Slst বা msc পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায়, বাংলা সাবজেক্টের পাঠ্যগ্রন্থগুলির মধ্যে দশম শ্রেণীর পাঠ্য বই: হল সাহিত্য সঞ্চয়ন। দশম শ্রেণীর সাহিত্য সঞ্চয়নের একটি কবিতা তিন পাহাড়ের কোলে। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় রচিত। এই তিন পাহাড়ের কোলে কবিতাটির খুঁটিনাটি বিষয়, বিষয়বস্তু তাৎপর্য গভীরে এবং নমুনা প্রশ্ন বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা বাংলা বিষয় আরও প্রশ্ন-উত্তর জানতে click here
তিন পাহাড়ের কোলে পটভূমিকা
বর্তমানে আধুনিক যুগে ব্যাপক নগরায়নের ফলে ক্রমশ সবুজ বনভূমি তথা প্রকৃতি বিনষ্ট হচ্ছে। শহুরে বন্দী জীবনে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে । শহরবাসী শুধুই কর্মব্যস্ততায় মত্ত। মানুষ ক্রমশ সবুজ প্রকৃতির কোল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। শহরবাসী মানুষের মন সর্বদা প্রকৃতির কোলে ছুটে বেড়াতে চায়। শহরের বন্দী খাঁচা জীবন থেকে পালিয়ে প্রকৃতির সবুজ ঘেরা কোলে বেড়াতে চায়। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় শহরে থেকে এই শহরের নাগরিক জীবনের যন্ত্রণাক্লিষ্ট ব্যথা উপলব্ধি করেছেন। তার মন সর্বদা সবুজ প্রকৃতির কোলে ছুটে বেড়াতে চেয়েছে। তাই আলোচ্য কবিতায় আমরা দেখতে পাই তিন বন্ধু মিলে তিন পাহাড়ের কোলে শহরের নাগরিক জীবন থেকে পালিয়ে প্রকৃতির কোলে বেড়াতে গেছে। এমন ফটো ভূমিকায় কবিতাটি রচয় রচিত।
তিন পাহাড়ের কোলে কবিতার বিষয়বস্তু
কবিতাটি শহরে খাঁচা বন্দি জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত হয়েছে। তিন বন্ধু শহরে জীবন থেকে পালিয়ে ট্রেনে করে তিন পাহাড়ের কোলে বেড়াতে গেছেন। অর্থাৎ সবুজ ঘেরা বন প্রকৃতির কোলে বেড়াতে গেছেন। তারা ট্রেনে করে ভ্রমণ করছেন। হঠাৎ অন্ধকারে তিন পাহাড়ে ট্রেন থেকে নেমে ভ্রমণ পিপাসু তিনজন বন্ধুর তিন জোড়া চোখ আটকে গেল সেই জনমানববিহীন তিন পাহাড়ের কোলে। স্টেশনে চারিদিকে আকাশ ভরা তারা। এমন একটি দেশে সকলেই পথ হারায়। তিন পাহাড়ের কোলের কাছে ঝরনা কাদর টিলা পাথর বনভূমির কাছেই এসে পথ হারিয়ে যায়।
কেননা পথ হারিয়ে যায় যেদিকে পথ সেদিকেই আছে। কবির কাছে মনে হয়েছে তিন পাহাড়ের কোলের বনভূমির ওপারে কোন একটা কাল্পনিক বনভূমির রাজ্য আছে। যেখানে ফুসুর ফাসুর ঘুসুর স্বপ্নের মধ্যে কথা কয়। তিন পাহাড়ের কোলে নেমে কবি উপলব্ধি করলেন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য পূব আকাশে আস্তে আস্তে আলোর ঘোমটা খুলে যাচ্ছে। এবং সেখানে কোন সবুজ গ্রাম তিন পাহাড়ে কোলে দেখা যাচ্ছে। তাই কবি আর শহরে বন্দী হয়ে থাকতে চান না। তিনি চান, তার স্বপ্নের রাজ্য, সবুজের রাজ্যে বেড়াতে। সেজন্য তিন পাহাড়ের কোলে নকশীকাঁথার মতো শিশুদের কলরব শোনা যায়।
তিন পাহাড়ের কোলে কবিতার উৎস
“তিন পাহাড়ের কোলে” কবিতাটি কবি “শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ” থেকে নেওয়া হয়েছে।
বিষয়বস্তুর তাৎপর্য:- কবিতাটি আসলে বর্তমান আধুনিক সভ্যতার নগরায়নের ফলে সবুজ প্রকৃতি যে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে এবং শহরে খাঁচাবন্দী জীবন কিভাবে সবুজের ছোঁয়া পেতে চাইছে– তার একটা আকাঙ্ক্ষা এই কবিতায় ব্যক্ত হয়েছে। কবিতাটি রূপকের মাধ্যমে নাগরিক জীবনের যন্ত্রণা ক্লিষ্ট খাঁচা বন্দী জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে তিন পাহাড়ের কোলে অর্থাৎ সবুজের কোলে পালিয়ে যাওয়ার একটা আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।
কবিতাটির নামকরণ:- তিন পাহাড়ের কোলে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের মনোভূমির দ’য় অর্থাৎ তার চির স্বপ্নের রাজ্য সবুজ প্রকৃতির রাজ্য।তিন বন্ধু মিলে তিন পাহাড়ের কোলে বেড়াতে গেছেন। সেখানে সবুজ প্রকৃতি দেখে তিন জোড়া চোখ আটকে গেছে অর্থাৎ সেই জনমানববিহীন স্টেশনে প্রকৃতির অপার সবুজ সৌন্দর্য দেখে কবি মুগ্ধ হয়েছেন। তিনি সেখানে পথ হারিয়েছেন । সেখানকার ঘন সবুজ বনভূমি দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। তাই কবিতাটির বিষয়বস্তু দিক দিয়ে বিচার করলে নামকরণ যথার্থ হয়েছে বলেই আমাদের ধারণা।
শব্দার্থ টিকা:- হাওয়াবিলাসী– ভ্রমণ পিপাসু । মনোভূমির দ’য়– কাল্পনিক স্বপ্নের রাজ্যের উদয়। কাঁদড়– পাহাড়ের গুহা। এই শব্দটি কান্দর থেকে নাসিক্যভবন হয়ে কাঁদর হয়েছে।
কবি সম্পর্কিত তথ্য:– কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ “হে প্রেম, হে নৈঃশব্দ্য”। তার কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা 51 টি । তার অন্যতম কাব্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে “ধর্মে আছে জিরাফেও আছি”, “হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান”, “সোনার মাছি খুন করেছি”, “যেতে পারি কিন্তু কেন যাব” ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। এছাড়াও “অবনী বাড়ি আছো?”, “কুয়োতলা” নামে দুটি বিখ্যাত উপন্যাস রয়েছে। তিনি কৃত্তিবাস পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
তিন পাহাড়ের কোলে প্রশ্নোত্তর mcq
স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনে বাংলা বিষয়ে বেশ কিছু নমুনা প্রশ্ন এই কবিতা থেকে তুলে ধরা হলো–
১. “তিন পাহাড়ের কোলে” কবিতাটির উৎস কি? উঃ ক্তি চট্টোপাধ্যায় শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ
২. শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম কাব্যের নাম কি”
- হে প্রেম হে নৈঃশব্দ্য
- কুয়োতলা
- ধর্মে আছি জিরাফেও আছি
- সোনার মাছি খুন করেছি উঃ হে প্রেম, হে নিঃশব্দ্য
৩. “ঝরনা, কাঁদড়, টিলা, পাথর বনভূমির কাছেই”- কাঁদড় শব্দের অর্থ কি?
- পাহাড়
- মাটি
- কাঁদা
- পাহাড়ের গুহা উঃ পাহাড়ের গুহা
৪. কাঁদড় শব্দটিতে কি ধরনের ধ্বনি পরিবর্তন লক্ষিত হয়েছে? উঃ কাঁদড় শব্দটিতে নাসিক্যভবন সংঘটিত হয়েছে। কান্দর>কাঁদড়
৫. “মনোভূমির দ’য়”- কথাটির অর্থ কি ? উঃ মনোভূমির দ’য়-কথাটির অর্থ হল মনের মধ্যে উদয় হওয়া ভুমি অর্থাৎ কাল্পনিক রাজ্যের উদয়। এখানে তিন পাহাড়ের কোলে সবুজ বনভূমির কথা বলা হয়েছে।
৬. “ সহজ করে বাঁচা কি আর খাঁচাতে সম্ভব”- এখানে খাঁচা বলতে –
- শহরে জীবন
- গ্রামের জীবন
- বেড়াতে যাওয়া
- বন্দী দশা উঃ শহরে জীবন
৭. “এমন একটি দেশে আসলে সক্কলে পথ হারায়”- উল্লিখিত পঙক্তিটি কোন কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে?
উঃ তিন পাহাড়ের কোলে
৮. “হাওয়াবিলাসি তিন জোড়া চোখ আটকে গেল ফ্রেমে”- হাওয়াবিলাসি শব্দের অর্থ কি ?
- হাওয়া খাওয়া
- হাওয়াতে চলে যাওয়া
- ভ্রমণ পিপাসু
- হাওয়া নেই উঃ ভ্রমণ পিপাসু
১০. “জনমানব বিহীন স্টেশন, আকাশ ভরা তারায়”- উল্লিখিত পন্থটির কবির নাম কি?
উঃ শক্তি চট্টোপাধ্যায়
১১. তিন পাহাড়ের কোলে কজন বেড়াতে গিয়েছিলেন? উঃ তিনজন
১২. “এমন একটি দেশে আসলে সকলে পথ হারায়”- এখানে কোন দেশের কথা বলা হয়েছে?
উঃ তিন পাহাড়ের কোলে
১৩. তিন পাহাড়ের কোলে কবিতায় ট্রেনে করে তিন পাহাড়ের কোলে যে সময় নেমেছিলেন সেই সময়টা হল –
- দিন
- সকাল
- রাত্রি
- অন্ধকার উঃ অন্ধকার
বিশেষ টিপস:- এই কবিতা থেকে লাইনগুলি পূর্বাপর রিডিং পড়ে মনে রাখতে হবে এবং বিষয়বস্তু ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। কবিতার লাইনগুলি ঠিকঠাক মনে থাকলে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব সহজ হবে। তাই কবিতাটি অন্তত প্রতিদিন একবার করে রিডিং করতে হবে। যাতে লাইনগুলি পরপর মনে থাকে। কেননা স্কুল সার্ভিস কমিশনের বাংলা বিষয়ে পরীক্ষায় বেশিরভাগ লাইন তুলে প্রশ্ন হয়। তাই লাইনগুলি বারবার ভালোভাবে মনে রাখার চেষ্টা করতে হবে। এসএলএসটি বা মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ে আরো প্রশ্নের উত্তর জানতে এবং বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা জানতে- click Here