> সমাস কাকে বলে বহুব্রীহি সমাস কাকে বলে » Qবাংলা

সমাস কাকে বলে বহুব্রীহি সমাস কাকে বলে

class10 wbbse বাংলা বিষয়ে একটি অন্যতম পাঠ্য সমাস |এই সিরিজে এই  সমাস থেকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুব সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে। প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী উত্তরগুলি দেখার পাশাপাশি প্রশ্নের উত্তর লেখার কৌশলটি ভালোভাবে লক্ষ্য কর | মাধ্যমিক মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর জানতে অবশ্যই  click here

১) সমাস কাকে বলে? 

উঃ এক বা একাধিক পদকে এক পদে পরিণত করার নাম সমাস। সমাস কথার অর্থ- সংক্ষেপন |  যেমন:- “সিংহ চিহ্নিত আসন”= সিংহাসন। এখানে “সিংহ”, “চিহ্নিত”, “আসন” তিনটি পদকে এক পদে পরিণত করে “সিংহাসন” পদটি তৈরি করা হলো।

সমাসের শ্রেণীবিভাগ:বর্তমান পাঠ্যক্রম অনুযায়ী বাংলা সমাসকে মোট নয়টি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:-

  • ১)দ্বন্দ্ব সমাস
  • ২)কর্মধারয় সমাস
  • ৩)তৎপুরুষ সমাস
  • ৪)বহুব্রীহি সমাস
  • ৫)দ্বিগু সমাস
  • ৬)অব্যয়ীভাব সমাস
  • ৭)নিত্য সমাস
  • ৮)অলপ সমাস এবং
  • ৯) বাক্যশ্রয়ী সমাস

সমাস সংক্রান্ত আরো প্রশ্নের উত্তর জানতে click here

) বহুব্রীহি সমাস:যে সমাসে, সমস্যমান পদ দুটির অর্থ প্রাধান্য না পেয়ে অন্য কোন তৃতীয় পদের অর্থ প্রাধান্য পায়, তাকে বলা হয় বহুব্রীহি সমাস। যেমন:- নীলকন্ঠ= নীলকন্ঠে যার। অর্থাৎ মহাদেবের কথা এখানে বলা হচ্ছে। “বহুব্রীহি” শব্দটির অর্থ হলো বহু ধান্য আছে যার অর্থাৎ সম্পন্ন কৃষক।

বহুব্রীহি সমাসের শ্রেণীবিভাগ:–   বহুব্রীহি সমাসকে সাতটা ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:-

১) ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি:– যে বহুব্রীহি সমাসে, পূর্ব ও পরপদ উভয়ই বিশেষ্য হয় তাকে ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন:- চক্রপানি= চক্র পানিতে যার। শশাঙ্ক= শশ অঙ্কে যার। বীণাপাণি= বিনা পানিতে যার।

) সমানাধিকরণ বহুব্রীহি: যে বহুব্রীহি সমাসে, পূর্বপদ এবং উত্তরপদ উভয়ই বিভক্তি শূন্য হয়, তাকে সমানাধিকরন বহুব্রীহি সমাস বলে।যেমন:- গৌরাঙ্গ:- গৌর অঙ্গ যার। মিহিদানা= মিহি দানা যার। পঞ্চানন= পঞ্চ আনন যার। 

)ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস:–    যে বহুব্রীহি সমাসে, একই শব্দের পুনরুক্তি হয়, তাকে ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন:- লাঠালাঠি= লাঠিতে লাঠিতে যে যুদ্ধ। হাসাহাসি= হাসিতে হাসিতে যে কাজ। ঘুষোঘুষি= ঘুষিতে ঘুষিতে যে যুদ্ধ।

) মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি সমাস:- যে বহুব্রীহি সমাসে, ব্যাসবাক্যের মাঝে অবস্থিত পদ সমাসবদ্ধ পদে লুপ্ত হয়, তাকে মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন:- পদ্মমুখী= পদ্মের মতো সুন্দর মুখ যার। কোমললোচন= কমলের মতো লোচন যার।

) নঞ বহুব্রীহি বা না বহুব্রীহি সমাস:- যে বহুব্রীহি সমাসে, পূর্বপদে না বাচক অব্যয় হয়, তাকে না বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন:- নির্ভুল= নেই ভুল যার। নিখোঁজ= নেই খোঁজ যার। অসীম= নেই  সীমা যার।

৬) সহার্থক বহুব্রীহি সমাস:- যে বহুব্রীহি সমাসে, পূর্ব পদের সঙ্গে সহার্থক উত্তর পদের সমাস হয়, তাকে সহার্থক বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন:- সস্ত্রীক= স্ত্রীর সহিত বর্তমান। সপুত্র= পুত্রের সহিত বর্তমান।

) সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাস:- যে বহুব্রীহি সমাসে, পূর্বপদটি সংখ্যা বাচক হয় তাকে সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাস বলে যেমন:- ত্রিলোচন= ত্রি লোচন যার।  (সমাস কাকে বলে বহুব্রীহি সমাস কাকে বলে part-2)

for more question answers click here- বাচ্য কয় প্রকার কি কি ?

) দ্বিগু সমাস: যে সমাসে সমাহার বা সমষ্টি অর্থ প্রকাশ পায়, তাকে দ্বিগু সমাস বলে। দিগু কথার অর্থ হল, দ্বি- দুই, গো- গরু অর্থাৎ দুই গরুর সমাহার। যেমন:- সপ্তাহ= সপ্ত অহের সমাহার। পঞ্চভূত= পঞ্চ ভূতের সমাহার। পাঁচকড়ি=  পাঁচ কড়ির সমষ্টি। ইত্যাদি দ্বিগু সমাসের উদাহরণ।

) অব্যয়ীভাব সমাস:যে সমাসে পূর্ব পদে অব্যয় এবং পূর্বপদের অর্থই প্রাধান্য পায়, তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে। অর্থাৎ সমাস নিসপন্ন হওয়ার পর অব্যয়ের ভাব প্রকাশ পায়। তাই একে অব্যয়ীভাব সমাস বলা হয়। যেমন:- হায়াত= ভাতের অভাব। হাঘর= ঘরের অভাব। উপবন= বনের সদৃশ। দুর্ভিক্ষ= ভিক্ষার অভাব। প্রত্যঙ্গ= ক্ষুদ্র অঙ্গ। উপকূল= কুলের সমীপে। ইত্যাদি অবয়ীভাব সমাস। 

) নিত্য সমাস: যে সমাসের সাধারণত ব্যাসবাক্য হয় না বা ব্যাসবাক্য করতে গেলে অন্য কোন পদের সাহায্য নিতে হয়, তাকেই নিত্য সমাস বলে। যেমন:- ভাষান্তর= অন্য ভাষা। গ্রামান্তর= অন্য গ্রাম। দিনান্তর= অন্য দিন। হাঁটাহাঁটি= কেবল হাঁটা। জ্ঞানমাত্র= কেবল জ্ঞান।

) অলোপ সমাস:যে সমাসে, পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় না তাকেই, অলোপ সমাস বলে। যেমন:- দুধেভাতে= দুধে ও ভাতে- অলপ দ্বন্দ্ব সমাস। রোদেপোড়া= রোদে পোড়া- অলক তৎপুরুষ ইত্যাদি।  

) বাক্যাশ্রয়ী সমাস: এক বা একাধিক বাক্য বা বাক্যাংশ যখন সমাসবদ্ধ রূপে ব্যবহৃত হয়, তখন তাকে বাক্যাশ্রয়ী সমাস বলে। যেমন:- বসে আঁকা প্রতিযোগিতা।   ফেলে আসা দিনগুলি। ইত্যাদি

নমুনা প্রশ্ন এবং তার উত্তর

১) “ইসাবের সঙ্গে কুস্তি লড়তে তো একেবারেই গড়রাজি”- নিম্নরেক পদটি কোন সমাসের উদাহরণ?

  • ক) অব্যয়ীভাব
  • খ)নঞ তৎপুরুষ
  • গ) বহুব্রীহি
  • ঘ) কর্মধারায়, 2017 উঃ খ) অব্যয়ীভাব

২) কর্মধারয় সমাসে প্রাধান্য থাকে-

  • ক)পূর্বপদের অর্থের
  • খ) পরপদের অর্থের
  • গ) উভয় পদের
  • ঘ) ভিন্ন অর্থ সমস্ত পদের  উঃ খ) পরপদের অর্থের

) “চরণ কমলের ন্যায়”- ব্যাসবাক্যটি সমাসবদ্ধ করে সমাসের নাম লেখ।

উঃ চরন কমলের ন্যায়= চরণকমল, উপমিত কর্মধারয় সমাস।

) নিত্য সমাজ কাকে বলে?   উঃ যে সমাসে সাধারণত ব্যাসবাক্য হয় না। ব্যাসবাক্য করতে গেলে অন্য কোন বাক্যের প্রয়োজন হয়, তাকে নিত্য সমাস বলে। যেমন: গ্রামান্তর= অন্য গ্রাম।

৫) গৌর অঙ্গ যাহার- ব্যাসবাক্যটি সমাসবদ্ধ করে সমাসের নাম লেখ।

উঃ গৌর অঙ্গ যাহার= গৌরাঙ্গ। সমাসের নাম- বহুব্রীহি সমাস।

৬) রামদাস আর কোন প্রশ্ন করি না।- নিম্নরেখ পদটি যে সমাসের উদাহরণ, সেটি হল-

  • ক)তৎপুরুষ
  • খ)অব্যয়ীভাব
  • গ) কর্মধারয়
  • ঘ) দ্বিগু     উঃ ) কর্মধারয়

৭) পরপদটি প্রধান হয় যে সমাসে, সেটি-

  • ক) অব্যয়ীভাব
  • খ)তৎপুরুষ
  • গ) দ্বিগু
  • ঘ) বহুব্রীহি  উঃ খ) তৎপুরুষ

৮) কৃত্তিবাস রামায়ণ রচনা করেন- নিম্নরেখ পদটি কোন সমাসের উদাহরণ?

  • ক) কর্মধারয় সমাস
  • খ) তৎপুরুষ সমাস
  • গ) বহুব্রীহি সমাস
  • ঘ) দ্বন্দ্ব সমাস   উঃ ) বহুব্রীহি সমাস

৯) যে সমাসে সমস্যমান পদ দুটির উভয় পদই বিশেষ্য ও পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায়, তাকে বলে-

  • ক) তৎপুরুষ সমাস
  • খ) কর্মধারয় সমাস
  • গ) দ্বন্দ্ব সমাস
  • ঘ) অব্যয়ীভাব সমাস উঃ খ) কর্মধারায় সমাস

১০) অলোপ সমাস কি?  উঃ যে সমাসে ঙঙঙঘীইঅ পদ গঠিত হবার পরেও, পূর্বপদের বিভক্তি, লুপ্ত হয় না, তাকে অলোপ সমাস বলে। যেমন: হাতেপায়ে= হাতে ও পায়ে

১১) “মেঘে ঢাকা” শব্দটির ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম উল্লেখ কর।

মেঘে ঢাকা= মেঘ দিয়ে ঢাকা।- করণ তৎপুরুষ সমাস (অলুক)

১২) ব্যাসবাক্য সহ একটি দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ দাও। উঃ সাদা-কালো= সাদা ও কালো।

১৩) সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি এবং দ্বিগু সমাসের পার্থক্য লেখ।

উঃ সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাসে, তৃতীয় পদের অর্থ প্রাধান্য পায়, কিন্তু দ্বিগু সমাসে, সমাহার বা সমষ্টি বোঝাবে। যেমন- দশানন= দশ আনন যার অর্থাৎ রাবণ অন্যদিকে ত্রিফলা= ত্রি ফলের সমাহার অর্থাৎ তিনটি ফলের সমষ্টিকে বোঝাচ্ছে।

১৪) বাক্যাশ্রয়ী সমাসের একটি উদাহরণ দাও।  উঃ বসে আঁকো প্রতিযোগিতা

বিভিন্ন সমাসের উদাহরণ- এক নজরে:

  • ১) মাতা-পিতা= মাতা ও পিতা- দ্বন্দ্ব সমাস।
  • ২) তেমাতা= তিন মাথার সমাহার।- সমাহার দ্বিগু সমাস।
  • ৩) নীলোৎপল= নীল যে উৎপল। রামদাস= যিনি রাম তিনিই দাস। কাঁচামিঠা= কাঁচা অথচ মিঠা।- কর্মধারয় সমাস।
  • ৪) রথদেখা= রথকে দেখা। রাজ্যপাল= রাজ্যকে পালন করেন যিনি ‌- তৎপুরুষ সমাস
  • ৫) গৌরাঙ্গ= গৌরাঙ্গ যার। বিনাপানি= বিনা পানিতে যার- বহুব্রীহি সমাস।
  • ৬) গ্রামান্তর= অন্য গ্রাম- নিত্য সমাস
  • ৭) অনুকূল= কূলের যোগ্য।- অব্যয়ীভাব
  • ৮) স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির- বাক্যাশ্রয়ী সমাস।

 টিপস:

  • ১) অর্থ অনুযায়ী সমাসবদ্ধ পদকে ব্যাসবাক্যে ভাঙতে হবে, অর্থাৎ ব্যাসবাক্য এমন করতে হবে, যেন তার অর্থ হয়।
  • ২) ব্যাসবাক্যকে এমনভাবে সমাসবদ্ধ করতে হবে, যেন তার অর্থ থাকে।
  • ৩) ব্যাসবাক্য যেমন গঠন করা হবে সমাসের নাম তেমন হবে অর্থাৎ ব্যাসবাক্য যদি সঠিক ভাবে তৈরি করা হয়, তাহলে সমস্যার নাম সঠিক হবে।

সমাস সংক্রান্ত আরো প্রশ্নের উত্তর জানতে click here

Leave a Comment

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading