> তোমার জীবনে একটি স্মরনীয় ঘটনা class 10 » Qবাংলা

তোমার জীবনে একটি স্মরনীয় ঘটনা class 10

একটি স্মরনীয় ঘটনা;- মাধ্যমিকে বাংলায় অর্থাৎ দশম শ্রেণীর বাংলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্মিতি অংশ হলো প্রবন্ধ রচনা। এতে মাধ্যমিকে দশটি নম্বর থাকে। পরীক্ষায় সর্বমোট চারটি আসে। একটি বেছে নিয়ে লিখতে হয়। তোমরা তোমাদের প্রস্তুতি যদি যথাযথ এবং ভালোভাবে করে থাকো তাহলে তোমরা রচনা বা প্রবন্ধ খুব সহজে লিখতে পারবে। মাধ্যমিকে প্রবন্ধ রচনা করা বা লেখা খুব কঠিন বিষয় নয়। তথ্যগুলো সংগ্রহ করা থাকলে তোমরা খুব সহজে যে কোন রচনা লিখতে পারবে। আমি এখানে একটি তোমাদের রচনা দিয়ে দিলাম। মূলত মাধ্যমিকে চার ধরনের রচনা পরে-

  1. বিজ্ঞান বিষয়ক রচনা
  2. পরিবেশ বিষয়ক রচনা
  3. সাম্প্রতিক বিষয়ের রচনা এবং
  4. অন্যান্য বিষয় রচনা-একটি স্মরনীয় ঘটনা

এই অংশে আমরা তোমাদের অন্যান্য বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনাতোমার জীবনে একটি স্মরনীয় ঘটনা পেশ করা হল:- for more question answers click here

মাধ্যমিক প্রবন্ধ রচনা 

পরিচিতি: জীবন একটি চমকপ্রদ যাত্রা,   একটি স্মরনীয় ঘটনা যেখানে প্রতিটি মুহূর্ত একটি নতুন অভিজ্ঞতার সাথে পরিপূর্ণ । এই পৃথিবী সবসময় চলতে থাকে, এবং সেই সময়ে আমরা যে স্মরণীয় ঘটনা অধিকার করি, সেগুলি স্মৃতি কোঠায় অমূল্য সম্পদ হয়ে রয়ে যায় । জীবনের চলার পথে মানুষ বহু বিচিত্র ঘটনার সম্মুখীন হয়। সেই সব ঘটনা তার মনের স্মৃতি কোঠায় স্মরণীয় হয়ে থাকে। পরবর্তীতে সেই সমস্ত ঘটনা তার পথ চলার সাথী বা সঙ্গী হয়ে থাকে। হয়তো জীবনের চলার পথে ঘটা বিভিন্ন ঘটনাগুলি পর পর মনে থাকে না। কিন্তু এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা স্মৃতি  বা একটি স্মরনীয় ঘটনা যেগুলো মানুষের জীবনে এক আমল পরিবর্তন এনে দেয়।

স্মরণীয় ঘটনা  গুরুত্ব:- মানুষ তার জীবনের চলার পথে বিচিত্রময়। বহু মানুষের সঙ্গে যেমন পরিচয় ঘটে তেমনি বহু ঘটনার সঙ্গে তার পরিচয়ও ঘটে। সেই ঘটনাগুলো কখনো অপ্রীতিকর ঘটনা হতে পারে আবার তা স্মৃতিমধুর আনন্দময় মুহূর্ত হতে পারে। মানুষ সাধারণত স্মৃতি মধুর আনন্দময় ঘটনাগুলোই তার জীবনের স্মৃতি কোঠায় মনে রেখে দেয় কিন্তু পাশাপাশি কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও তার জীবনকে এক সন্ধিক্ষণে দাঁড় করিয়ে দেয়। সেখান থেকে মানুষ তার পূর্ব অভিজ্ঞতা   একটি স্মরনীয় ঘটনা থেকে কিছু জ্ঞান লাভ করে । তাই আনন্দময় মুহূর্তগুলোর পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো মানুষের স্মৃতি কোঠায় থেকে যায়। একটি স্মরনীয় ঘটনা  বা এই ঘটনাগুলি আমাদের চিন্তা, আত্ম-বিশ্বাস এবং জীবনের দিকে আমাদের দিক পরিবর্তন করে।

আমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা: আমরা সবাই আমাদের জীবনে কিছু অমূল্য ঘটনা অধিকার করি, যেগুলি সাধারণ সময়ের ভিত্তিতে অত্যন্ত স্মরণীয় হয়। আমিও আমার জীবনের এই ছোট্ট চলার পথে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি। বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা যেমন সাক্ষী থেকেছি তেমনি অনেক আনন্দঘন মুহূর্তও আমার সঙ্গী হয়ে থেকেছে। আমার জীবনে ঘটা সেই রোমাঞ্চকর ঘটনাটি ছিল নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় একটি ফুটবল মাঠে চলা আন্ত-ফুটবল টুর্নামেন্ট।

ঘটনাটির বিশদ বর্ণনা:- সময়টি ছিল জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়। বর্ষাকাল। তখন আমি নবম শ্রেণীর ছাত্র। বিদ্যালয় এর একটি অন্ত ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল এবং সেই খেলাটি ছিল বর্ধমানের একটি আলামিন মিশনের মাঠে এবং খেলাটি হবে আলামিন মিশনের ছেলেদের সঙ্গে। আমরা খুবই উত্তেজিত ছিলাম সেই খেলার জন্য। যদিও আমার ফুটবল খেলা খুবই প্রিয়। ছোটবেলা থেকেই আমি খুব ভালো ফুটবল খেলতাম। বিদ্যালয়েও আমি ভালো ফুটবল খেলার সুবাদে 11 জনের দলে সুযোগ পেয়েছিলাম। আমরা ছিলাম মোট ২২ জন। সঙ্গে আমাদের দুজন স্যার ছিলেন। আমরা অবশ্য একটা নির্দিষ্ট গাড়ি ভাড়া করে আমাদের বিদ্যালয় থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে বর্ধমানের আল-আমিন মিশনের মাঠে গিয়েছিলাম। স্যারেরা অবশ্য তারা নিজেদের নিজস্ব বাইকে করে মাঠে পৌঁছেছিলেন।

  • পর্ব-১
  • আমরা ২২ জন আলামিন মিশন এর মাঠে তিনটে নাগাদ পৌঁছে গিয়েছিলাম। খেলা শুরু হবে চারটে নাগাদ। মাঠে পৌঁছে আমরা সবাই অবাক হয়ে গেলাম। কারণ মাঠ ছিল বিশাল বড় এবং মিশনটিরও ছিল বিশাল বড় এলাকা জুড়ে। প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী ছিল। সেই ছাত্র-ছাত্রীরা মাঠের চারিদিকে অপেক্ষা করছিল আমাদের খেলা দেখার জন্য। আশেপাশের গ্রাম থেকেও কিছু সাধারণ মানুষও এসেছিল খেলা দেখার জন্য। রীতিমতো আমরা ড্রেস পোশাক পড়ে মাঠে নেমেছিলাম। তবে খেলা শুরুর আধঘন্টা আগে হালকা ঝিরঝির বৃষ্টি হয়েছিল। তাই মাঠে কাদা ছিল। মাঠময় তুমুল উত্তেজনা ছিল। খেলা শুরু হয় চারটে পাঁচ থেকে। আমাদের দুজন স্যার গোলকিপারের পাশ থেকে উপদেশ দিচ্ছিলেন। দর্শকের তুমুল হইহট্টগোলে কিছু শোনা যাচ্ছিল না।
  • পর্ব-২ 
  • প্রথম হাফে আল আমিনের মিশনের ছেলেরা দারুন খেলেছিল এবং তারা হাফটাইমের আগেই একটা গোল করে দেয়।  ফলে আমরা পিছিয়ে পড়ি। দ্বিতীয় হবে খেলা শুরুর আগে আবার কিছুটা বৃষ্টি হয় এর ফলে মাঠে আরো গাধা জমে যায় খেলা দারুনভাবে জমে উঠেছিল চারিদিকে রোমাঞ্চকর এক মুহূর্ত আমি লাইন ফরওয়ার্ডের খেলোয়াড় ছিলাম। বিজয় মাঝ মাঠ পরিচালনা করছিল। বিপ্লব ও আমাদের ক্লাসের সেরা খেলোয়াড় কিন্তু এই খেলা যেন কোন পাত্তাই পাচ্ছিল না। যা হোক আমি একজনের সঙ্গে ট্যাকেল করতে গিয়ে আমার বুড়ো আঙ্গুলের নখ উঠে যায়। আমি মাঠের বাইরে হয়ে যায়। খেলা শেষ হওয়ার আগে বিপ্লব একটি গোল শোধ করে দেয়। ম্যাচ ড্র হয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত আমরা ট্রাইবেকারের মাধ্যমে আমরা জয় লাভ করি।

স্মৃতিমধুর:- রোমাঞ্চকর খেলাতো আমরা জিতলাম। কিন্তু তারপরে ঘটেছিল আসল ঘটনা। খেলা শেষ হয়ে ড্রেস পোশাক পড়ে বাড়ি ফিরতে প্রায় সাতটা নাগাদ আল আমিনের মিশনে কেটে যায়। চারিদিকে অন্ধকার। স্যারেরা অবশ্য বাইকে করে নিজেদের বাড়ি চলে গেছিলেন কিন্তু আমরা সেই গাড়ি করে স্কুলে ফিরেছিলাম সাড়ে দশটা নাগাদ । অনেকেই সাইকেলে করে বাড়িতে পৌঁছে যায় কিন্তু আমার কোন সাইকেল ছিল না। আমি অন্য একজনের সাইকেলে স্কুলে এসেছিলাম। সে ছুটির পরে বাড়ি চলে গেছে। সেই রাতে আমি বাড়ি ফিরতে পারিনি বিপ্লবের বাড়িতে আমি রাত কাটিয়েছিলাম।

আমার বাবা বিদ্যালয়ে ৩-৪ বার এসে ঘুরে গেছেন ।তিনি শুনেছিলেন যে আমি খেলতে গিয়েছিলাম কিন্তু ফিরতে যে এত রাত হবে তা তুমি ভাবতে পারেননি। তাই তিনি দুশ্চিন্তার মধ্যে রাত কাটিয়েছিলেন। পরের দিন সকালে এসে আমার খোঁজ পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আমাকে অনেক বকেছিলেন।

আমার জীবনে প্রভাব:- এই স্মরণীয় ঘটনা আমার জীবনে একটি অদ্ভুত পরিবর্তন আনে। আলামিন মিশনের এমন রোমাঞ্চকর একটি ফুটবল ম্যাচ এবং সেইসঙ্গে সেই রাত্রিযাপন, রাত্রে স্কুলের মাঠে ফেরার মুহূর্ত- সত্যিই সেই দিনগুলি আমার জীবনে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল। তারপর রাত্রে না ফিরতে পারা- বাবা মায়ের চিন্তা। আমাকে ব্যাপকভাবে উদ্বেগ করে তুলেছিল। যা হোক সেই দিন আমি উদ্ধার পেয়েছিলাম । এই ঘটনার মাধ্যমে, আমি নিজেকে আরও সক্ষম এবং আত্মনির্ভর মনোবল সাবলে তুলতে পারি। এই ঘটনা আমার সারা জীবন স্মৃতি কোঠায় ভেসে থাকবে। আলামিনের মাঠভর্তি দর্ষক এবং সেখানে জিতে আসা- এক আনন্দঘন রোমাঞ্চকর মুহূর্ত আমার জীবনে রয়ে গেল।একটি স্মরনীয় ঘটনা।

ঘটনার গুরুত্ব:- এই ঘটনাটি আমার জীবনে অমূল্য, ছেলেবেলায় স্কুলের খেলা সত্যিই এক বিচিত্র অনুভূতি। সেই অনুভূতি হয়তো ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না কিন্তু সেই মুহূর্তগুলো- সেই বন্ধুদের খেলা- সেই 11 জনের মাঠে দাপাদাপি যা সত্যিই ভোলার নয়। পরে আমি অনেক থানায় খেলেছিলাম কিন্তু আলামিন মিশন এর মাঠের মতো খেলা আমি আর পাইনি।

জীবনের অমূল্যবান ঘটনা সর্বদা মনে রাখা:- জীবনের অমূল্যবান ঘটনাগুলি প্রতিটা মানুষের জীবনে স্মরণীয় হয়ে যায়। এই অভিজ্ঞতাগুলি বা ঘটনাগুলি আগামী দিনগুলি উত্তরন হিসেবে কাজ করতে পারে। আমার জীবনেও কিন্তু এমনই ঘটনা আমার উত্তরণের পথে সাহায্য করেছিল। তাই জীবনে চলার পথে বিভিন্ন ঘটনা সে অপ্রীতিকর ঘটনাই হোক বা দুঃখজনক ঘটনাই হোক বা সুখময় আনন্দঘন মুহূর্তই হোক। সর্বদা সেই ঘটনাগুলো মানুষের পাশেই স্মৃতি হয়ে থেকে যায়। সেগুলোকে স্মরণ করে মানুষ আনন্দ উপভোগ করতে পারে। তাই স্মরণীয় ঘটনাগুলি মানুষের জীবনে এক অনন্য সম্পদ।

মাধ্যমিক বাংলা আরও প্রশ্নোত্তর দেখতে  click here

Leave a Comment

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading