মাধ্যমিক wbbse বাংলা ব্যাকরণের নির্মিতি অংশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রতিবেদন রচনা এবং সংলাপ রচনা | প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী এই সিরিজে মাধ্যমিকের প্রতিবেদন এবং সংলাপ রচনা গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে। এবছর মাধ্যমিকে যে সমস্ত প্রতিবেদন রচনা এবং সংলাপ রচনা আসার সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল সেই সমস্ত প্রতিবেদন এবং সংলাপ রচনা গুলি নিম্নে সুন্দরভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে। প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ প্রশ্নের উত্তরগুলি দেখার পাশাপাশি উত্তর লেখার কৌশল গুলি ভালোভাবে লক্ষ্য কর | মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর জানতে অবশ্যই click here
মাধ্যমিক বাংলা প্রতিবেদন
1. চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে খুন- এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা কর:-| মাধ্যমিক বাংলা প্রতিবেদন
| চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করে উত্তেজিত জনতা |
ধনিয়াখালি; হুগলি ; 22 আগস্ট 2023 : সকালে উত্তেজিত জনতা এক যুবককে চোর সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছে। এমন চাঞ্চলকর ঘটনায় চারিদিকে শোরগোল পড়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির ধনিয়াখালি থানার গুড়বাড়ী অঞ্চলে। মৃত ওই যুবকের নাম সৌরভ দাস (২২) । স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, সৌরভ দাস ধনিয়াখালি কলেজে তৃতীয় বর্ষে পাঠরত। প্রতিদিনের মতো সে বাসে করেই কলেজে বেরিয়েছিল। বাসের মধ্যে এক তরুনীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে পার্সটি চুরি হয়ে যায়। সৌরভ দাস ওই তরুণীর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাকেই চোর বলে সন্দেহ করে উত্তেজিত জনতা সঙ্গে সঙ্গে বাস থেকে নামিয়ে তাকে গণপিটুনি দিতে আরম্ভ করে। ঘটনার কয়েক ঘন্টা পরে ধনেখালি পুলিশ পৌঁছে, পরিস্থিতির সামাল দেয়।
** ততক্ষণের যুবককে আহত অবস্থায় তুলে ধনিয়াখালি নিকটবর্তী গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ঘটনায় সৌরভের মা-বাবা শোকাহত। সৌরভের পরিবারের তরফ থেকে ওই বাসে যতদিন ছিলেন তাদেরকে সবাইকে শাস্তির দাবি তোলে। ধনিয়াখালি থানার এস আই জানান যে, এই ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীকে শাস্তি ব্যবস্থা করা হবে। নিজস্ব প্রতিনিধি
2. |মোবাইলের ভালো-মন্দ নিয়ে- দুই বন্ধুর মধ্যে কাল্পনিক সংলাপ রচনা কর ।
অয়ন: কি সুরজিৎ কেমন আছিস ?
সুরজিৎ: আমি ভালো আছি, তুই কেমন আছিস?
অয়ন: আমিও ভালো আছি। শুনলাম তোর বাবা তোকে একটা নতুন মোবাইল কিনে দিয়েছে ?
সুরজিৎ: হ্যাঁ । আমার বাবা আমাকে একটা নতুন মোবাইল কিনে দিয়েছে। আসলে কি জানিস তো, এখন তো সব অনলাইনে পড়াশোনা চলছে, স্যারেরা সব অনলাইনে নোটস দিচ্ছে, তাই অনলাইনে পড়াশোনার প্রয়োজনীয়তা বুঝে আমার বাবা এই মোবাইলটা আমাকে কিনে দিয়েছে।
অয়ন: বাহ:! সে তো খুব ভালো কথা রে। এখন তো এবার অনলাইনে পড়াশোনা ভালোই করবি। এখন দেখছি সব অনলাইনে বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।
সুরজিৎ: তুই ঠিকই বলেছিস অয়ন। অনলাইনে সব পড়াশোনা চললেও, এখন আমাদের মোবাইলের ব্যবহার নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
অয়ন: সত্যিই, এখনকার যুগে অনলাইনে যা ফ্রডের শিকার হচ্ছে তা সত্যিই খুব চিন্তার বিষয়।বিভিন্ন ফেক ইমেইল আইডি দিয়ে বা ফেক এসএমএস দিয়ে লিংকে ক্লিক করে অনলাইনে সব ব্যাংকের টাকা উধাও হয়ে যাচ্ছে।
সুরজিৎ: শুধু কি তাই! ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্ন ফেক আইডি দিয়ে মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এছাড়া আরও অনলাইন গেমিং যা ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি করে চলছে।
অয়ন: সত্যি ভাই। তুই ঠিকই বলেছিস। বর্তমান যুগে মোবাইল যেমন আমাদের কাছে অনলাইন পড়াশোনার একটা মাধ্যম তেমনই আমাদের কাছে মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার একটা বিভীষিকা হয়ে উঠছে। ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনার প্রতি প্রবণতা খুবই কমছে। তাছাড়া অতিরিক্ত মোবাইল এর উপর নির্ভরশীলতার কারণে অনেক ছাত্রছাত্রী বিদ্যালয় অনুপস্থিত থাকছে।
সুরজিৎ: অবশ্যই, মোবাইলের এই অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে আমরা বন্ধুরা বেশি মেলামেশাও করি না। বন্ধুদের সঙ্গে খোলামেলা কথাবার্তা বলি না। প্রত্যেককেই মোবাইলে কিছু না কিছু গেম খেলতে ব্যস্ত থাকি।
অয়ন: তাই তো দেখছি। তবে তোর বাবা তোকে যে জন্য মোবাইল দিয়েছে, তুই শুধু সেই দিকেই নজর রেখে মোবাইলের সঠিক ব্যবহার করবি।
সুরজিৎ: হ্যাঁ হ্যাঁ । আমি শুধু যে সময় অনলাইন পড়াশোনা বা অনলাইন কাজকর্ম চলবে সেই সময় শুধু আমি মোবাইল ব্যবহার করব। বাকি সময়টা মোবাইল আমার বাবার কাছেই থাকবে। মোবাইল শুধু আমার অনলাইনে পড়াশোনার জন্য নয়। বাড়িতে অন্যান্য আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগের জন্যও রাখা থাকে। সুতরাং সে দিক দিয়ে নির্ভয় থাকতে পারি।
অয়ন: হ্যাঁ সে তো ভালো কথা কিন্তু মনে রাখিস মোবাইলের উপর কখনোই অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়বে না । তাহলে তোর আমার বন্ধুত্ব আর সেই রকম থাকবে না রে ।এই যে মাঠে এসে দেখা করা কথা বলা এই আনন্দের মজাটাই মোবাইলে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
সুরজিৎ: হা, অবশ্যই আমরা আগের মত যেমন দেখা করি তেমনই দেখা করব।
অয়ন: ঠিক আছে। চল তবে বাড়ি যাই। আজকে এই পর্যন্তই।
সুরজিৎ: হ্যাঁ । ঠিক আছে তাহলে। কাল দেখা হলে আবার কথা হবে।
3. |“তোমার এলাকায় প্রচুর পরিমাণে গাছ কাটা হচ্ছে”- এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা কর:-|
| গুরবাড়ী অঞ্চলে ব্যাপক বৃক্ষচ্ছেদন; বাসিন্দাদের তীব্র অসন্তোষ |
ধনিয়াখালি; গুরবাড়ী; ২৭ আগস্ট ২০২৩: ধনিয়াখালি থানার গুরবাড়ী অঞ্চলে একটি গ্রামীন এলাকাতে প্রচুর পরিমাণে গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে বলে, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। ওই এলাকায় শালবাগান বলে একটি বনভূমি আছে। নানা ধরনের সবুজ বৃক্ষের সমাহার রয়েছে সেখানে এবং গ্রামীণ বাসিন্দাদের প্রিয় একটি আশ্রয়স্থল। বর্তমানে ওই এলাকার মালিক একটি কারখানা নির্মাণের উদ্দেশ্যে ওই বাগানের সমস্ত গাছগুলি কেটে ফেলা হচ্ছে। বাসিন্দারা প্রথমে বিক্ষোভ দেখিও কোন লাভ হয়নি। এরপর বাসিন্দারা প্রথমে পঞ্চায়েতে অভিযোগ জানিয়েছিল কিন্তু তাতে কোন সুরাহা হয়নি। ফলত গ্রামের বাসিন্দারা ধনিয়াখালি ভিডিও অফিসে বিষয়টি জানায়। ধনিয়াখালির ভিডিও কর্তা ব্যক্তিরা এলাকা পরিদর্শনে গেলে তারা দেখেন যে সেখানে প্রচুর পরিমাণে গাছ কাটা চলছে।
** ধনিয়াখালি পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়। পুলিশ গাছ কাটার অনুমোদন আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায় “এই সালবাগান আমাদের পূর্বপুরুষের আমল থেকে আছে। ছেলেবেলা থেকেই এখানে আমরা খেলে মানুষ হয়েছি। এই বিশাল বাগান আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল। তাছাড়া প্রকৃতির বিশাল বড় একটা ভারসাম্য সুরক্ষিত হচ্ছে। কিন্তু এই বাগান কেটে ফেলায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। বিষয়টি আমরা ভিডিও কর্তা ব্যক্তিদের জানিয়েছি। আমরা কয়েকবার বিক্ষোভও দেখিয়েছি” । ধনিয়াখালি থানার পুলিশের হস্তক্ষেপে আপাতত গাছ কাটা এখন বন্ধ আছে। এই ঘটনাটির খবর স্থানীয় বিধায়কের কাছেও পৌঁছায়। খুব শীঘ্রই স্থানীয় বিধায়ক ওই এলাকা পরিদর্শনে আসবেন বলে জানিয়েছেন। নিজস্ব প্রতিনিধি
মাধ্যমিক বাংলা সংলাপ রচনা
4. “মাধ্যমিকের পর কম্পিউটারের কোর্স নিয়ে”- দুই বন্ধুর মধ্যে কাল্পনিক একটি সংলাপ রচনা কর।
শুভ: জানিস তো সৌম্য, আমার বাবা আমাকে একটা কম্পিউটার কিনে দেবে বলেছে।
সৌম্য: বাহ! সে তো খুব ভালো কথা রে। তাহলে তো এখন তুই বাড়িতে বসে বসেই কম্পিউটার শিখতে পারবি।
শুভ: হ্যাঁ। সে না হয় কম্পিউটার বাড়িতে শিখব। কিন্তু কম্পিউটারের জন্য একটা নির্দিষ্ট কোর্স কোনো সংস্থা থেকে করতে হবে। আমার বাবা সেটা ভেবে রেখেছেন। মাধ্যমিকের পর কোন একটা সংস্থার কম্পিউটার কোর্স ভর্তি হয়ে যাব। সেখান থেকে নির্দিষ্ট সময়ের কম্পিউটার কোর্স কমপ্লিট করে একটা সার্টিফিকেট অর্জন করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে সেই সার্টিফিকেট কাজে লাগে।
সৌম্য: হ্যাঁ। তোর বাবা মন্দ কিছু ভাবেননি। এখন সময় পরিবর্তন হচ্ছে। যে কোন চাকরি পেতে গেলে কম্পিউটারের উপর দক্ষতা অতি আবশ্যক। সেই সঙ্গে কম্পিউটার কোর্সের সার্টিফিকেটও প্রয়োজন আছে। তোর বাবা খুব ভালো কাজই করেছেন। আমিও তাই ভাবছি। মাধ্যমিকের পর কোন কম্পিউটার সংস্থার কোর্সে ভর্তি হয়ে যাব।
শুভ: হ্যাঁ তুই ঠিকই বলেছিস। বর্তমানে চাকরির বাজারে যা মন্দা চলছে, তাতে কম্পিউটারে জ্ঞান না থাকলে চাকরি পাওয়া খুব মুশকিল হয়ে যাবে। তাই মাধ্যমিকের পরপরই কোন সংস্থা থেকে কম্পিউটারের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ভর্তি হয়ে যাওয়া অতি আবশ্যক।
সৌম্য: হ্যাঁ । তবে এক্ষেত্রে কোর্স বাছাই করা খুবই জরুরী। কেননা বর্তমান নিরিখে যে কোর্স এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ বা অতি প্রয়োজনীয় সেই কোর্সেই ভর্তি হতে হবে। যাতে সেই সার্টিফিকেট পরবর্তীতে কাজে লাগতে পারে।
শুভ: সে তো অবশ্যই। প্রথমে তো বেসিক কোর্সে আগে ভর্তি হতে হবে। কেননা বেসিক জ্ঞান আগে প্রয়োজন। তাই বেসিক কোর্স শিখে তারপর অন্যান্য কোর্সগুলো শিখতে হবে। আর এটা মাধ্যমিকের পর পরই করতে হবে।
সৌম্য: হ্যাঁ । আমিও তাই ভাবছি। মাধ্যমিকের পরেই কোন সংস্থার বেসিক কোর্সে আগে ভর্তি হয়ে যাব।
শুভ: হ্যাঁ। এটাই ঠিক হবে । কেননা এরপরে হয়তো আর কম্পিউটার শেখার সময় থাকবে না।
সৌম্য: হ্যাঁ । দেখি আমিও আমার বাবাকে একটা কম্পিউটারের ব্যবস্থা করে দিতে বলব।
শুভ: বাড়িতে কম্পিউটার থাকলে কি হবে জানিস তো? খুব সহজে তাড়াতাড়ি শিখতে পারা যায়। তাই বাড়িতে কম্পিউটার থাকা আবশ্যকীয়।
সৌম্য: হ্যাঁ। যা বলেছিস। দেখা যাক বাবাকে বলে কি করেন।
শুভ: ঠিক আছে রে সৌম্য। তাহলে আজকে এই পর্যন্তই। পরে আবার দেখা হলে কথা হবে।
সৌম্য: হ্যাঁ। চল তাহলে।
শুভ: হ্যাঁ, মাধ্যমিকের জন্য আগাম শুভেচ্ছা। ভালো করে পরীক্ষা দিস।
সৌম্য: তোকেও মাধ্যমিকের জন্য আগাম শুভেচ্ছা দিলাম। ভালো করে পরীক্ষা দিস। ওকে বাই।
শুভ: ওকে বাই।
মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে আরো অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর জানতে অবশ্যই click here