দশম শ্রেণীর তথা মাধ্যমিকের আফ্রিকা কবিতাটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর সুন্দরভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে। মাধ্যমিকের বাংলা বিষয়ে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে qbangla.com এই ওয়েবসাইট ফলো করো। আফ্রিকা কবিতা থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলির উত্তর সুন্দরভাবে লেখা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ প্রশ্নগুলোর উত্তর ভালোভাবে লক্ষ্য কর।
আফ্রিকা কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
আফ্রিকা কবিতাটি ভালোভাবে পাঠ করলে লক্ষ্য করা যায় যে, এই কবিতাটিতে চারটি অংশের বিভক্ত।
- প্রথম অংশ: আফ্রিকার প্রাকৃতিক বৈচিত্র নান্দনিক ভাষায় ব্যক্ত করেছেন কবি।
- দ্বিতীয় অংশ: আফ্রিকার উপর হওয়া অমানবিক ও নির্লজ্জ অত্যাচারের কাহিনী বিবৃত হয়েছে।
- তৃতীয় অংশ: সেই সময় পৃথিবীর অন্য প্রান্তে কি ঘটনা ঘটছিল তার বিবরণ কবি দিয়েছেন।
- চতুর্থ অংশ: যুগান্তরের কবিকে আহবান করেছেন। আফ্রিকার সমস্ত মান সম্মান ফিরিয়ে দেবেন। এবং মনহারা মানবীর দ্বারে ক্ষমা কর বলে উঠবেন।
সমুদ্র পাড়ে সেই মুহূর্তে কি ঘটেছিল
উঃ) সমুদ্র পাড়ে সেই মুহূর্তে তাদের পাড়ায় পাড়ায় মন্দিরে বাজছিল পূজার ঘন্টা। সকালের সন্ধ্যায় দেবতার নামে শিশুরা মায়ের কোলে খেলা করছিল।
2. স্রষ্টা নিজের প্রতি অসন্তোষে কি করেছিল
উঃ) স্রষ্টা নিজের প্রতি অসন্তোষে নতুন সৃষ্টিকে বারবার বিধ্বস্ত করেছিলেন এবং প্রাচী ধরিত্রীর বুকের থেকে আফ্রিকাকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন।
3. এলো মানুষ ধরার দল তারা কি জন্য এলো
উঃ) সাম্রাজ্যবাদী লোলুপ শক্তি আফ্রিকায় এসেছিল তাদের বর্বর লোভ নিয়ে। আফ্রিকায় চলেছিল নির্মম অত্যাচার।
4. পশুরা বেরিয়ে এল কোথা থেকে পশুরা বেরিয়ে এল
উঃ) আফ্রিকা কবিতায় পশুরা বলতে সাম্রাজ্যবাদী লোভী মানুষের দলকে বোঝানো হয়েছে। যারা গুপ্ত গুহ্বর থেকে বেরিয়ে এসেছিল এবং তাদের অশুভ ধ্বনিতে দিনের অন্তিম কালকে ঘোষণা করেছিল।
5. তোমার ভাষাহীন ক্রন্দনে আফ্রিকার ক্রন্দনকে কবি ভাষাহীন বলেছেন কেন
উঃ) সাম্রাজ্যবাদী লোভী মানুষের দল নির্লজ্জ অমানুষতার রূপ নিয়ে আফ্রিকায় এসেছিল। আফ্রিকাবাসীর রক্ত অশ্রুতে ধূলী হয়ে উঠেছিল পঙ্কিল। তাই কবি তাদের ক্রন্দনকে ভাষাহীন বলেছেন।
6. বিদ্রুপ করেছিলে ভীষণকে কিভাবে বিদ্রোহ করেছিল
উঃ) আফ্রিকা কবিতায় আফ্রিকা, তার বিরূপ প্রকৃতিকে অর্থাৎ ভীষণকে বিরূপের ছদ্মবেশে বিদ্রুপ করেছেন
তিন নম্বর প্রশ্ন উত্তর
তিন নম্বর প্রশ্নের উত্তরের জন্য কবিতাটির বিষয়বস্তু ভালোভাবে উপলব্ধি করতে হবে। আগেই বলা হয়েছে কবিতাটির চারটি বিষয় আছে। এই চারটি বিষয় খুব ভালো করে বুঝে উঠতে পারলে, যে কোন প্রশ্নের উত্তর করতে পারবে। এই অংশে দুটি নমুনা প্রশ্ন উত্তর করে দেয়া হলো।
1. “সেখানে নিভৃত অবকাশে তুমি” – তুমি বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? সেখানে নিভৃত অবকাশে কি করেছিল?
উঃ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত “আফ্রিকা” নামক কবিতায় এই অংশে তুমি বলতে চির অবহেলিত আফ্রিকাকে বোঝানো হয়েছে।
নিভৃত অবকাশে কি করছিল: সৃষ্টিকর্তা আফ্রিকাকে প্রাচীর ধরিত্রির বুকে থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে কৃপণ আলোর অন্তপুর স্থাপন করেছিলেন। সেখানে আফ্রিকা নিভৃত অবকাশে দুর্গমের রহস্য সংগ্রহ করছিল। তার জল স্থল আকাশ দুর্বেদ্ধ সংকেতকে চিনে নিচ্ছিল। প্রকৃতির দৃষ্টি, অতীত জাদু, তার চেতনাতীত মনে মন্ত্র জাগাছিল। প্রকৃতির ছদ্মবেশে বিদ্রুপ করেছিল। ভয়কে হার মানাতে চাইছিল।
2. “এসো যুগান্তরের কবি”- যুগান্তরের কবি কে ? তিনি এসে কি করবেন?
উঃ) আফ্রিকা কবিতায় যুগান্তরের কবি বলতে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আগামী দিনের পথপ্রদর্শককে বুঝিয়েছেন। যিনি নতুন সূর্যের উদয় ঘটাবেন। যিনি আফ্রিকার সমস্ত অপমান মুছে দিয়ে নতুন দিনের আলোর উদয় ঘটাবেন। তিনিই হলেন যুগান্তরের কবি। যুগান্তের কবিকে আসন্ন সন্ধ্যার শেষ রশ্মিপাতে অপমানিত আফ্রিকার দ্বারে এসে দাঁড়াতে বলেছেন।
যুগান্তের কবি কি করবেন: সাম্রাজ্যবাদী লোভীর দল আফ্রিকার উপর অকথ্য নির্লজ্জ অত্যাচার চালিয়েছেএ তাদের অপমানিত ইতিহাসের চির চিহ্ন দিয়ে গেছে। এই অপমানের গ্লানি মুছতে কবি যুগান্তরের কবিকে আহবান করেছেন। মন হারা আফ্রিকার দাড়ি আফ্রিকার দ্বারে দাঁড়িয়ে সত্য এবং সুন্দরের পূজারী যুগান্তরে কবিকে ক্ষমা করো বলে উঠতে হবে এবং সেটাই হবে সভ্যতার শেষ পুণ্য বাণী।
রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর
1.“গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে” – গর্বে কারা অন্ধ? তারা কি করেছিল? উক্তিটির মধ্যে দিয়ে কবি কি বলতে চেয়েছেন?
গর্ভে কারা অন্ধ: সাম্রাজ্যবাদী অর্থ লোলুপ লোভী মানুষের দল গর্বে অন্ধ। অর্থাৎ তারা ইউরোপীয় শিক্ষা-দীক্ষায় অহংকারে অন্ধ হয়ে পড়েছিল।
তারা কি করেছিল: ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী লোলুপ শক্তির দল আফ্রিকায় নির্লজ্জ অমানবিকভাবে অত্যাচার চালিয়েছিল।
কবি কি বলতে চেয়েছেন: আফ্রিকা দুর্গম অরণ্যে ঢাকা এক সময় সকলের কাছে অপরিচিত ছিল। সকলের কাছেই অপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে ছিল। কিন্তু ইউরোপীয় সাম্রাজবাদী দল এর লোভী চোখ পরল আফ্রিকার উপর। তারা লোহার হাতকড়ি নিয়ে তাদেরকে ক্রীতদাসে পরিণত করতে এল। তাদের নখ আফ্রিকার নেকড়ে চেয়েও ভয়ংকর। তারা এতটাই অন্ধ যে সূর্যহারা অরণ্যেও অন্ধ। তারা আফ্রিকার উপর নির্লজ্জ অমানবিক অত্যাচার চালালো। আফ্রিকা বাসির রক্তের অশ্রুতে ধুলি পরিণত হল পঙ্খিলে। তাদের কাটা মারা জুতোর তলায় বীভৎস কাদার চিহ্ন ছড়িয়ে রইল। তৈরি হয়ে গেল আফ্রিকার অপমানিত ইতিহাসে চিরচিহ্ন।
ভালো উত্তর লেখার জন্য টিপস
- কবিতাটি চারটি পার্টে ভাগ করে নিয়ে ভালোভাবে পড়ো
- যে পার্ট থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে সেই পার্টের বিষয়টি ভালোভাবে উপলব্ধি করো
- মূলত তৃতীয় অংশ থেকে রচনাধর্মী প্রশ্নটি হয়ে থাকে। তাই এই অংশটি ভালো করে পড়ো।
- প্রথম অংশ থেকে সাধারণত এক নম্বরে প্রশ্ন বেশি হয়ে থাকে অর্থাৎ প্রথম অংশটি এক নম্বরের জন্য ভালোভাবে রিডিং পড়ো
- দ্বিতীয় অংশ থেকে তিন নম্বরে প্রশ্ন সচরাচর হয়।
- চতুর্থ অংশ থেকে ৫ নম্বর এবং তিন নম্বর উভয়ই প্রশ্ন হয়। তাই চতুর্থ অর্থাৎ শেষ অংশটি ভালোভাবে পড়ো