Slst বা msc পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে wbcssc শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায়, বাংলা সাবজেক্টের পাঠ্যগ্রন্থগুলির মধ্যে নবম শ্রেণীর পাঠ্য বই: হল সাহিত্য সঞ্চয়ন। নবম শ্রেণীর সাহিত্য সঞ্চয়নের একটি কবিতা “নূতন জীবন”। কবি হিরন্ময়ী দেবী রচিত। এই “নূতন জীবন” কবিতাটির খুঁটিনাটি বিষয়, বিষয়বস্তু তাৎপর্য গভীরে এবং নমুনা প্রশ্ন বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা বাংলা বিষয় আরও প্রশ্ন-উত্তর জানতে click here
পটভূমিকা– এই পৃথিবী তথা বিশ্ব সংসার অনন্ত রহস্যময়। কোন কিছু জিনিস বা বিষয় যেমন চিরস্থায়ী নয় তেমনি কোন জিনিস ধ্বংস হয়ে যাওয়া মানেই সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। যার সৃষ্টি আছে তার বিনাশ আছে। আর যার বিনাশ আছে তার নতুন সৃষ্টি আছে। তাই এই পৃথিবীতে সমস্ত কিছু যেমন সৃষ্টি হয় তার বিনাশ ও হয়। তাই এই পৃথিবী অনন্তময় , কোন কিছুই শেষ হওয়ার নয়। জীবন যেমন শুরু হয় তেমন তার শেষ হয়।
আবার জীবন যেখান থেকে শেষ হয় সেখান থেকেই আবার নতুন জীবনের সূচনা ঘটে। প্রতিদিন যেমন প্রকৃতির নিয়মে ফুল ফোটে আবার তা ঝরেও যায় পুনরায় আবার নতুনভাবে ফুল ফোটে। তাই এই পৃথিবীর প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী কোন কিছুই চিরস্থায়ী বা অনন্তকাল থাকে না।
নূতন জীবন কবিতার বিষয়বস্তু
হিরন্ময়ী দেবীর রচিত নতুন জীবন কবিতায় লেখিকা এই পৃথিবীর সৃষ্টি রহস্য এবং নতুন জীবন এর সৃষ্টি এবং পুরাতন জিনিস এর বিনাশ এর কথা বলেছেন। এই পৃথিবীর সমস্ত পুরাতন জিনিস একদিন শেষ হয়ে যায়। ধ্বংস হয়ে যায়। বিনাশ হয়ে যায়। আবার সেই জায়গায় নূতন জীবনের আগমন ঘটে অর্থাৎ এই পৃথিবী অনন্ত অসীম রহস্যময় যেখানে কোন কিছুই শেষ হয়ে যায় না। প্রতিদিনই কিছু না কিছু ধ্বংস হয় এবং সেই জায়গায় নব নব জিনিস সৃষ্টি হয় । প্রতিদিন বাগানে প্রকৃতির নিয়মে ফুল ফোটে আবার প্রতিদিন ঝরেও যায়। আবার নতুন করে ফুল ফোটে। শুধু তাই নয়, সূর্যের আলো যেমন অস্তাচলে চলে যায় আবার নতুনভাবে পরের দিন নতুন তেজে সূর্য উদিত হয়।
একটি পাখির গান থেমে গেলে শত শত পাখি আবার গান গেয়ে ওঠে। একটি বসন্ত পার হয়ে যায় আবার নতুন বসন্ত ছুটে আসে। আকাশে একটি তারা খসে গেলে শত শত তারা আকাশে প্রজ্বলিত হয়ে ওঠে, জাহ্নবী অর্থাৎ গঙ্গা ঢেউ যেমন পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়েছে তেমনি সাগরে এসে তার বিনাশ হয়েছে। আবার পর্বত পাহাড় থেকে নতুন নদী নতুন জীবনে ছুটে চলে । তাই বিরহের জন্য আমরা বৃথাই কেঁদে মরি। আসলে বিরহ আসে নতুন ভাবে মিলন হওয়ার জন্য।
নূতন জীবন কবিতার উৎস
নবম শ্রেণীর সাহিত্য সঞ্চয়ন বইয়ের পাঠ্য “নূতন জীবন” কবিতাটি হিরন্ময়ী দেবী রচিত “জীবনের মূল্য” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। এই কবিতাটি ভারতী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল
কবিতার সারাংশ- নূতন জীবন কবিতায় লেখিকা আসলে এই পৃথিবী যে অনন্ত রহস্যময় সেটা বলতে চেয়েছেন। পৃথিবীর সমস্ত কিছু অর্থাৎ কোন কিছুর বিনাশ নেই বা শেষ হবার নেই। সমস্ত কিছুই ধ্বংস হয়, নতুন সৃষ্টির জন্য। পুরাতন চলে যায় নতুন আবার আসে অর্থাৎ বিরহ বা কষ্ট বেদনা জন্য মানুষ কষ্ট ভোগ করে দুঃখ ভোগ করে কিন্তু তা চিরস্থায়ী হয় না। আবার নতুন উদ্যমে, নতুন ভাবে মানুষের জীবনে নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটে। পৃথিবীর এই নিয়ম প্রকৃতির নিয়মে চলতেই থাকে। তাই কোন কিছুই শেষ হয় না।
কবিতাটির নামকরণ:- কবিতাটির নাম নূতন জীবন অর্থাৎ নতুনভাবে উৎপত্তি বা নতুন কিছু সৃষ্টি। লেখিকা এই কবিতায় পৃথিবীর সমস্ত কিছুই যে একদিন ধ্বংস হয় এবং তার জায়গায় যে নতুন ভাবে নতুন জীবনের উদয় হয়– সেটা বলতে চেয়েছেন এই কবিতায়। তিনি বিভিন্ন প্রকৃতির নিয়ম উদাহরণ টেনে বলেছেন যে ধ্বংস শুধুমাত্র নতুন জীবনের জন্যই হয়ে থাকে। নতুন উদ্যোগে জীবন ছুটে চলার জন্যই ধ্বংস। তাই কবিতাটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিচার বিশ্লেষণ করে এটুকু বলাই যায় যে কবিতাটির নামকরণ যথার্থ এবং যথাপযুক্ত হয়েছে।
শব্দার্থ টিকা:- বিহঙ্গগীত– পাখির গান জাহ্নবী –গঙ্গা হিমগীরি– পর্বত গীতখানি– গান তোটিনী– নদী
কবি সম্পর্কিত তথ্য:– হিরন্ময়ী দেবী ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন জানকীনাথ ঘোষাল। ছোটদের মাসিক পত্র সখায় তার নিয়মিত লেখা প্রকাশিত হতো। হিরন্ময়ী দেবী তার ছোট বোন সরলা দেবীর সঙ্গে কিছুদিন ভারতী পত্রিকার সম্পাদনা করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন তার মামা। তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি লেখা কবিতা হল আগমনী, এ নহে বিদায়, কবি, কিরণের মৃত্যু, গণতন্ত্র, প্রেম ফোটা, ভাইফোঁটা, শ্রী পঞ্চমী সংসার ইত্যাদি বহু বিখ্যাত লেখা তার কবিতা।
নূতন জীবন কবিতার প্রশ্ন উত্তর
স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনে বাংলা বিষয়ে বেশ কিছু নমুনা প্রশ্ন এই কবিতা থেকে তুলে ধরা হলো–
১.হিরন্ময়ী দেবী রচিত “নতুন জীবন” কবিতাটির উৎস কি? উঃ জীবনের মূল্য
২.হিরন্ময়ী দেবী রচিত “নতুন জীবন” কবিতাটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
- ভারতী পত্রিকায়
- বঙ্গদর্শন পত্রিকায়
- সখা পত্রিকায়
- শনিবারের চিঠি পত্রিকায় উঃ ভারতী পত্রিকায়
৩. “হিমগিরি হতে পুন/ তটিনী বহিয়া আনে/ নূতন জীবন”- উল্লিখিত পঙক্তিটি কবি কে?
- আশাপূর্ণা দেবী
- হিরণ্ময়ী দেবী
- বেগম রোকেয়া
- জীবনানন্দ দাশ উঃ হিরন্ময়ী দেবী
৪. “বিরহের গীতখানি/ না হইতে অবসান/ গাহে রে মিলন”- উল্লেখিত পঙক্তিটি কোন কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে?
- ঘর
- এই তার পরিচয়
- নূতন জীবন
- ব্যথার বাঁশি উঃ নূতন জীবন
৫. “একটি বিহঙ্গগীত/ চিরতরে থেমে যায়- তার ফলে কি হয়?
- আর পাখি গান গায় না,
- পাখি গান গায়,
- শত পাখি গায়,
- পাখি উড়ে যায়, উঃ শত পাখি গায়
৬. “বিরহের গীতখানি/ না হইতে অবসান- কবি বিরহের গান থেকে অবসান হবে না কেন বলে মনে করেন?
- মিলনের গান আছে
- বিরহের গান আছে তাই
- কষ্টের গান আছে তাই
- দুঃখের গান আছে তাই ans মিলনের গান আছে।
বিশেষ টিপস:- মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনে বাংলা বিষয়ে প্রশ্ন mcq হয় তাই কবিতাটির লাইন বারবার রিডিং পড়বে। এই কবিতা থেকে লাইনগুলি পূর্বাপর রিডিং পড়ে মনে রাখতে হবে এবং বিষয়বস্তু ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। কবিতার লাইনগুলি ঠিকঠাক মনে থাকলে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব সহজ হবে। তাই কবিতাটি অন্তত প্রতিদিন একবার করে রিডিং করতে হবে। যাতে লাইনগুলি পরপর মনে থাকে। কেননা স্কুল সার্ভিস কমিশনের বাংলা বিষয়ে পরীক্ষায় বেশিরভাগ লাইন তুলে প্রশ্ন হয়। তাই লাইনগুলি বারবার ভালোভাবে মনে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
এসএলএসটি বা মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ে আরো প্রশ্নের উত্তর জানতে এবং বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা জানতে- click Here