উচ্চ মাধ্যমিক class12 বাংলা বিষয়ে একটি অন্যতম পাঠ্য নাটক বিভাব | নাটকটির রচয়িতা শম্ভু মিত্র | এই সিরিজে এই নাটক থেকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুব সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে। প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী উত্তরগুলি দেখার পাশাপাশি প্রশ্নের উত্তর লেখার কৌশলটি ভালোভাবে লক্ষ্য কর উচ্চ মাধ্যমিক মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর জানতে অবশ্যই click here
বিভাব নাটকের বড় প্রশ্ন উত্তর
১) “আর একবা…….মাশায় দেখেছিলাম”- বক্তা মারাঠি তামাশায় কি দেখেছিলেন? বক্তা কোন প্রসঙ্গে মারাঠি তামাশার কথা বলেছিলেন?
উঃ নাট্যকার শম্ভু মিত্র তার “বিভাব”নাটকে, সাজসজ্জা বিহীন ভঙ্গিপ্রধান নাটকের কথা আলোচনা করেছেন। তিনি এক মারাঠি তামাশায় এই রকম ভঙ্গিপ্রধান নাটকের অভিনয় দেখেছিলেন।
মারাঠি তামাশায় কি দেখেছিলেন-শম্ভু মিত্র মারাঠি তামাশায় দেখেছিলেন,মঞ্চে এক পাশে দাঁড়িয়ে চাষি তার জমিদারের কাছে অনেক কাকুতি মিনতি করল, শেষে ব্যর্থ মনোরথ হয়ে চলল মন্দিরে,ভগবানের কাছে নালিশ জানাতে।চলল ঠিকই কিন্তু বেরিয়ে গেল না। তক্তার উপরে বারকয়েক গোল হয়ে ঘুরপাক খেল,যেন গ্রামটা অতিক্রম করে যাচ্ছে। তারপর অপর একপাশে গিয়ে কাল্পনিক মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে ভগবানকে মনের দুঃখের কথা নিবেদন করল। এদিকে যে অভিনেতা জমিদার সেজে এতক্ষণ গর্জন করছিল,সে দর্শকের সামনেই মুখে একটা দাঁড়ি গোঁফ এঁটে পুরুত সেজে অপর পাশে চাষির সামনে গিয়ে আবার ধর্মীয় তর্জন শুরু করে দিল।
কোন প্রসঙ্গে-নাট্যকার শম্ভু মিত্র নাটকের অভিনয়ের জন্য ভিন্ন রীতির ভঙ্গিমার কথা বলতে গিয়ে দেশী-বিদেশি বেশ কিছু নাট্য অভিনয়ের রীতির কথা বলছিলেন। তিনি উড়ে দেশের যাত্রার কথা বলেছেন, আবার জাপানি কাবুকি থিয়েটারের কথাও বলেছেন।এই প্রসঙ্গেই তিনি নাট্য রীতির ভিন্ন ভঙ্গিমার কথা বলতে গিয়েই মারাঠি তামাশার কথা বলেছিলেন।
এই প্রশ্নটির অনুসরণে লেখা যায়,
“মাঠ ভর্তি…….ব মেনে নিয়ে দেখলে”- মাঠভর্তি লোক নিঃশব্দে কি দেখছিল? তারা এসব দেখে মেনে নিল কেন? / অথবা-“দেখে প্রথ…….যে পেয়ে গেছি পন্থা”- লেখক কোথায় কি দেখেছিলেন? তিনি এখানে কোন পন্থার কথা বলেছেন?
বিভাব নাটকে উল্লেখিত কাবুকি নাটকের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে লেখ
২) “এমনই সময়……লেখা পড়লাম”- এমনই সময় বলতে কোন পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে? সাহেবের নাম কি? তিনি কি লিখেছিলেন? / অথবা-“তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন…..য়ে অনেক কথা লিখেছেন”- আয়োজনস্টাইন সাহেবকে ? সেই অভিনয় দেখে তিনি কি লিখেছিলেন?
উঃ) নাট্যকার শম্ভু মিত্র“বিভাব” নাটকে সাজ-সজ্জা বিহীন, শুধুমাত্র ভঙ্গিমাকে সাহায্য করে নাটক অভিনয়ের নীতির কথা ভাবছিলেন। কিন্তু তার সন্দেহ ছিল যে, এরকম ভঙ্গিমার সাহায্যে অভিনয় রীতি বিলিতি বায়োস্কোপ দেখা দর্শকরা মানবে কিনা। তখনই নাট্যকার এক সাহেবের কথা পড়েছিলেন।
সাহেবের নাম কি? – নাটকে, যে সাহেবের কথা বলেছেন, তিনি হলেন রুশদেশীয় এক বিখ্যাত চিত্র-পরিচালক আইজেনস্টাইন সাহেব। তার পুরো নাম সের্গেই মিখাইলোভিচ আইজেনস্টাইন। আইজেনস্টাইন সাহেব একবার জাপানি কাবুকি থিয়েটার বলে, মস্কোতে গিয়েছিলেন।
তিনি কি লিখেছিলেন? – তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন সাহেব অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেক কথাই লিখেছেন।শম্ভু মিত্র জানতে পারেন যে, সে অভিনয়ও ভঙ্গির বহুল ব্যবহার আছে। যেমন কোন এক নাইট অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে এক দুর্গ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তিনি স্টেজের পিছন দিক থেকে গম্ভীর ভাবে এগোতে থাকলেন এবং তার ঠিক পিছনেই দুজন লোক একটা মস্ত দুর্গদ্বার হাতে করে দাঁড়িয়ে রইল। তারা শিফটার।স্টেজের উপর তাদের উপস্থিতিতে কেউ কিছু মনে করেন না। নাইট দু-তিনপাএগোল। আর সেই শিফটারবড় দরজা রেখে দিয়ে একটা অপেক্ষাকৃত ছোট দরজা ধরে দাঁড়ালো। এরকম করে নাইট যখন প্রায় ফুট লাইটের কাছে এসে পড়েছেন, তখন দেখা যায় ছোট একটা দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছে। অর্থাৎPerspective বোঝানো হল।
অর্থাৎ শম্ভু মিত্র বলতে চেয়েছেন, কোন কিছু অভিনয়ের উপকরণ ছাড়াই, শুধুমাত্র ভঙ্গিমার মাধ্যমে কিভাবে নাটক অভিনয় করা যায় এবং দর্শক তা বিশ্বাস করে বাস্তবসম্মত মনে করে- সেই কথাই আইজেনস্টাইন সাহেব লিখে গিয়েছিলেন।
এই প্রশ্নটির অনুসরণে লেখা যায়,
“এই পড়ে বুকে ভরসা এল”- লেখক কি পড়েছিলেন? তার বুকে ভরসা এল কেন?
“তার লেখা পড়ে জানতে পারলাম যে…”- বক্তা কার, কি লেখা পড়েছিলেন? তিনি কি জানতে পেরেছিলেন?
বিভাব নাটকের নামকরণের সার্থকতা
৩)“আমাদের মনে হয়…..উচিত “অভাব”নাটক”- বিভব নাটকের নামকরণ যথোপযুক্ত কিনা তা বিচার কর|
উঃ “বিভাব” শব্দটি সংস্কৃত অলংকারশাস্ত্র থেকে গৃহীত। অলংকারশাস্ত্রমতে- বিভাব হল নাটকের রসনিষ্পত্তির কারণ। নাট্যশাস্ত্র নামক গ্রন্থে ভরত বলেছেন, বিভব বলতে সেই হেতু, যার জন্য দর্শকের মনে অনুভূতির উদ্রেক হয় অর্থাৎ সোজা কথায় বিভাবের কারণেই দর্শক বা পাঠকের মনে রসের উদ্রেক হয়।
বিভব নাটকের নামকরণ যথোপযুক্ত কিনা-“বিভাব” নাটকটির নামকরণের ক্ষেত্রে নাট্যকার শম্ভু মিত্র বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। নাট্যকার নাট্যমঞ্চে অভিনবত্ব দেখানোর উদ্দেশ্যেই এই “বিভাব”নামকরণ। তবে নাটকটির নামকরণ যথোপযুক্ত কিনা তা বিষয় বস্তুর প্রতি আলোকপাত করলে পরিস্ফুত হবে।
হাসির খোরাক যোগানোর উদ্দেশ্যে, শম্ভু মিত্র অমর গাঙ্গুলীর বাড়ীতে আসেন। কিন্তু সেখানে তারা হাসির খোরাক জোগাড়ে ব্যর্থ হন। বৌদির লভ সিন বা পুলিশের সিন এইসব হাসি যোগানোর রসদ ছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়। নাটকে উপস্থিত হয় বাস্তব জীবনের চিত্র।অন্ন বস্ত্রের দাবি জানিয়ে একদল ক্ষুধার্ত যুবক মিছিলে আসে। সেখানে দেখা যায় মৃত্যুর দৃশ্য এবং তীব্র বিদ্রুপ মেশানো কন্ঠে ভেসে আসে একটি কথা-“এবার হাসি পাচ্ছে”।তখন দর্শকমনে হাসি উধাও হয়। দর্শক মুহূর্তের মধ্যে বাস্তবের মাটিতে আছড়ে পড়ে। পাঠক বা দর্শক মনে এই যে, এক তীব্র অনুভূতির সৃষ্টি করলেন- এর মূলেই আছে বিভাব। তাই “বিভাব” নামকরণটি যে শিল্প সার্থক হয়েছে তা বলাই যায়।
4)“আমাদের মনে হয়…..উচিত “অভাব”নাটক”- অভাবের চিত্র “বিভাব” নাটকে কিভাবে প্রকাশ পেয়েছে তা লেখ।
ans-“বিভাব” শব্দটি সংস্কৃত অলংকারশাস্ত্র থেকে গৃহীত। অলংকারশাস্ত্রমতে- বিভাব হল নাটকের রসনিষ্পত্তির কারণ।
বিভাব নাটকের অভাবের চিত্র-নাটকের নামকরণ বিভাব না হয়ে “অভাব” বলে তিনি মনে করেছেন। কারণ মঞ্চ অভিনয়ে সাফল্য নির্ভর করে অর্থ,মঞ্চ-সজ্জা,সাজ-সজ্জা, সিনসিনারি ইত্যাদি। কিন্তু এই বিভাব নাটকের ক্ষেত্রে, এই মঞ্চ-সজ্জা,অর্থেরই অভাব। নাটক মঞ্চস্থ করতে গেলে প্রাথমিক ভাবেপ্রয়োজন, ভালো মঞ্চ, দৃশ্য অনুযায়ী মঞ্চ-সজ্জা,দৃশ্যপট, সিনসিনারি আলোর প্রক্ষেপণ ইত্যাদি। কিন্তু এইসব কিছুই নেই। আবার তার উপর আছে পেশাদারী মঞ্চের সরকারি খাজনা দারদের হানা।
এই দুরন্ত অভাব থেকেই নাটকের সূচনা। কিন্তু নাট্যকার এর একটি উপায় বের করেছেন। এর জন্য কোন বড় মঞ্চ থাকবে না। থাকবে না কোন মঞ্চ-সজ্জা,দৃশ্যপট, বেশভূষা ইত্যাদি। কেবলমাত্র অভিনয়ের ভঙ্গিমার সাহায্য দিয়েই দেখানো হবে অভিনয়। এতে অর্থের অভাব যেমন দূর হবে তেমনি বিভাব নাটকের অভাব তথা মঞ্চা-সজ্জার অভাব দূর হবে তাই নাট্যকারএই“অভাব”কথাটিবলেছেন।
বিভাব নাটকের saq প্রশ্ন উত্তর
১) “এই পড়ে …ভরসা এল”- কি পড়ে বুকে ভরসা এল?
উঃ)“বিভাব” নাটকে নাট্যকার রুশদেশীয় বিখ্যাত এক চিত্র-পরিচালক আইজেনস্টাইন সাহেবের লেখা পড়ে বুকে ভরসা এসেছিল। কারণ সেখানে, জাপানি “কাবুকি” থিয়েটারে ভঙ্গিমা প্রধান নাটকের বিষয়ে অভিনয় লেখা ছিল।
২) “বহুরূপী …. লাটে উঠবে”- বহুরূপী লাটে উঠবে কেন?
উঃ) বিভাব নাটকে, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক আদর্শের সঙ্গে বহুরূপীর সম্পর্কআছে- এটা জানতে পারলে, বহুরূপী তখন লাটে উঠবে। অর্থাৎ বহুরূপী নাট্যদল নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা হয়ে যাবে।
৩) “the night … calling me”- এই সংলাপটি কার লেখা?এই সংলাপটি কে আবৃত্তি করেছিলেন?
উঃ) শম্ভু মিত্রের “বিভাব” নাটকে ব্যবহৃত “the night is calling me”- সংলাপটি বিখ্যাত নাট্যকার জর্জ বার্নার শ এরলেখা। এই সংলাপটি আবৃত্তি করেছিলেন শম্ভু মিত্র।
৪) অমর গাঙ্গুলীকে স্কুলের হেডমাস্টার প্রমোশন দেননি কেন?
উঃ অমর গাঙ্গুলিকে স্কুলের হেডপন্ডিত প্রমোশন দেননি। কারণ তিনি স্কুলের সংস্কৃত পরীক্ষায় ১৩ পেয়েছিলেন।
৫) “তোমরা ফিরে যাও”- কে কাদের, কেন ফিরে যেতে বলেছেন?
উঃ)“বিভাব” নাটকে একদল তরুণ যুবক অন্ন- বস্ত্রের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামে। তাদের এই মিছিল পুলিশ আটকায়। সেখানে সার্জেন্ট তাদেরকে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
6. “বুদ্ধিটা কী….এল তা বলি”- বক্তা কে?
ans- শম্ভু মিত্র
রূপনারায়ণের কূলে কবিতা থেকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে click here