মাধ্যমিক wbbse বাংলা বিষয়ের সহায়ক পাঠ্যের একটি অন্যতম পাঠ্য গল্প উপন্যাস কোনি | গল্পটির রচয়িতা মতি নন্দী | এই গল্প থেকে মাধ্যমিকে যে যে প্রশ্নগুলি আসার সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল সেই সমস্ত প্রশ্নগুলির উত্তর খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে | প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ প্রশ্নের উত্তরগুলি দেখার পাশাপাশি উত্তর লেখার কৌশল গুলি ভালোভাবে লক্ষ্য কর | মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর জানতে অবশ্যই click here
কোনি উপন্যাস প্রশ্ন উত্তর
1) “আপনি আমার থেকে চার হাজার গুণ বড়লোক, কিন্তু চার লক্ষ টাকা খরচ করেও আপনি নিজে শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না।”- বক্তা কাকে, কেন একথা বলেছিলেন?
উ:- মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে জুপিটার ক্লাবের সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ এই মন্তব্য করেছিলেন গঙ্গার ঘাটে ম্যাসাজ নিতে আসা বিষ্ণুচরণ ধরকে।
কেন একথা বলেছিলেন? – বছর চল্লিশের বিষ্টুচরণ বনেদি বংশের লোক। খান সাতেক বাড়ি, বড়োবাজারে ঝাড়ন মশলার দোকান এবং সর্বোপরি একটি সাড়ে তিন মণ দেহের মালিক সে। সপ্তাহে একদিন সে গঙ্গার ঘটে আসতো ম্যাসাজ করবার জন্য। বারুণীর দিন গঙ্গায় চান করতে এসে বিষ্টু ধরের মোটা শরীরের মালিশের বহর দেখে ক্ষিতীশ তাকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করেছিলেন। ক্ষিতীশ তার প্রেসার, সুগার, কোলেস্টেরল লেবেল কত তা জানতে চান। তার এইরকম অতিকায় দেহ যে হাটের পক্ষে ক্ষতিকর সে কথাও তিনি বলেন এমনকি তাকে হাতি এবং হিপো বলেও ব্যঙ্গ করেন। বিষ্টু এইসব কথায় বিরক্তি প্রকাশ করলেও মনে মনে ভয় পেয়ে ক্ষিতীশকে জিজ্ঞাসা করে, “আমি কি মরে যেতে পারি?”
বিষ্টু ধরের মতো ক্ষিতিশের হয়তো অর্থ সামর্থ্য নেই বা ক্ষিতিশ বিষ্টু ধরের মতো বড়লোক নয় কিন্তু ক্ষিতীশ নিয়মিত শরীর চর্চা করে নিজের শরীরটাকে চাকর বানিয়ে ফেলেছিলেন। বিষ্টুধর তার চেয়ে বেশ কয়েক গুণ বড়লোক হলেও তার মত দৌড়ঝাপ করার ক্ষমতা ছিল না এই জন্য ক্ষিতিশ বিস্তুদরকে এমন মন্তব্য করেছিলেন।
2) “এটা বুকের মধ্যে পুষে রাখুক।” – কী পুষে রাখার কথা বলা হয়েছে? কী কারণে এই পুষে রাখা?
উ:-কী পুষে রাখার কথা বলা হয়েছে? – মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসের কোনি জানত যে বড়লোকেরা গরিবদের খারাপ চোখে দেখে এবং ঘৃণা করে। সেজন্য তার মনে বড়লোকেদের প্রতি একটা বিরূপ মনোভাব ছিল এবং এই কারণেই হিয়ার প্রতিও তার এমন মনোভাব ছিল। যেদিন ক্ষিতীশ এর সঙ্গে কোনি চিড়িয়াখানায় ঘুরতে গিয়েছিল, সেখানে হিয়ার সঙ্গে তার দেখা হয়। হিয়া তাকে জল খেতে দিলে কোনি জলভর্তি গ্লাসটাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল। কোনির এমন আচরণ দেখে ক্ষিতীশ একটু ইতস্তত বোধ করলেও মনে মনে খুশি হয়েছিল। কারণ ক্ষিতীশ চেয়েছিলেন, হিয়ার প্রতি তার এই রাগ কোনি যেন বুকের মধ্যে পুষে রাখো।
কী কারণে এই পুষে রাখা?-ক্ষিতীশ ভালোভাবে জানতেন যে, হিয়াই কোনির ভবিষ্যতের প্রতিদ্বন্দ্বী হবে। তাই ক্ষিতীশ কোনিকে এমনভাবে তৈরি করেছিলেন যে, কোনি যেন অনায়াসেই বাংলার অন্য মেয়েদের টক্কর দিতে পারে। কিন্তু শুধু সাঁতারের দক্ষ হলেই চলে না। কঠোর অনুশীলনের পাশাপাশি কোনির জেদ এবং রাগটাও ছিল জরুরী। ক্ষিতীশ সিংহ জানতেন যে হিয়ার প্রতি কোনির এই রাগটা পুষে রাখতে পারলে সাঁতারের সময় তার সুফল পাওয়া যাবেই। এইজন্য হিয়ার প্রতি এমন আচরণ করলেও ক্ষিতীশ কোনিকে কিছু বলেননি। উলটে কোনির রাগটাকে আরো উসকে দিয়েছেন। মুখোমুখি লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে পর্যুদস্ত করার জন্য প্রতিপক্ষের প্রতি জেদ থাকা প্রয়োজন, কোনির সেই জেদটা আরো বাড়িয়ে তোলার জন্য এই রাগটা পুষে রাখা প্রয়োজন ছিল।
3) ‘কোনি’ উপন্যাসের কাহিনি অবলম্বনে স্বামীর যোগ্য সহধর্মিণী রূপে লীলাবতীর পরিচয় দাও।
উ:-মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন জুপিটার ক্লাবের একজন সাঁতার প্রশিক্ষক। ক্ষিতীশ ছিলেন নিঃসন্তান। তার সহধর্মিনী লীলাবতী ছিলেন তার সংসারের একমাত্র সঙ্গী। কোনির জীবনে যেমন ক্ষিতীশ এর অবদান অপরিসীম তেমনি ক্ষিতিশের জীবনেও তার স্ত্রী লীলাবতীর অবদান অপরিসীম ।
উপার্জনকারী: লীলাবতী একজন প্রকৃত গৃহকর্তী হয়ে তাদের সংসারের ভরণ পোষণের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিল। ক্ষিতীশ যখন ব্যবসা দেখাশোনা করত সেই সময় তাদের পারিবারিক দর্জির দোকান “সিনহা টেলারিং” প্রায় ডুবতে বসে ছিল। কিন্তু এই সময়েই লীলাবতী এসে এই টেলারিং এর দোকানের দায়িত্ব নিজে নেন এবং দোকানের নাম বদলে রাখা হয় “প্রজাপতি” ।
সংসারের যোগ্য সহধর্মিনী:- ক্ষিতীশ সারাক্ষণ ক্লাব নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও লীলাবতী একজন যোগ্য সহধর্মিনী রূপে তার সংসারের সমস্ত দায়-দায়িত্ব পালন করে। ক্ষিতীশ তার সংসারের দিকে ঠিক মত নজর না দিতে পারলেও লীলাবতী অত্যন্ত বুদ্ধিমতার সঙ্গে তার সংসারের সমস্ত দায়িত্ব সামলাতে থাকেন। সংসারের সমস্ত হিসেব-নিকেশ এমন কি খরচ–আয়–ব্যয় তার সমস্তটাই লীলাভূতি পরিচালনা করতেন।
স্বামীর অনুগত:- লীলাবতী একটু ভোজনরসিক হলেও ক্ষিতীশ তার বিপরীত স্বভাবের। লীলাবতী তেলমশলা দিয়ে খাবার খেতেই পছন্দ করে। আবার, ক্ষিতীশের তেলমশলা পছন্দ নয়। প্রথমে লীলাবতী এসবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। শেষপর্যন্ত লীলাবতী স্বামীর কথামতোই তেলমশলা বিহীন খাবারেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে।
স্বামীর সমর্থক:- ক্ষিতীশ যে জুপিটার ক্লাবে যেত সেই বিষয়ে লীলাবতীর আপত্তি ছিল। ক্ষিতীশ যখন ব্যবসা দেখাশোনা করত তখন দুপুর ছাড়া বাকি সময়টা ক্লাবেই কাটাতো। আর এই জন্য তাদের ব্যবসা ভরাডুবি হয়েছিল। ভালো সাঁতারু তৈরি করার নেশায়িতিস তার নিজের সংসারের দিকে ভালোভাবে মন দিতে পারেনি। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও লীলাবতী ক্লাব-প্রেমী এবং ক্রীড়া প্রেমী ক্ষিতীশকে সমর্থনই করতেন ।
সহমর্মীতা: কমলের মৃত্যুর পর কোনির পরিবার চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছিল সেই সময় তাদের পরিবারের পাশে বটগাছের ছায়ার মত এসে দাঁড়িয়েছিল। কোনিকে নিজের ঘরে রেখে সাঁতার শেখার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি তাদের পরিবারের অন্নসংস্থানের বন্দোবস্ত করেছিল ক্ষিতীশ।
4) “ফাইট কোনি, ফাইট”- সাধারণ সাঁতারু থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতে গিয়ে কোনিকে কী ধরনের ‘ফাইট’ করতে হয়েছিল, নিজের ভাষায় লেখ।
উ:- মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে একজন সাধারণ পরিবার থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওটার উত্তরণ সহজে হয়ে ওঠেনি। তাকে বহু বাধা-বিপত্তি এবং বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতে হয়েছে। রীতিমতো তাকে ফাইট করেই এগিয়ে যেতে হয়েছিল।
দারিদ্রতা বিরুদ্ধে ফাইট– কোনির প্রথম লড়াইটা ছিল দারিদ্র্যের সঙ্গে। কোনি একজন সাধারণ বস্তির ঘরের মেয়ে তার পরিবার দিন আনা দিন খাওয়া নিত্য খাদ্যের অভাব। এইরকম পরিবার থেকে তাকে সাঁতার শেখানো তো দূরের কথা একটা কস্টিউম কিনে দেবার মত সামর্থন ছিল না। তাছাড়া কোনীর এই দারিদ্রতার কারণে তাকে সমাজে নানা জায়গায় অবহেলায় করা হয়েছিল মাদ্রাজে পৌঁছেও তাকে অপমান সহ্য করতে হয়েছিল |
নিজের সঙ্গে ফাইট– কোনি সাঁতার শেখার ক্ষেত্রে আগে তার দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। ছোটলোকের মেয়ে বলে তাকে অনেক অপমান ও সহ্য করতে হয়েছে। অমিয়া তাকে ‘ঝি’ বললে, সে খুব লজ্জা পেয়েছিল। সেজন্য অপমানের জ্বালা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য কোনি ক্ষিদ্দাকেই প্রশ্ন করে “অমিয়ার রেকর্ডটা কবে ভাঙতে পারবো?” ।
ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ফাইট– জুপিটারের ক্ষিতীশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কোনিকে লড়তে হয়েছিল। কোনিকে জোর করে অন্যায় ভাবে ডিসকোয়ালিফাই করা হয়। কখনো বা জোর করে হারানোর চেষ্টাও করা হয়। শুধু তাই নয় সে যাতে বাংলার জাতীয় দলের সুযোগ না পায়, সেই চেষ্টাও ক্ষিতীশ বিরোধী গোষ্ঠীরা করেছিল। কিন্তু ভাগ্য সহায়তায় কোনি এইসব ষড়যন্ত্রকে দূরে সরিয়ে বাংলা জাতীয় দলে সুযোগ পাই।
বঞ্চনার বিরুদ্ধে ফাইট– একের পর এক প্রতিযোগিতা সে গ্যালারিতে বসে দেখেছে, জলে নামার সুযোগ তাকে দেওয়া হয়নি। তবে প্রতিভা থাকলে তাকে যে কোনোভাবে আটকানো যায় না তা কোনই প্রমাণ করে দিয়। হিয়া অসুস্থ হলে কোনিকে জলে নামার সুযোগ করে দেয়। প্রথমে কোনি অভিমানে জলে নামতে না চাইলেও পরে হিয়ার কস্টিউম করে জলে নামে। শেষ মুহূর্তে কোনি নামার সুযোগ পেয়ে রমাযবাসীকে হারিয়ে বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করে।
আরও প্রশ্ন ANS পেতে এখানে ক্লিক কর – click here
5) “খিদ্দা, এবার আমরা কী খাব?”- বক্তা কে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীভাবে তাদের সাহায্য করেছেন?
উ:-বক্তা কে- মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে প্রধান কেন্দ্রীয় চরিত্র কোনি তার সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশকে এ কথা বলেছিল।
কীভাবে তাদের সাহায্য করেছেন- কোনির সাঁতার শেখার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় ছিল তার দারিদ্রতা, অভাব। তাই ক্ষিতীশ সিংহ প্রথমে তার খাবারের সংস্থানের ব্যবস্থা করেন। তাছাড়া কোনির দাদা কোমল টিভি রোগে মারা গেলে তার পরিবার চরম দুর্দশার মধ্যে পড়ে। সেই ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। কোনির দাদার মৃত্যুতে কোনির পরিবার অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে কোনই ক্ষিতীশকে জিজ্ঞাসা করে- “খিদ্দা, এবার আমরা কী খাব?”
কোনির এই মর্মস্পর্শী আবেদন ক্ষিতীশকে প্রবলভাবে নাড়া দেয়। ক্ষিতীশ বুঝতে পারেন কোনির সাঁতার শেখার আগে তার খাবারের যথাযথ ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ক্ষিতীশ নিজের পয়সায় কোনিকে খাবারের ব্যবস্থা করে তার সাঁতার শেখার বন্দোবস্ত করেন। শুধু তাই নয় ক্ষিতীশ কোনির মাকে একটা কাজের সংস্থানও করে দেন । তিনি নিজে এসে ছিট কাপড় পৌঁছে দিয়ে যেতেন এবং সেগুলি কাটা হয়ে গেলে কোনির মাধ্যমে পাঠানো হতো। তাছাড়া, কোনিকেও লীলাবতীর প্রজাপতি দোকানে চল্লিশ টাকা মাইনের কাজ দিয়েছিলেন ক্ষিতীশ। এইভাবে কোনির পরিবার অসহায় দুর্দশার মধ্যে পড়লে ক্ষিতীশ কোনির পরিবারের পাশে বটগাছের ছায়ার মত এসে দাঁড়ান।
6) খাওয়ায় আমার লোভ নেই। ডায়েটিং করি।”- বক্তা কে ? তার ডায়েটিং–এর পরিচয় দাও।
উ:- সাহিত্যিক মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে বিষ্টু চরণ ধর এই মন্তব্যটি করেছিলেন ক্ষিতীশকে।
বিষ্টুচরন ধর সাড়ে তিন মণ ওজনের দেহের মালিক। বিষ্ণুচরণ ধরের এইরকম অতিকায় মোটার কারণে ঘরে বাইরে তাকে নিন্দা শুনতে হয়। এমনকি ব্যঙ্গ কথাও তার দিকে ভেসে আসে। বারুণীর দিন গঙ্গার ঘাটে মালিশ করাতে এসেও তার রেহাই নেই। ছিপ ছিপে চেহারার জনৈক ব্যক্তি অর্থাৎ ক্ষিতীশ তাকে হিপো হাতি ইত্যাদি বলে বিদ্রুপ করে। আর ক্ষিতীশের এই মন্তব্যের কারণেই বিষ্ণুচরণ ধর অত্যন্ত গর্ব করে বলে যে “খাওয়াই আমার লোভ নেই ডায়েটিং করি।“
তার ডায়েটিং ছিল এইরকম-: রোজ তিনশো গ্রাম ক্ষীর খায়, আগে খেতো আধ কিলো; জলখাবারে পনেরোটা লুচি, আগে কুড়িটা খেতে; তার নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায় রয়েছে আড়াইশো গ্রাম চালের ভাত এবং রাতে রয়েছে বারোখানা রুটি। এখন গরম ভাতের সঙ্গে মাত্র চার চামচ ঘি খায় সে, আগে অনেক বেশি খেতো। তাছাড়া অন্য সব আহারের মধ্যে রয়েছে; বিকেলে দু–গ্লাস মিছরির শরবত আর চারটে কড়াপাক। তবে, মাছ বা মাংস সে ছুঁয় না। কারণ বাড়িতে রাধাগোবিন্দ বিগ্রহ রয়েছে। লোকে যে যাই বলুক, বিষ্টু ধরের মতে, সকাল থেকে রাত অবধি ব্যবসা সামলে এই আহার নিতান্তই অপর্যাপ্ত।
7) “তোর আসল লজ্জা জলে, আসল গর্বও জলে”- কে কাকে একথা বলেছিল? প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কথাটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উ:- মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে ক্ষিদ্দা অর্থাৎ সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতিশ সিংহ কোনিকে আলোচিত মন্তব্যটি করেছিলে।
প্রসঙ্গ –ক্ষিতীশ কোনিকে রাত্রে খাবার পর বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার সময় স্টপওয়াচটা, কোনির চোখের সামনে ধরেন এবং তাকে দেখান যে কিভাবে ছোটখাটো রেকর্ড গুলো ভেঙ্গে এগিয়ে যেতে হয় । কিন্তু এর মাঝে কোনি হঠাৎ জানতে চাই যে, সে কি কখনো অমিয়ার রেকর্ড ভাঙতে পারবেনা । কারণ অমিয়া তাদের দোকানে ব্লাউজ করাতে এলে অমিয়া তাকে “ঝি” বলেছে। এই কথায় কোনির লজ্জা পেয়েছিল। সেই সময় ক্ষিতীশ তাকে এই আলোচিত মন্তব্যটি করেছিলেন।
তাৎপর্য বিশ্লেষণ- ক্ষিতীশ জানেন যে, কোনির মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সমস্ত সম্ভাবনা গুলো রয়েছে। তাকে সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দিলে সে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতে পারবে। তাছাড়া ক্ষিতীশ জানেন কোনিকে কিভাবে চ্যাম্পিয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাই কোনি নিজের লজ্জার কথা বললে ক্ষিতীশ বলেন, “তোর আসল লজ্জা জলে আসল গর্বও জলে” অর্থাৎ ব্যক্তি আক্রমণে একজন সাঁতারু লজ্জা পাওয়া উচিত নয়। তার সমস্ত গর্ব, লজ্জাবোধ তার প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারানো। তাই অমিয়া তাকে ঝি বললেও এতে তার লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। সঠিক সময়ে অমিয়া কে জলে হারিয়ে গর্ববোধ করাটাই হলো আসল পরিচয়।
8) দারিদ্র আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির যে লড়াই তা সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উ:- জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক মতি নন্দীর বিরোচিত কোনি উপন্যাসে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতিস কোনির মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সমস্ত লক্ষণ উপলব্ধি করেছিলেন। তিনি কোনির বাড়িতে গিয়ে তার দারিদ্রতা নিজের চোখে দর্শন করেছেন।
দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম:- কোনির পরিবারে একমাত্র তার বড় ভাই কমল রোজগার করে। কিন্তু কমল মুখে রক্ত উঠে মারা যায়। এর ফলে কোনির পরিবার চরম দুর্দশার মধ্যে পড়ে। কোনির সামনে তাই এখন লক্ষ্য সাঁতারের চ্যাম্পিয়ন হওয়া নয়। তার লক্ষ্য তার পরিবারের খাদ্যের সংস্থান করা। অভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করা। কোনির পরিবার নির্মম দারিদ্রতার মধ্যে পড়ে যায়। বাস্তবতা উপলব্ধি করে আশঙ্কায় কেঁপে উঠেন ক্ষিতীশবাবু । যে উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি কনিকে গড়ে তুলছিলেন সেই রাস্তায় যেন হঠাৎ বাধা প্রাপ্ত হয়ে গেল।
বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই:– শুধু দারিদ্রতা নয় কনিকে লড়াই করতে হয়েছে তার বঞ্চনার বিরুদ্ধেও। ক্ষিতীশ কনিকে সাঁতার শেখানোর জন্য জুপিটার ক্লাবে নিয়ে গেলে সেখানে হরিচরণ বাবু ধীরেন ঘোষ বিনোদ ঘর প্রমুখ ষড়যন্ত্র করে ক্ষিতিশের ছাত্রীকে জুপিটার ক্লাবে ভর্তি নেয়নি। কিন্তু ক্ষিতিশ সহজে হাল ছেড়ে দেয়নি। অ্যাপোলোতে সাতার প্রতিযোগিতার বাইরে থেকেও অমিয়াকে হারিয়ে দেয় কোনি । মাদ্রাজের জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে দল নির্বাচনের সময়ও কোনিকে বাদ দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছিল।
ভাগ্যক্রমে বালিগঞ্জ ক্লাবের ট্রেনার প্রণবেন্দুর উদ্যোগেই বাধ্য হয়ে হরিচরন দলে নেয়। কিন্তু মাদ্রাজে গিয়েও নানান বাধার সম্মুখীন হতে হয় । অমিয়া, বেলা কোনিকে চোর অপবাদ দেয় । অবশেষে ভাগ্যের কারণে কোনিকে দলে স্থান দিতে হয় এবং শেষে রমা যোশিকে হারিয়ে বাংলার হাতে ট্রফি এনে দেয় কোনি ।
9) সফল সাঁতারু হওয়ার ক্ষেত্রে কোনির প্রতিবন্ধকতাগুলি কী ছিল ? সেগুলি কাটিয়ে উঠতে ক্ষিতীশ সিংহ তাকে কীভাবে সাহায্য করেছিলেন ?
উ:– মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র কোনি সাহসিকতা মনোভাব জেদ এবং আত্মবিশ্বাস এর জোরে কোনি সমস্ত বাধা অতিক্রম করে জাতীয় স্তরে সাঁতার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওঠে কিন্তু তার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রাস্তা এতটা সহজ ছিল না।
প্রতিবন্ধকতাগুলি কী ছিল-প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করেই ক্ষিতিশের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে। পেটের খাবারের সংস্থান কিংবা মা ও সাত ভাই বোনের সংসারের সীমাহীন দারিদ্রতা, এই সব কিছু উপেক্ষা করা, তার পক্ষে সহজ ব্যাপার ছিল না। তবে একজন সত্যিকারের প্রকৃত সাঁতারু হয়ে উঠতে গেলে প্রয়োজন একজন প্রকৃত প্রশিক্ষক। ক্ষিতীশ ছিলেন তার সেই সাঁতারু শিক্ষক। যিনি তাকে সঠিক পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ করে দক্ষ সাঁতারু করে তোলেন। ক্ষিদ্দা কোনির মধ্যে লুকিয়ে থাকা চ্যাম্পিয়নের সহজাত লক্ষণটিকে খুঁজে পেয়েছিলেন ।
কীভাবে সাহায্য করেছিলেন – ক্ষিতীশ বুঝেছিলেন পেটের খিদে নিয়ে কোনো মহৎ কাজ করা যায় না । তাই তিনি কোনির পেটের খাবারের সঙ্গে তার মাকেও কাজ জুটিয়ে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দিয়ে ; তাদের পরিবারের ন্যূনতম চাহিদাটুকু পুরণের উঠতে ক্ষিতীশ চেষ্টা করেছিলেন । ক্ষিতীশ কোনিকে শিখিয়েছেন শারীরিক যন্ত্রণাকে অতিক্রম করার কৌশ । ক্ষিদ্দা হয়ে উঠেছিলেন কোনির জীবনের একমাত্র পথপ্রদর্শক। ‘ ফাইট কোনি ফাইট’—এই মন্ত্রে ক্ষিতীশ কোনিকে সমস্ত যন্ত্রণাকে উপেক্ষা করে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে তুলে দেন।
10) বারুণী কী? বারুণির দিনে গঙ্গার ঘাটে কোন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল?/ অথবা:– “ঘাটে থৈ থৈ ভিড়” ঘাটে থৈথৈ ভিড় ছিল কেন সেখানে কি ঘটনা ঘটেছিল তার সংক্ষেপে লেখ।
উ:বারুণী কী? –হিন্দু ধর্মমতে বারুণী একটি উৎসব। শতভিশানক্ষত্রযুক্ত চৈত্র মাসের কৃষ্ণ ত্রয়োদশীতে গঙ্গাপূজা ও গঙ্গাস্নানে পূন্যলাভ হয়, একেই বারুণী বলে।
গঙ্গার ঘাটে কোন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল- ঐদিন গঙ্গার ঘাটে ভিড়ে থৈথৈ। বয়স্করা গঙ্গায় ডুব দিয়ে কাঁচা আম বিসর্জন দিচ্ছেন। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সেই আম কুড়োনোর জন্য হুড়োহুড়ি করে জলে নেমে পড়ে। মানুষজন গঙ্গার জলে স্নান করে কাদা মাড়িয়ে ঘাটে উঠে আসছেন বিরক্ত হয়ে। তারপর ট্রেন লাইনের দিকে মুখ করে বসা বামুনদের কাছে যায়। তারা পয়সা দিয়ে জামা কাপড় জমা রাখে। গায়ে সরষে বা নারকেল তেল মাখে। এবং কপালে চন্দনের ছাপ এঁকে দেয়।
অনেকে ছোট ছোট দেব–দেবীর দুয়ারে ও শিবলিঙ্গের মাথায় ঘটি থেকে গঙ্গাজল দেন। রাস্তার দু’পাশে কাঠের, প্লাস্টিকের, লোহার, খেলনার ও সাংসারিক সামগ্রিক দোকানগুলি দেখতে দেখতে তারা বাড়ির দিকে তারা বাড়ির দিকে রওনা দেয়। আবার রাস্তার ধারে বাজার থেকে ওল থোড় কিংবা কমলালেবু কেউ কেউ কিনে নিতে পারে। রোদে গরম হয়ে ওঠা রাস্তায় খালি পা ফেলে তাড়াতাড়ি তারা বাড়ির দিকে পা বাড়ান।
11) “কম্পিটিশনে পড়লে মেয়েটা তো আমার পা ধোয়া জল খাবে”- কার উক্তি? “মেয়েটা পা ধোয়া জল খাবে বলতে” কী বোঝানো হয়েছে?
উ:- ক্ষিতীশ জুপিটার সুইমিং ক্লাবের প্রশিক্ষকের পদে থাকার সময় অমিয়া ও বেলা সেখানে সাঁতারু প্রশিক্ষণ নিত। কিন্তু ক্ষিতিশের কঠোর অনুশীলন সহ্য করতে না পেরে এবং ক্ষিতিশের প্রতি তীব্র ক্ষোভে তারা ক্লাব ছেড়ে অ্যাপোলোতে যোগ দেয়। সেখানেই তারা কোনিকে দেখে প্রবল হিংসায় অমিয়া এমন মন্তব্য করেছিল।
অমিয়া কথাটি বলেছে তার পূর্ব প্রশিক্ষক ক্ষিতিশের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দেয়ার জন্য। জুপিটার ক্লাবে ক্ষিতীশের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় অমিয়া ও বেলা তাদের খামখেয়ালী মনোভাব, আচার–আচরণ, পোশাক ও সাজগোজ নিয়ে ক্ষিতীশ যথেষ্ট অপমানিত করেছিল। বলতে গেলে তারা ক্ষিতীশের জন্যই জুপিটার ছেড়েছে ।সেই ক্ষিতীশের শিষ্য কোনির প্রতি তাদের ঈর্ষা ঈর্ষা যে হবে সেটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া অমিয়া এমন মন্তব্য তার অহংকার এবং ঔদত্ত্যতারই পরিচয় পাওয়া যায়।
FOR MORE QUESTION ANSWERS CLICK HERE
কোনি উপন্যাস থেকে আরও প্রশ্ন উত্তর দেখতে অবশ্যই এবং কোনি উপন্যাসের বিষয়বস্তু সারাংশ জানতে অবশ্যই – click here