মৃদুল দাশগুপ্তের “ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” কবিতাটি সমকালীন সময়ের যাবতীয় ক্ষয়ক্ষতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। কবিতাটি ২০০৬ খ্রিস্টাব্দের সিঙ্গুর আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত। তৎকালীন সমাজের চরম বিবেকহীন পরিস্থিতিতে কবির প্রতিক্রিয়া এই কবিতাটি। ২০০৬-৭ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন সময়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশে, মানুষের বিবেককে তথা বোধকে জাগরিত করেছেন মৃদুল দাশগুপ্ত। জননী জন্মভূমির ব্যথা কবিকে ব্যথিত করেছে। তাই বিবেকহীন মানুষের কাছে, কবি আবেদন করেন, যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে। উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর জানতে অবশ্যই click here
ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতার বড় প্রশ্নোত্তর
১) “ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” কবিতায় কবি জননীকে ক্রন্দনরতা বলেছেন কেন? এই পরিস্থিতিতে কি করা উচিত বলে কবি মনে করেন?/ অথবা:– “ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” কবিতায় যে সামাজিক মূল্যবোধের প্রকাশ ঘটেছে তার সংক্ষেপে লেখ।/ অথবা:– “আমি তা পারি না। যা পারি কেবল সেই কবিতায় জাগে”- কে, কি পারেন না? না পারার বেদনা কিভাবে কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে?/অথবা:– ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতাটির বিষয়বস্তু সংক্ষেপে লেখ।
উঃ কবি মৃদুল দাশগুপ্তের “ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” শীর্ষক কবিতাটি সমকালীন কৃষিজমি আন্দোলনের পটভূমিকায় রচিত। ওই সময়ে বঙ্গ রাজনীতিতে যে সামাজিক অবক্ষয় এবং অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল তা কবিকে খুবই ব্যথিত করেছিল। তিনি লক্ষ্য করেন, বঙ্গজননী ক্রন্দনরতা অথচ মানুষ বিবেকহীন ভাবে চুপচাপ বসে আছে। তাই কবি তার প্রতিবাদের ভাষা উক্ত কবিতায় প্রকাশ করেন।
কি করা উচিত বলে কবি মনে করেন?-প্রতিটি মানুষের মধ্যেই মানবিক গুণাবলী আছে। মানুষের জ্ঞান বা বোধ এবং বিবেক সমাজের অন্যায় অত্যাচারকে তুলে ধরে। কিন্তু কবি লক্ষ্য করেন, উক্ত সময়ে শাসকের ভয়ে মানুষ বিবেকহীন। সমস্ত অন্যায় অত্যাচার দেখেও মানুষ কোন প্রতিবাদ করে না। তাই মা জননী ক্রন্দনরতা। যে মা ক্রন্দনরতা, তার পাশে যদি কেউ না থাকে, তাহলে গান গাওয়া, লেখালেখি, সমস্তই ব্যর্থ অর্থাৎ মূল্যহীন। নিহত ভাইয়ের মৃতদেহ দেখে, কবির মনে জন্ম নিয়েছিল ক্ষোভ। কবির মনে হয়েছিল, ভালোবাসা সমাজে মূল্যহীন।অথবা যে মেয়েটিকে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় জঙ্গলে পাওয়া গেছে, তাকে দেখে যদি বিবেক জাগরিত না হয়, তাহলে শিল্পীর শিল্পত্ত্ব ব্যর্থ।
কবি তার বিবেক নিয়ে ক্রন্দনরতা জরুরী পাশে থাকতে চেয়েছেন। সমস্ত অন্যায় অবিচারের জন্য তিনি বিধাতার শরণাপন্ন হননি। তার সজাগ বিবেক এবং বোধ জাগে কবিতায়। তাই সকলের প্রতি কবির আবেদন জননী বঙ্গভূমির প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে। মানুষ হিসাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে।
ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতার saq প্রশ্নোত্তর
১) “আমি তা পারি না”- কে কি পারেন না?
উঃ কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তার “ক্রন্দনতা জননীর পাশে” কবিতায়, যে মেয়েটির দেহ ছিন্নভিন্ন অবস্থায় জঙ্গলে পাওয়া গেছে, তার বিচার চেয়ে বিধাতার দিকে অর্থাৎ আকাশের দিকে তাকাতে পারেন না। কারণ তিনি একজন বিবেকবান শিল্পী।
২) “এখন যদি না থাকি”- কোথায় না থাকার কথা বলা হয়েছে?
উঃ যে মা জননী ক্রন্দনরতা, তার দুঃখ ঘোঁচানোর জন্য কবি মৃদুল দাশগুপ্ত পাশে দাঁড়াতে বলেছেন। অর্থাৎ বিবেকবান শিল্পীদের তিনি এই মায়ের পাশে দাঁড়াতে বলেছেন। তা না হলে শিল্পীর শিল্পত্ব ব্যর্থ।
for more question answers click here- আমার বাংলা- প্রশ্নোত্তর
৩) “ কেন তবে লেখা, কেন গান গাওয়া”- কবি কেন এ কথা বলেছেন?
উঃ যে জননী ক্রন্দনরতা, তার দুঃখ ঘোঁচানোর জন্য কবি মৃদুল দাশগুপ্ত পাশে দাঁড়াতে বলেছেন। তা নাহলে লেখালেখি আঁকা-আঁকি সবই ব্যর্থ অর্থাৎ বুদ্ধিজীবী মানুষদের তিনি ক্রন্দনরতা জননীর পাশে পাশে দাঁড়াতে বলেছেন।
৪) “সেই কবিতায় জাগে”- কবিতায় কি জাগে?
উঃ যে মেয়েটি ছিন্নভিন্ন দেহ জঙ্গলে পাওয়া গেছে, তার বিচার চেয়ে, কবি আকাশের দিকে তাকাতে পারেন না। তিনি যা পারেন, তার বিবেক অর্থাৎ প্রতিবাদ বিস্ফোরণের আগে কবিতায় জাগিয়ে তুলবেন।
ক্রন্দনরতা জননীর পাশে mcq প্রশ্ন উত্তর
১). “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে”- কবির মনে জাগে-
- ক)রাগ
- খ)দুঃখ
- গ)ক্রোধ
- ঘ)প্রতিশোধ উঃ গ) ক্রোধ
২) “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে / নাই যদি হয়” –
- ক) প্রতিবাদ
- খ) বিচার
- গ) রাগ
- ঘ) ক্রোধ উঃ ঘ) ক্রোধ
৩) “যে মেয়ে নিখোঁজ, ছিন্নভিন্ন” – তার দেহ পাওয়া গিয়েছিল —
- ক)ধান ক্ষেতে
- খ)জঙ্গলে
- গ)বাড়িতে
- ঘ)বাগানে উঃ খ) জঙ্গলে
৪) “ যে মেয়ে নিখোঁজ , ছিন্নভিন্ন ”- তার বিচার চেয়ে কবি –
- ক)বিধির বিচার চাইবেন
- খ)বিধির কাছে প্রার্থনা করবেন
- গ)আকাশে তাকাবেন না
- ঘ) কবিতা লিখবেন না উঃ গ)আকাশে তাকাবেন না
৫) “আমি তা পারি না”- কবি যা পারেন –
- ক) আকাশে তাকাবেন
- খ) বিধির বিচার চাইবেন
- গ) কবিতায় নিজের বিবেককে জাগ্রত করবেন
- ঘ) প্রতিবাদ করবেন উঃ গ) কবিতায় নিজের বিবেককে জাগ্রত করবেন
৬) “আমি তা পারি না” — কবি কি পারেন না –
- ক) একা প্রতিবাদ করতে
- খ) চুপচাপ বসে থাকতে
- গ) বিধির বিচার চেয়ে আকাশে তাকিয়ে থাকতে
- ঘ)আঁকা- আঁকি করতে উঃ গ) বিধির বিচার চেয়ে আকাশে তাকিয়ে থাকতে
৭) “… কেবল সেই কবিতায় জাগে” — কবিতায় কি জাগে?
- ক)প্রতিবাদ
- খ)ক্ষোভ
- গ) বিস্ফোরণ
- ঘ) বিবেক উঃ ঘ) বিবেক
ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতা থেকে অনেকগুলি বড় প্রশ্ন করার কোন প্রয়োজন নেই বা বিভিন্ন সহায়িকা থেকে আলাদা আলাদা বড় প্রশ্ন করার কোন মানে হয় না | এই কবিতা থেকে মূলত বিষয়বস্তুর দিকে লক্ষ্য রেখে প্রশ্ন হয় | বিষয়বস্তু ভালোভাবে আয়ত্ব করতে পারলে, তোমার প্রশ্ন যাই আসুক উত্তর কিন্তু সেই বিষয়বস্তুর দিকে লক্ষ্য রেখেই হবে | সুতরাং কবিতাটির লাইনগুলি পূর্বাপর মনে রাখার চেষ্টা করবে এবং বিষয়বস্তু ভালোভাবে পড়ে নেবে। এটি তোমার বাজিমাত হবে | তাই অনেকগুলি প্রশ্নের উত্তর করার কোন প্রয়োজন নেই|
মহুয়ার দেশ কবিতা থেকে এইরকম প্রশ্নের উত্তর দেখতে click here