান আলোচনা কর। (বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023)
উঃ) বাংলা নাট্য সাহিত্যের ইতিহাসে একজন প্রতিভাবান নাট্যকর হলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। বলাবাহুল্য বাংলা নাটকের যথার্থ প্রতিষ্ঠাতা মধুসূদনের হাত ধরেই। তার সময় থেকেই বাংলা নাটক যথার্থ অর্থে নাটক হয়ে উঠল। বেলগাছিয়া থিয়েটারে, রামনারায়ন তর্করত্নের রত্নাবলী নাটকের অভিনয় দেখার পর বাংলা নাটকের দৈন্যদশা দেখে, তিনি নাট্য রচনায় প্রয়াসী হন। তিনি সংস্কৃত নাটকের রীতি অনুসরণ করেই নাটক রচনা শুরু করেন।
বাংলা নাট্য সাহিত্যে অবদান:– তার প্রথম নাটক “শর্মিষ্ঠা”। এই নাটকটি মহাভারতের কাহিনী ও পাশ্চাত্য আঙ্গিকের মেলবন্ধনে আধুনিক বাংলা ভাষার প্রথম পূর্ণাঙ্গ নাটক বলে বিবেচিত হয়। ১৯৬০এ লেখা “পদ্মাবতী”, গ্রিক পূরণের apple of discord এর কাহিনী নিয়ে রচিত। নাটকটি মূলত প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহারের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছে। মধুসূদনের রচিত দুটি প্রহসন হল- “একেই কি বলে সভ্যতা” এবং “বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ”- এই দুটি প্রহসনে সেকালের ইঙ্গ–বঙ্গ সমাজের নৈতিক ব্যভিচার ও আধুনিকতার নামে উৎকট উন্মার্গগামী কদর্য উচ্ছৃঙ্খলতা যেমন প্রকাশ পেয়েছে, তেমনি কপট ধার্মিক ধনাঢ্য বৃদ্ধের দুরাচরণও তার সমস্ত ন্যক্কারজনক হাস্যকরতা নিয়ে উঠে এসেছে। উনিশ শতকের বাবু সংস্কৃতির এর চেয়ে ভালো প্রতিফলন বাংলা সাহিত্যে আর হয়েছে কিনা সন্দেহ
মধুসূদনের শেষ উল্লেখযোগ্য নাটক “কৃষ্ণকুমারী” টড এর লেখা রাজস্থানের ইতিহাস কথা অনুসরণে রচিত। রাজা জয়সিংহ এবং মানসিংহের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বলি উদয়পুরের রাজকন্যা কৃষ্ণকুমারীর ট্রাজিক মৃত্যুই এই নাটকের উপজীব্য। এছাড়াও মৃত্যুর আগে “মায়াকানন” নামে একটি নাটক তিনি লিখে শেষ করলেও “রিজিয়া” নামক নাটকটি অসম্পূর্ণই ছিল।(বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023)
৩) বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রথম নিদর্শন কোনটি? এর সাহিত্য মুল্য আলোচনা কর
অথবা- কে, কবে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের পুঁথি আবিষ্কার করেন? কাব্যটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উঃ) আদি মধ্য বাংলার একমাত্র সাহিত্য নিদর্শন বড় চন্ডীদাসের রচিত শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি। শ্রী বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বাঁকুড়া জেলার কাকিল্যা গ্রামের অধিবাসী দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়াল ঘরের মাচা থেকে বাংলা ভাষায় লেখা রাধা কৃষ্ণ লীলা বিষয়ক এই কাব্যটির পুঁথি আবিষ্কার করেন। পরে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন” নামে কাব্যটি তারই সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।
কাব্যের প্রাপ্ত পুঁথিটিতে প্রথম ও শেষের কিছু পৃষ্ঠা না পাওয়ার কারণে গ্রন্থ নাম, রচয়িতা এবং রচনাকাল সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য জানা যায় না। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন নামটি কাব্যের বিষয়বস্তু বিচার করে সম্পাদকেরই দেওয়া। অনেকে পুথিঁটির নাম শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ বলেও মনে করেন। তবে এ বিষয়ে কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মধ্যযুগের আদি পূর্বের বাংলা ভাষায় রচিত এই গ্রন্থটি চতুর্দশ শতাব্দীর শেষ দিকে কিংবা পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে রচিত হতে পারে বলে অনেকে অনুমান করেছেন। গ্রন্থটির রচয়িতার নাম বড়ু চন্ডীদাস।
বড়ু চন্ডীদাস ভাগবত পুরাণ, জয়দেবের গীতগোবিন্দ থেকে যেমন অকুন্ঠ সাহায্য নিয়েছেন, তেমনি লোক- জীবন নির্ভর প্রচলিত কাহিনীও সহায়তা নিয়েছেন। রাধা চরিত্রটির পরিকল্পনাতেও তিনি তার দক্ষতার অনুপম সাক্ষ্য রেখেছেন। কাব্যটির সমগ্র বিষয় কবি সংলাপধর্মী নাটক, আখ্যানকাব্য ও গীতি কবিতার মিশেলে অপূর্ব সুন্দরভাবে গড়ে তুলেছেন। সমগ্র কাব্যটি ১৩টি খন্ডে বিন্যস্ত। কৃষ্ণের জন্ম থেকে মথুরা প্রবাস পর্যন্ত কাহিনী ধারা কাব্যটিতে বিধৃত হয়েছে। কাব্যের মূল চরিত্র তিনটি- কৃষ্ণ, রাধা এবং বড়াই। কাব্যটি মূলত উক্তি–প্রত্যুক্তি মূলক। কাব্যটিতে বিভিন্ন গ্রামীণ সংস্কার, সামাজিক রীতি-নীতি ইত্যাদি পরিচয় পাওয়া যায়। বাংলা সাহিত্যের আদি মধ্যযুগের একমাত্র নিদর্শন হিসেবে কাব্যটি স্মরণীয় হয়ে আছে।
৪) লোককথা কাকে বলে? দুটি লোককথার নাম লেখ এবং যেকোনো একটি লোককথার সম্পর্কে তোমার মত লিপিবদ্ধ করো।
অথবা- লোককথা কাকে বলে? লোককথার যেকোনো দুটি শাখার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। (বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023)
উঃ) লৌখিক সাহিত্যের একটি বিশিষ্ট ধারা হল লোককথা।সাধারণত, কথা সাহিত্যের মৌখিক ধারাটিকেই লোককথা বলা হয়ে থাকে। প্রাগৈতিহাসিক সময় থেকেই আজ পর্যন্ত আমাদের লোকশিল্পীদের যাবতীয় কাহিনীমূলক রচনাই এই লোককথার অন্তর্ভুক্ত।
লোককথার কয়েকটি ধারা হল- রূপকথা, উপকথা, নীতিকথা, ব্রতকথা, লোকস্রুতি ইত্যাদি।
(ক) রূপকথা:– লোকো কথার প্রধান একটি শাখা হল রূপকথা। সচরাচর এদের আয়তন দীর্ঘ, বিভিন্ন বিষয় ও শাখা কাহিনীর সমাহারে জটিল, সম্পূর্ণ অবাস্তব ও স্বপ্নিল পরিবেশে, অনির্দিষ্ট স্থান ও অস্পষ্ট কল্পিত চরিত্র অবলম্বনে অসম্ভব ও অবিশ্বাস্য সব রোমাঞ্চকর ঘটনাই- এইসব কাহিনীর উপজীব্য। রাক্ষস–খোক্ষসের পুরীতে “অজানির দেশের না জানি কি” খুঁজতে, অনেকদিন নাকি অল্পদিন ধরে ভাগ্যহত রাজপুত্র বা সাধারণ দরিদ্র নায়কের অসাধ্য সাধন, ভিন্ন ভিন্ন রাজকন্যাকে বিবাহ, দৈব সাহায্য, ঐন্দ্রজালিক ক্ষমতা এবং পরিণামে প্রবলতর প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে নায়কের চিরকাল সুখে থাকার কামনায় পৃথিবীর সমস্ত রূপকথা নির্মিত হয়।
(খ) ব্রতকথা:– লোককথার আরেকটি বিশিষ্ট শাখা হল ব্রতকথা। বাংলার লৌকিক দেবতাদের অবলম্বন করে এগুলি রচিত। আদিম সংস্কার ও উচ্চতর সংস্কৃতির মিশ্রণের ফল এই ব্রতকথাগুলি। প্রবল অনিষ্ঠকারী দেবতাকে প্রসন্ন করে, তার দ্বারা প্রভূত কল্যাণ সাধনের বিশ্বাসই ব্রত কথাগুলির মাধ্যমে প্রচারিত হয়। উপকথায় যেমন পশু পাখির উপর মানবতা আরোপ করা হয়ে থাকে, ব্রতকথাতেও তেমনি নানা মানবিক দোষগুণের আলোকেই দেবতাদের চিত্রিত করা হয়। এই ব্রতকথাগুলিকে ভিত্তি করেই উচ্চতর সাহিত্য মঙ্গলকাব্যগুলির সৃষ্টি। রূপকথার কাজ অবসর, বিনোদন, ব্রতকথার কাজ গার্হস্থ মঙ্গলসাধন।
আরও পড়-
বাঙ্গালির ভাষা ও সংস্কৃতি- ভাষা অংশের প্রশ্নোত্তর সাজেশান-2023
৫) ধাঁধার বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর। অন্তত দুটি ধাঁধার উদাহরণ দাও।
উঃ) লৌকিক সাহিত্যের বা লোকসংস্কৃতির একটি বিশিষ্ট ধারা হল ধাঁধা।সংস্কৃত “প্রহেলিকা” শব্দই আধুনিক হিন্দি বা উর্দুতে “পহেলি” এবং বাংলায় “হেঁয়ালি” শব্দের রূপ নিয়েছে। সিলেট অঞ্চলে ধাঁধাকে বলা হয় “পই”, টাঙ্গাইলে “শিলোক” বা “ঠল্লুক” বলা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টি আবাহনে, বীজরোপণে বা ফসলের মরশুমে, দৈব দুর্বিপাকে, বন্যায়, দুর্ভিক্ষে, বিবাহে কিংবা প্রিয়জনের মৃত্যুতে ধাঁধা জিজ্ঞেস করার এবং উত্তর দেওয়ার প্রথা আছে।
বিশ্বাস ধাঁধার উত্তর দিতে পারলে আপদ-বালাই দূর হবে এবং ভবিষ্যৎ জীবনও সুখসমৃদ্ধিময় হয়ে উঠবে। এই অর্থে আমাদের বর্তমান সমাজে প্রচলিত ধাঁধা বা হেঁয়ালিগুলির বীজ নিহিত রয়েছে, মানুষের একসময়ের বিশ্বাস ও আচরণের সর্বপ্রাণবাদ ও সমপ্রক্রিয়ার ম্যাজিকের ধারণায়।
ধাঁধাগুলি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বাহিত হয়, স্মৃতি ধার্য হয়ে ওঠে এবং বহু শতাব্দী ধরে টিকে থাকে। স্মরণে রাখার সুবিধের জন্যই তা ক্রমে সংক্ষিপ্ত, সরস ও চমকপ্রদ হয়ে ওঠে এবং কথা বা প্রবাদের মতোই মানুষের সমষ্টিগত ও সুবিন্যস্ত চিন্তনের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ও বহুল প্রচলিত জনপ্রিয় প্রকাশভঙ্গিমার মর্যাদা পায়।
আরব্য উপন্যাস, ইহুদী গ্রন্থ, বাইবেল, পারস্য সাহিত্য- সর্বত্রই ধাঁধার অজস্র নমুনা পাওয়া যায়। বস্তুত কঠিন ধাঁধার উত্তর দিয়ে রাজকন্যা ও অর্ধেক রাজত্ব লাভ কিংবা পণ্ডিতেরা অসমর্থ হওয়ার পরে এক অশিক্ষিত মানুষের কঠিন ধাঁধার উত্তর দিয়ে ফেলা অথবা কঠিন হেঁয়ালির উত্তর প্রদানে রাজপুত্রকে রাজকন্যার গোপনের সাহায্য- গোটা পৃথিবীর কথা সাহিত্যেই এই মোটিফগুলি খুব জনপ্রিয়।
দুটি ধাঁধার উদাহরণ:–
(ক) ছোট্ট প্রাণী হেটে যায়
আস্ত পাটা গিলে খায়- জুতো
(খ) সবকিছু পেরিয়ে যায়
নদীর কাছে গিয়ে ভিড়মি খায়- পথ
(বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023)
৬) চন্ডীমঙ্গলের শ্রেষ্ঠ কবি কে? তার কাব্য প্রতিভার পরিচয় দাও।
অথবা- মুকুন্দ চক্রবর্তীর কাব্যের নাম কি? তার কাব্য প্রতিভার পরিচয় দাও।
উঃ) মধ্যযুগের মঙ্গলকাব্যধারার একটি বিশিষ্ট ধারা হল চন্ডীমঙ্গল কাব্য। দেবী চণ্ডী কে নিয়ে লেখা এই কাব্য। চন্ডীমঙ্গল কাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি হলেন কবিকঙ্কন মুকুন্দ চক্রবর্তী। তার কাব্যের নাম অম্বিকা মঙ্গল বা অভয়ামঙ্গল।
আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীর শেষ ভাগে, মানসিংহ যখন বাংলার সুবেদার ছিলেন সেই সময় তিনি তার কাব্য রচনা করেন। তার আদি বসতি ছিল বর্ধমান জেলার রায়না থানার অধীন দামুন্যা গ্রামে।
কাব্য প্রতিভা:– মুকুন্দ চক্রবর্তী রচনা বাস্তব নির্ভর কাহিনী বিন্যাস, চরিত্র সৃষ্টি, কৌতুক রস সৃষ্টি নৈপুণ্য লক্ষ্য করা যায়। তার কাব্যে সর্বপ্রথম উপন্যাসিক গুন লক্ষ্য করা যায়। কাব্য ধারার পূর্বতন কবির প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করলেও, তার আপন প্রতিভার সাক্ষ্য তিনি তার রচনায় রেখেছেন। প্রথাগত, গণ্ডিবদ্ধ কাহিনী কলেবরের শৃঙ্খলে তার কবিত্বের স্ফুরণ ক্ষুন্ন হয়নি। মিশ্রবৃত্ত রীতির ছন্দ প্রয়োগ এবং এক পদী, ত্রিপদী কাঠামো ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে তিনি রচনায় বৈচিত্র এনেছেন। প্রচলিত প্রবাদ, প্রবচনকে কাব্য ভাষায় সুষ্ঠু ও সাবলীল ব্যবহারে তিনি উল্লেখযোগ্যতার দাবি রাখেন।
৭) নীলদর্পণ নাটকের নাট্যকার কে? এটির ইংরেজি অনুবাদ কে করেছিলেন? বাংলা সাহিত্যের নাটকটির প্রভাব লেখ।
উঃ) মাইকেল মধুসূদন দত্তের পরবর্তী বাংলা নাট্য সাহিত্য ধারাকে সার্থক পথে পরিচালিত করেন যিনি, তিনি হলেন দীনবন্ধু মিত্র। “কেনাচিৎ পথিকেনাভি প্রণীতম” ছদ্মনামে লেখা, নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের সার্থক প্রতিফলন “নীলদর্পণ” নাটকটি ১৮৬০ সালে প্রকাশিত হয়।
লং সাহেব মধুসূদনকে দিয়ে “নীলদর্পণ” অনুবাদ করিয়ে প্রকাশ করলেন। ইংরেজি অনুবাদ ছড়িয়ে পড়লে অস্থিরতা বাড়তে থাকে। মধুসূদনের জরিমানা হয়। জরিমানার টাকা দেন কালীপ্রসন্ন সিংহ। নীলদর্পণ এর ইংরেজি অনুবাদ ইংল্যান্ডে গিয়ে পৌঁছালে বিলেতের মানুষেরা এই ভয়ংকর লজ্জাজনক প্রথার কথা জানতে পারে এবং ইন্ডিগো কমিশন ববস। চাষীদের উপর অত্যাচার কমতে শুরু করে। পরে নীল চাষ বন্ধ হয়। বাংলা চাষিরা রক্ষা পায়। সুতরাং নীল চাষ বন্ধ করতে এবং নীলকর সাহেবদের অত্যাচার বন্ধ করতে, নীলদর্পণ নাটক যে সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছে তার তুলনা মেলা ভার।
দীনবন্ধু মিত্রের অন্যান্য নাটকগুলির মধ্যে আছে, “নবীন তপস্বিনী”, “লীলাবতী”, “কমলে কামিনী” এবং প্রহসনের মধ্যে আছে “বিয়ে পাগলা বুড়ো”, “সধবার একাদশী”, “জামাই বারিক” ইত্যাদি। এই নাটকগুলির মধ্যে বিশেষত “সধবার একাদশী” পৃথক উল্লেখের দাবি রাখে। সমসাময়িক বাংলার ক্ষয়িষ্ণু ও উন্মার্গগামী মূল্যবোধহীন সমাজের চিত্রায়ন এবং নিমচাঁদের মতো যুগসন্ধির বলিপ্রদত্ত সিরিও–কমিক চরিত্র চিত্রনে দীনবন্ধু অত্যন্ত সাফল্য অর্জন করেছেন।
বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023
বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি একাদশ শ্রেণী
একাদশ শ্রেণির বাংলা সাজেশন-2023
একাদশ শ্রেণির বাংলা সাজেশন-2023। বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি।
Class 11 Bengali suggestion-2023 বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023
২) সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে নিয়ে লেখ।
১) “পথের দাবী” উপন্যাসটি কার লেখা?
উঃ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২) মরীচিকা, মরীচিকা ও মরুমায়া কাব্যগ্রন্থ গুলির লেখক কে?
উঃ) যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
৩) বাদল সরকার রচিত একটি নাটকের নাম-
উঃ) “এবং ইন্দ্রজিৎ”
৪) “পদ্মা নদীর মাঝি” মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা একটি—–
উঃ) উপন্যাস
৫) চন্ডীমঙ্গলের একজন কবির নাম হল—
উঃ) দ্বিজমাধব
৬) বীরবল ছদ্মনামের বাংলা প্রবন্ধকার হলেন—
উঃ) প্রমথ চৌধুরী
৭) “অষ্টাধ্যায়ী” ব্যাকরণ গ্রন্থটি লিখেছিলেন—
উঃ) পাণিনি
৮) “নবান্ন” নাটকটির স্রষ্টা হলেন—
উঃ) বিজন ভট্টাচার্য
৯) “চৈতন্যভাগবত” গ্রন্থটির রচয়িতা—
উঃ বৃন্দাবন দাস
১০) চর্যাপদের ভাষাকে বলা হয়—
উঃ) সন্ধ্যা ভাষা
১১) “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন” কাব্যের শেষ খন্ডের নাম—
উঃ) রাধাবিরহ
১২) সবুজপত্র পত্রিকার সম্পাদক—
উঃ) প্রমথ চৌধুরী
১৩) চর্যাপদ এর আবিষ্কর্তা হলেন—
উঃ) হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
১৪) “শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত” গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন—
উঃ) কৃষ্ণদাস কবিরাজ
১৫) বাংলা ভাষায় রামায়ণের প্রথম অনুবাদক—
উঃ কৃত্তিবাস ওঝা
১৬) মালাধর বসুর উপাধি ছিল—
উঃ) গুনরাজ খান
১৭) অভিনব জয়দেব বলা হয়—
উঃ) বিদ্যাপতিকে
১৭) বিদ্যাপতির ভাবশিষ্য বলা হয়—
উঃ গোবিন্দ দাসকে
১৮) “হুতোম প্যাঁচার নকশা” গ্রন্থের লেখক হলেন—
উঃ) কালীপ্রসন্ন সিংহ
১৯) মালাধর বসু ভাগবতের অনুবাদ করেছিলেন—
উঃ) দশম ও একাদশ স্কন্ধের
২০) “অন্নদামঙ্গল” কাব্যটির রচয়িতা হলেন—
উঃ) ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর
you may like
https://en.wikipedia.org/wiki/India
বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023 বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023 বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023 বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023 বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023 বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023 বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023 বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023 বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023 বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি- একাদশ শ্রেণি-2023