> বিশ্বশান্তি প্রবন্ধ রচনা class12 » Qবাংলা

বিশ্বশান্তি প্রবন্ধ রচনা class12

উচ্চ মাধ্যমিক  wbchse বাংলা বিষয়ে চারটি প্রবন্ধ রচনা থাকে সেখান থেকে যেকোনো একটি বেছে নিয়ে প্রবন্ধ রচনা লিখতে হয়। প্রিয় ছাত্র ছাত্রী এই সিরিজে – বিশ্বশান্তি-প্রদত্ত প্রস্তাবনা কে অবলম্বন করে প্রবন্ধ রচনা| এই অংশটির একটি প্রবন্ধ রচনা খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে | এই জাতীয় প্রবন্ধ লেখা খুবই সহজ | শুধুমাত্র প্রস্তাবনায় যে বিষয়টি বা ভূমিকা স্বরূপ দেওয়া থাকবে সেটা উপলব্ধি করতে পারলে খুব সহজে এই রচনা লেখা যায় | এই রচনা লিখতে পারলে ফুল মার্কস বা পূর্ণ নম্বর পাওয়া অত্যন্ত সহজ। বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর জানতে অবশ্যই  click here

Q-প্রদত্ত অনুচ্ছেদটিকে প্রস্তাবনা বা ভূমিকা স্বরূপ গ্রহণ করে বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করে, পরিণতি দানের মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রবন্ধ রচনা কর।

বর্তমান পৃথিবীর বিশ্বশান্তি ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অন্তরায় বিচ্ছিন্নতাবাদ। বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ, কূটনীতি- মানুষের মানবিকতা বোধকে খর্ব করা- মানুষের অধিকারকে ছোট করা- ইত্যাদির মাধ্যমে পৃথিবীতে বিশ্বশান্তির পক্ষে একটা বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে ভাতৃত্ববোধ সহযোগিতা এবং সুসম্পর্কের মাধ্যমে পৃথিবীর কল্যাণকর কাজের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

বিশ্বশান্তি: মানবজাতির একটি প্রত্যাশা।

প্রস্তাবনা:- বিশ্বশান্তি, এই শব্দটি বর্তমান পরিস্থিতিতে ভীষণভাবে কাম্য হয়ে উঠছে। কেননা গোটা বিশ্বের মানবজাতির মানবিক অধিকার এবং মৌলিক অধিকারগুলি যেভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে তা গোটা পৃথিবীর মানুষের একটা আশঙ্কার দিক থেকেই যায় পৃথিবীর মানুষের সাম্রাজ্যবাদী মনোবাসনা, অর্থের দাম্ভিকতা, হিংসার উন্মত্ততা পৃথিবীর শান্তিকে বিঘ্নিত করে চলেছেপৃথিবীর শান্তির জন্য মানবতার মৌলিক কাম্যতা, পরস্পর সহানুভূতি এবং সহযোগিতা ইত্যাদি বিষয়গুলি আজ অতি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। মানবজাতির সুরক্ষা তথা মানবিকতাবোধকে ছড়িয়ে দিতে বিশ্বশান্তির ক্ষেত্রে মানুষই সবচেয়ে বড় ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে

পৃথিবীর শান্তি: মানবতার মৌলিক কাম্যতা:- পৃথিবীর শান্তি একটি স্বপ্ন যা আমরা সবাই দেখি। আমরা পৃথিবীবাসী হিসেবে প্রত্যেকেই চাই বিশ্বের প্রতিটি কোনায় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক বিশ্বের সাধারণ মানুষ নিরাপদে নিশ্চিন্তে জীবনযাপন করুক। পৃথিবীর সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার গুলি কোথাও না কোথাও খর্ব হয়ে চলেছে। বর্তমান পৃথিবীর মানবসমাজ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবী যে বিনাশ হবে তা সন্দেহের অবকাশ রাখে না  সকলে শান্তি এবং সহানুভূতির যেন এই বিশ্বে সবচেয়ে বড় অভাব  মানবতার মৌলিক কাম্যতা হলো একে অপরের সাথে সৃজনশীল সম্পর্ক গড়ে তোলা, অসন্তুষ্টি এবং শক্তিশালী সমাজের সৃজনশীল পুনরায় নির্মাণ করা।

সহযোগিতা: একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্বের দিকে এগিয়েশুধু যে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসন বা যুদ্ধ অর্থনৈতিক মানুষের শোষণই শুধু নয় বিশ্বশান্তির পক্ষে মানুষের মৌলিক কর্তব্যগুলো এক্ষেত্রে দায়ী হয়ে দাঁড়ায় বিশ্বশান্তির পথে এগিয়ে যেতে এমন সহযোগিতা একটি মৌলিক অংশ। সহযোগিতা ব্যক্তিগত এবং সামাজিক স্তরে ঘটে, এটি একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্বের প্রতি আমাদের দায়িত্ব প্রদর্শনের উদাহরণ। শিক্ষা, সামাজিক সংস্থা, এবং অবদানের মাধ্যমে আমরা সমাজে শান্তির অবদান স্থাপন করতে পারি। তাই বলা যায় পারস্পরিক সহযোগিতা মানুষের মৌলিক কর্তব্য গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া এবং মানুষের মৌলিক অধিকার গুলিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা একটি বিশ্বশান্তি পক্ষে অত্যন্ত কাম্য

পরিস্থিতি নিরীক্ষণ: বিশ্বশান্তির অভিযান:- বিশ্বশান্তির অভিযান সফল হতে হলে আমাদের পরিস্থিতি নিরীক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে পৃথিবীর সকল মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য অবহেলা করা সমচীন নয় বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মানুষের মানবিকতা বোধকে গুরুত্ব দিতেই হবে। মানুষের মানবিকতা বোধ অক্ষুণ্য হলে বিশ্ব শান্তি পথে অন্তরায় দাঁড়ায় প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য যেমন মানবিকতা বদের প্রতি পরিপূরক সহযোগিতার কাজ করাও একই দায়িত্ব-কর্তব্য বর্তায়। নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে, যাতে মানবতার অধিকার এবং মানবিক মূল্যবোধ সংরক্ষিত থাকে।

বিশ্বশান্তি এবং বাহ্যিক রাজনীতি:- বিশ্বশান্তি এবং বাহ্যিক রাজনীতির মধ্যে একটি অসীম সম্পর্ক রয়েছে। বাহ্যিক রাজনীতির সঠিক নীতিবলক প্রয়োজন আমাদের বিশ্বশান্তির লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সহযোগিতা এবং সমান সুযোগের সৃষ্টি এবং বাহ্যিক শক্তির দ্বারা সমস্যার সমাধানে মাধ্যমে বিশ্বের প্রতিটি দেশকেই এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্বের প্রতিটি দেশকে রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে মানুষের চাহিদাকে গুরুত্ব দিতে হবে। মানুষের মানবিকতা বোধকে গুরুত্ব দিতে হবে কখন অস্ত্রশস্ত্রের দ্বারা পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় না বরং অস্ত্রশস্ত্রের দ্বারা মানুষের মধ্যে ভয়-ভীতি ও আশঙ্কা তৈরি করে তাই প্রাণঘাতী অস্ত্র নয় মানুষের সহযোগিতা ভাতৃত্ববোধ এবং সুসম্পর্কই একটি সুস্থ স্বাভাবিক পৃথিবী গড়ে উঠতে পারে

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা আরও  প্রশ্ন ও উত্তর দেখতে – click here

বিশ্বশান্তির উপর মানবজাতির দায়িত্ব:  বিশ্বশান্তি মানবজাতির দায়িত্ব, এবং মানবসমাজের প্রতিটি ব্যক্তির কাছে পরম কর্তব্য বিশ্বের প্রতিটি মানুষ সংকীর্ণ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের পাশে দাঁড়ানো মানুষের সুযোগ সুবিধাকে গুরুত্ব দিয়ে মানবজাতির শুভ কল্যাণের দিকে এগিয়ে যেতে হবে একমাত্র কল্যাণকর কার্যের মধ্যে দিয়ে এটা সম্ভব হয়ে উঠবে।

আমাদের দায়িত্ব: বিশ্বশান্তির প্রতি আমরাআমরা সবাই পৃথিবীর সুস্থ স্বাভাবিক এবং শান্তি কামনায় আমাদের সকলের উপর দায়িত্ব আছে একটি বিশ্বশান্তির দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য পৃথিবীর সাধারণ মানুষই দায়িত্ববান। আমরা যে সমাজ তৈরি করছি, তা বিশ্বশান্তি, সমানতা, এবং সহানুভূতির উপর ভিত্তি করা উচিত। আমাদের প্রতিটি পর্যায়ে আমরা বিশ্বশান্তির অভিযানে যোগ দিতে প্রস্তুত থাকতে পারি, যাতে আমরা সবাই একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব সৃজন করতে সাহায্য করতে পারি। তাই বিশ্বের প্রতিটি মানুষের যাতে মৌলিক অধিকার এবং মৌলিক চাহিদাগুলিকে সুরক্ষিত থাকে সেজন্য আমাদের সাধারণ মানুষকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে

 বিশ্বশান্তির পথে বাধা:-  বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব বিশ্ব-শান্তির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্বশান্তির প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মানবজাতির একটা বড় ভূমিকা থাকে বর্তমানে পৃথিবী বিশ্বশান্তির কথা বললেও আসলে তা অস্ত্রে বলিয়ান হয়ে উঠেছে বিভিন্ন দেশের শক্তিশালী জাতি এর ফলে হিংসা-বিদ্বেষ রক্তাক্ত ক্রমশ বেড়েই চলেছে। পৃথিবীর প্রতিটা মানুষ যাতে সমান অধিকার পায়, যাতে শোষিত বঞ্চিত না হয়। সেই দিকে লক্ষ রাখেই বিশ্বশান্তির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা কিন্তু বর্তমানে দেখা যায় অর্থলোক মানুষেরা এই সমস্ত মানুষের উপর শোষণ-পীড়ন নির্যাতন চালাচ্ছে বিশেষ করে অর্থবান মানুষেরা গরিব দুর্বল মানুষের উপর অত্যাচার বা আঘাত নিয়ে আসে তাই বিশ্বশান্তির ক্ষেত্রে প্রতিটা মানুষকে নিরস্ত্র অবস্থায় মানুষের নানান প্রাথমিক চাহিদাসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে হবে

শেষ কথা:- আমাদের দায়িত্ব যাতে পৃথিবীর মানবতা ও পৃথিবী মানুষের মৌলিক চাহিদা এবং মৌলিক অধিকার গুলি রক্ষিত হয় সেই দিকে জোর দেওয়া এবং আমরা একটা বিশ্বশান্তি বা সুন্দর পৃথিবী প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধ পরিকর হয়ে উঠতে পারি  যদি আমরা সবাই এই লক্ষ্যে এগিয়ে যাই, তবে একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব সম্ভব হতে পারে, এবং মানবতার জন্য একটি নতুন দিন সৃষ্টি করা হতে পারে। 

Leave a Comment

Discover more from Qবাংলা

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading