উচ্চ মাধ্যমিক class12 বাংলা বিষয়ে একটি অন্যতম পাঠ্য নাটক “নানা রঙের দিন”| নাটকটির রচয়িতা নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় | এই সিরিজে এই নাটক থেকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুব সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে। প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী উত্তরগুলি দেখার পাশাপাশি প্রশ্নের উত্তর লেখার কৌশলটি ভালোভাবে লক্ষ্য কর উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর জানতে অবশ্যই clicl here
নানা রঙের দিন নাটকের বড় প্রশ্ন উত্তর
১) “নানা রঙের দিন” নাটকটির নামকরণের সার্থকতা বিচার কর।
উঃ নামকরণের মধ্যেই রচনার মূলভাব পরিস্ফুট হয়। নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় তার “নানা রঙের দিন” নাটকটির নামকরণের ক্ষেত্রে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছেন।নাটকে এক বিগত দিনের জনপ্রিয় অভিনেতার জীবন কাহিনী প্রকাশ করেছেন নাট্যকার।
নামকরণ কতখানি সার্থক- এক সময়ের দাপুটে নট অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি এখন দর্শকের কাছে অবহেলার পাত্রে পরিণত হয়েছেন। অথচ এই রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ই, এক সময় ছিলেন দাপুটে অভিনেতা। তাকে ঘিরেই জনগণের উন্মাদনা থাকতো। তিনি অভিনয়ের যৌবনে সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছেছিলেন। তার অভিনয় জীবনের সেই বর্ণময় জীবন, ধীরে ধীরে অবক্ষয়িত হতে শুরু করে। হারিয়ে যায় তার জীবনের যৌবন | যে থিয়েটারকে তিনি ভালোবেসে ছিলেন, যার জন্য তিনি পুলিশের চাকরি ছেড়েছিলেন, সেই থিয়েটারই তাকে অবহেলার পাত্রে পরিণত করে। তার সুদীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছরের অভিনয় জীবন শেষে, তিনি মৃত্যুর কালো রং দেখতে পান। তিনি বুঝতে পারেন- “অভিনেতা মানে ……জোকার, একটা ক্লাউন”
রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় তার অভিনয় জীবনের নানা রঙের দিন নাটকে তুলে ধরেছেন নাট্যকার। তার প্রথম জীবনের যৌবনের রং এবং সেখান থেকে জনপ্রিয়তার উজ্জ্বল রঙে তিনি পৌঁছেছিলেন। এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কালো রঙ তিনি দেখতে পান। সেজন্য আমরা স্বাভাবিক ভাবেই বলতে পারি নাটকটির নামকরণ “নানা রঙের দিন” সার্থক ভাবেই প্রযুক্ত হয়েছে।
2.“নানা রঙের দিন” নাটকের সূচনায় মঞ্চশয্যার যে বর্ণনা আছে, তা নিজের ভাষায় লেখ।- এই প্রসঙ্গে নাটকটির নামকরণ কতখানি সার্থক তা আলোচনা কর।
মঞ্চশয্যার বর্ণনা– নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় “নানা রঙের দিন”নাটকের শুরুতেই নাটকের মঞ্চশশয্যার একটি বিবরণ দিয়েছেন। সেখানে দেখা যায়, পেশাদারী থিয়েটারের একটি ফাঁকা মঞ্চ। পিছনে রয়েছে রাত্রে অভিনীত নাটকের অবশিষ্ট দৃশ্যপট। জিনিসপত্র আর যন্ত্রপাতি। মঞ্চের মাঝখানে একটি উল্টানো ঢুল রয়েছে। এখন রাত্রি। চারিদিকে অন্ধকার।
নামকরণের সার্থকতা অংশের উত্তরের জন্য উপরের প্রশ্নের উত্তরটি লক্ষ্য কর
3) “প্রাক্তন অভিনেতা রজনী …….অপমৃত্যুর তরুণ সংবাদ”- কে বলেছেন? এই অপমৃত্যু কিভাবে ঘটে বলে বক্তা মনে করেন?
উঃ) নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের“নানা রঙের দিন” শীর্ষক একাঙ্কনাটকে, এক বিগত দিনের জনপ্রিয় অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় আলোচ্য উক্তিটির বক্তা।
অপমৃত্যু কিভাবে ঘটে- দীর্ঘপঁয়তাল্লিশ বছরের অভিনয় জীবনের শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছেন রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়। অভিনয়ের যৌবনে তিনি দাপুটে নট অভিনেতা ছিলেন। সেই সময় অনেক নারী তার জীবনে এসেছে। তিনি প্রেমেও পড়েছিলেন। কিন্তু সেই মেয়ে তাকে বিয়ে করেননি। কারণ তিনি একজন নট অভিনেতা ছিলেন বলে। সে সময় তিনি আবোল তাবোল পার্ট করেন। জ্ঞানী ব্যক্তিরা বলেছিলেন, তার এইসব অভিনয় দেখেই নাকি নবীনরা গোল্লায় যাচ্ছে।
একসময়ের দাপুটে অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ধীরে ধীরে অবক্ষয়িত হতে শুরু করেন। যে অভিনয় দেখে দর্শককুল তাকে বাহবা দিয়েছে, সেই দর্শকই তাকে আর ভালোবাসেনা। তবুও তিনি অভিনয়কে ভালোবেসে অভিনয় থেকে মুক্তি পাননি।তিনি হঠাৎ অনুভব করেন যে, আজ তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে রঙিন যৌবন উদ্দীপ্তঅতীত, আর ক-পা এগোলেই শ্মশানের চিতার আঁচলাগবে, তার গা ঝলসে দেবে। এভাবেই তিনি বুঝতে পারেন, তার প্রতিভার অপমৃত্যু ঘটেছে।
for more question answers click here- কে বাঁচায়, কে বাচেঁ- প্রশ্নোত্তর সাজেশান
4) “এইতো জীবনের সত্য কালিনাথ”-কালীনাথ কে? বক্তা“জীবনের সত্য”বলতে কি বুঝিয়েছেন? তিনি কিভাবে এই সত্যে উপনীত হয়েছিলেন?
উঃ নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের “নানা রঙের দিন” শীর্ষক নাটকে, কালীনাথ সেন হলেন একজন প্রম্পটার। যার বয়স প্রায় ষাট বছর।
“জীবনের সত্য”- অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছরের অভিনয় জগতের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে তিনি জীবনের আসল সত্য বুঝতে পারেন। তার মতে, যার প্রতিভা আছে, তার বয়সে কিছু যায় আসে না অর্থাৎ তিনি “জীবনের সত্য” বলতে প্রতিভাকে বুঝিয়েছেন। যে প্রতিভা কোনদিন মরে না।
কিভাবে এই সত্যে উপনীত হয়েছিলেন- দীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছরের অভিনয় জীবনের শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছেন রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়। অভিনয়ের যৌবনে তিনি দাপুটে নট অভিনেতা ছিলেন। জীবনের প্রৌঢ়ে পৌঁছে এখন,একটা নতুন চরিত্রকে বোঝার, তাকে ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা তার নষ্ট হয়ে গেল। এক সময়ের দাপুটে অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ধীরে ধীরে অবক্ষয়িত হতে শুরু করেন।
তিনি স্পষ্ট মৃত্যুর চিতার আঁচ লক্ষ্য করতে পারেন। তিনি বুঝতে পারেন, তার প্রতিভা এখনো মরেনি। তার শরীরে যদি রক্ত থাকে, তাহলে সে রক্তে মিশে আছে শুধুই প্রতিভা। এই প্রতিভার নাম যদি যৌবন না হয়, শক্তি না হয়, জীবন না হয়, তাহলে জীবনের আসল বস্তুটা কি? অর্থাৎ যার প্রতিভা আছে- তার বয়সে কিছুই যায় আসে না। এটাই হল জীবনের সত্য। এই সত্যই তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।
5.“আর সেই দিনই বুঝলুম … চরিত্রটা কি!”- সেই দিন বলতে কোন দিনের কথা বলা হয়েছে? পাবলিকের আসল চরিত্রটা কি? বক্তা কিভাবে বুঝতে পারলেন পাবলিকের আসল চরিত্র ?
উঃ)নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত “নানা রঙের দিন” শীর্ষক একাঙ্ক নাটকেআলোচিত উক্তিটির বক্তা হলেন এক সময়ে দাপুটে অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়। দীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছরের অভিনয় জগতের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে পাবলিকের আসল চরিত্র বুঝতে পারেন।
পাবলিকের আসল চরিত্রটা কি?- দীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছরের অভিনয় জীবনের শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছেন রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়। অভিনয়ের যৌবনে তিনি দাপুটে নট অভিনেতা ছিলেন। সেই সময় অনেক নারী তার জীবনে এসেছে। তিনি প্রেমেও পড়েছিলেন। কিন্তু সেই মেয়ে তাকে বিয়ে করেননি। কারণ তিনি একজন নট অভিনেতা ছিলেন বলে।তার এখনো মনে আছে, সে রাত্তিরে কি একটা বাজে হাসির বইয়ের পার্টকরেছিলেন। সেদিন হঠাৎ তার চোখ খুলে গিয়েছিল। সেই রাত্রেই তিনি জীবনের প্রথম অক্ষম বুঝতে পারলেন যে, যারা বলে নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প তারা আসলে সব গাধা
বক্তা কিভাবে বুঝতে পারলেন-কারণ তাদের কাছে অভিনয় মানে, একটা চাকর। একটা জোকার। একটা ক্লাউন। ক্লান্ত লোককে আনন্দ দেওয়ায় হল অভিনেতাদের একমাত্র কর্তব্য। এক কথায় অভিনেতা মানে একটা ভাঁর অর্থাৎ তিনি পাবলিকের আসল চরিত্র বুঝতে পারলেন। আসলে অভিনেতারা স্টেজেতেই প্রশংসা পান। হাততালি পান। কিন্তু সমাজে তাদের কোন মূল্য নেই। তাদেরকে সবাই একটা অস্পৃশ্য ভাঁড় বলে মনে করে। এইজন্য থিয়েটারের পরিচয়ে কোন পাবলিক তার মেয়ে কিংবা বোনের সঙ্গে বিয়ে দিতে চায় না।
নানা রঙের দিন নাটকের প্রশ্ন উত্তর saq
১) “খুব খারাপ হচ্ছে না, কি বলো?” – কি খারাপ হচ্ছে না?
উঃ“নানা রঙের দিন” নাটকে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখা “রিজিয়া” নামক নাটকের বক্তিয়ারের সংলাপ আবৃতি করছিলেন। এখানে সেই সংলাপটি খারাপ না হওয়ার কথাই বলা হয়েছে।
২) “সেই রাত্রেই জীবনের ……ক্ষম বুঝলুম”- এখানে কোন রাত্রের কথা বলা হয়েছে?/অথবা- বক্তা কি বুঝেছিলেন?
উঃ) “নানা রঙের দিন” শীর্ষক নাটকে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের থিয়েটারের অভিনয় দেখে এক মেয়ে প্রেমে পড়ে। সেই রাত্রে রজনীকান্তকে বিয়ে করার জন্য তাকে অভিনয় ছেড়ে দিতে বলে। এখানে সেই রাতের কথাই বলা হয়েছে।
অথবা- উক্ত সেই রাত্রে রজনীকান্ত বুঝতে পেরেছিলেন যে, যারা নাট্যাভিনয়কে পবিত্র শিল্পবলে, তারা সব গাধা। তারা সব মিথ্যে কথা বলে। বাজে কথা বলে।
৩) “চাকরিটা ছেড়ে দিলাম”- বক্তা কিসের চাকরি, কেন ছেড়ে দিয়েছিলেন?
উঃ)“নানা রঙের দিন” শীর্ষক নাটকে বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়, যৌবনে অভিনয়ের টানে পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন।
৪) “এই তো …. সত্যকালীনাথ”- জীবনের সত্যটি কি?
উঃ“নানা রঙের দিন” নাটকে রজনীকান্ত অভিনয়ের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে, জীবনের আসল সত্য বুঝতে পারেন। তিনি বুঝতে পারেন যে, যার প্রতিভা আছে, তার বয়সে কিছুই এসে যায় না অর্থাৎ যার রক্তে প্রতিভা আছে, তার মৃত্যু হয় না।
৫) “তোমার…..সব দিনের কথা?”- এখানে কোন সব দিনের কথা বলা হয়েছে?
উঃ রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় অভিনয় জগতের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে, যৌবনের অভিনয় জগৎ তার মনে পড়ে। সেই সময় খুব সহজে এক একটা চরিত্র বুঝতে পারতেন। আশ্চর্য রকমভাবে নতুন রঙের চরিত্রগুলোর চেহারা পেত। তার এই যৌবনের অভিনয়ের সময়ের কথাই বলা হয়েছে।
(অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নের-উত্তর করতে গেলে, পাঠ্য বইটিকে ভালো করে পড়তে হবে। প্রতিটা লাইন মনে রাখতে হবে। কারণ সংক্ষিপ্ত উত্তর ধর্মী প্রশ্নের কোন রকম সাজেশন হয় না বললেই চলে। প্রতিটা লাইনেই প্রশ্ন হয়। তাই সাজেশন ভিত্তিক না পড়ে, পাঠ্য বইটি ভালো করে পড়লে, ছোট ছোট প্রশ্নের উত্তরগুলো খুব সহজেই করতে পারবে। মনে রাখবে, প্রশ্ন খুব সহজেই হয়, যদি তুমি টেক্সট বইটা ভালো করে পড়ে থাকো|