Slst বা msc পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায়, বাংলা সাবজেক্টের পাঠ্যগ্রন্থগুলির মধ্যে দশম শ্রেণীর পাঠ্য বই: হল সাহিত্য সঞ্চয়ন। দশম শ্রেণীর সাহিত্য সঞ্চয়নের একটি কবিতা পৃথিবী বাড়ুক রোজ । নবনীতা দেবসেন রচিত। এই পৃথিবী বাড়ুক রোজ কবিতাটির খুঁটিনাটি বিষয়, বিষয়বস্তু তাৎপর্য গভীরে এবং নমুনা প্রশ্ন বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা বাংলা বিষয় আরও প্রশ্ন-উত্তর জানতে click here
পৃথিবী বাড়ুক রোজ পটভূমিকা
বর্তমানে আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে সভ্যতা এতটাই উন্নত হয়েছে যে, মানুষের কাছে পৃথিবী আজ ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে। আধুনিক সভ্যতার নিত্য নতুন আবিষ্কারের ফলে মানুষ পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে চলে এসেছে। মুহুর্তের মধ্যে তারা এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যোগাযোগ করতে পারে। বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে মানুষের জীবন অত্যন্ত সহজ হয়ে উঠেছে। আজকের যুগে পৃথিবী যেন আমাদের ঘরের কোনায় এসে হাজির হয়েছে। পৃথিবীর সমস্ত কিছু আজ আমাদের হাতের মুঠোয় । দিন দিন পৃথিবী যেন ক্ষুদ্র পরিসরের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমরা বৃহত্তর অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছি আমাদের সামাজিক সম্পর্ক থেকেও ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে লেখিকা নবনীতা দেবসেন পৃথিবী বাড়ুক রোজ কবিতাটি রচনা করেছেন।
কবিতার বিষয়বস্তু:- বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞান সভ্যতার যুগে দাঁড়িয়ে লেখিকা নবনীতা দেবসেন জানিয়েছেন যে, এই পৃথিবী একেবারে হাতে ধরা আমলকির মতো – ছোট হয়ে যাক– এ তিনি চান না। এটা তার প্রার্থনা নন ।তিনি চান এই পৃথিবী ছড়াক। পৃথিবী বাড়ুক। তিনি তার পৃথিবীকে পরিশ্রম করে খুঁজে নেবেন। পৃথিবীকে তিনি বিস্তীর্ণ হতে বলেছেন। পৃথিবীর জন্য অফুরন্ত হয়ে উঠুক। লেখিকা নিজে ছোট । তিনি যেন ছোট হয়ে থাকতে চান এই অফুরন্ত পৃথিবীর কাছে। তিনি ছোট হতে হতে একগুচ্ছ রেশমের মতো নিরাকারের মত একদিন রাজপুতানি মখমলের শাড়ি পড়ে হয়তো আংটির ফোকর দিয়ে তিনি এই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেবেন। এই পৃথিবী অনেক বড়।
পৃথিবী কখনোই যেন ছোট না হয়। পশু পাখি উদ্ভিদরা বিন্দুমাত্র বিস্মিত নয়। কারণ ওরা সবকিছুই জানে যে, মানুষের আর দেরি নেই অর্থাৎ মানুষ যেভাবে বাড়ন্ত হয়ে উঠেছে পৃথিবী হয়তো একদিন ধ্বংস হতে পারে।।
উৎস – “পৃথিবী বাড়ুক রোজ” এই কবিতাটি নবনীতা দেবসেনের রচিত “রক্তে আমি রাজপুত” কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
বিষয়বস্তুর তাৎপর্য:- কবিতাটি আসলে বর্তমান আধুনিক সভ্যতার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে রচিত। বর্তমান সভ্যতার অগ্রগতি কিভাবে পৃথিবীকে ক্রমশ ছোট করে তুলছে এবং মানুষ কিভাবে সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে, বৃহত্তর পৃথিবী থেকে কিভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে– তার একটা আভাস এই কবিতায় দিয়েছেন।
কবিতাটির নামকরণ:
কবিতাটির নামকরণ যথার্থ হয়েছে বলেই আমাদের মত। কেননা কবিতাটির নাম পৃথিবী বাড়ুক রোজ অর্থাৎ পৃথিবী জন্য কখনোই মানুষের কার্যকলাপের দ্বারা সংকীর্ণ না হয়। পৃথিবী যেন মানুষের হাতে আমলকি ধরার মতো না হয়ে যায় । কারণ পৃথিবী হলো মানুষের কাছে বাঁচার আশা। সেই পৃথিবী যখন মানুষের কার্যকলাপের দ্বারা সংকীর্ণ হয়ে উঠবে তখন মানুষের জীবনধারণের নানান সমস্যা থেকে শুরু করে পৃথিবী ধ্বংসের মুখে যেতে পারে। তাই কবিতাটির নামকরণ পৃথিবী যেন কখনো ছোট না হয়ে যায় যথেষ্ট এবং যত উপযুক্ত হয়েছে।
কবি সম্পর্কিত তথ্য:– লেখিকা নবনীতা দেবসেনের প্রথম প্রকাশিত বই “প্রথম প্রত্যয়”। এছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, “খগেনবাবুর পৃথিবী”, “স্বাগত দেবদূত”, “আমি অনুপম”, “নবনীতা”, মঁসিয়ে হুলোড় হলিডে” “সমুদ্রের সন্ন্যাসিনী” “হে পূর্ণ তব চরণের কাছে” “করুনা তোমার কোন পথ দিয়ে” ইত্যাদি।
পৃথিবী বাড়ুক রোজ নমুনা প্রশ্নপত্র-
স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনে বাংলা বিষয়ে বেশ কিছু নমুনা প্রশ্ন এই কবিতা থেকে তুলে ধরা হলো-
১.পৃথিবী বারুক রোজ কবিতাটির উৎস কি?
উঃ রক্তে আমি রাজপুত
২. “এ আমার প্রার্থনীয় নয়”- কি প্রার্থনীয় নয়?
- পৃথিবী বেড়ে যাক
- বিশ্ব ছোট হয়ে যাক
- জল শেষ হয়ে যাক
- সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাক। উঃ বিশ্ব ছোট হয়ে যাক।
৩. “পৃথিবী অনেক বড়ো, পৃথিবীতে ছোট হতে নেই”- এই পংক্তিটি কোন কবিতা থেকে গৃহীত হয়েছে?
উঃ পৃথিবী বাড়ুক রোজ
৪. “আমার পৃথিবী হোক অফুরান অনন্ত বিস্তার”-উল্লেখিত পংক্তিটির লেখক কে ?
উঃ নবনীতা দেবসেন
৫. “ওরা সব জেনে গেছে, মানুষের বেশি দেরি নেই”- কারা জেনে গেছে?
- পশু পাখি উদ্ভিদেরা
- মানুষেরা
- সরকার
- গাছপালা উঃ পশুপাখি উদ্ভিদেরা
৬. “আংটির ফোকর দিয়ে গলে চলে যাব”- এখানে কোন বিষয়কে উল্লেখ করা হয়েছে ?
উঃ মৃত্যু
৭. “পশু পাখি উদ্ভিদেরা কিছু মাত্র বিস্মিত হবে না”- পশু পাখি উদ্ভিদেরা বিস্মিত হবে না কেন?
- ওরা সব জেনে গেছে
- ওরা কিছু জানে না
- ওরা সব বুঝে গেছে
- ওরা সব ভয় পেয়ে গেছে। উঃ ওরা সব জেনে গেছে
বিশেষ টিপস
এই কবিতা থেকে লাইনগুলি পূর্বাপর রিডিং পড়ে মনে রাখতে হবে এবং বিষয়বস্তু ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। কবিতার লাইনগুলি ঠিকঠাক মনে থাকলে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব সহজ হবে। তাই কবিতাটি অন্তত প্রতিদিন একবার করে রিডিং করতে হবে। যাতে লাইনগুলি পরপর মনে থাকে। কেননা স্কুল সার্ভিস কমিশনের বাংলা বিষয়ে পরীক্ষায় বেশিরভাগ লাইন তুলে প্রশ্ন হয়। তাই লাইনগুলি বারবার ভালোভাবে মনে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
এসএলএসটি বা মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ে আরো প্রশ্নের উত্তর জানতে এবং বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা জানতে- click Here