> ভাত গল্পের প্রশ্ন উত্তর 2025 » Qবাংলা

ভাত গল্পের প্রশ্ন উত্তর 2025

উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে একটি অন্যতম পাঠ্য গল্প ভাত | গল্পটির রচয়িতা লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী | প্রিয় ছাত্র ছাত্রী এই সিরিজে এই গল্প থেকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর যথাযথভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর এই সিরিজে তুলে ধরা হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ। প্রশ্নের উত্তরগুলি দেখার পাশাপাশি প্রশ্নের উত্তর লেখার কৌশলটি ভালোভাবে লক্ষ্য করো। উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর জানতে অবশ্যই click here

সূচীপত্র

ভাত গল্পের প্রশ্ন উত্তর mcq

১। ভাত গল্পের বড়ো বাড়ির বড়ো বউয়ের প্রথম থেকেই কী ভালো লাগেনি –

(ক) লোকটির ব্যবহার
(খ) লোকটির চাহনি
(গ) লোকটির চেহারা
(ঙ) লোকটির বুনো চেহারা
উঃ। (খ) লোকটির চাহনি

২। “এ সংসারে সব কিছুই চলে” কার নিয়মে—
(ক) বড়ো বউয়ের
(খ) বড়ো পিসিমার
(গ) মেজ বউয়ের
(ঘ) বুড়োকর্তার
উঃ। (খ) বড় পিসিমার

৩। “ভাত খাবে কাজ করবে।“ — এ কথা বলেছিল
(ক) বাসিনী
(খ) বড়ো পিসিমা
(গ) বামুন ঠাকুর
(ঘ) বড়ো বউ
উঃ। (গ) বামুন ঠাকুর

৪। উচ্ছব নাইয়ার পরনে কি ছিল?
(ক) ময়লা গামছা
(খ) ময়লা গেঞ্জি
(গ) ময়লা ধুতি
(ঘ) ময়লা লুঙ্গি
উঃ (ঘ) ময়লা লুঙ্গি

৫। দূরদর্শী লোক ছিলেন কে দূরদর্শী লোক ছিলেন ?
(ক) বড় ছেলে
(খ) মেজো ছেলে
(গ) বুড়ো কর্তা
(ঘ) সতীশ মিস্ত্রি
উঃ (গ) বুড়োকর্তা

৬। “উনি হলেন দেবতার সেবিকা”- উনি কে?
(ক) বুড়ো কর্তা
(খ)মেজ বৌমা
(গ) বড় পিসিমা,
(ঘ) বড় ছেলে
উঃ (গ) বড় পিসিমা

৭। বড়ো পিসিমার বিয়ে না হওয়ার কারণ কী-

(ক) সাংসারিক দায় দায়িত্ব নেওয়ার জন্য
(খ) বুড়ো কর্তার শারীরিক অবস্থার কারণে
(গ) বুড়ো কর্তার স্ত্রীর মারা যাওয়ার কারণে
(ঘ) সংসার ঠেলবার কারনে
উ: (ঘ) সংসার ঠেলবার কারণে

৮। “ময়ূর ছড়া কার্তিক আসবে নাকি?”- এখানে ময়ূর কাকে বলা হয়েছে?
(ক) সাধন দাস
(খ) উৎসব নাইয়া
(গ) সতীশ মিস্ত্রি
(ঘ) ভজন চাকর
উঃ। (খ) উৎসব নাইয়া

৯। “ওঁর বিয়ে ঠাকুরের সঙ্গে”- কার বিয়ে ঠাকুরের সঙ্গে হয়েছিল ?
(ক)বড় পিসিমার
(খ)মেজ বউয়ের
(গ) বড় বউয়ের
(ঘ) বাসিনির
উঃ। (ক) বড় পিসিমা

১১। “বাদা” কথাটির অর্থ হল-
(ক) রান্নার জায়গা
(খ) বসবাসের জায়গা
(গ) খেলার মাঠ
(ঘ) নিম্ন জলাভূমি
উঃ। (ঘ) নিম্ন জলাভূমি

১২। “ তিনি খেতে আসার পাঁচ মিনিট আগে বড় বউকে করতে হতো”-

  • (ক) লুচি -তরকারি,
  • (খ) লুচি- আলুর দম
  • (গ) রুটি- লুচি
  • (গ) রুটি- আলুর দম     উঃ (গ)রুটি লুচি

১৩। “ বড়ো বাড়িতে শিবমন্দিরও আছে” – কটি ?
(ক) তিনটি
(খ) একটা
(গ) পাঁচটি
(ঘ) ছটি
উঃ (খ) একটা

১৪। “তার জন্যই এরা করে খাচ্ছে”- কার জন্য করে খাচ্ছে?

  • (ক) বড় পিসিমার জন্য
  • (খ) বাসিনির জন্য
  • (গ) বুড়ো কর্তার জন্য
  • (ঘ) বড় ছেলের জন্য  উঃ। (গ)বুড়োকর্তার জন্য

১৫। “মানুষের সঙ্গে বিয়ে দিও না ।“— বড় পিসিমা কেন এ কথা বলেছে?
(ক) তিনি চিরকাল কুমারী থাকতে চান
(খ) শিব ঠাকুর তার পতিদেবতা
(গ) তিনি দেবতার সেবিকা
(ঘ) তিনি বিয়ে করতে চাননি
উঃ। ( খ) শিব ঠাকুর তার প্রতি দেবতা

১৬। উচ্ছবকে কলকাতার বড় বাড়িতে কে নিয়ে গিয়েছিল ?
(ক) সতীশ মিস্ত্রি
(খ) সাধন দাস
(গ) মহানাম শতপতি
(ঘ) বাসিনী
উঃ। (ঘ) বাসিনী

১৭। বাড়িতে ভাড়াটি মিস্ত্রি কে লাগিয়েছিলেন?
(ক) বড় পিসিমা
(খ) বুড়োকর্তা
(গ) বড় বউ
(ঘ) মেজ বউ
উঃ। (ক) বড় পিসিমা

১৮। বুড়ো কর্তার কি অসুখ হয়েছিল ?
(ক)লিভারে ক্যান্সার
(খ)পেটে পাথর
(গ) ক্যান্সার
(ঘ) পেটের রোগ
উঃ। (ক) লিভারে ক্যান্সার

১৯। বড় বাড়িতে কে বিলেতে থাকে?
(ক) মেজো ছেলে
(খ) বড় ছেলে
(গ) সেজ ছেলে
(ঘ) ছোট ছেলে
উঃ ( গ)সেজো ছেলে

২০। বড় বাড়িতে কতগুলো দেবত্র বাড়ি আছে?
(ক) ষোলো খানা
(খ) সতেরো খানা
(গ) কুড়িখানা
(ঘ) আঠারো খানা
উঃ (ঘ) আঠারো খানা

২১। “শ্বশুর তার কাছে ঠাকুর দেবতা সমান”- কার কাছে ?

  • (ক) বড় বউ এর কাছে
  • (খ) মেজ বউ এর কাছে
  • (গ) বড় পিসি মার কাছে
  • (ঘ) ছোট বউ এর কাছে  উঃ। ( ক) বড় বউ এর কাছে

২২। “ বাসিনী উচ্ছবকে ডেকে এনেছিল”– কারণ
(ক) উৎসব ভালো পরিশ্রম করতে পারে
(খ) উৎসব ভালো কাঠ কাট কাটতে পারে
(গ) ঝড়জলে উচ্ছবের দেশ ভেসে গেছে
(ঘ) উৎসব তোর গ্রাম সম্পর্কিত দাদা
উঃ (গ) ঝড়জলে উচ্ছবের দেশ ভেসে গেছে

২৩। ‘ বড়ো পিসিমা শেষ খোঁচাটা মারেন ।’— বড় পিসিমা কি খোঁচা দেন?
(ক) উৎসব অন্য বাড়ির লোক নাকি?
(খ)) ঝড়জলে উচ্ছবের দেশ ভেসে গেছে
(গ) শুধুমাত্র পেটে তো দুটো খাবে
(ঘ) বড় বউয়ের শ্বশুর মরতে বসেছেন
উঃ (ঘ) বড়ো বউয়ের শ্বশুরই মরতে বসেছেন

২৪। বড়ো বাড়ির বড়ো কর্তার বয়স কত হয়েছিল ?
(ক) আশি বছর
(খ) একাশি বছর
(গ) আটানব্বই বছর
(ঘ) বিরাশি বছর
উঃ (ঘ) বিরাশি বছর

২৫। “ সে জন্যেই হোম – যজ্ঞি হচ্ছে”- কারণ-
(ক) বাড়ির অশুভ শক্তি দূর করার জন্য
(খ) শশুর মশাই মরতে বসেছে
(গ) বড় বাড়িতে বিরাট আয়োজন
(ঘ) বড় পিসিমা অসুস্থ
উঃ: (খ) শ্বশুর মশাই মরতে বসেছে

২৭। “সে একটু বসলে পরে নার্স এসে চা খেয়ে যাবে “ এখানে কার কথা বলা হয়েছে?
(ক) বাসিনী
(খ) বড় বউ
(গ) উৎসব
(ঘ) ছোট বউ
উ: (খ) বড়ো বউ

২৮। “ এ বাড়ির ছেলেদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি”- কেন চাকরি করা হয়ে ওঠেনি?
(ক) তারা সবাই বাড়ি দেখাশোনা করে
(খ) তারা সবাই বিদেশে কাজ করে
(গ) তারা বড়লোক
(ঘ) তারা বেলা এগারটার আগে ঘুম থেকে উঠে না
উ: (ঘ) তারা এগারোটার আগে ঘুম থেকে ওঠে না

২৯। ভাত গল্পের  তান্ত্রিক কোন ঘরে বসে আছে ?
(ক)ওপরের হল- ঘরে
(খ)নিচের হল- ঘরে
(গ)নিচের বারান্দায়
(ঘ) মাঝের ঘরে
উঃ (খ)নিচের হল ঘরে

৩০। বুড়ো কর্তার জন্য শরবত বানানো হত কিভাবে ?
(ক) দই পেতে চিনি দিয়ে
(খ) দই পেতে বরফ দিয়ে
(গ) দই পেতে জলে গুলে
(ঘ) দই পেতে ইসবগুল দিয়ে
উঃ (ঘ) দই পেতে ইসবগুল দিয়ে

৩১। বড়ো বউ ভাবতে চেষ্টা করে ‘ – বড় বউ কি ভাবতে চেষ্টা করে ?
(ক) শশুর মশাই বাঁচবে কিনা
(খ) তখনও চাঁদ সূর্য উঠবে কিনা
(গ) তখনও চাঁদ সূর্য উঠবে কিনা
(ঘ) দেবতা সহায় থাকবে কিনা
উঃ (খ) তখনও চাঁদ সূর্য উঠবে কিনা

৩২। বড় বাড়িতে হোম যজ্ঞের জন্য তান্ত্রিক কে কে ডেকে এনেছেন?
(ক) বাসিনী
(খ) বড়ো বউয়ের বাবা
(গ) বড়ো পিসিমা
(ঘ) মেজ বউয়ের বাবা
উঃ (খ) বড়ো বউয়ের বাবা

৩৩।  ভাত গল্পের  বড় বাড়িতে মাছের সঙ্গে কোন চালের ভাত হয়?
(ক) ঝিঙেশাল চাল
(খ) রামশাল চাল
(গ) কনকপানি চাল
(ঘ) পদ্মজালি চাল

৩৪। মেজো আর ছোটর জন্য বারোমাস রান্না করা হয় –
(ক) পদ্মজালি চাল
(খ) ঝিঙেশাল চাল
(গ) রামশাল চাল
(ঘ) কনকপানি চাল
উঃ ( ক) পদ্মজালি চাল

৩৫। ভাত গল্পের  বামুন চাকর জিদের জন্য রান্না করা হয় –
(ক) পদ্মজালি চাল
(খ) ঝিঙেশাল চাল
(গ) কনকপানি চাল
(ঘ) মোচা সাপটা চাল
উঃ (ঘ) মোচা সাপটা চাল

৩৬। “ তোরেও তো টেনে নেচ্ছেল”- একথা কে বলেছে?
(ক) সতীশ মিস্ত্রি
(খ) সাধন দাস
(গ) বাসিনী
(ঘ) মহানাম শতপতি
উঃ (খ) সাধন দাস

৩৭। “ফুট খায়” – কে ফুট খায়?

  • (ক) বাসিনির ছেলে
  • (খ) উৎসবের ছেলে
  • (গ) সতীশ বাবুর নাতি
  • (ঘ) সাধন দাসের নাতি উঃ (গ) সতীশ বাবুর নাতি

৩৮। বড়বাবু কোন চালের ভাত খান ?
(ক) ঝিঙেশাল চালের
(খ) পদ্মজালি চালের
(গ) কনক পানি চালের
(ঘ) রামশাল চালের
উঃ (গ) কনক পানি চালের

৩৯। ‘”বাসিনী ব্যাগ্যতা করি তোর ।“— একথা কে বলেছে?
(ক) সতীশ বাবু
(খ) উৎসব
(গ) ভজন চাকর
(ঘ) সাধন দাস
উঃ (খ) উৎসব

৪০। ভাত গল্পের কোন নদীর জলে উৎসবের সব ভেসে গিয়েছিল?
(ক) বিদ্যাধরী নদীর জলে
(খ) মাতলা নদীর জলে
(গ) দামোদর নদীর জলে
(ঘ) গঙ্গা নদীর জলে
উঃ। ( খ) মাতলা নদীর জলে

৪১। “ তা-ছাড়া টিনের বেশ একটা মুখবন্ধ কৌট ছিল ঘরে”-, কৌটার মধ্যে কি রাখা ছিল?
(ক) দরখাস্তের নকল
(খ) দরখাস্তের দলিল
(গ) নিভুই উচ্ছবের জমি চেয়ে দরখাস্তের নকল
(ঘ)জমির দলিল রাখা ছিল
উঃ ( গ) নিভুই উচ্ছবের জমি চেয়ে দরখাস্তের নকল

৪২। “ড্রাইডোল”- কথার অর্থ কি?
(ক) শুকনো খাবার
(খ) শুকনো খিচুড়ি
(গ) শুকনো রুটি
(ঘ) শুকনো খাদ্য
উঃ (ক) শুকনো খাবার

৪৩। গ্রামের লোকজন মৃতদের শ্রাদ্ধশাস্তি করার জন্য কাকে খবর দেয়?
(ক) মহানাম শতপথিকে
(খ) সাধন দাস কে
(গ) বাসিনীকে
(ঘ) সতীশ মিস্ত্রিকে
উ: (ক) মহানাম শতপথিকে

৪৪। ‘ সরকার ঘর কত্তে খরচা দেবে শুনছ না ? ’ – এ কথা বলেছিল –

  • (ক) গ্রামের সবাই
  • (খ) সাধনবাবু
  • (গ) সতীশবাবু
  • (ঘ) ঘ বাসিনীর ভাজ   উঃ (খ) সাধনবাবু

৪৫। “ এ গল্প গ্রামে সবাই শুনেছে ‘ — কোন গল্প গ্রামের সবাই শুনেছে?

(ক) বাসিনীর মনিব বাড়িতে হেলাঢেলা ভাত
(খ) বড় বাড়ির লোকেরা খুব বড়লোক
(গ) বড় বাড়ির লোকেরা সবাই চাকরি করে
(ঘ) বড় বাড়িতে সবাই কাজ করে
উঃ (ক)। বাসিনীর মনিব বাড়িতে হেলাঢেলা ভাত

৪৬। “ সর্বস্ব বেঁধে রাখো , হোম হলে খেও।“- এ কথা কে বলেছিল?
(ক) বাসিনী
(খ) বড়ো বউ
(গ) মেজ বউ
(ঘ) তাত্ত্বিক
উঃ (ঘ)। তাত্ত্বিক

৪৬। “রন্ন হল মা নক্ষী” – একথা কে বলতো ?
(ক) বড়ো পিসিমা
(খ) বড়ো বউ
(গ) বাসিনি
(ঘ) উচ্ছবের ঠাগমা
উঃ (ঘ) উৎসবের ঠাগমা

৪৭। “ মেয়েরা বসে কাঁদে”- কারণ
(ক) বুড়োকর্তা মারা গেছে
(খ) বুড়ো কর্তা অসুস্থ
(গ) বড়ো পিসিমা অসুস্থ
(ঘ) বাড়ির ভাত খাওয়া যাবে না বলে
উঃ ( ক) বুড়ো কর্তা মারা গেছে

৪৮। বুড়ো কর্তার হোম – যজ্ঞির জন্য প্রত্যেকটি কাঠ কাটতে হবে –
(ক) দেড় হাত লম্বা
(খ) দুই হাত লম্বা
(গ) আড়াই হাত লম্বা
(ঘ) তিন হাত লম্বা
উঃ। (ক) দেড় হাত লম্বা

৪৯।  ভাত গল্পের বাড়ি থেকে শবদেহ বের করা হয় –
(ক) রাত দুটোর পর
(খ) রাত তিনটের পর
(গ) রাত বারোটার পর
(ঘ) রাত একটার পর
উঃ (ঘ) রাত একটার পর

৫০। তান্ত্রিক কি দিয়ে রোগকে বেঁধে ফেলেন?

  • (ক)যজ্ঞ করে
  • (খ) মন্ত্র পড়ে
  • (গ) কালো বিড়ালের লোমে
  • (ঘ) প্রচন্ড উগ্র করে    উঃ ( গ) কালো বিড়ালের লোমে

ভাত গল্পের প্রশ্ন উত্তর pdf 

১। “ কী রকম যেন উগ্র চাহনি।“ – এইরকম উগ্র চাহনির জন্য কার, কাকে ভালো লাগেনি ?
উ: মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ ভাত ’ গল্পে, উচ্ছবের চাহনি, বড় বাড়ির বড় বউয়ের ভালো লাগেনি ।

২। “বড়ো বউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগেনি।“ – বড় বউয়ের ভালো লাগেনি কেন ?
উঃ:- ‘ ভাত ‘ গল্পে উচ্ছবের চেহারা বুনো বুনো এবং তার কিরকম একটা উগ্র চাহনি , আর কোমর পর্যন্ত ময়লা লুঙ্গির জন্য তাকে বড়ো বউয়ের ভালো লাগেনি ।

৩। ‘ ভাত খাবে কাজ করবে । ‘ – এখানে কার কথা বলা হয়েছে ?
উ: মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ ভাত ’ গল্পে উচ্ছবের কথা বলা হয়েছে। সে বড়ো বাড়িতে কাজ করবে, বিনিময়ে ভাত খাবে ।

৪। “সেই জন্যই তাদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি”- কাদের কেন চাকরি করা হয়ে ওঠেনি?
উঃ মহাশ্বেতা দেবীর রচিত “ভাত” গল্পে বড়ো বাড়ির ছেলেদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি। কারন তারা বেলা এগারটার আগে ঘুম থেকে ওঠেনা। তাছাড়া তাদের প্রচুর সম্পত্তি, খাওয়া-পড়ার কোন অভাব নেই।

৫। “তার জন্য একটা লোক খাবে..”- কিসের জন্য, কে খাবে?
উ: বড় বাড়ির বুড়োকর্তা মরতে বসেছে। আর তার জন্যই হোম-যজ্ঞি হচ্ছে। সে কারণে বাড়িতে কাট কাটতে আসা উচ্ছব কাজ করার বিনিময়ে ভাত খাবে।

৬। “সেজন্যই হোম যজ্ঞি হচ্ছে”- কি কারনে হোম যজ্ঞি হচ্ছে ?
উঃ মহাশ্বেতা দেবীর রচিত “ভাত” নামক গল্পে বড়ো বাড়ির বুড়োকর্তা মরতে বসেছে। তাই তাকে বাঁচানোর জন্য তান্ত্রিক এনে হোম যজ্ঞি করা হচ্ছে।

৭। “তা দে দেখি বাসিনি”- বাসিনির কাছে কে কি চেয়েছিল ?
উঃ মহাশ্বেতা দেবী রচিত ভাত গল্পে উৎসব দীর্ঘদিন অভুক্ত ছিল। তাই বড়ো বাড়িতে বাসিনির কাছে অনেক চাল দেখতে পেয়ে, এক মুঠো চাল খাওয়ার জন্য চেয়েছিল।

৮। “আজ খাওয়া দাওয়া ঝব করে সারতে হবে”- খাওয়া-দাওয়া কেন ঝব করে সারতে হবে?
উঃ ভাত নামক ছোটগল্পে বুড়োকর্তাকে বাঁচানোর জন্য যে তান্ত্রিক এসেছিলেন। সেই তান্ত্রিকের বিধান অনুযায়ী, হোমে বসবার আগে বাড়ির সবাইকে খেয়ে নিতে হবে। কারণ হোম চলাকালীন খাওয়া চলবে না। এজন্য ঝব করে খেয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

৯। “ওই পাঁচ ভাগে ভাত হয়”- পাঁচ ভাগ বলতে কি বোঝানো হয়েছে?অথবা:- “পাঁচ ভাগে যে ভাত হয় সেগুলো কি কি?
উঃ ভাত নামক ছোটগল্পে বড়ো বাড়িতে পাঁচ ভাগে ভাত হয় অর্থাৎ পাঁচ ভাগের চালের কথা বলা হয়েছে। যেমন:- ঝিঙেশাল, রামশাল, কনকপানি, পদ্মজালি এবং মোটা সাপটা

১০। “তাঁর জন্যেই এরা করে খাচ্ছে” — কার জন্য কারা করে খাচ্ছে ?
উ:- ভাত নামক ছোটগল্পে বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তা আঠারোটা বাড়ি শিবের নামে দেবত্র করে রেখেছিলেন । তাঁর এমন দূরদর্শিতার জন্যই বড়ো বাড়ির ছেলেরা করে খাচ্ছিল ।

১১। বড়ো বাড়িতে হোম যজ্ঞি জন্য কি কি আনা হয়েছে?অথবা:- এমন কত যে ফরমাস”- এখানে কি কি ফরমাস দেওয়া হয়েছিল?অথবা:- ফরমাস গুলো কি কি বা কে কি ফরমাস দিয়েছিলেন?
উঃ ভাত নামক ছোটগল্পে বড়ো বাড়িতে হোম যজ্ঞির জন্য বেল, কেওড়া, অশখ্খ, বট, তেঁতুল গাছের কাঠ আনা হয়েছে আধ মন করে। এছাড়া ভজন চাকর কালো বিড়ালের লোম আনতে গেছে। এমনকি শ্মশান থেকে বালিও আনা হয়েছে।

১২। “কত কাজ করতে হতো সারা জীবন ধরে”- কাকে কি কাজ করতে হতো?
উঃ বড়ো বাড়িতে বড়ো বউকে, বুড়ো কর্তার জন্য দই পেতে ইসবগুল দিয়ে শরবত করে দিতে হতো। তিনি খেতে আসার পাঁচ মিনিট আগে তাকে করতে হতো রুটি-লুচি।তার জন্য বিছানা পাততে হতো। পা টিপতে হতো। এইসব কাজ করতে হতো।

১৩। “কপালটা মন্দ তার। বড়ই মন্দ”- কার কপাল কেন মন্দ?
উঃ মাতলা নদীর জলে উৎসব নাইয়ার সর্বস্ব ভেসে চলে যায় এবং সেই সময় সে তার স্ত্রী পুত্রদের খুঁজে বেড়াচ্ছিল। যতদিন রান্না খিচুড়ি দেওয়া হচ্ছিল, ততদিন সে খেতে পারেনি। বড়ো বাড়িতে এসেও তার খাবার জুটছে না। এজন্যই তার কপালটা মন্দ।

১৪। “এ গল্প গ্রামের সবাই শুনেছে”- কোন গল্প গ্রামে সবাই শুনেছে বা এখানে কোন গল্পের কথা বলা হয়েছে?
উঃ ভাত নামক ছোটগল্পে বাসিনির মনিব বাড়িতে অর্থাৎ বড়ো বাড়িতে ঠাকুর দালান আছে, মন্দির মাথায় পেতলের ত্রিশূল আছে। তাছাড়া হেলা ঠেলা ভাত অর্থাৎ সেখানে ভাতের কোন অভাব নেই। আলোচিত অংশে এই গল্পের কথায় গ্রামের সবাই জানে বা শুনেছে।

১৫। ভাত গল্পের সংসারের প্রয়োজনে বড়ো পিসিমা কী কী করেছেন ?
উ: বড়ো পিসিমা চিরকাল বড়ো বাড়িতে হেঁসেল দেখেছেন। ভাড়াটে বাড়িতে মিস্তিরি লাগিয়েছেন। দাদা তথা বুড়ো কর্তার সেবাযত্ন করেছেন।

১৬। “তা দেখে উচ্ছেব মাথায় হাত দিয়েছিল”- উচ্ছব কি দেখে মাথায় হাত দিয়েছিল?
উঃ উচ্ছবের বাদায় ধানে গোছ আসার আগেই ধান গাছ থেকে সবুজ রং চলে যেতে থাকে। কার্তিক মাসেই ধান খড় হয়ে গিয়েছিল। এটা দেখেই উৎসবের মাথায় হাত পড়েছিল।

১৭। “তাস পিটানো ছেলেগুলি অস্বস্তিতে পড়ে”- ছেলেগুলি কেন অস্বস্তিতে পড়েছিল?
উঃ ভাত নামক ছোটকালকে শিব মন্দিরের চাতালে বসে থাকা ছেলেগুলি উচ্ছব কেন কাঁদছে তা জানতে চাইলে, উৎসব জানায় যে, সে আবাদ থেকে আসছে। ঝড়ের জলে তার সবকিছু সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। উৎসবের এমন কথা শুনে তাস পেটানো ছেলেগুলো অস্বস্তিতে পড়েছিল।

১৮। “এসব কথা শুনে উচ্ছব বুকে ভভল পায়”- কোন কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায় ?
উঃ বড়ো এবং মেজো বউ এর সঙ্গে বাসিনী বাড়ির কথা শুনে উৎসব বুঝতে পারে যে, রান্না শেষ হয়েছে। এবার হয়তো যঞ্জ শেষ হলেই সে খেতে পাবে। এই ভরসায় উৎসবের বুকে বল আসে।

১৯। ঝিঙেশাল চাল এবং রামশাল চাল কী কী দিয়ে খায় ?
উঃ ভাত গল্পে বড়ো বাড়িতে পাঁচ ভাগে চালের ভাত হয় তার মধ্যে নিরামিষ ডাল – তরকারির সঙ্গে ঝিঙেশাল চালের ভাত এবং রামশাল চালের ভাত খাওয়া হয় মাছের সঙ্গে।

২০। মেজ আর ছোটো ছেলে কোন্ চালের ভাত খায় ?
উ: বড়ো বাড়ির ছোটো ও মেজর জন্য বারোমাস পদ্মজালি চালের ভাত হয় ।

২১। ঝি – চাকর ও রাঁধুনিদের জন্য কোন চাল রান্না করা ?
উ: বড়ো বাড়িতে ঝি – চাকর ও রাঁধুনিদের জন্য মোটা সাপটা চালের ভাত রান্না করা হয় ।

২২। “বেচেও দিচ্ছে নুব্ধে নুক্কে”— কে , কী বেচে দিচ্ছে ?
উঃ বড়ো বাড়িতে চাল এনে পাহাড় করেছে ।বড়ো পিসিমা সেই চাল লুকিয়ে লুকিয়ে বাসিনির মাধ্যমে বিক্রিও করে দিচ্ছে। বাসিনী এই কথা উৎসবকে বলে।

২৩। “একদিন তুমুল ঝড় বৃষ্টি”- এই ঝড় বৃষ্টিতে কার কি হয়েছিল?
উঃ ভাত নামক ছোটগল্পে তুমুল ঝড়-বৃষ্টিতে উৎসবের স্ত্রী পুত্র কন্যা সহ সবাই ভেসে গিয়েছিল। তার সব কিছু সর্বনাশ হয়ে গেছিল।

২৪। “সে কৌটোটা বা কোথায়”— কৌটোর মধ্যে কি রাখা ছিল ?
উ:  ভাত গল্পের উৎসবের টিনের একটা মুখবন্ধ কৌটো ঘরে রাখা ছিল। ভাগচাষি উচ্ছবের জমি চেয়ে দরখাস্তের নকল তাতে রাখা ছিল ।

২৫। গ্রামের লোকজন শ্রাদ্ধের জন্য কাকে খবর দিয়েছিল ?
উ: গ্রামের লোকজন মহানাম শতপতিকে খবর দিয়েছিল উৎসবের মৃত পরিবারের শ্রাদ্ধের জন্য ।

২৬। মহানাম শতপথি কেন আসতে পারেনি ?
উ: মহানাম শতপথির আরও দুটি গ্রামে শ্রাদ্ধশান্তির কাজের জন্য গিয়েছিল। এই জন্য মহানাম শতপতি উৎসবের পরিবারের শ্রাদ্ধের জন্য আসতে পারিনি।

২৭। ‘ তুই কাদিস কেন ? ‘ – কে কেন কেঁদেছিল ?
উ: উৎসবের বাদায় মনিবের ধানে গোছ আসার আগেই ধানের সবুজ রং চলে গিয়ে এবং কার্তিক মাসেই ধান খড়ে পরিণত হয়েছিল। এই দেখে উৎসব কেঁদে উঠেছিল।

২৮। সতীশ মিস্তিরির কী কী ধানে মড়ক লেগেছিল ?
উ: ভাত গল্পে উচ্ছবের মনিব সতীশ মিস্ত্রির ধানে তিন ধরনের মড়ক লেগেছিল যথা হরকোল পাটনায় মোটা এর ফলে তাদের ধান নষ্ট হয়ে গেছিল ।

২৯। “তাহলে উচ্ছবের বুকে শত হাতির বল থাকত আজ “ — কী কি থাকলে উৎসবের বুকে শতভাগীর বল থাকতো ?
উ: উচ্ছব ভাগচাষির জমি চেয়ে দরখাস্তের নকল যে কৌটুর মধ্যে রেখেছিল , সেই কৌটোখানি ঝড় জলে হারিয়ে যায়। এই কৌটো যদি থাকতো তাহলে উচ্ছবের বুকে শত হাতির বল থাকতো। অন্তত কৌটো নিয়ে ভিক্ষে বের হতে পারতো।

৩০। এ হল ভগবানের মার ।’- কে , কাকে এ কথা বলেছিল ?
উ: উচ্ছব মাতলা নদীর জলে ঘরবাড়ি স্ত্রী পুত্র কন্যা সব হারিয়ে তার মনিব সতীশ মিস্ত্রির কাছে এক মুঠো ভাতের আশায় গেলে সতী মিস্ত্রি এই কথাটি উৎসবকে বলেছিল।

৩১। “ভাত খেতে দিলে না উচ্ছবকে ‘ — কে কেন উচ্ছবকে ভাত খেতে দেয়নি ?
উ: সতীশ মিস্ত্রি উচ্ছবকে ভাত খেতে দেয়নি। কারণ উৎসবকে খেতে দিলে গ্রামের অন্যান্য অভক্ত মানুষেরা পঙ্গপালের মতো সতীশ বাবুর বাড়িতে এসে জুটবে। এই জন্য সতীশবাবু উচ্ছবকে ভাত খেতে দেয়নি।

৩২। নইলে দোষ লাগবে’— কিসে দোষ লাগবে ?
উ: বুড়ো কর্তা মারা গেছেন। তার মৃত দেহ রাতারাতি বার করতে না পারলে, দোষ লাগবে। অর্থাৎ অমঙ্গল হবে।

ভাত গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর 2025

1. “ভাত খাবে কাজ করবে” – ভাত গল্পের  কোন প্রসঙ্গে , কার সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে ? সে কীভাবে কাজ করেছিল ?

উঃ: লেখিকা মহাশ্বেতা দেবীর বিরোচিত ভাত নামক ছোটগল্পে আলোচিত মন্তব্যটি বামুন ঠাকুর উৎসবের সম্পর্কে বলেছে।

মাতলার নদীর জলে উৎসব তার স্ত্রী পুত্র সহ ঘরবাড়ি হারিয়ে বাসনীর সঙ্গে কলকাতায় আসে দুমুঠো ভাত পাবার আশায়। বাসেনি বড় বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে। বাসিনীর অনুরোধে বড়ো পিসিমা উচ্ছবকে কাজে নিয়োগ করে । কিন্তু উচ্ছবের উগ্র চাহনি , তার বুনো চেহারা , পরনে ময়লা লুঙ্গি দেখে বড়ো বউয়ের ভালো লাগেনি । বামুন ঠাকুরকে তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় — বড়ো পিসিমার আদেশে সে কাজ করছে ভাত খাওয়ার বিনিময়ে । উচ্ছব নাইয়ার সম্পর্কে তখন বামুন ঠাকুর এই মন্তব্যটি করে।

কীভাবে কাজ করেছিল- বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তা লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত । ডাক্তার জবাব দিয়ে দিয়েছেন । তবে এক তান্ত্রিক আরোগ্যের জন্য হোমযজ্ঞ করে বুড়ো কর্তার প্রাণ টুকুর ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। বেল , ক্যাওড়া , অশ্বত্থ , বট , তেঁতুল — এই পাঁচরকম কাঠ কাটতে উচ্ছবের কাজে যোগ দেয়।। একটু থেমে গেলেই বড়ো পিসিমা খনখনিয়ে ওঠে— “কী হল , হাত চালাও বাছা”’  উৎসব পেটে তীব্র খিদের জ্বালা নিয়ে প্রায় আড়াই মন কাঠ কেটে ফেলেছিল কিন্তু বুড়োকর্তা মারা যাবার ফলে সেই অশৌচ হয়ে যাওয়া ভাত তার ভাগ্যে জোটেনি। তাকে বাসিনির কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে খেতে হয়েছিল এবং পরিণামে তার হাজতবাস হয়।

২. উচ্ছব ফিরে দাঁড়ায়। তার চোখ এখন বাদার কামটের মতো হিংস্ৰ’— ভাত গল্পের  কখন কেন উচ্ছবের এমন অবস্থা হয়েছিল? অথবা : “দাঁতগুলো বের করে সে কামটের মতোই হিংস্র ভঙ্গি করে’—কে কার প্রতি এরূপ আচরণ করেছিল? তার এরূপ আচরণের কারণ কী ?

ans- খিদের জ্বালায় জর্জরিত উচ্ছব বাসিনীর হাতে ডেকচি ভরা ভাত নিয়ে দৌড়াতে থাকলে, বাসিনি তার সামনে এসে দাঁড়ালে, উচ্ছব তার মানবিক গুণাবলী থেকে হিংস্র পশুর মত হয়ে ওঠে। তীব্র ভাতের খিদির জ্বালায় তাকে মানুষ থেকে হিংস্র পশুতে পরিণত করে ফেলে- সেই সময় পশুর মত দাঁত বের করে তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে।

তার এরূপ আচরণের কারণ- পেটের তীব্র খিদের জ্বালা নিয়ে বাসিনির সঙ্গে কলকাতায় আছে। সেখানে বড়ো বাড়ির বুড়োকর্তাকে বাঁচানোর জন্য হোম যজ্ঞের আয়োজন হয়েছে। উচ্ছব হোম যজ্ঞের কাঠ কাটবে, বিনিময়ে সে ভাত খাবে, এই প্রতিশ্রুতিতে সে তীব্র পেটে খিদের জ্বালা নিয়ে ভাতের গন্ধে সে প্রায় আড়াই মন কাঠ কেটে ফেলেছিল। তান্ত্রিকের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে বুড়োকর্তা মারা যায়। এর ফলে বড় বাড়িতে রান্না করা সমস্ত ভাত অশৌচচ হয়ে যায়। পিসিমা নির্দেশ দেন রান্না পথে ঢেলে দিগে যা। ঘরদোর মুক্ত কর । অভুক্ত উচ্ছব পিসিমার কথা শুনে বুঝতে পারে যে সব ভর তারা পথে ফেলে দিতে যাচ্ছে। সে স্থির সিদ্ধান্তে আসে ।

বাসিনী তাকে অশৌচ বাড়ির ভাত খেতে বারন করে—‘অশুচ বাড়ির ভাত খেতে নি দাদা’।  বাসিনীর এই কথা শুনে উৎসব খিদের জ্বালা জর্জরিত হয়ে প্রেতে পরিণত হয়ে যায়। খিদের জ্বালায় তার কাছে অশৌচ হয়ে যাওয়া ভাত পরম অমৃত হয়ে ওঠে। বাদার ক্ষুধার্ত কামটেরা যেমন হিংস্রতার দ্বারা শিকারের দিকে এগিয়ে চলে, ঠিক তেমনই খিদের আগুনে উচ্ছব বাসিনীকে নিজের শিকার মনে করে, তার প্রতি হিংস্র কামটের দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছিল।

১. ‘আসল বাদার খোঁজ করা হয়না আর উচ্ছবের’—  ভাত গল্পের  উচ্ছব কে? ‘আসল বাদা’ কোন্টি? কেন তার পক্ষে সেই বাদাটির খোঁজ করা হয়ে উঠল না? অথবা, : ‘বাদার ভাত খেলে তবে তো সে আসল বাদার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন’—বাদা কাকে বলে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এইরকম মনে হওয়ার কারণ কী? অথবা, ‘সে বাদাটা বড়ো বাড়িতে থেকে যায় অচল হয়ে’—কোন্ বাদার কথা বলা হয়েছে? সেই বাদাটা বড়ো বাড়িতে অচল থেকে যায় কেন?

■ উচ্ছবের পরিচয় : মাতলা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের একজন হতদরিদ্র ভাগ চাষি হল উচ্ছব। তার প্রকৃত নাম উৎসব নাইয়া ৷

আসল বাদা : বাদা শব্দের অর্থ হলো জঙ্গল পূর্ণ বিস্তীর্ণ নিম্ন জলাভূমি। সাধারণত সুন্দরবন ঘেঁষা অঞ্চলেই বাদা নামে পরিচিত। কিন্তু পাঠ্য গল্পে বাদা শব্দটি দুটি অর্থ প্রয়োগ করা হয়েছে। উৎসব যে অঞ্চলে বাস করে, সেই বাদা অঞ্চল অনুর্বর এবং সেখানে গেঁড়ি গুগলি কচু শাক ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায় না। অপরপক্ষে উৎসব কলকাতায় গিয়ে নানা রকমের চালের সম্ভার দেকে বিস্মিত হয় এবং সে এই উর্বর বাধা অঞ্চলের খোঁজ করতে চাই। তার কাছে এই উর্বর বাদা অঞ্চলই হলো আসল বাদা অঞ্চল।

আসল বাদা খুঁজে না পাওয়া : বড় বাড়ির বুড়োকর্তা মারা গেলে বাড়ির রান্না করার সমস্ত ভাত অশৌচ হয়ে যায়। পিসিমা অশৌচ হয়ে যাওয়া বাড়ির সমস্ত ভাত বাসিনিকে ফেলে দিতে বলে কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরে অভুক্ত ক্ষুধার্ত উচ্ছব ,এই ভাত ফেলে দিতে চাইনি। সে বাসিনির কাছ থেকে ডেকচি নিয়ে দৌড়ে স্টেশনের দিকে চলে যায়। সেখানে উচ্ছব মনের আনন্দে পেট ভরে ভাত খেয়ে নেয়।পেট ভরে ভাত খেয়ে, ভাতের ভারে সে ডেকচির কানায় মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে ডেচকি চুরির অপরাধে উচ্ছবকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়। ফলে আসল বাদা খোঁজ করা তর ওর হয়ে উঠলো না।

 [  পরের এই প্রশ্নের উত্তরে আরো যে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর লেখা যায় –  অথবা, ভাত খেয়ে দেহে শক্তি পেলে উচ্ছব সেই বাদাটা…… আরও কত লোক আছে দেশে তাদেরও বলবে— ভাত গল্পের কোন্ বাদাটি খোঁজার কথা বলা হয়েছে? উচ্ছব কি সেই বাদার খোঁজ পেয়েছিল? অথবা, উচ্ছব হাঁড়িটি …….. মাথা ছুইয়ে ঘুমিয়ে পড়ে’—এভাবে ঘুমের কারণ কী? এরপর কী ঘটেছিল? অথবা, ‘মারতে মারতে …… থানায় নিয়ে যায়’—উচ্ছব কে? তাকে কেন মারতে মারতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল?  অথবা, উচ্ছব দৌড়তে থাকে। প্রায় এক …….স্টেশানে চলে যায়’—উচ্ছবের এমন আচারণের কারণ কী? এরপর কী হয়েছিল? ] 

 

৩. ‘উচ্ছবের সংসার মাটিতে লুটোপুটি খেল’—উচ্ছব কে? তার সংসার কীভাবে মাটিতে লুটোপুটি খেয়েছিল? অথবা : ‘সকাল হতেই বোঝা গিয়েছিল সর্বনাশের বহরখানা’—কার সর্বনাশের কথা বলা হয়েছে? এই সর্বনাশের পরিণতি কী হয়েছিল? অথবা, ‘যা আর নেই, যা ঝড়-জল-মাতলার গর্ভে গেছে তাই খুঁজে খুঁজে উচ্ছব পাগল হয়েছিল’—দুর্যোগের বর্ণনা দাও। দুর্যোগটি উচ্ছবকে কীভাবে প্রাভাবিত করেছিল?

উঃ মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্পের প্রধান চরিত্র হল উৎসব নাইয়া ৷ সুন্দরবনের মাতলা নদীর পাড়ে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে তার বাস। প্রাকৃতিক দুর্যোগে উৎসব একেবারে মিশ্র হয়ে পড়ে তার পরিবার ঘর সহ জলে ভেসে চলে যায়।

দুর্যোগের পূর্বাভাস :  ভাত গল্পের সেদিন সন্ধ্যেবেলায় দুর্যোগের পূর্বাভাস চুন্নুনির মা পেয়েছিল। খেতে খেতে আকাশের অবস্থা দেখে সে বলেছিল “দেবতার গতি ভালো নয়কো” নৌকা নিয়ে যারা বেরিয়েছে তারা বুঝি এই মারা পড়ে।
দুর্যোগের আগমন : রাত্রেই শুরু হয় তুমুল ঝড় বৃষ্টি। উচ্ছব ছেলেমেয়েকে বুকে করে জাপটে- সাপটে ধরেছিল। আর তার স্ত্রী শীতে আর ভয়ে কাঁপছিল। উচ্ছব মাঝ খুঁটিটা মাটিতে দাবিয়ে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছিল। খুঁটি যেন ধনুষ্টংকার রোগীর মত কেঁপে ঝেকে উঠছিল।

সর্বনাশের বহরখানা:- সকাল থেকেই বোঝা গিয়েছিল সর্বনাশের বহরখানা।মাতলা নদীর জলে উচ্ছবের সংসার মাটিতে লুকোপুটি গেলো।ঘরের চাল ভেঙে পড়ে রয়েছে।মাতলার জলে উৎসবের ঘরবাড়ি সহ স্ত্রী পুত্র ভেসে যায়। পাগলের মত সে মাতলা নদীর জলে তার স্ত্রী পুত্রদের খোঁজে বেরিয়েছে। আর এই জন্য তার রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া হয়ে ওঠেনি। শুধু তাই নয়, তার যে নিভুই ভাগচাষীর দলিল চেয়ে, যে নকল কৌটার মধ্যে রাখা ছিল ,সেটিও জলে ভেসে চলে যায়।  হঠাৎ এমন দুর্যোগের ফলে উচ্ছবের বুদ্ধি লোপ পায়। স্ত্রী পুত্রদের খুঁজতে গিয়ে নিজে অভুক্ত থেকে প্রেতে পরিণত হয়ে যায়।

৪. ‘ডাক্তাররা বলে দিয়েছে বলেই তো আজ এই যজ্ঞি-হোম হচ্ছে’—  ভাত গল্পের হোম যজ্ঞটির বর্ণনা দাও। এই হোম-যজ্ঞের পরিণতি কী হয়েছিল? অথবা : তোমার শ্বশুরই মরতে বসেছে বাছা। সেজন্যই হোমযজ্ঞ হচ্ছে’— ভাত গল্পের  কে, কাকে এই কথাটি বলেছিল? হোম-যজ্ঞটির বর্ণনা দাও।

ans- কলকাতার বড়ো বাড়ির বুড়োকর্তা লিভারে ক্যান্সারে আক্রান্ত। ডাক্তাররা পর্যন্ত জবাব দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তা সত্বেও বুড়োকর্তাকে বাঁচানোর জন্য বাড়ির সকলেই মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ছোট বউ এর বাবা এক বড় তান্ত্রিক এনেছেন হোম যঞ্জি করার জন্য। তান্ত্রিক হোম যজ্ঞ করে বুড়োকর্তার প্রাণ টুকু ধরে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।

হোম যজ্ঞটির বর্ণনা- তান্ত্রিকের ফরমাশ অনুযায়ী যজ্ঞের জন্য বেল, কেওড়া, অশখ্খ, বট, তেতুল গাছের কাঠ এসেছে আজ মন করে। সেগুলো আবার এক মাপে কাটতে হবে। ভোজন চাকর কালো বিড়ালের লোম আনতে গেছে। শ্মশান থেকে বালিয়া আনা হয়েছে। যজ্ঞ শুরু হওয়ার আগে তান্ত্রিক অবশ্য বিধান দেন যে, “সর্বস্ব রেধে রাখো হোম হলে খেও” যঞ্জ চলাকালীন খাদ্য গ্রহণ করা যাবেনা। তান্ত্রিক বিচিত্র এক মন্ত্র উচ্চারণ করে প্রথমেই রোগকে দাঁড় করান এবং তারপর সেই রোগকে কালো বিড়ালের লোমে বেঁধে ফেলেন।

হোম-যজ্ঞের পরিণতি- তান্ত্রিকের এত জাঁকজমকপূর্ণ যজ্ঞের আয়োজন করেও, শেষ পর্যন্ত বুড়োকর্তাকে বাঁচানো যায় না। বুড়োকর্তার মৃত্যু ঘটে। কিন্তু তান্ত্রিক বুড়োকর্তার মৃত্যুর জন্য তিন ছেলেকেই দায়ী করে ।তারা যজ্ঞ চলাকালীন সেখান থেকে চলে যায় । কিন্তু বড় পিসিমা তান্ত্রিককে “ডাকাত বাড়ির সন্ন্যাসী” বলে সম্বোধন করে।

৬. ‘গরিবের গতর সস্তা দেখে’—কোন্ প্রসঙ্গে এই মন্তব্য ? মন্তব্যের আলোকে বক্তার চরিত্রের বিশ্লেষণ করো। অথবা : বাসিনী চরিত্রটি আলোচনা করো। অথবা, ‘এ পিশাচের বাড়ি কেমন তা ঝানোনি দাদা-কে, কার উদ্দেশ্যে এই কথা বলেছে? কেন এই মন্তব্য?

ans- পাহাড়প্রমাণ চাল দেখে ক্ষুধার্ত উচ্ছব এক মুঠো চাল খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। বাসিনী উচ্ছবকে চাল খেতে দিতে পারেনি। কারণ পিসিমা বা বাড়ির অন্য কেউ যদি দেখে ফেলে তবে সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে। বড় বাড়ির লোকেরা এত কিছু খাদ্যের যোগান থাকা সত্ত্বেও একজন ক্ষুধার্ত মানুষকে খেতে না দিয়ে তাকে কঠোর পরিশ্রম করিয়ে নিচ্ছে। এই রকম অমানবিকতার এবং নিষ্ঠুরতার পরিচয় পেয়ে বাসিনি বলে ওঠে—”এ পিশাচের…….রিবের গতর এরা সস্তা দেকে”

বাসিনী চরিত্র :ভাত গল্পের বাসিনীর এমন দূরদর্শী মন্তব্য করায় তার চরিত্রের বেশ কতগুলি দিক প্রস্ফুটিত হয়েছে:-

সাহায্যকারী :  ভাত গল্পের বাসিনী বড় বাড়ির একজন পরিচারিকা। দারিদ্রতার যন্ত্রণা কি সে মর্মে মর্মে অনুভব করে। এইজন্য সে উৎসবকে কাজের সন্ধানে কলকাতায় নিয়ে আসে। অভুক্ত উচ্ছবের প্রতি তার ছিল স্বহৃদয়তা এবং সহমর্মিতা। এই জন্য তাকে লুকিয়ে লুকিয়ে ছাতু খেতে দিয়েছে।

বাস্তব উপলব্ধি : বড়ো বাড়ির বাসিনী বড় বাড়ি লোকেদের অমানবিকতা এবং নিষ্ঠুরতা লক্ষ্য করেছেন বাস্তবটা সে উপলব্ধি করতে পেরেছে। এইজন্য সে বড়বাড়িকে পিশাচের বাড়ি বলে উল্লেখ করেছেন।

বড়লোকদের প্রতি তীব্র ঘৃণা: বাসিনীর এমন মন্তব্যে তার যে, ধনী লোকের প্রতি তীব্র ঘৃণা আছে- তা বোঝা যায়। সেজন্যই সে উৎসবকে বলেছে, যে বড়লোকেরা গরিব লোকের গত সস্তা দেখে।

 ৭. ‘পেটে ভাত নেই বলে উচ্ছব প্রেত হয়ে আছে’—কেন তার পেটে ভাত নেই? কীভাবে উচ্ছব প্রেত হয়ে গিয়েছিল? কীভাবে সে আবার মানুষ হয়ে উঠল?অথবা, : ‘সেই আশাতেই প্রেত উচ্ছব মানুষ হয়ে গেল’—কীভাবে উচ্ছ প্রেত হয়ে গিয়েছিল? কীভাবে সে আবার মানুষ হয়ে উঠল?

ans- ভূমিহীন উচ্ছব সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের বাসিন্দা। বারোমাস সতীশ মিস্ত্রির জমিতে কাজ করে। তার মনিবের ধানে মড়ক লেগে অর্থাৎ পোকায় নষ্ট করে দেয়। সেই থেকেই উৎসব আধ-পেটা সিকি-পেটা উপোষের শুরু হয়।—এই কারণেই তার পেটে ভাত ছিল না।

কীভাবে সে আবার মানুষ হয়ে উঠল?-  পেটের খিদের জ্বালায় জর্জরিত হয়েছে। ক্ষুধার্ত উৎসব এই খিদের জ্বালাতেই প্রেতে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু কলকাতার বড়ো বাড়িতে ভাতের আশায় কাঠ কাটতে রায়। সেখানে ভাতের গন্ধে তাকে বড়ো উতলা করে তোলে। ভাতের হুতাশে আড়াই মন কাঠ কেটে ফেলেছিল। কাঠ কাটা শেষ করে ভাত খাবে বলে সে শিব মন্দিরের চাতালে গিয়ে বসে। একলা বসে উচ্ছব তার স্ত্রী-সন্তানদের কথা ভাবতে শুরু করে। তার দু-চোখে জল গড়ায়। ভাত খাবে এই আশায়, ক্ষুধার্ত উচ্ছব তার অন্তরের জ্বালা ভুলে প্রেতকে বিনাশ করে তাকে পুনরায় মানুষ করে তুলেছিল। লেখিকা এই জন্যই বলেছেন —“ভাত খাবে আজ। সেই আ শাতেই প্রেত…..গেল নাকি?”

৮. তুমি কী বুঝবে সতীশবাবু?’— ভাত গল্পের সতীশবাবু কে? তিনি কী বুঝতে পারবেন না? কথোপকথনের আলোকে সতীশবাবুর চরিত্রের কোন্ দিকটি ফুটে উঠেছে?১+২+২

ans  : মহাশ্বেতা দেবীর বিবেচিত হদ গল্পের অন্যতম একটি চরিত্র সতীশবাবু তথা সতীশ মিস্ত্রী। তিনি সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের একজন সমৃদ্ধশালী ব্যক্তি। ভূমিহীন উচ্ছব এই সতীশ মিস্ত্রি র জমিতেই বারো মাস কাজ করে।

সতীশবাবুর চরিত্র-  মাতলা নদীর জলে উৎসবের সর্বস্ব হারিয়ে যায়। স্ত্রী পুত্রদের হারিয়ে উৎসব মাত্র নদীর জলে পাগলের মত খুঁজে বেরিয়েছে। সেই সময় সে ত্রানের খিচুড়ি খেতে পাইনি। এর ফলে সে বেশ কয়েকদিন অভক্ত থাকে। খিদের জ্বালায় ‘ভাত ভাত’ করতে দেখে সতীশবাবু উচ্ছবকে বলে, — “উচ্ছবের মতিচ্ছন্ন হয়েছে বই তো নয়। বউ ছেলেমেয়ে অ…….উচ্ছব ভাত ভাত করছে দেখ” —এই কথার উত্তরে উচ্ছব সতীশবাবুকে আলোচিত মন্তব্যটি করেছিল।

সতীশবাবু অবস্থাসম্পন্ন মানুষ। তার পাকা বাড়িতে সব সময় ধান চাল সুরক্ষিত থাকে। দেশ জোড়া দুর্যোগেও তার বাড়িতে তিন বেলা রান্না হয়। তা সত্ত্বেও অভুক্ত উচ্ছবকে খেতে দেননি। বরং এই আকালের সময়ে স্বার্থপরের মত সে জবাব দেয়—”তোকে এগলা দিলে চলবে? তাহলেই পালে পালে পঙ্গপাল জুটবে না? উচ্ছবের এই অসহায় অবস্থাকে “ভগবানের মার” বলে উল্লেখ করেছেন।
গল্পে এই সামান্য পরিসরে সতীশ বাবুর বিবেকহীন অমানবিকতার পরিচয় পাওয়া যায়।

তিনি যেন এই দুর্যোগের এক শোষক শ্রেণীর প্রতিনিধি। তার কাছে খাদ্যের যথেষ্ট পরিমাণ যোগান থাকলেও তিনি উচ্ছবদের মত অভক্ত মানুষদের নির্লজ্জ স্বার্থপরের মত খেতে দেন নি। দুর্যোগের সময় সে অভক্ত মানুষদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি, বরং সে খেয়ে পড়ে জীবন যাপন করেছে।

৯. “উচ্ছবের মাথা….মেঘ চলছিল তা সরে যায়”—ভাত গল্পের  উচ্ছব কে? তার মাথার মেঘ কীভাবে সরে যায়? মেঘ সরে গেলে সে কী করেছিল? ১+২+২ অথবা,: “সে বুঝতে পারে সব ভাত ওরা পথে ফেলে দিতে যাচ্ছে”—‘ওরা” বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? ‘ওরা’ সব ভাত ফেলে দিতে যাচ্ছিল কেন? সে  কে? বুঝতে পেরে সে কী করেছিল?

উ:- মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র উচ্ছব। তার পুরো নাম উৎসব নাইয়া। সুন্দরবনের মাতলা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের এক হতদরিদ্র ভাগ চাষী। তার প্রকৃত নাম উৎসব নাইয়া । বাদা অঞ্চল থেকে দুটো ভাত খাওয়ার আশায় উৎসব কলকাতার বড়োবাড়িতে কাজ করতে এসেছিল।

মাথার মেঘ কীভাবে সরে যায়- মাতলা নদীর জলে উৎসব সর্বস্ব হারিয়ে পেটে তীব্র খিদের জ্বালা নিয়ে দুমুঠো ভাত পাবার আশায় বাসিনীর সঙ্গে কলকাতায় আসে । বড়ো বাড়িতে ভাতের গন্ধে তোকে বড়ই উতলা করে তোলে। ভাতের হাহুতাশে আড়াই মন কাঠ কেটে ফেলেছিল কিন্তু বড়ো বাড়ির বুড়োকর্তা তান্ত্রিকের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে মারা যান। এর ফলে বাড়ির রান্না করা সমস্ত ভাত অশৌচ হয়ে যায়। বাড়ির উনুন জলা বন্ধ । বড় পিসিমা বলে ওঠেন-বাসিনি, রান্না পথে দিগে যা। ঘরদোর মুক্ত কর উৎসব এই সমস্ত কথাবার্তায় তার মাথার মধ্যে যে মেঘ চলছিল তা সরে যায়। সে বুঝতে পারে যে অশৌচ হয়ে যাওয়া সব ভাত ওরা পথে ফেলে দিতে যাচ্ছে।

মেঘ সরে গেলে সে কী করেছিল?- বাসিনীর কাছ থেকে ভাত ভর্তি ডেকচি দূরে ফেলে দিয়েছ নাম করে উচ্ছব দৌড়াতে থাকে। বাসিনী তার সামনে ছুটে এলে সে হিংস্র কাম্টের মতো দাঁত বের করে দাঁড়ায়। উৎসব এক নিঃশ্বাসে দৌড়ে স্টেশনে চলে যায়। সেখানে সে ভাতে হাত ঢুকিয়ে স্বর্গ সুখ অনুভব করে। ভাত খেয়ে পরম সুখ অনুভব করে। উচ্ছব ডেকচি জাপটে ধরে কানায় মাথা ছুঁইয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরে তাকে পিতলের ডেকচি চুরি করার অপরাধে হাজত বাস করতে হয়।

16. সে বুঝতে পারে সব ভাত ওরা পথে ফেলে দিতে যাচ্ছে ।’- ‘ ওরা ‘ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ? ওরা সব ভাত ফেলে দিতে যাচ্ছিল কেন ? ‘ সে ’ কে ? বুঝতে পেরে সে কী করেছিল ?

উঃ মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ‘ গল্পে ‘ ওরা ‘ বলতে বড় বাড়ির লোকেদের কথা বলতে চাওয়া হয়েছে। তান্ত্রিকের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও বড়ো বাড়ির বুড়োকর্তা মারা যান। এর ফলে বড়ো বাড়ির রান্না করা সমস্ত ভাত অশৌচ হয়ে যায় এবং বড়ো পিসিমা নির্দেশে- সেই সমস্ত অশৌচ হয়ে যাওয়া ভাত, বাসিনিকে ফেলে দিতে বলে।

‘ সে ‘ বলতে আলোচ্য গল্পে উচ্ছবকে বোঝানো হয়েছে ।

■ পিসিমার কথা শুনে ক্ষুধার্ত উৎসব বুঝতে পারে যে তারা বাড়ির সমস্ত ভাত ফেলে দিতে যাচ্ছে। উচ্ছবের বুদ্ধি স্থির হয়। সে বুঝতে পারে এখন কি করবে। যেকোন উপায়ে সেই ভাত খেতে চায়। তাই বাসনির কাছ থেকে ডেকচি ভড়া ভাত ফেলে দিয়ে আসার নাম করে দৌড়াতে শুরু করে। । বাসিনী তাকে অশৌচ বাড়ির ভাত খেতে নিষেধ করলে, উচ্ছব হিংস্র হয়ে ওঠে । তার আচরণে বাসিনী থমকে দাঁড়ায় । উচ্ছব দৌড়ে স্টেশনে চলে যায়। সেখানে গিয়ে ভাতে হাত ঢুকিয়ে স্বর্গ সুখ অনুভব করে। মনের আনন্দে তৃপ্তি করে পেট ভরে সে ভাত খেয়ে ফেলে। ভাতের ভারে সে ডেকচির কানাই মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন সকালে তাকে ডেকচি চুরি করার অপরাধে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় ।

Leave a Comment

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading